নিত্যপণ্যেও দাম বহু দিন ধরেই বাড়ছিল। তা আরও বাড়ে বৃষ্টির কারণে। এরপর আসে কোটাবিরোধী আন্দোলন। যাতে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।
এরপর কারফিউ জারি করা হয়। দিনের একটা সময় তা শিথিল করা হলেও মানুষের আতঙ্ক এখনও কাটেনি। ফলে অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় ক্রেতা উপস্থিতি কম।
সব মিলিয়ে বেচা-বিক্রি ‘ঠাণ্ডা’, বললেন কাঁচাবাজারের বিক্রেতারা।
তবে কারফিউ জারির পর থেকে কারফিউ শিথিলের সময়ে সরবরাহ ব্যবস্থা কিছুটা সচল হতে থাকায় কিছুটা কমেছে সবজিসহ কিছু পণ্যের দাম। তবে, আগের মতো চড়া দামেই ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে পেঁয়াজ-রসুন-আদা-আলুসহ বেশ কিছু পণ্য। বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, পণ্যের দাম বেশি।
বেচা-বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর শান্তিনগর বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘মানুষ বাসাত থেকে না বাড়ালে কার কাছে বেচমু। বহুত কষ্ট করে পাঁচ হাজার টাকার পিকাপ ভাড়া সাত হাজার টাকা দিয়া একটা গরু আনছি। কাস্টোমার নাই, লস হচ্ছে।’
‘মানুষ আতঙ্কে আছে, সবারী ভিতর ভয় আছে’ দাবি করে ওই গরুর মাংসের দোকানের কর্মচারী মো. মাসুদ মিয়া সংবাদকে বলেন, ‘আপনার প্যাডে খিদা, যদি ভাত না দেই আপনে কয়দিন না খায়া রইবেন? মানুষ কয়দিন ব্যবসায় লস দিবে? তাহলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।’
কারফিউ শিথিল হওয়ার পর কেমন বেচা-বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে একই বাজারের পেঁয়াজ-আদা-রসুন বিক্রেতা মো. জসিম সংবাদকে বলেন, ‘বেচা-বিক্রি একদম ঠাণ্ডা।’
দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই সবজি বিক্রেতা দুই দিনের ব্যবধানে প্রত্যেকটা মালের (সবজি) দাম কেজিতে বিশ-ত্রিশ টাকা করে কমছে।’ বাজারভেদে ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়। এছাড়া দেশি রসুন ২১০ থেকে ২২০ টাকা, আদা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। বাজার ও জাতভেদে আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। তবে, বাজাবভেদে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি ২০০ থেকে ২৬০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে উঠেছিল কেজি ৫০০ টাকায়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিভিন্ন সবজি কুড়িয়ে ওই বাজারের মোড়েই তা বিক্রি করেন খুশি বেগম। খুশি বেগমের বস্তা বিছিয়ে সাজানো বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে একভাগা কাঁচাকলা ২০ টাকা দিয়ে কিনে ফিরছিলেন মো. ইকবাল হোসেন মিয়া। বাজারে পণ্যের দাম কেমন জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘এখনও তরি তরকারির দামতো বেশি। যে আলু হাইস্ট হতে পারে চল্লিশ টাকা, সেই আলু এখন ষাট টাকা। যে কাঁচা মরিচ ৩০ টাকা ৪০ টাকা গেছে সেই কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, পেঁয়াজ একশ’ দশ টাকা, রসুন দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ টাকা। ইগলার দাম কমা উচিত। সিন্ডিকেট করে মজুত করার কারণেই দামটা বাড়ছে।’ সংসার চলছে কেমন চলছে? জবাবে তিনি বলেন, ‘কোন রকম, গরিবের চলা ভাই। হাওলাত (ধার) করে চলতিছি।’
তিনদিনের ব্যবধানে রাজধানির বাজারে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে সবজির দাম। কেজিতে ২০ টাকা কমে বরবটি, কাকরোল ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। কেজিতে ৪০ থেকে ৬০ টাকমে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। কেজিতে ৪০ টাকা কমে করলা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। কেজিতে ৪০ টাকা কমে কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। কেজিতে ২০ টাকা কমে আমদানি করা গাঁজর বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। এছাড়া ১ পিস লাউ ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।
ছোট দানার মসুর ডাল কেজি ১৪০ টাকায় এবং বড় দানার মসুর ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিন-চারদিনের ব্যবধানে ডজনে ১০ টাকা কমে ফার্মের মুরগির বাদামি রঙয়ের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। আর হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়।
চারদিনের ব্যবধানে কমেছে মুরগির দাম। কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় এবং সোনালী মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। এছাড়া গরুর মাংস কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, ছাগলের মাংস ১০০০ টাকা আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকায়।
বাজারভেদে চাষের পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, কৈ ২৬০ থেকে ২৯০ আর পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। দের কেজি ওজনের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকায়। ৯শ’ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় আর ৭শ’ গ্রাম ওজনের কেজি ১ হাজার ৩শ’ টাকায়।
চালের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর শান্তিনগর বাজারের মেসার্স সাইফুল রাইস এর বিক্রেতা মো. সালে আহমেদ সংবাদকে বলেন, ‘বিআর আটাশ চাল কেজি ৬০ টাকা আর মিনিকেট চাল ৭২ থেকে টাকা। কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে।’ দাম কমাবাড়ার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আগাম কথা কি বলা যায়?’
শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
নিত্যপণ্যেও দাম বহু দিন ধরেই বাড়ছিল। তা আরও বাড়ে বৃষ্টির কারণে। এরপর আসে কোটাবিরোধী আন্দোলন। যাতে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।
এরপর কারফিউ জারি করা হয়। দিনের একটা সময় তা শিথিল করা হলেও মানুষের আতঙ্ক এখনও কাটেনি। ফলে অন্যান্য সপ্তাহের তুলনায় ক্রেতা উপস্থিতি কম।
সব মিলিয়ে বেচা-বিক্রি ‘ঠাণ্ডা’, বললেন কাঁচাবাজারের বিক্রেতারা।
তবে কারফিউ জারির পর থেকে কারফিউ শিথিলের সময়ে সরবরাহ ব্যবস্থা কিছুটা সচল হতে থাকায় কিছুটা কমেছে সবজিসহ কিছু পণ্যের দাম। তবে, আগের মতো চড়া দামেই ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে পেঁয়াজ-রসুন-আদা-আলুসহ বেশ কিছু পণ্য। বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, পণ্যের দাম বেশি।
বেচা-বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর শান্তিনগর বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘মানুষ বাসাত থেকে না বাড়ালে কার কাছে বেচমু। বহুত কষ্ট করে পাঁচ হাজার টাকার পিকাপ ভাড়া সাত হাজার টাকা দিয়া একটা গরু আনছি। কাস্টোমার নাই, লস হচ্ছে।’
‘মানুষ আতঙ্কে আছে, সবারী ভিতর ভয় আছে’ দাবি করে ওই গরুর মাংসের দোকানের কর্মচারী মো. মাসুদ মিয়া সংবাদকে বলেন, ‘আপনার প্যাডে খিদা, যদি ভাত না দেই আপনে কয়দিন না খায়া রইবেন? মানুষ কয়দিন ব্যবসায় লস দিবে? তাহলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।’
কারফিউ শিথিল হওয়ার পর কেমন বেচা-বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে একই বাজারের পেঁয়াজ-আদা-রসুন বিক্রেতা মো. জসিম সংবাদকে বলেন, ‘বেচা-বিক্রি একদম ঠাণ্ডা।’
দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই সবজি বিক্রেতা দুই দিনের ব্যবধানে প্রত্যেকটা মালের (সবজি) দাম কেজিতে বিশ-ত্রিশ টাকা করে কমছে।’ বাজারভেদে ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়। এছাড়া দেশি রসুন ২১০ থেকে ২২০ টাকা, আদা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। বাজার ও জাতভেদে আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। তবে, বাজাবভেদে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি ২০০ থেকে ২৬০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে উঠেছিল কেজি ৫০০ টাকায়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিভিন্ন সবজি কুড়িয়ে ওই বাজারের মোড়েই তা বিক্রি করেন খুশি বেগম। খুশি বেগমের বস্তা বিছিয়ে সাজানো বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে একভাগা কাঁচাকলা ২০ টাকা দিয়ে কিনে ফিরছিলেন মো. ইকবাল হোসেন মিয়া। বাজারে পণ্যের দাম কেমন জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘এখনও তরি তরকারির দামতো বেশি। যে আলু হাইস্ট হতে পারে চল্লিশ টাকা, সেই আলু এখন ষাট টাকা। যে কাঁচা মরিচ ৩০ টাকা ৪০ টাকা গেছে সেই কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, পেঁয়াজ একশ’ দশ টাকা, রসুন দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ টাকা। ইগলার দাম কমা উচিত। সিন্ডিকেট করে মজুত করার কারণেই দামটা বাড়ছে।’ সংসার চলছে কেমন চলছে? জবাবে তিনি বলেন, ‘কোন রকম, গরিবের চলা ভাই। হাওলাত (ধার) করে চলতিছি।’
তিনদিনের ব্যবধানে রাজধানির বাজারে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে সবজির দাম। কেজিতে ২০ টাকা কমে বরবটি, কাকরোল ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। কেজিতে ৪০ থেকে ৬০ টাকমে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। কেজিতে ৪০ টাকা কমে করলা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। কেজিতে ৪০ টাকা কমে কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। কেজিতে ২০ টাকা কমে আমদানি করা গাঁজর বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। এছাড়া ১ পিস লাউ ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।
ছোট দানার মসুর ডাল কেজি ১৪০ টাকায় এবং বড় দানার মসুর ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিন-চারদিনের ব্যবধানে ডজনে ১০ টাকা কমে ফার্মের মুরগির বাদামি রঙয়ের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। আর হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়।
চারদিনের ব্যবধানে কমেছে মুরগির দাম। কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় এবং সোনালী মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। এছাড়া গরুর মাংস কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, ছাগলের মাংস ১০০০ টাকা আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকায়।
বাজারভেদে চাষের পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, কৈ ২৬০ থেকে ২৯০ আর পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। দের কেজি ওজনের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকায়। ৯শ’ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় আর ৭শ’ গ্রাম ওজনের কেজি ১ হাজার ৩শ’ টাকায়।
চালের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর শান্তিনগর বাজারের মেসার্স সাইফুল রাইস এর বিক্রেতা মো. সালে আহমেদ সংবাদকে বলেন, ‘বিআর আটাশ চাল কেজি ৬০ টাকা আর মিনিকেট চাল ৭২ থেকে টাকা। কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে।’ দাম কমাবাড়ার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আগাম কথা কি বলা যায়?’
শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।