alt

পাঠকের চিঠি

বজ্রপাত থেকে বাঁচতে চাই সচেতনতা

: বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

বজ্রপাত বলতে আকাশের আলোর ঝলকানিকে বোঝায়। এই সময় উক্ত এলাকার বাতাসের প্রসারণ এবং সংকোচনের ফলে আমরা বিকট শব্দ শুনতে পাই। এটি মহান আল্লাহর শক্তি নিদর্শনগুলোর মধ্যেও একটি। প্রকৃতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে বজ্রপাত খুব পরিচিত, সুন্দর, রহস্যময় এবং একই সঙ্গে আতঙ্কের। এলাকাভেদে গ্রামীণ পরিভাষায় এ বজ্রপাতকে ‘বাজ’ কিংবা ‘ঠাডা’ বলা হয়ে থাকে।

লক্ষণীয় বিষয় বজ্রপাতের সময় আগে আলো দেখা যায় এবং পরে শব্দ শোনা যায়! আলো এবং শব্দের বেগের পার্থক্যর কারণে এমনটা দেখা যাই। আলোর বেগ শব্দের বেগের চেয়ে অনেক অনেক বেশি।

সাধারণত দেশে এপ্রিল-মে মাসে বজ্রপাত শুরু হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বেসকারি সংগঠন ‘ডিজাস্টার ফোরাম-এর তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে বজ্রপাতে ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই মাঠে থাকা কৃষক, সাঙে ১৪ শতাংশ বাডড় ফেরার পথে, আর ১৩ শতাংশ গোসল কিংবা মাছ শিকারের সময়। শহরের চেয়ে গ্রামঅঞ্চলে প্রাণহানির সংখ্যা বেশি হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে বায়ুদূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্ব উঞ্চতা বৃদ্ধি, নির্বিচারে বৃক্ষনিধন, কৃষিতে ভারি ধাতব যন্ত্রাংশ ব্যবহারের কারণে বজ্রপাতের দুর্ঘটনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তাই বজ্রপাতকে মোটেও হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক সচেতনতার বিকল্প নাই। আসুন, জেনে নেয়া যাক বজ্রপাতে করণীয় ঃ

এপ্রিল মে মাসে বজ্রপাত বেশি হয়। তাই এ সময় নিরাপদ থাকার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করুন।

আকাশে ঘন কালো মেঘ দেখা দিলে জরুরি প্রয়োজনে রবারের জুতা পড়ে বাইরে বের হতে পারেন। বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা, খোলা মাঠ বা জলাশয়ের অতি নিকটে থাকবেন না।

বজ্রপাতের সময় গাড়ির ভেতরে অবস্থান করলে, গাড়ির ধাতব অংশের সঙ্গে শরীরের সংযোগ ঘটাবেন না। সম্ভব হলে গাড়িটি নিয়ে কোন কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন। যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন।

উঁচু গাছপালা বৈদ্যুতিক খুঁটি, তার, ধাতব খুঁটি, মোবাইল টাওয়ার থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি বা বারান্দায় থাকবেন না। ঘরের ভেতর বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

বজ্রপাতের সময় জরুরি প্রয়োজনে প্লাস্টিকের বা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করুন। বজ্রপাতের সময় শিশুদের খোলা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখুন, নিজেও বিরত থাকুন।

বজ্রপাতের সময় মাছ ধরা বন্ধ রেখে, নৌকার ছাউনির নিচে অবস্থান করুন।

বজ্রপাতে আহতদের চিকিৎসকের মতো সিপিআর দিতে হবে।

খোলা জায়গায় কোন বড় গাছের নিচে অবস্থান করা যাবে না, গাছ থেকে অন্তত ৪ মিটার দূরে থাকতে হবে।

বজ্রপাতের সময় বাড়ির ধাতব কল/টেপ, সিঁড়ির ধাতব রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না।

প্রতিটি ভবনে বজ্র নিরোধক দন্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন।

খোলা স্থানে অনেকে একত্রে থাকাকালীন বজ্রপাত শুরু হলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে দূরে অবস্থান করুন।

কোন বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে অবস্থান করুন।

বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ছিঁড়া তার থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, লাইন থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন।

সরকারের উচিত বজ্রপাতকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে এই ব্যাপারে গবেষণা ও জনসচেতনতা বাড়ানো। বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে পরিবেশ দূষণ রোধ, তালগাছ ও খেজুরগাছ রোপণ, গণমাধ্যমে সতর্কবার্তা ঘনঘন প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা এবং বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র তথা আর্থিং স্থাপনসহ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন মনে করি। বজ্রপাত সম্পর্কে জানা এবং করণীয় বিষয়ে সচেতনতাই পারে বজ্রপাতের হাত থেকে প্রাণহানি কমাতে।

মো. সাইমুন

শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বৈষম্য দূর করতে হবে

বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সংবাদ প্রসঙ্গে

মাটি কেটে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি

পিঠা উৎসব : ঐতিহ্যের পুনরুত্থান ও জনপ্রিয়তা

পরিবেশ সুরক্ষায় সবুজ অর্থনীতি

পানির অপচয় রোধে সচেতনতা

নিরাপত্তায় মনোযোগ বাড়ানো জরুরি

ছবি

প্লাস্টিক দূষণ : সমাধানের পথ কী?

ছাত্রত্বহীন আদুভাইদের রাজনীতি বন্ধ হোক

অগ্নিকা- থেকে মুক্তির উপায় কী?

ছবি

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার

ছবি

টিসিবির ট্রাকে চাল নেই কেন?

মেট্রোরেলে মশা

ছবি

গণপরিবহনে নারী আসনের অপ্রতুলতা

ছবি

অভিযান যেন একতরফা না হয়

পরিবহন ভাড়া কমান

ইন্টারনেট প্রযুক্তির গুরুত্ব

ছবি

বই নির্বাচন, বন্ধু নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ

অব্যবস্থাপনার দিকে মেট্রোরেল

সাহিত্যের সঙ্গে সাংবাদিকতার সম্পর্ক : বিশ্লেষণ

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের সংস্কার চাই

খাল খনন করুন

ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার খাল ভরাটের কারণে বেহাল দশা

ছবি

রেলক্রসিং যেন মরণ ফাঁদ

ছবি

অবৈধ পথে ইউরোপ যাত্রা : স্বপ্ন নাকি মৃত্যুর ফাঁদ?

ছাতারপাইয়ায় রাস্তা সংস্কার জরুরি

বইয়ের আলোয় দূর হোক অন্ধকার

পোস্তগোলা রাস্তার শোচনীয় অবস্থা

কৃষক কাঁদে, ভোক্তাও কাঁদে

হতাশার আরেক নাম ভর্তি পরীক্ষা

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে ক্ষতিগ্রস্তদের লিজ দলিল দিন

ছবি

সাতার শেখা জরুরি

গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া : শিক্ষার্থীদের জন্য স্বস্তি নাকি ভোগান্তি?

ছবি

বন্ধ করা হোক ফিটনেসবিহীন যানবাহন

ছবি

অমর একুশে বইমেলা

tab

পাঠকের চিঠি

বজ্রপাত থেকে বাঁচতে চাই সচেতনতা

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

বজ্রপাত বলতে আকাশের আলোর ঝলকানিকে বোঝায়। এই সময় উক্ত এলাকার বাতাসের প্রসারণ এবং সংকোচনের ফলে আমরা বিকট শব্দ শুনতে পাই। এটি মহান আল্লাহর শক্তি নিদর্শনগুলোর মধ্যেও একটি। প্রকৃতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে বজ্রপাত খুব পরিচিত, সুন্দর, রহস্যময় এবং একই সঙ্গে আতঙ্কের। এলাকাভেদে গ্রামীণ পরিভাষায় এ বজ্রপাতকে ‘বাজ’ কিংবা ‘ঠাডা’ বলা হয়ে থাকে।

লক্ষণীয় বিষয় বজ্রপাতের সময় আগে আলো দেখা যায় এবং পরে শব্দ শোনা যায়! আলো এবং শব্দের বেগের পার্থক্যর কারণে এমনটা দেখা যাই। আলোর বেগ শব্দের বেগের চেয়ে অনেক অনেক বেশি।

সাধারণত দেশে এপ্রিল-মে মাসে বজ্রপাত শুরু হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং বেসকারি সংগঠন ‘ডিজাস্টার ফোরাম-এর তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে বজ্রপাতে ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই মাঠে থাকা কৃষক, সাঙে ১৪ শতাংশ বাডড় ফেরার পথে, আর ১৩ শতাংশ গোসল কিংবা মাছ শিকারের সময়। শহরের চেয়ে গ্রামঅঞ্চলে প্রাণহানির সংখ্যা বেশি হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে বায়ুদূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্ব উঞ্চতা বৃদ্ধি, নির্বিচারে বৃক্ষনিধন, কৃষিতে ভারি ধাতব যন্ত্রাংশ ব্যবহারের কারণে বজ্রপাতের দুর্ঘটনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তাই বজ্রপাতকে মোটেও হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক সচেতনতার বিকল্প নাই। আসুন, জেনে নেয়া যাক বজ্রপাতে করণীয় ঃ

এপ্রিল মে মাসে বজ্রপাত বেশি হয়। তাই এ সময় নিরাপদ থাকার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করুন।

আকাশে ঘন কালো মেঘ দেখা দিলে জরুরি প্রয়োজনে রবারের জুতা পড়ে বাইরে বের হতে পারেন। বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা, খোলা মাঠ বা জলাশয়ের অতি নিকটে থাকবেন না।

বজ্রপাতের সময় গাড়ির ভেতরে অবস্থান করলে, গাড়ির ধাতব অংশের সঙ্গে শরীরের সংযোগ ঘটাবেন না। সম্ভব হলে গাড়িটি নিয়ে কোন কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন। যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন।

উঁচু গাছপালা বৈদ্যুতিক খুঁটি, তার, ধাতব খুঁটি, মোবাইল টাওয়ার থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি বা বারান্দায় থাকবেন না। ঘরের ভেতর বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

বজ্রপাতের সময় জরুরি প্রয়োজনে প্লাস্টিকের বা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করুন। বজ্রপাতের সময় শিশুদের খোলা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখুন, নিজেও বিরত থাকুন।

বজ্রপাতের সময় মাছ ধরা বন্ধ রেখে, নৌকার ছাউনির নিচে অবস্থান করুন।

বজ্রপাতে আহতদের চিকিৎসকের মতো সিপিআর দিতে হবে।

খোলা জায়গায় কোন বড় গাছের নিচে অবস্থান করা যাবে না, গাছ থেকে অন্তত ৪ মিটার দূরে থাকতে হবে।

বজ্রপাতের সময় বাড়ির ধাতব কল/টেপ, সিঁড়ির ধাতব রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না।

প্রতিটি ভবনে বজ্র নিরোধক দন্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন।

খোলা স্থানে অনেকে একত্রে থাকাকালীন বজ্রপাত শুরু হলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে দূরে অবস্থান করুন।

কোন বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে অবস্থান করুন।

বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ছিঁড়া তার থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, লাইন থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন।

সরকারের উচিত বজ্রপাতকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে এই ব্যাপারে গবেষণা ও জনসচেতনতা বাড়ানো। বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে পরিবেশ দূষণ রোধ, তালগাছ ও খেজুরগাছ রোপণ, গণমাধ্যমে সতর্কবার্তা ঘনঘন প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা এবং বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র তথা আর্থিং স্থাপনসহ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন মনে করি। বজ্রপাত সম্পর্কে জানা এবং করণীয় বিষয়ে সচেতনতাই পারে বজ্রপাতের হাত থেকে প্রাণহানি কমাতে।

মো. সাইমুন

back to top