alt

উপ-সম্পাদকীয়

ফাইভ-জি : ডিজিটাল শিল্পযুগের মহাসড়ক

মোস্তাফা জব্বার

: সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩

দুই ॥

পাঠকের সুবিধার্থে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি অধ্যাপক ড. এম মেসবাহউদ্দিন সরকারের এ বিষয়ে এক গবেষণা প্রতিবেদনের অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো। ‘মুঠোফোনের পঞ্চম জেনারেশন ইন্টারনেটকে সংক্ষেপে ডাকা হয় ফাইভ-জি। বর্তমানে চলমান ফোর-জি এলটিই (লং টার্ম ইভল্যুশন) নেটওয়ার্কের আপগ্রেড ভার্সনই হচ্ছে ফাইভ-জি। এলটিই বলতে মুঠোফোন এবং ডাটা টার্মিনালগুলোর উচ্চগতির তথ্য আদান-প্রদানে বেতার যোগাযোগকে বোঝায়। এ প্রযুক্তিতে ল্যাটেন্সি কম হওয়ায় বাড়বে নেটওয়ার্ক রেসপন্স।

ল্যাটেন্সি বলতে কোনো সাইট অ্যাকসেস করা এবং তার রেসপন্স করার মধ্যবর্তী সময়কে বোঝায়। গতির এই হিসাব প্রথম শুরু হয় ওয়ানজি দিয়ে ১৯৭৯ সালে এনালগ পদ্ধতির মাধ্যমে, যেখানে দুটি ডিভাইসের মধ্যে শুধু কল করা যেত। এরপর আসে টু-জি (১৯৯১ সালে)। এখানে দুটি মুঠোফোন ডিভাইসের মধ্যে কল করার পাশাপাশি টেক্সট মেসেজ পাঠানো সম্ভব হতো। তারপর আসে থ্রি-জি (১৯৯৮ সালে), যা টেক্সট ম্যাসেজ, কল, ইন্টারনেট ইত্যাদির সঙ্গে ব্রাউজ করার সুবিধা ছিল। থ্রি-জির সব সুবিধাসহ ফোর-জি আসে ২০১০ সালে। এতে সহজেই একসঙ্গে অনেকগুলো ডিভাইস কানেক্ট করা এবং যেকোনো বড় সাইজের ফাইল শেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হয়। পরে ফোর-জিকে আরও দ্রুত করার জন্য এলটিই প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয় এবং ল্যাপটপ, স্মার্টফোন বা অন্যান্য মুঠোফোন যন্ত্রে মুঠোফোন ব্রডব্যান্ড, মুঠোফোন আলট্রা ব্রডব্যান্ড, ইন্টারনেট সেবা অন্তর্ভুক্ত হয়।

ফাইভ-জি প্রযুক্তিতে অনেক ডিভাইসকে একত্রে কানেকট (ইন্টারনেট অফ থিংস এর মতো) করে রাখার জন্য বিশেষ প্রযুক্তিসহ এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেখানে বেশি ব্যান্ডউইথ কন্ট্রোল করার ক্ষমতা রাখে। থ্রি-জি বা ফোরজির মতো ফাইভ-জি প্রযুক্তি শুধু মুঠোফোন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নয় বরং ওয়াইফাই এর মতো যেকোনো ডিভাইসেও থাকতে পারবে, ভার্চুয়াল মাধ্যমে সবাইকে সংযুক্ত করতে সক্ষম হবে এবং মেশিন, অবজেক্ট ও ডিভাইসগুলোকে একই সূত্রে গাঁথবে। এমনকি পারসোনাল কম্পিউটারেও একটি চিপ লাগানো যাবে। ফলে তথ্য আদান-প্রদান, ভিডিও কল, কল কনফারেন্স এবং ইন্টারনেটভিত্তিক সেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

ফাইভ-জি সহজলভ্যতার কারণে প্রচলিত অনলাইনভিত্তিক সব কার্যক্রম আরও দক্ষ ও গতিশীল হবে, ফলে কাস্টমার সার্ভিস হয়ে উঠবে আরও সন্তোষজনক। এক কথায় বলা যায়, গোটা সমাজটাকেই পরিবর্তন করে দেবে। এত সুবিধা নিয়ে প্রথম যে দেশে ফাইভ-জি টেকনোলজি চালু করা হয়েছিল, তা হলো দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০১৯ সালে।

লোকেশন ট্র্যাকিং করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হবে না, মিলি সেকেন্ডের মধ্যে ফলাফল দেবে। এমনকি উচ্চ ক্ষমতার এই মুঠোফোন ইন্টারনেটের মাধ্যমে রোবট, সেন্সর বা অন্যান্য প্রযুক্তি পণ্যেও ব্যবহৃত হবে। এর প্রভাব দেখা যাবে সব ক্ষেত্রে আমাদের জীবনে, কর্মক্ষেত্রে এমনকি খেলাধুলায়ও। ফাইভ-জি সহজলভ্যতার কারণে প্রচলিত অনলাইনভিত্তিক সব কার্যক্রম আরও দক্ষ ও গতিশীল হবে, ফলে কাস্টমার সার্ভিস হয়ে উঠবে আরও সন্তোষজনক। এক কথায় বলা যায়, গোটা সমাজটাকেই পরিবর্তন করে দেবে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এতে থাকবে মাত্র ১ মিলি সেকেন্ডের ল্যাটেন্সি এবং এটি ৯০ শতাংশ কম এনার্জি ব্যয় করে কাজ করবে। ডেটা ট্রান্সমিশনে সাধারণত ৩ দশমিক ৫ থেকে ২৬ গিগাহার্টজের মতো উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডের অনেক ক্ষমতা থাকে। কিন্তু স্বল্প তরঙ্গ দৈর্র্ঘ্যরে কারণে তাদের আওতা কম থাকে, ফলে সামনে কোনো বাধা পেয়ে আটকে যায়।

ফাইভ-জির প্রযুক্তিতে এ সমস্যা একেবারেই থাকবে না। কারণ, এটি এমন একটি নতুন রেডিও প্রযুক্তি, যা রেডিও তরঙ্গের ব্যবহার আরও বেশি নিশ্চিত করবে এবং একই সময় একই স্থানে বেশি মুঠোফোন ইন্টারনেটের সুবিধা নিতে পারবে। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ করে, অনলাইন এডুকেশনে এক যুগান্তকারী বিপ্লব নিয়ে আসবে। স্বাস্থ্য খাতেও ব্যাপক রদবদল ঘটাবে।

সর্বত্র ফাইভ-জি চালু হলে দূরে থেকেও ঘরের লাইট, ফ্যান, এসি ও কৃষিক্ষেত্রে পানির পাম্প চালু বা বন্ধ, পুকুরে মৎস্য চাষ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে (ইন্টারনেট অফ থিংসের মতো)। ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সেবা চালু হলে টিভি চ্যানেলগুলো দেখার জন্য ডিশের প্রয়োজন হবে না।

বডি ফিটনেস ডিভাইস নিজের শরীরের সঙ্গে ব্যবহার করে বডি থেকে সিগন্যাল পাঠাতে মিলি সেকেন্ড সময় লাগবে। গাড়ির লোকেশন, স্পিড, ডেস্টিনেশনসহ ট্রাফিকের সব ইনফরমেশন হাতের মুঠোয় চলে আসবে ফলে ড্রাইভিং, গাড়ি দুর্ঘটনা কমাতে সহায়ক হবে। গেমিং এক্সপেরিয়েন্সকে আরও সুখময় করে তুলবে। বিশেষ করে, অনলাইন গেমগুলোকে সবার কাছে অবাধ করে তুলবে ফলে মুঠোফোন গেমিং ইন্ডাস্ট্রির প্রচুর বিস্তার ঘটবে।

আবার একটি গেমিং কনসোল দিয়ে একসঙ্গে একাধিক টিভি চালানো যাবে অনায়াসেই। ঘরের ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন ইত্যাদি প্রযুক্তির আওতায় থাকবে। ফলে জনপ্রিয় হবে স্মার্ট হোম, স্মার্ট সিটি, সেলফ ড্রাইভিং কার, হেলথ মনিটরিং ডিভাইস আর অগমেন্টেড রিয়েলিটির মতো ডিভাইসগুলো। চোখের পলক পড়ার পূর্বেই কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। অর্থাৎ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বিকাশ ঘটবে ফাইভ-জির কল্যাণে অনায়াসেই। তবে এসব সুবিধা পেতে হলে বিদ্যমান টাওয়ারগুলো ফাইভ-জিতে রূপান্তর করতে হবে এবং গ্রাহকদের লাগবে সেই উপযোগী হ্যান্ডসেট। আর দ্রুতগতির বিষয়টি নির্ভর করবে কোনো স্পেকট্রাম ব্যান্ডে ফাইভ-জি ব্যবহার করা হবে এবং মুঠোফোন কোম্পানিগুলো ট্রান্সমিটারের পেছনে কতটা বিনিয়োগ করবে। কর্তৃপক্ষকেও উদ্যোগ নিতে হবে ফাইভ-জি টেকনোলজির উপযোগী সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার প্রটোকল নির্ধারণ করা।’

ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল সংযোগ প্রতিষ্ঠায় ডিজিটাল অবকাঠামো সম্প্রসারণে ২০১৮ সালের পর গত তিন বছরে অভাবনীয় পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ফোর-জি যুগে পদার্পণ করে। ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ফোর-জি বেতার তরঙ্গ নিলাম এবং ২০ ফেব্রুয়ারি মোবাইল অপারেটরদের ফোর-জি লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে ফোর-জি সেবা চালু করা হয়। মহাকাশে বাংলাদেশের পদচারণার প্রথম সোপান ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ ১২ মে ২০১৮ তারিখ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের অভিযাত্রা শুরু হয়েছে। কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের পর দেশের তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে টেলিযোগাযোগ খাতে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয় সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার বা এসএমপি নীতিমালা। মোবাইল ফোনের নিরবচ্ছিন্ন গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন নীতিমালার পাশাপাশি সর্বশেষ ২০১৮ সালের পর ২০২১ সালের ৮ মার্চ নিলামে তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ ফাইভ-জি তরঙ্গ নিলামে বরাদ্দ দেয়া হয়।

ফাইভ-জি সহজলভ্যতার কারণে প্রচলিত অনলাইনভিত্তিক সব কার্যক্রম আরও দক্ষ ও গতিশীল হবে, ফলে কাস্টমার সার্ভিস হয়ে উঠবে আরও সন্তোষজনক

নিলামে ২ দশমিক ৩ গিগাহার্টজ (২ হাজার ৩০০ মেগাহার্টজ) ব্যান্ডে ১০টি ব্লকে ১০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ এবং ২ দশমিক ৬ গিগাহার্টজ (২ হাজার ৬০০ মেগাহার্টজ) ব্যান্ডে ১২টি ব্লকে ১২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নিলাম হয়েছে। ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি উদ্বোধন করা হয়েছে আইএমইআই ডাটা সেন্টার। রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা বিধানে অনিবন্ধিত সিমকার্ড বিক্রি, অনুমোদনহীন মোবাইল হ্যান্ডসেট বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্বভার গ্রহণকালে বাংলাদেশের টেলিডেনসিটি ছিল ৩০ শতাংশ। বর্তমানে এই হার প্রায় শতভাগে উন্নীত হয়েছে। ২০০৮ সালে যেখানে মোবাইল গ্রাহক ছিল ০৪ কোটি ৪৬ লাখ, বর্তমানে তা ১৮ কোটি অতিক্রম করেছে। এ সময়ে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল মাত্র ৪০ লাখ, বর্তমানে এ সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৯ লাখ। ব্যান্ডউইডথের ব্যবহার যেখানে ছিল ৭ দশমিক ৫ জিবিপিএস বর্তমানে তা ৩৪০০ জিবিপিএস অতিক্রম করেছে। ২০০৮ সালে টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত লাইসেন্স ছিল ৬০৮টি, বর্তমানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এ সংখ্যা ৩৩৯৬টি। ২০০৮ সালে এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইডথ চার্জ ছিলো ২৭০০০ টাকা; যা ২০১৮ সালের পর সর্বনিম্ন ১৮০ টাকা নির্ধারিত হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে প্রেরণাদায়ী এক দর্শন। এই কর্মসূচি দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাওয়ার সোপান। ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন, উপযোগী মানবসম্পদ সৃষ্টি, ডিজিটাল প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণের সঙ্গে জনগণের সেতুবন্ধন তৈরি সরকারের লক্ষ্য।

ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির গৌরবোজ্জ্বল আলোকছটা গত সাড়ে ১৩ বছরে বাংলার গ-ি ছাড়িয়ে ইংল্যান্ড, ভারত, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের দেশে দেশে উদ্ভাসিত হয়েছে, অনুকরণীয় হচ্ছে। প্রজ্ঞাবান রাজনীতিক শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কর্মসূচি দিনবদলের সনদ ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি পাল্টে দিয়েছে চিরচেনা বাংলাদেশ- অভাবনীয় রূপান্তর ঘটেছে মানুষের জীবনযাত্রার। অনাহার, অর্ধাহার, দারিদ্র্য এবং অনুন্নত যোগাযোগসহ অভাব আর অপ্রতুলতার মতো শব্দগুলো আজ হারিয়ে যেতে বসেছে ৫৫ হাজার বর্গমাইলের এই জনপদ থেকে। সুদক্ষ কাণ্ডারির মমতাময়ী হাতের ছোঁয়ায় চিরায়ত দুখিনী বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল- ডিজিটাল দুনিয়ার অহংকার। জাতি হিসেবে আমরা ধন্য। ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রা থেকে শুরু করে ডিজিটাল অবকাঠামো সম্প্রসারণের ফলে ডিজিটাল সেবা দেশের প্রতিটি অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের হাতে মুঠোয় পৌঁছে গেছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়-এর পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা না থাকলে এ কাজে সফল হওয়া সম্ভব ছিল না।

আসুন ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন সফল করি০ উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াই।

[লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান; সাংবাদিক, বিজয় কিবোর্ড ও সফটওয়্যার এবং বিজয় ডিজিটাল শিক্ষা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক, ডিজিটাল প্রযুক্তির অনেক ট্রেডমার্ক, প্যাটেন্ট ও কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী]

আদিবাসীদের মাতৃভাষা রক্ষার লড়াই

মালাকারটোলা গণহত্যা : দুঃসহ স্মৃতি

ছবি

স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা

ছবি

বঙ্গবন্ধুর দর্শন থেকে উৎসারিত স্বাধীনতা ও মুক্তির চেতনা

ছবি

বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা

সিপিআই (এম)-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার নেতৃত্বের মূল্যায়ন

ছবি

অরক্ষিত নন ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ব্যাংক ও মানুষের আস্থা

চাই ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাবার

ছবি

তিতাস অববাহিকার বিপন্ন কৃষিজমিন

প্রিয়েমশন মামলা সম্পর্কিত আইনি সমস্যা ও সমাধান

ছবি

স্মরণ : মাস্টার’দা সূর্যসেন

আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও পরাশক্তিগুলোর ভূমিকা

খাদ্য পর্যটন : নবদিগন্তের হাতছানি

ধূপখোলা মাঠ রক্ষা করতে হবে

হজ বাণিজ্যিক পণ্য নয়

বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব

পশ্চিম বাংলায় নির্বাচন হোক রক্তপাতহীন

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কালক্ষেপণ নয়

ছবি

কৃষিজমি সুরক্ষায় সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন

ঢালচর বনের ঢাল কারা?

গাজীপুরের সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ

ছবি

আদানির বিদ্যুৎ নিয়ে বিতর্ক

ছবি

প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার নৈহাটি মডেল

ছবি

কে কিভাবে দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানবে?

প্লাস্টিক দূষণ : উদ্বিগ্ন বিশ্ব

ছবি

কাঁদে নদ-নদী

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

বাঁকখালী নদীর মুক্তি ও ন্যায়বিচার

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও আদিবাসী

আগুন আর ভূমিকম্পের বিপদ

নারীর ক্ষমতায়ন ও টেকসই উন্নয়ন

নগর স্থবির, গ্রামে শুরু কর্মচাঞ্চল্য

ছবি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন

বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব

নারীর কর্মদক্ষতায় আইসিটি ও স্টেম শিক্ষা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

ফাইভ-জি : ডিজিটাল শিল্পযুগের মহাসড়ক

মোস্তাফা জব্বার

সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩

দুই ॥

পাঠকের সুবিধার্থে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি অধ্যাপক ড. এম মেসবাহউদ্দিন সরকারের এ বিষয়ে এক গবেষণা প্রতিবেদনের অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো। ‘মুঠোফোনের পঞ্চম জেনারেশন ইন্টারনেটকে সংক্ষেপে ডাকা হয় ফাইভ-জি। বর্তমানে চলমান ফোর-জি এলটিই (লং টার্ম ইভল্যুশন) নেটওয়ার্কের আপগ্রেড ভার্সনই হচ্ছে ফাইভ-জি। এলটিই বলতে মুঠোফোন এবং ডাটা টার্মিনালগুলোর উচ্চগতির তথ্য আদান-প্রদানে বেতার যোগাযোগকে বোঝায়। এ প্রযুক্তিতে ল্যাটেন্সি কম হওয়ায় বাড়বে নেটওয়ার্ক রেসপন্স।

ল্যাটেন্সি বলতে কোনো সাইট অ্যাকসেস করা এবং তার রেসপন্স করার মধ্যবর্তী সময়কে বোঝায়। গতির এই হিসাব প্রথম শুরু হয় ওয়ানজি দিয়ে ১৯৭৯ সালে এনালগ পদ্ধতির মাধ্যমে, যেখানে দুটি ডিভাইসের মধ্যে শুধু কল করা যেত। এরপর আসে টু-জি (১৯৯১ সালে)। এখানে দুটি মুঠোফোন ডিভাইসের মধ্যে কল করার পাশাপাশি টেক্সট মেসেজ পাঠানো সম্ভব হতো। তারপর আসে থ্রি-জি (১৯৯৮ সালে), যা টেক্সট ম্যাসেজ, কল, ইন্টারনেট ইত্যাদির সঙ্গে ব্রাউজ করার সুবিধা ছিল। থ্রি-জির সব সুবিধাসহ ফোর-জি আসে ২০১০ সালে। এতে সহজেই একসঙ্গে অনেকগুলো ডিভাইস কানেক্ট করা এবং যেকোনো বড় সাইজের ফাইল শেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হয়। পরে ফোর-জিকে আরও দ্রুত করার জন্য এলটিই প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয় এবং ল্যাপটপ, স্মার্টফোন বা অন্যান্য মুঠোফোন যন্ত্রে মুঠোফোন ব্রডব্যান্ড, মুঠোফোন আলট্রা ব্রডব্যান্ড, ইন্টারনেট সেবা অন্তর্ভুক্ত হয়।

ফাইভ-জি প্রযুক্তিতে অনেক ডিভাইসকে একত্রে কানেকট (ইন্টারনেট অফ থিংস এর মতো) করে রাখার জন্য বিশেষ প্রযুক্তিসহ এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেখানে বেশি ব্যান্ডউইথ কন্ট্রোল করার ক্ষমতা রাখে। থ্রি-জি বা ফোরজির মতো ফাইভ-জি প্রযুক্তি শুধু মুঠোফোন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নয় বরং ওয়াইফাই এর মতো যেকোনো ডিভাইসেও থাকতে পারবে, ভার্চুয়াল মাধ্যমে সবাইকে সংযুক্ত করতে সক্ষম হবে এবং মেশিন, অবজেক্ট ও ডিভাইসগুলোকে একই সূত্রে গাঁথবে। এমনকি পারসোনাল কম্পিউটারেও একটি চিপ লাগানো যাবে। ফলে তথ্য আদান-প্রদান, ভিডিও কল, কল কনফারেন্স এবং ইন্টারনেটভিত্তিক সেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

ফাইভ-জি সহজলভ্যতার কারণে প্রচলিত অনলাইনভিত্তিক সব কার্যক্রম আরও দক্ষ ও গতিশীল হবে, ফলে কাস্টমার সার্ভিস হয়ে উঠবে আরও সন্তোষজনক। এক কথায় বলা যায়, গোটা সমাজটাকেই পরিবর্তন করে দেবে। এত সুবিধা নিয়ে প্রথম যে দেশে ফাইভ-জি টেকনোলজি চালু করা হয়েছিল, তা হলো দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০১৯ সালে।

লোকেশন ট্র্যাকিং করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হবে না, মিলি সেকেন্ডের মধ্যে ফলাফল দেবে। এমনকি উচ্চ ক্ষমতার এই মুঠোফোন ইন্টারনেটের মাধ্যমে রোবট, সেন্সর বা অন্যান্য প্রযুক্তি পণ্যেও ব্যবহৃত হবে। এর প্রভাব দেখা যাবে সব ক্ষেত্রে আমাদের জীবনে, কর্মক্ষেত্রে এমনকি খেলাধুলায়ও। ফাইভ-জি সহজলভ্যতার কারণে প্রচলিত অনলাইনভিত্তিক সব কার্যক্রম আরও দক্ষ ও গতিশীল হবে, ফলে কাস্টমার সার্ভিস হয়ে উঠবে আরও সন্তোষজনক। এক কথায় বলা যায়, গোটা সমাজটাকেই পরিবর্তন করে দেবে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এতে থাকবে মাত্র ১ মিলি সেকেন্ডের ল্যাটেন্সি এবং এটি ৯০ শতাংশ কম এনার্জি ব্যয় করে কাজ করবে। ডেটা ট্রান্সমিশনে সাধারণত ৩ দশমিক ৫ থেকে ২৬ গিগাহার্টজের মতো উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডের অনেক ক্ষমতা থাকে। কিন্তু স্বল্প তরঙ্গ দৈর্র্ঘ্যরে কারণে তাদের আওতা কম থাকে, ফলে সামনে কোনো বাধা পেয়ে আটকে যায়।

ফাইভ-জির প্রযুক্তিতে এ সমস্যা একেবারেই থাকবে না। কারণ, এটি এমন একটি নতুন রেডিও প্রযুক্তি, যা রেডিও তরঙ্গের ব্যবহার আরও বেশি নিশ্চিত করবে এবং একই সময় একই স্থানে বেশি মুঠোফোন ইন্টারনেটের সুবিধা নিতে পারবে। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ করে, অনলাইন এডুকেশনে এক যুগান্তকারী বিপ্লব নিয়ে আসবে। স্বাস্থ্য খাতেও ব্যাপক রদবদল ঘটাবে।

সর্বত্র ফাইভ-জি চালু হলে দূরে থেকেও ঘরের লাইট, ফ্যান, এসি ও কৃষিক্ষেত্রে পানির পাম্প চালু বা বন্ধ, পুকুরে মৎস্য চাষ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে (ইন্টারনেট অফ থিংসের মতো)। ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সেবা চালু হলে টিভি চ্যানেলগুলো দেখার জন্য ডিশের প্রয়োজন হবে না।

বডি ফিটনেস ডিভাইস নিজের শরীরের সঙ্গে ব্যবহার করে বডি থেকে সিগন্যাল পাঠাতে মিলি সেকেন্ড সময় লাগবে। গাড়ির লোকেশন, স্পিড, ডেস্টিনেশনসহ ট্রাফিকের সব ইনফরমেশন হাতের মুঠোয় চলে আসবে ফলে ড্রাইভিং, গাড়ি দুর্ঘটনা কমাতে সহায়ক হবে। গেমিং এক্সপেরিয়েন্সকে আরও সুখময় করে তুলবে। বিশেষ করে, অনলাইন গেমগুলোকে সবার কাছে অবাধ করে তুলবে ফলে মুঠোফোন গেমিং ইন্ডাস্ট্রির প্রচুর বিস্তার ঘটবে।

আবার একটি গেমিং কনসোল দিয়ে একসঙ্গে একাধিক টিভি চালানো যাবে অনায়াসেই। ঘরের ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন ইত্যাদি প্রযুক্তির আওতায় থাকবে। ফলে জনপ্রিয় হবে স্মার্ট হোম, স্মার্ট সিটি, সেলফ ড্রাইভিং কার, হেলথ মনিটরিং ডিভাইস আর অগমেন্টেড রিয়েলিটির মতো ডিভাইসগুলো। চোখের পলক পড়ার পূর্বেই কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। অর্থাৎ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বিকাশ ঘটবে ফাইভ-জির কল্যাণে অনায়াসেই। তবে এসব সুবিধা পেতে হলে বিদ্যমান টাওয়ারগুলো ফাইভ-জিতে রূপান্তর করতে হবে এবং গ্রাহকদের লাগবে সেই উপযোগী হ্যান্ডসেট। আর দ্রুতগতির বিষয়টি নির্ভর করবে কোনো স্পেকট্রাম ব্যান্ডে ফাইভ-জি ব্যবহার করা হবে এবং মুঠোফোন কোম্পানিগুলো ট্রান্সমিটারের পেছনে কতটা বিনিয়োগ করবে। কর্তৃপক্ষকেও উদ্যোগ নিতে হবে ফাইভ-জি টেকনোলজির উপযোগী সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার প্রটোকল নির্ধারণ করা।’

ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল সংযোগ প্রতিষ্ঠায় ডিজিটাল অবকাঠামো সম্প্রসারণে ২০১৮ সালের পর গত তিন বছরে অভাবনীয় পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ফোর-জি যুগে পদার্পণ করে। ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ফোর-জি বেতার তরঙ্গ নিলাম এবং ২০ ফেব্রুয়ারি মোবাইল অপারেটরদের ফোর-জি লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে ফোর-জি সেবা চালু করা হয়। মহাকাশে বাংলাদেশের পদচারণার প্রথম সোপান ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ ১২ মে ২০১৮ তারিখ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের অভিযাত্রা শুরু হয়েছে। কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের পর দেশের তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে টেলিযোগাযোগ খাতে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয় সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার বা এসএমপি নীতিমালা। মোবাইল ফোনের নিরবচ্ছিন্ন গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন নীতিমালার পাশাপাশি সর্বশেষ ২০১৮ সালের পর ২০২১ সালের ৮ মার্চ নিলামে তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ ফাইভ-জি তরঙ্গ নিলামে বরাদ্দ দেয়া হয়।

ফাইভ-জি সহজলভ্যতার কারণে প্রচলিত অনলাইনভিত্তিক সব কার্যক্রম আরও দক্ষ ও গতিশীল হবে, ফলে কাস্টমার সার্ভিস হয়ে উঠবে আরও সন্তোষজনক

নিলামে ২ দশমিক ৩ গিগাহার্টজ (২ হাজার ৩০০ মেগাহার্টজ) ব্যান্ডে ১০টি ব্লকে ১০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ এবং ২ দশমিক ৬ গিগাহার্টজ (২ হাজার ৬০০ মেগাহার্টজ) ব্যান্ডে ১২টি ব্লকে ১২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নিলাম হয়েছে। ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি উদ্বোধন করা হয়েছে আইএমইআই ডাটা সেন্টার। রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা বিধানে অনিবন্ধিত সিমকার্ড বিক্রি, অনুমোদনহীন মোবাইল হ্যান্ডসেট বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্বভার গ্রহণকালে বাংলাদেশের টেলিডেনসিটি ছিল ৩০ শতাংশ। বর্তমানে এই হার প্রায় শতভাগে উন্নীত হয়েছে। ২০০৮ সালে যেখানে মোবাইল গ্রাহক ছিল ০৪ কোটি ৪৬ লাখ, বর্তমানে তা ১৮ কোটি অতিক্রম করেছে। এ সময়ে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল মাত্র ৪০ লাখ, বর্তমানে এ সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৯ লাখ। ব্যান্ডউইডথের ব্যবহার যেখানে ছিল ৭ দশমিক ৫ জিবিপিএস বর্তমানে তা ৩৪০০ জিবিপিএস অতিক্রম করেছে। ২০০৮ সালে টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত লাইসেন্স ছিল ৬০৮টি, বর্তমানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এ সংখ্যা ৩৩৯৬টি। ২০০৮ সালে এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইডথ চার্জ ছিলো ২৭০০০ টাকা; যা ২০১৮ সালের পর সর্বনিম্ন ১৮০ টাকা নির্ধারিত হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে প্রেরণাদায়ী এক দর্শন। এই কর্মসূচি দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাওয়ার সোপান। ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন, উপযোগী মানবসম্পদ সৃষ্টি, ডিজিটাল প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণের সঙ্গে জনগণের সেতুবন্ধন তৈরি সরকারের লক্ষ্য।

ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির গৌরবোজ্জ্বল আলোকছটা গত সাড়ে ১৩ বছরে বাংলার গ-ি ছাড়িয়ে ইংল্যান্ড, ভারত, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের দেশে দেশে উদ্ভাসিত হয়েছে, অনুকরণীয় হচ্ছে। প্রজ্ঞাবান রাজনীতিক শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কর্মসূচি দিনবদলের সনদ ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি পাল্টে দিয়েছে চিরচেনা বাংলাদেশ- অভাবনীয় রূপান্তর ঘটেছে মানুষের জীবনযাত্রার। অনাহার, অর্ধাহার, দারিদ্র্য এবং অনুন্নত যোগাযোগসহ অভাব আর অপ্রতুলতার মতো শব্দগুলো আজ হারিয়ে যেতে বসেছে ৫৫ হাজার বর্গমাইলের এই জনপদ থেকে। সুদক্ষ কাণ্ডারির মমতাময়ী হাতের ছোঁয়ায় চিরায়ত দুখিনী বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল- ডিজিটাল দুনিয়ার অহংকার। জাতি হিসেবে আমরা ধন্য। ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রা থেকে শুরু করে ডিজিটাল অবকাঠামো সম্প্রসারণের ফলে ডিজিটাল সেবা দেশের প্রতিটি অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের হাতে মুঠোয় পৌঁছে গেছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়-এর পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা না থাকলে এ কাজে সফল হওয়া সম্ভব ছিল না।

আসুন ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন সফল করি০ উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াই।

[লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান; সাংবাদিক, বিজয় কিবোর্ড ও সফটওয়্যার এবং বিজয় ডিজিটাল শিক্ষা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক, ডিজিটাল প্রযুক্তির অনেক ট্রেডমার্ক, প্যাটেন্ট ও কপিরাইটের স্বত্বাধিকারী]

back to top