মা-বাবার পরে আমাদের জীবন গঠনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখেন যারা তারা হলেন আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকা। তারা আমাদের পাঠ দানের মাধ্যমে নিজ, দেশ ও বিশ্ব সম্পর্কে জানতে শেখায়। তারা বিচরন করেন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাদের পদধূলি পেতে আমরা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়মুখী হই। শিক্ষার আলোর সন্ধান মিলে থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। একটি দেশকে পূর্ণাঙ্গ ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে চাই শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন। শিক্ষাকে বলা হয় একটি দেশের মেরুদ-। সেখানে বাংলাদেশে শিক্ষার খাত বেশি অবহেলিত। বাংলাদেশের রাজধানীতে শিক্ষার মান যেমন-তেমন। গ্রাম অঞ্চলে নাজে হাল। পূর্বের সময় তাও একটু ছিল এখন খুবি বাজে অবস্থা। এই খাতের দ্রুত সংস্কার দরকার। নইলে দেশ শুধু ইট, পাথর আর কংক্রিটে উন্নত হবে। মানুষের মনুষ্যত্ব দাড়াবে শূন্যে। তেমনি একটি হাই স্কুল মাদারীপুর জেলার, ডাসার (উপজেলা, ইউনিয়ন) এর দর্শনা গ্রামে। যেখানে ৬টি গ্রামের কয়েক শত শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে আসছে ১৯৫৩ সাল থেকে। যেখান থেকে পাস করে সরকারি মহলের উর্ধ্বতন পর্যায়ে চাকরির সুযোগ করে নিয়েছেন অনেকে।
দর্শনা উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান মাদারীপুর জেলার মধ্যে ছিল অনেক উপরে। যেখানে প্রতিবছর ৯৮.০২- ৯৯. ০১ পাসের হার ছিল। এস. এস. সি তে প্রতিবছর ১০-১৫ জন এ+ পেতেন। কিন্তু এই কয়েক বছর ধরে শিক্ষার মান দাড়িয়েছে তলানিতে। এর প্রধান কারন শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা আর নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করা। একজন উপযুক্ত শিক্ষক পারেন শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত জ্ঞান দিয়ে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করতে। শিক্ষক যদি পারে ৬০% শিক্ষার্থীকে দিবে কত %? শিক্ষকরা এখন আর শিক্ষার্থীদের ভালোবেসে পড়ান না। কেউ এই শিক্ষাক্ষেত্রে ভালোবাসা থেকে আসে না। তারা আসে প্রয়োজনে, সংসার চালাতে।
যার কারণে আজ শিক্ষার এই বেহাল অবস্থা। তাই শিক্ষক নিয়োগে আমাদের আরও বেশি সচেতন হওয়া দরকার। যাতে করে শুধু সংসার চালাবার জন্য না দেশ গঠনের জন্যেও তারা শিক্ষক হিসেবে এ খাতে যুক্ত হয়। অবকাঠামো গুলোর বেহাল অবস্থা। পাশে থাকা প্রাইমারি কয়েক ধাপে নতুন ভবন পেলেও হাই স্কুল পায়নি একটি ভবনও। ক্লাস রুমের সংকটে শিক্ষক মহোদয় উদ্যোগ নিয়ে পুরাতন ভবনের উপর গড়ে তোলেন আরেক তলা।
যেখানে একতলা ভবনের ছাদ খসে পড়তেছিল। বলছিলাম ২০১৭ সালের কথা যখন অর্থের অভাবে স্যারদের বেতন থেকে ছাউনির টিন কেনার টাকা দেয়া হয়। হাই স্কুলের সামনে থাকা পুকুর ভরাটের জন্য কয়েকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও কিছু কাজ করার পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। হাই স্কুলের মেইন গেট ভেঙে পড়েছিল কয়েক বছর। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কে ডি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় চার তলা বিশিষ্ট আইসিটি ভবন পেলেও হাই স্কুলের পাওয়া হয়নি একটি নতুন ইটের ছোঁয়া। হাই স্কুল কমিটির এ নিয়ে যেন কোন চিন্ত াই নেই। নেই ছেলেদের জন্য শৌচাগারের ব্যবস্থা। প্রকৃতিক ডাক আসলে পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়। মেয়েদের কমন রুমের বাজে হাল। শিক্ষকদের বসার জন্য নেই ভালো অফিস রুম। খেলার জন্য নেই একটা বড় মাঠ। পড়ার জন্য নেই লাইব্রেরি। দেখলে মনে হয় এক ভৌতিক পুরাতন বাড়ি। যদিও ইদানীং বুড়া মহিলাকে মেকাপ করিয়ে যুবতী বানাবার ব্যর্থ চেষ্টা। আশেপাশের এত কিছুর উন্নয়ন হয়। স্কুলের উন্নয়নে কারও যেন কোনো মাথাব্যথাই নেই। তাই শিক্ষা উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। শুধু দর্শনা উচ্চ বিদ্যালয় নয়। এরকম হাজারো অবহেলিত বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়নে কাজ করুন। দেশের শিক্ষার্থীদের একটি সুন্দর শিক্ষা ব্যবস্থা উপহার দিন। শিক্ষার্থী বাঁচলে বাঁচবে দেশ ১৬.৫ কোটি মানুষের সোনার বাংলাদেশ।
ইমন হাওলাদার
বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪
মা-বাবার পরে আমাদের জীবন গঠনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখেন যারা তারা হলেন আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকা। তারা আমাদের পাঠ দানের মাধ্যমে নিজ, দেশ ও বিশ্ব সম্পর্কে জানতে শেখায়। তারা বিচরন করেন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাদের পদধূলি পেতে আমরা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়মুখী হই। শিক্ষার আলোর সন্ধান মিলে থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। একটি দেশকে পূর্ণাঙ্গ ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে চাই শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন। শিক্ষাকে বলা হয় একটি দেশের মেরুদ-। সেখানে বাংলাদেশে শিক্ষার খাত বেশি অবহেলিত। বাংলাদেশের রাজধানীতে শিক্ষার মান যেমন-তেমন। গ্রাম অঞ্চলে নাজে হাল। পূর্বের সময় তাও একটু ছিল এখন খুবি বাজে অবস্থা। এই খাতের দ্রুত সংস্কার দরকার। নইলে দেশ শুধু ইট, পাথর আর কংক্রিটে উন্নত হবে। মানুষের মনুষ্যত্ব দাড়াবে শূন্যে। তেমনি একটি হাই স্কুল মাদারীপুর জেলার, ডাসার (উপজেলা, ইউনিয়ন) এর দর্শনা গ্রামে। যেখানে ৬টি গ্রামের কয়েক শত শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে আসছে ১৯৫৩ সাল থেকে। যেখান থেকে পাস করে সরকারি মহলের উর্ধ্বতন পর্যায়ে চাকরির সুযোগ করে নিয়েছেন অনেকে।
দর্শনা উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান মাদারীপুর জেলার মধ্যে ছিল অনেক উপরে। যেখানে প্রতিবছর ৯৮.০২- ৯৯. ০১ পাসের হার ছিল। এস. এস. সি তে প্রতিবছর ১০-১৫ জন এ+ পেতেন। কিন্তু এই কয়েক বছর ধরে শিক্ষার মান দাড়িয়েছে তলানিতে। এর প্রধান কারন শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা আর নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করা। একজন উপযুক্ত শিক্ষক পারেন শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত জ্ঞান দিয়ে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করতে। শিক্ষক যদি পারে ৬০% শিক্ষার্থীকে দিবে কত %? শিক্ষকরা এখন আর শিক্ষার্থীদের ভালোবেসে পড়ান না। কেউ এই শিক্ষাক্ষেত্রে ভালোবাসা থেকে আসে না। তারা আসে প্রয়োজনে, সংসার চালাতে।
যার কারণে আজ শিক্ষার এই বেহাল অবস্থা। তাই শিক্ষক নিয়োগে আমাদের আরও বেশি সচেতন হওয়া দরকার। যাতে করে শুধু সংসার চালাবার জন্য না দেশ গঠনের জন্যেও তারা শিক্ষক হিসেবে এ খাতে যুক্ত হয়। অবকাঠামো গুলোর বেহাল অবস্থা। পাশে থাকা প্রাইমারি কয়েক ধাপে নতুন ভবন পেলেও হাই স্কুল পায়নি একটি ভবনও। ক্লাস রুমের সংকটে শিক্ষক মহোদয় উদ্যোগ নিয়ে পুরাতন ভবনের উপর গড়ে তোলেন আরেক তলা।
যেখানে একতলা ভবনের ছাদ খসে পড়তেছিল। বলছিলাম ২০১৭ সালের কথা যখন অর্থের অভাবে স্যারদের বেতন থেকে ছাউনির টিন কেনার টাকা দেয়া হয়। হাই স্কুলের সামনে থাকা পুকুর ভরাটের জন্য কয়েকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও কিছু কাজ করার পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। হাই স্কুলের মেইন গেট ভেঙে পড়েছিল কয়েক বছর। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কে ডি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় চার তলা বিশিষ্ট আইসিটি ভবন পেলেও হাই স্কুলের পাওয়া হয়নি একটি নতুন ইটের ছোঁয়া। হাই স্কুল কমিটির এ নিয়ে যেন কোন চিন্ত াই নেই। নেই ছেলেদের জন্য শৌচাগারের ব্যবস্থা। প্রকৃতিক ডাক আসলে পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়। মেয়েদের কমন রুমের বাজে হাল। শিক্ষকদের বসার জন্য নেই ভালো অফিস রুম। খেলার জন্য নেই একটা বড় মাঠ। পড়ার জন্য নেই লাইব্রেরি। দেখলে মনে হয় এক ভৌতিক পুরাতন বাড়ি। যদিও ইদানীং বুড়া মহিলাকে মেকাপ করিয়ে যুবতী বানাবার ব্যর্থ চেষ্টা। আশেপাশের এত কিছুর উন্নয়ন হয়। স্কুলের উন্নয়নে কারও যেন কোনো মাথাব্যথাই নেই। তাই শিক্ষা উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। শুধু দর্শনা উচ্চ বিদ্যালয় নয়। এরকম হাজারো অবহেলিত বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়নে কাজ করুন। দেশের শিক্ষার্থীদের একটি সুন্দর শিক্ষা ব্যবস্থা উপহার দিন। শিক্ষার্থী বাঁচলে বাঁচবে দেশ ১৬.৫ কোটি মানুষের সোনার বাংলাদেশ।
ইমন হাওলাদার