নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকাল পৌনে ছয়টায় শহরে দেওভোগ এলাকায় তার নিজ বাড়ি ‘চুনকা কুটির’ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রপ্তারের আগে সাংবাদিকদের সামনে আইভী বলেন, “আমি কি জুলুমবাজ? আমি কি হত্যা করেছি, চাঁদাবাজি করেছি? নারায়ণগঞ্জ শহরে কখনো কোনো বিরোধীদলকে আঘাত করেছি, এমন রেকর্ড কি আমার আছে? তাহলে কীসের জন্যে, কার স্বার্থে আমাকে অ্যারেস্ট করা হলো?”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানের যারা সরকারে আছেন তারা সাম্যের কথা বলেছেন৷ বৈষম্যের বিরুদ্ধে আপনারা আন্দোলন করেছেন৷ সরকার হটিয়ে নতুন সরকার এনেছেন৷ তারপরও কেন এই বৈষম্য? তাহলে অনেস্ট রাজনীতি আর সততার কীসের মূল্যায়ন?”
আমি তো বাড়িতেই ছিলাম, আমি তো পালাইনি৷ তাহলে আমাকে কেন অ্যারেস্ট করা হলো, এই জবাব জনগণের কাছে চাই, জনগণই দেবে”, যোগ করেন তিনি৷
বৃহস্পতিবার রাত আইভীকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তার বাড়ি গেলে তাতে বাধা দেয় এলাকাবাসী। এ সময় বাড়ির বাইরে কয়েকশ নগরবাসী জড়ো হয় এবং “নির্দোষ আইভীকে নিয়ে যেতে দেবেন না" বলে স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ তার বাড়িতে গেলে আইভী পুলিশকে জানান, রাতের আঁধারে তিনি কোথাও যাবেন না৷ কোথাও যেতে হলে সকালে যাবেন৷ সকালে তিনি স্বেচ্ছায় পুলিশের গাড়িতে ওঠেন৷ তাকে পুলিশের গাড়িতে নিয়ে যাবার সময় হাজারো নারী-পুরুষ সড়কে তার মুক্তির দাবিতে মিছিলও করে৷
পুলিশের গাড়িতে ওঠার আগে সাংবাদিকদের আইভী বলেন, আমাকে কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আমি ঠিক জানি না৷ যেহেতু প্রশাসন আমার এখানে (বাড়ি) প্রশাসন এসেছে এবং ওনারা বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়েছে৷ যদিও ওয়ারেন্টের কাগজ তারা দেখাতে পারেন নাই৷ কিন্তু আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমি তাদের সাথে যাচ্ছি৷
"তারা রাতের বেলা এসেছিল, আমি রাতের বেলা বের হতে চাই নাই৷ প্রশাসনের লোকজনকে সারারাত অপেক্ষা করতে হয়েছে, এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি”, বলেন তিনি৷
এলাকাবাসীর প্রকি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আইভী বলেন, “সারারাত আমার মহল্লাবাসী রাস্তায় অবস্থানে ছিলেন, কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল কোনো আচরণ তারা করেন নাই, তাদের আমি ধন্যবাদ দিতে চাই৷ আমি আপনাদের সন্তান, আপনারা যে শ্রদ্ধা-ভালোবাসা দেখিয়েছেন তা আমি আজীবন মনে রাখবো৷”
তিনি আরও বলেন, “আমি আলী আহাম্মদ চুনকার সন্তান৷ আমার বাবা দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সাম্যের রাজনীতি করেছে৷ ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলার কারণে আমার যদি অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে আমি সেই অপরাধে অপরাধী হতে চাই৷ এজন্য যদি আমার বিচার হয় তাহলে হবে৷”
সাবেক এ মেয়র বলেন, “কিন্তু নারায়ণগঞ্জ শহরে ২১ বছর আপনাদেরকে আমি সেবা দিয়েছি৷ কোনোদিন কেউ বলতে পারবেন না যে, আমি কারও প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে অন্য কোনো দলের প্রতি আঘাত করেছি অথবা কারও সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছি৷ নিজের দলের ভেতরে থেকেও দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি৷”
তিনি বলেন, “বিরোধ বা মতভেদ থাকলেও এ শহরবাসীর জন্য এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে প্রতিবাদ করি নাই৷ ত্বকীসহ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার আমি চেয়েছি৷ যখন নারায়ণগঞ্জবাসী একদম চুপ ছিল, কেউ কোনো কথা বলে নাই তখন এ শহরের আওয়াজ তুলেছি অন্যায়ের বিরুদ্ধে৷ এ শহরের মানুষকে যে কথা বলা শিখিয়েছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শিখিয়েছে, সেই আইভীকে কীসের অপরাধে, কীসের জুলুমে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে আমি ঠিক জানি না৷”
নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে আইভী বলেন, “যেভাবে আপনারা আমার এবং আমার পরিবারের পাশে ছিলেন, আগামীতেও থাকবেন৷ কারণ আপনারা সকলেই জানেন, আমার আদরের ছোটভাই মোহাম্মদ আলী রেজা রিপনকে এক মাসও হয়নি হারিয়েছি৷ সেই ভাইয়ের শোক এখনও ভুলতে পারি নাই৷ তিনটা ছোট-ছোট নাবালক বাচ্চার মাঝখান দিয়ে আমাকে যেভাবে অ্যারেস্ট করা হলো৷ বাচ্চাগুলার মাও নেই৷”
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একাধিক থানায় হত্যাসহ অম্তত পাঁচটি মামলায় আসামি করা হয় সাবেক সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে৷ সরকার পতনের পর দলটির অনেক নেতা-কর্মী পালিয়ে গেলেও আইভী ছিলেন তার পৈতৃক বাড়িতে৷
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকাল পৌনে ছয়টায় শহরে দেওভোগ এলাকায় তার নিজ বাড়ি ‘চুনকা কুটির’ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রপ্তারের আগে সাংবাদিকদের সামনে আইভী বলেন, “আমি কি জুলুমবাজ? আমি কি হত্যা করেছি, চাঁদাবাজি করেছি? নারায়ণগঞ্জ শহরে কখনো কোনো বিরোধীদলকে আঘাত করেছি, এমন রেকর্ড কি আমার আছে? তাহলে কীসের জন্যে, কার স্বার্থে আমাকে অ্যারেস্ট করা হলো?”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানের যারা সরকারে আছেন তারা সাম্যের কথা বলেছেন৷ বৈষম্যের বিরুদ্ধে আপনারা আন্দোলন করেছেন৷ সরকার হটিয়ে নতুন সরকার এনেছেন৷ তারপরও কেন এই বৈষম্য? তাহলে অনেস্ট রাজনীতি আর সততার কীসের মূল্যায়ন?”
আমি তো বাড়িতেই ছিলাম, আমি তো পালাইনি৷ তাহলে আমাকে কেন অ্যারেস্ট করা হলো, এই জবাব জনগণের কাছে চাই, জনগণই দেবে”, যোগ করেন তিনি৷
বৃহস্পতিবার রাত আইভীকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তার বাড়ি গেলে তাতে বাধা দেয় এলাকাবাসী। এ সময় বাড়ির বাইরে কয়েকশ নগরবাসী জড়ো হয় এবং “নির্দোষ আইভীকে নিয়ে যেতে দেবেন না" বলে স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ তার বাড়িতে গেলে আইভী পুলিশকে জানান, রাতের আঁধারে তিনি কোথাও যাবেন না৷ কোথাও যেতে হলে সকালে যাবেন৷ সকালে তিনি স্বেচ্ছায় পুলিশের গাড়িতে ওঠেন৷ তাকে পুলিশের গাড়িতে নিয়ে যাবার সময় হাজারো নারী-পুরুষ সড়কে তার মুক্তির দাবিতে মিছিলও করে৷
পুলিশের গাড়িতে ওঠার আগে সাংবাদিকদের আইভী বলেন, আমাকে কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আমি ঠিক জানি না৷ যেহেতু প্রশাসন আমার এখানে (বাড়ি) প্রশাসন এসেছে এবং ওনারা বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়েছে৷ যদিও ওয়ারেন্টের কাগজ তারা দেখাতে পারেন নাই৷ কিন্তু আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমি তাদের সাথে যাচ্ছি৷
"তারা রাতের বেলা এসেছিল, আমি রাতের বেলা বের হতে চাই নাই৷ প্রশাসনের লোকজনকে সারারাত অপেক্ষা করতে হয়েছে, এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি”, বলেন তিনি৷
এলাকাবাসীর প্রকি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আইভী বলেন, “সারারাত আমার মহল্লাবাসী রাস্তায় অবস্থানে ছিলেন, কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল কোনো আচরণ তারা করেন নাই, তাদের আমি ধন্যবাদ দিতে চাই৷ আমি আপনাদের সন্তান, আপনারা যে শ্রদ্ধা-ভালোবাসা দেখিয়েছেন তা আমি আজীবন মনে রাখবো৷”
তিনি আরও বলেন, “আমি আলী আহাম্মদ চুনকার সন্তান৷ আমার বাবা দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সাম্যের রাজনীতি করেছে৷ ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলার কারণে আমার যদি অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে আমি সেই অপরাধে অপরাধী হতে চাই৷ এজন্য যদি আমার বিচার হয় তাহলে হবে৷”
সাবেক এ মেয়র বলেন, “কিন্তু নারায়ণগঞ্জ শহরে ২১ বছর আপনাদেরকে আমি সেবা দিয়েছি৷ কোনোদিন কেউ বলতে পারবেন না যে, আমি কারও প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে অন্য কোনো দলের প্রতি আঘাত করেছি অথবা কারও সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছি৷ নিজের দলের ভেতরে থেকেও দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি৷”
তিনি বলেন, “বিরোধ বা মতভেদ থাকলেও এ শহরবাসীর জন্য এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে প্রতিবাদ করি নাই৷ ত্বকীসহ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার আমি চেয়েছি৷ যখন নারায়ণগঞ্জবাসী একদম চুপ ছিল, কেউ কোনো কথা বলে নাই তখন এ শহরের আওয়াজ তুলেছি অন্যায়ের বিরুদ্ধে৷ এ শহরের মানুষকে যে কথা বলা শিখিয়েছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শিখিয়েছে, সেই আইভীকে কীসের অপরাধে, কীসের জুলুমে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে আমি ঠিক জানি না৷”
নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে আইভী বলেন, “যেভাবে আপনারা আমার এবং আমার পরিবারের পাশে ছিলেন, আগামীতেও থাকবেন৷ কারণ আপনারা সকলেই জানেন, আমার আদরের ছোটভাই মোহাম্মদ আলী রেজা রিপনকে এক মাসও হয়নি হারিয়েছি৷ সেই ভাইয়ের শোক এখনও ভুলতে পারি নাই৷ তিনটা ছোট-ছোট নাবালক বাচ্চার মাঝখান দিয়ে আমাকে যেভাবে অ্যারেস্ট করা হলো৷ বাচ্চাগুলার মাও নেই৷”
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একাধিক থানায় হত্যাসহ অম্তত পাঁচটি মামলায় আসামি করা হয় সাবেক সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে৷ সরকার পতনের পর দলটির অনেক নেতা-কর্মী পালিয়ে গেলেও আইভী ছিলেন তার পৈতৃক বাড়িতে৷