বশীর আহমেদ
কুষ্টিয়া জেলা সদর থেকে অল্প দূরে জাতীয় মহাসড়কের পাশে অনেক পুরনো বাস স্টপেজ ও বাজার বিত্তিপাড়া। একসময় কেবল স্থানীয় মানুষদের চাহিদানির্ভর বিত্তিপাড়া বাজার সময় বদলের সঙ্গে এখন জমজমাট ব্যবসাকেন্দ্র। সাপ্তাহিক হাটবাজারে এলাকায় উৎপাদিত হরেকরকম কৃষিপণ্যের বিকিকিনিতে সরগরম হয় বাজারটি। আধুনিক জীবনের যাবতীয় উপকরণ জোগান দেয়ার অসংখ্য প্রতিষ্ঠান এখন গড়ে উঠেছে বিত্তিপাড়ায়। পঞ্চাশ বছর আগে পরিস্থিতি এমন ছিল না। হাতেগোনা কয়েকটি মুদি দোকান আর কিছু ঝুপড়ি ঘরের চা স্টল তাদের অনিয়মিত খদ্দের নিয়েই সন্তুষ্ট থেকেছেন। বাজারসংলগ্ন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ সড়ক ছিল তখন খুবই সংকীর্ণ; সিমেন্টের স্লাব ঢালাই এক চিলতে রাস্তা। যানবাহনের আনাগোনাও ছিল সীমিত। ওই সময় মানুষের আয়-রোজগারও ছিল খুব অল্প; দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের সংখ্যা ছিল অগুনতি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি সেনারা প্রত্যন্ত এই বিত্তিপাড়ায় টর্চার ক্যাম্প বানায়। সেই সেনাছাউনির চৌহদ্দি ঘিরে শত রোমহষর্ক নৃশংসতা, হৃদয় মোচড়ানো কত আর্তনাদ যে নিঃশব্দে আজও গুমরে কাঁদে, সেই খতিয়ান আলোয় এসেছে সামান্যই।
বিত্তিপাড়ার গণকবরে শায়িত শত মানুষের ক্ষয়িষ্ণু করোটিগুলো যেন মুক্তিযুদ্ধের অকথিত, অব্যক্ত উপাখ্যান হয়ে মাটি চাপা পড়ে আছে। ওই হতভাগ্যরা যেন আজও অভিশাপে সিক্ত করছে অকৃতজ্ঞ স্বজনদের। একাত্তরে বিত্তিপাড়ার পাকিস্তানি সেনাছাউনিটি ছিল এই এলাকার অন্যতম এক নির্যাতন ও গণহত্যাযজ্ঞের কেন্দ্র। সড়ক ও রেল পথে উত্তর-দক্ষিণ বঙ্গের সংযোগ রক্ষার কেন্দ্র হওয়ায় বিত্তিপাড়া অতিক্রমকারী যানবাহন থামিয়ে হতভাগ্য নারী-পুরুষদের নামিয়ে নেয়া হতো। ক্যাম্পে নিয়ে তাদের ওপর চালানো হতো পাশবিক নির্যাতন এবং হত্যা করে লাশ পুঁতে রাখা হতো আশপাশে। কিংবা ফেলে দেয়া হতো পুকুর ও ডোবা নালায়। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাস বিত্তিপাড়ায় চলেছে নির্বিচার গণহত্যাযজ্ঞ; যাতে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা নিরূপণ অসম্ভব।
এই বাজারে সড়কের কোনায় চা দোকানের পসরা সাজিয়েছেন প্রবীণ দোকানি আবজাল হোসেন। সড়ক বিভগের উচ্ছেদ আতঙ্কে দোকানের পাশে বসিয়েছেন কাস্টমারদের বসার অস্থায়ী ছোট্ট বাঁশের মাচান। চা দিতে বলে এখানকার গণকবর সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি অবাক চোখে তাকালেন। পরে চা বানাতে বানাতে স্বাভাবিক হলেন একসময়। কাজের ফাঁকে জানালেন, বিত্তিপাড়া বাজার এবং এর আশপাশের পুরো এলাকাই বলতে গেলে গণকবর। স্বাধীনতার পর এখানে একটা দুটো করে বাড়িঘর তৈরি হতে থাকে। যেখানেই খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে, সেখান থেকেই উঠে এসেছে মানুষের হাড়গোড়, মাথার খুলি; পচে যাওয়া নানা উপকরণ। বিত্তিপাড়া বাজারে ওয়াকেবহাল যাকেই জিজ্ঞেস করা হয়, সেই বলেন একই কথা। আবজাল জানান, এখানকার সব চাইতে বড় গণকবর- যেখানে শত শত মানুষকে মাটিচাপা দেয়া হয়েছিল; তা ২-৩ বছর আগেও ঝোপঝাড় হয়ে পড়েছিল। দীর্ঘদিন কেউ খোঁজখবর না রাখায় গত কয়েক বছর থেকে সেখানে চাষবাস হচ্ছে। আবজালের মতে, ওই জায়গা খোঁড়া হলে কী পরিমাণ কঙ্কাল উঠবে তা আল্লাহই মালুম। এখানকার একটি প্রায় শতবর্ষী গভীর পুকুর যেখানে এখনও কেউ ভয়ে মাছ ধরতে উৎসাহী হন না। কারণ একটাই; একাত্তরে অগুনতি মানুষ হত্যার পর ফেলে দেয়া হতো ওই পুকুরে।
বিত্তিপাড়া বাজারের প্রাচীন বাসিন্দা সবদুল ইসলাম জানান, প্রায় ২৫ বছর আগে তাদের পৈতৃক বাড়ি সংস্কার করতে মাটি খুঁড়লে ২০-২৫টি মাথার খুলি, হাড়গোড় উঠে আসে। তিনি বলেন, খুলির সঙ্গে লেগে থাকা দাঁতগুলো ছিল একেবারে অবিকৃত ও চকচকে। এ থেকে ধারণা হয়, ওগুলো সবই ছিল তরুণ-যুবকদের কঙ্কাল। সবদুল আরও বলেন, বছর সতের আগে একইভাবে তাদের বসতবাড়ি থেকে আরও বেশ কয়েকটি মাথার খুলি উঠে এসেছিল। স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধের সময় লন্ডনে গঠিত বাংলাদেশ ফান্ডের প্রধান উদ্যোক্তা ও ট্রেজারার ব্রিটিশ এমপি জন ষ্টোনহাউজ গণহত্যার পরিধি খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। জানা যায়, কুষ্টিয়ার তৎকালীন এমপি ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামের সহায়তায় ষ্টোনহাউজ বিত্তিপাড়া বধ্যভূমি থেকে দুই পিকআপ ভর্তি নরকঙ্কাল সংগ্রহ করেছিলেন। এই ঘটনা বিত্তিপাড়ায় পাকিস্তানি নরপশুদের বাছবিচারহীন বিভৎস মানব নিধনের অকাট্য প্রমাণ বহন করে। বিত্তিপাড়ার শহীদদের স্মরণে ২০১২ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কুষ্টিয়া জেলা ইউনিট কমান্ড এখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেছিল।
কিন্তু এর উদ্যোক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধারা এখন প্রায় সবাই বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। ফলে ইচ্ছা থাকলেও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারি না থাকায় তা ক্রমেই বিনষ্টের পথে। ইত্যবসরে, কুষ্টিয়া সদর উপজেলাধীন আব্দালপুর ইউনিয়নের পিয়ারপুরে শায়িত ৪ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সহযোদ্ধা পাবনার বেড়া উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা পিয়ারপুরে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। জানা যায়, পিয়ারপুর যুদ্ধে আহত তাদের আরও ৭ সহযোদ্ধা শত্রুর হাতে ধরা পড়লে বিত্তিপাড়া ক্যাম্পে এনে তাদের পৈশাচিকভাবে হত্যা ও স্থানীয় গণকবরে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিত্তিপাড়ার বধ্যভূমি ও গণকবর স্থায়ী সংরক্ষণ এবং একটি পূর্ণাঙ্গ স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্স নির্মাণের দাবি করে আসছেন। এ ব্যাপারে তাদের প্রতিনিধি গত বছর তথ্য-উপাত্তের সন্ধানে পিয়ারপুর ও বিত্তিপাড়া এসেছিলেন; এবারও আরেকবার ঘুরে গেছেন।
জানা গেছে, তাদের আবেদনক্রমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সারাদেশের মতোই পিয়ারপুর ও বিত্তিপাড়ার জন্য দুটি প্রকল্প প্রস্তাব আহ্বান করেছেন। যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কুষ্টিয়ার চেনাজানা বীর মুক্তিযোদ্ধা বন্ধুরা এবং জেলা ও সদর উপজেলা প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতায় প্রকল্প দুটির জন্য প্রয়োজনীয় জমি সংস্থানে অগ্রগতি হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নে সহসাই অগ্রসর হতে পারবেন বলে প্রত্যাশা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এই প্রতিনিধির।
[লেখক: সাংবাদিক]
বশীর আহমেদ
বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২
কুষ্টিয়া জেলা সদর থেকে অল্প দূরে জাতীয় মহাসড়কের পাশে অনেক পুরনো বাস স্টপেজ ও বাজার বিত্তিপাড়া। একসময় কেবল স্থানীয় মানুষদের চাহিদানির্ভর বিত্তিপাড়া বাজার সময় বদলের সঙ্গে এখন জমজমাট ব্যবসাকেন্দ্র। সাপ্তাহিক হাটবাজারে এলাকায় উৎপাদিত হরেকরকম কৃষিপণ্যের বিকিকিনিতে সরগরম হয় বাজারটি। আধুনিক জীবনের যাবতীয় উপকরণ জোগান দেয়ার অসংখ্য প্রতিষ্ঠান এখন গড়ে উঠেছে বিত্তিপাড়ায়। পঞ্চাশ বছর আগে পরিস্থিতি এমন ছিল না। হাতেগোনা কয়েকটি মুদি দোকান আর কিছু ঝুপড়ি ঘরের চা স্টল তাদের অনিয়মিত খদ্দের নিয়েই সন্তুষ্ট থেকেছেন। বাজারসংলগ্ন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ সড়ক ছিল তখন খুবই সংকীর্ণ; সিমেন্টের স্লাব ঢালাই এক চিলতে রাস্তা। যানবাহনের আনাগোনাও ছিল সীমিত। ওই সময় মানুষের আয়-রোজগারও ছিল খুব অল্প; দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের সংখ্যা ছিল অগুনতি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি সেনারা প্রত্যন্ত এই বিত্তিপাড়ায় টর্চার ক্যাম্প বানায়। সেই সেনাছাউনির চৌহদ্দি ঘিরে শত রোমহষর্ক নৃশংসতা, হৃদয় মোচড়ানো কত আর্তনাদ যে নিঃশব্দে আজও গুমরে কাঁদে, সেই খতিয়ান আলোয় এসেছে সামান্যই।
বিত্তিপাড়ার গণকবরে শায়িত শত মানুষের ক্ষয়িষ্ণু করোটিগুলো যেন মুক্তিযুদ্ধের অকথিত, অব্যক্ত উপাখ্যান হয়ে মাটি চাপা পড়ে আছে। ওই হতভাগ্যরা যেন আজও অভিশাপে সিক্ত করছে অকৃতজ্ঞ স্বজনদের। একাত্তরে বিত্তিপাড়ার পাকিস্তানি সেনাছাউনিটি ছিল এই এলাকার অন্যতম এক নির্যাতন ও গণহত্যাযজ্ঞের কেন্দ্র। সড়ক ও রেল পথে উত্তর-দক্ষিণ বঙ্গের সংযোগ রক্ষার কেন্দ্র হওয়ায় বিত্তিপাড়া অতিক্রমকারী যানবাহন থামিয়ে হতভাগ্য নারী-পুরুষদের নামিয়ে নেয়া হতো। ক্যাম্পে নিয়ে তাদের ওপর চালানো হতো পাশবিক নির্যাতন এবং হত্যা করে লাশ পুঁতে রাখা হতো আশপাশে। কিংবা ফেলে দেয়া হতো পুকুর ও ডোবা নালায়। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাস বিত্তিপাড়ায় চলেছে নির্বিচার গণহত্যাযজ্ঞ; যাতে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা নিরূপণ অসম্ভব।
এই বাজারে সড়কের কোনায় চা দোকানের পসরা সাজিয়েছেন প্রবীণ দোকানি আবজাল হোসেন। সড়ক বিভগের উচ্ছেদ আতঙ্কে দোকানের পাশে বসিয়েছেন কাস্টমারদের বসার অস্থায়ী ছোট্ট বাঁশের মাচান। চা দিতে বলে এখানকার গণকবর সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি অবাক চোখে তাকালেন। পরে চা বানাতে বানাতে স্বাভাবিক হলেন একসময়। কাজের ফাঁকে জানালেন, বিত্তিপাড়া বাজার এবং এর আশপাশের পুরো এলাকাই বলতে গেলে গণকবর। স্বাধীনতার পর এখানে একটা দুটো করে বাড়িঘর তৈরি হতে থাকে। যেখানেই খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে, সেখান থেকেই উঠে এসেছে মানুষের হাড়গোড়, মাথার খুলি; পচে যাওয়া নানা উপকরণ। বিত্তিপাড়া বাজারে ওয়াকেবহাল যাকেই জিজ্ঞেস করা হয়, সেই বলেন একই কথা। আবজাল জানান, এখানকার সব চাইতে বড় গণকবর- যেখানে শত শত মানুষকে মাটিচাপা দেয়া হয়েছিল; তা ২-৩ বছর আগেও ঝোপঝাড় হয়ে পড়েছিল। দীর্ঘদিন কেউ খোঁজখবর না রাখায় গত কয়েক বছর থেকে সেখানে চাষবাস হচ্ছে। আবজালের মতে, ওই জায়গা খোঁড়া হলে কী পরিমাণ কঙ্কাল উঠবে তা আল্লাহই মালুম। এখানকার একটি প্রায় শতবর্ষী গভীর পুকুর যেখানে এখনও কেউ ভয়ে মাছ ধরতে উৎসাহী হন না। কারণ একটাই; একাত্তরে অগুনতি মানুষ হত্যার পর ফেলে দেয়া হতো ওই পুকুরে।
বিত্তিপাড়া বাজারের প্রাচীন বাসিন্দা সবদুল ইসলাম জানান, প্রায় ২৫ বছর আগে তাদের পৈতৃক বাড়ি সংস্কার করতে মাটি খুঁড়লে ২০-২৫টি মাথার খুলি, হাড়গোড় উঠে আসে। তিনি বলেন, খুলির সঙ্গে লেগে থাকা দাঁতগুলো ছিল একেবারে অবিকৃত ও চকচকে। এ থেকে ধারণা হয়, ওগুলো সবই ছিল তরুণ-যুবকদের কঙ্কাল। সবদুল আরও বলেন, বছর সতের আগে একইভাবে তাদের বসতবাড়ি থেকে আরও বেশ কয়েকটি মাথার খুলি উঠে এসেছিল। স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধের সময় লন্ডনে গঠিত বাংলাদেশ ফান্ডের প্রধান উদ্যোক্তা ও ট্রেজারার ব্রিটিশ এমপি জন ষ্টোনহাউজ গণহত্যার পরিধি খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। জানা যায়, কুষ্টিয়ার তৎকালীন এমপি ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামের সহায়তায় ষ্টোনহাউজ বিত্তিপাড়া বধ্যভূমি থেকে দুই পিকআপ ভর্তি নরকঙ্কাল সংগ্রহ করেছিলেন। এই ঘটনা বিত্তিপাড়ায় পাকিস্তানি নরপশুদের বাছবিচারহীন বিভৎস মানব নিধনের অকাট্য প্রমাণ বহন করে। বিত্তিপাড়ার শহীদদের স্মরণে ২০১২ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কুষ্টিয়া জেলা ইউনিট কমান্ড এখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেছিল।
কিন্তু এর উদ্যোক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধারা এখন প্রায় সবাই বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। ফলে ইচ্ছা থাকলেও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারি না থাকায় তা ক্রমেই বিনষ্টের পথে। ইত্যবসরে, কুষ্টিয়া সদর উপজেলাধীন আব্দালপুর ইউনিয়নের পিয়ারপুরে শায়িত ৪ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সহযোদ্ধা পাবনার বেড়া উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা পিয়ারপুরে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। জানা যায়, পিয়ারপুর যুদ্ধে আহত তাদের আরও ৭ সহযোদ্ধা শত্রুর হাতে ধরা পড়লে বিত্তিপাড়া ক্যাম্পে এনে তাদের পৈশাচিকভাবে হত্যা ও স্থানীয় গণকবরে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিত্তিপাড়ার বধ্যভূমি ও গণকবর স্থায়ী সংরক্ষণ এবং একটি পূর্ণাঙ্গ স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্স নির্মাণের দাবি করে আসছেন। এ ব্যাপারে তাদের প্রতিনিধি গত বছর তথ্য-উপাত্তের সন্ধানে পিয়ারপুর ও বিত্তিপাড়া এসেছিলেন; এবারও আরেকবার ঘুরে গেছেন।
জানা গেছে, তাদের আবেদনক্রমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সারাদেশের মতোই পিয়ারপুর ও বিত্তিপাড়ার জন্য দুটি প্রকল্প প্রস্তাব আহ্বান করেছেন। যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কুষ্টিয়ার চেনাজানা বীর মুক্তিযোদ্ধা বন্ধুরা এবং জেলা ও সদর উপজেলা প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতায় প্রকল্প দুটির জন্য প্রয়োজনীয় জমি সংস্থানে অগ্রগতি হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নে সহসাই অগ্রসর হতে পারবেন বলে প্রত্যাশা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এই প্রতিনিধির।
[লেখক: সাংবাদিক]