তিনদিনের মধ্যে ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশ বাস্তবায়নের এখনো কোনো কার্যক্রম শুরু করেনি সংশ্লিষ্টরা। উল্টো আদালত ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেয়ার প্রতিবাদে যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ মোড়ে ও মিরপুরে বিক্ষোভ করেছে রিকশাচালকরা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে দয়াগঞ্জে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকরা। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে রিকশাচালকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদেরকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদিকে কয়েক’শ অটোরিকশা চালক সড়ক অবরোধ করায় তীব্র যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে।
যদিও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর অবরোধকারীরা নিজেই সড়ক ছেড়ে চলে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এদিকে এক বিবৃতিতে ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি করেছে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন।
সড়ক অবরোধের বিষয়ে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক আহম্মেদ জানান, মূল সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে দয়াগঞ্জ মোড়ে অবরোধ করেন রিকশাচালকরা। সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলে তাদের অনুরোধ করা হয় সড়ক ছেড়ে দেয়ার জন্য। তবে তারা পুলিশের অনুরোধ না শুনে উল্টো পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ওসি বলেন, ঘন্টাখানেক পরেই সড়ক ছেড়ে গেছেন চালকরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বুধবার দুপুরে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশের প্রতিবাদে আগারগাঁও থেকে মিরপুরের কাজীপাড়া পর্যন্ত বিক্ষোভ করেছেন চালকরা। ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে চালকরা তাদের বিক্ষোভ শুরু করেন।
ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক মো. রাজু বলেন, ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পর টেলিভিশনের খবরে দেখতে পাই আমাদের বাহন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আমাদের রিকশা বন্ধ করেন আপত্তি নাই। তবে আমাদের সময় দিতে হবে। আমাদের রিকশার কিস্তি আছে। সেটি পূরণের জন্য আমাদের সময় দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এ তিনদিন আন্দোলন করতেই চলে যাবে। তাই মালিকপক্ষ যারা আছেন তাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা কেউ এই তিনদিন কোনো টাকা রাখবেন না। আন্দোলন কর্মসূচির ব্যাপারে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বলেছেন, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে আগারগাঁও নির্বাচন কমিশনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে তারা মিরপুর ১০ নম্বর গোল চক্করে যাবেন। পরবর্তীতে সেখানে কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহাদাৎ খাঁ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস এক বিবৃতিতে জানান, হাইকোর্টের এই আদেশ দেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও মানবিক বোধ বিবর্জিত। আমরা ধারণা করি, ব্যাটারিচালিত যানবাহন সম্পর্কে সঠিক বাস্তবতা ও পরিস্থিতি অবগত না করায় আদালত ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধের মতো আদেশ দিয়েছেন। ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের এই আদেশ বাস্তবায়িত হলে ঢাকা মহানগরীতে ১২ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। যা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে।
তারা আরও বলেন, হাইকোর্টের উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে উক্ত মামলার বিবাদীপক্ষ সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করতে হবে এবং হাইকোর্টকে ব্যাটারিচালিত যানবাহন সম্পর্কে সঠিক বাস্তবতা ও পরিস্থিতি অবগত করতে হবে। ব্যাটারিচালিত যানবাহনের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হিসেবে আমরা অবিলম্বে ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহার ও বিআরটিএ কর্তৃক লাইসেন্স এবং যৌক্তিক রুট পারমিট দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর এলাকায় তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। এরআগে প্যাডেলচালিত রিকশা সংগঠন ঢাকা মহানগর রিকশা মালিক ঐক্যজোটের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক রিট পিটিশনটি দায়ের করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার তাহসিনা তাসনিম মৃদু। জানা গেছে, বর্তমানে প্রায় ১৩ লাখ রিকশা চলাচল করছে রাজধানীতে। যার বড় একটি অংশ ব্যাটারিচালিত। পুরাতন প্যাডেলচালিত অনেক রিকশায় ব্যাটারি লাগিয়ে যান্ত্রিক করা হচ্ছে। ফলে নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকে আহত হচ্ছেন, প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ কয়েক দফা অভিযান চালালেও থেমে নেই অবৈধ এসব বাহনের দৌরাত্ম্য।
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
তিনদিনের মধ্যে ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশ বাস্তবায়নের এখনো কোনো কার্যক্রম শুরু করেনি সংশ্লিষ্টরা। উল্টো আদালত ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেয়ার প্রতিবাদে যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ মোড়ে ও মিরপুরে বিক্ষোভ করেছে রিকশাচালকরা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে দয়াগঞ্জে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকরা। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে রিকশাচালকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদেরকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদিকে কয়েক’শ অটোরিকশা চালক সড়ক অবরোধ করায় তীব্র যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে।
যদিও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর অবরোধকারীরা নিজেই সড়ক ছেড়ে চলে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এদিকে এক বিবৃতিতে ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি করেছে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন।
সড়ক অবরোধের বিষয়ে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক আহম্মেদ জানান, মূল সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে দয়াগঞ্জ মোড়ে অবরোধ করেন রিকশাচালকরা। সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলে তাদের অনুরোধ করা হয় সড়ক ছেড়ে দেয়ার জন্য। তবে তারা পুলিশের অনুরোধ না শুনে উল্টো পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ওসি বলেন, ঘন্টাখানেক পরেই সড়ক ছেড়ে গেছেন চালকরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বুধবার দুপুরে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশের প্রতিবাদে আগারগাঁও থেকে মিরপুরের কাজীপাড়া পর্যন্ত বিক্ষোভ করেছেন চালকরা। ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে চালকরা তাদের বিক্ষোভ শুরু করেন।
ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক মো. রাজু বলেন, ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পর টেলিভিশনের খবরে দেখতে পাই আমাদের বাহন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আমাদের রিকশা বন্ধ করেন আপত্তি নাই। তবে আমাদের সময় দিতে হবে। আমাদের রিকশার কিস্তি আছে। সেটি পূরণের জন্য আমাদের সময় দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এ তিনদিন আন্দোলন করতেই চলে যাবে। তাই মালিকপক্ষ যারা আছেন তাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা কেউ এই তিনদিন কোনো টাকা রাখবেন না। আন্দোলন কর্মসূচির ব্যাপারে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বলেছেন, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে আগারগাঁও নির্বাচন কমিশনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে তারা মিরপুর ১০ নম্বর গোল চক্করে যাবেন। পরবর্তীতে সেখানে কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহাদাৎ খাঁ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস এক বিবৃতিতে জানান, হাইকোর্টের এই আদেশ দেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও মানবিক বোধ বিবর্জিত। আমরা ধারণা করি, ব্যাটারিচালিত যানবাহন সম্পর্কে সঠিক বাস্তবতা ও পরিস্থিতি অবগত না করায় আদালত ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধের মতো আদেশ দিয়েছেন। ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের এই আদেশ বাস্তবায়িত হলে ঢাকা মহানগরীতে ১২ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। যা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে।
তারা আরও বলেন, হাইকোর্টের উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে উক্ত মামলার বিবাদীপক্ষ সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করতে হবে এবং হাইকোর্টকে ব্যাটারিচালিত যানবাহন সম্পর্কে সঠিক বাস্তবতা ও পরিস্থিতি অবগত করতে হবে। ব্যাটারিচালিত যানবাহনের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হিসেবে আমরা অবিলম্বে ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহার ও বিআরটিএ কর্তৃক লাইসেন্স এবং যৌক্তিক রুট পারমিট দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর এলাকায় তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। এরআগে প্যাডেলচালিত রিকশা সংগঠন ঢাকা মহানগর রিকশা মালিক ঐক্যজোটের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক রিট পিটিশনটি দায়ের করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার তাহসিনা তাসনিম মৃদু। জানা গেছে, বর্তমানে প্রায় ১৩ লাখ রিকশা চলাচল করছে রাজধানীতে। যার বড় একটি অংশ ব্যাটারিচালিত। পুরাতন প্যাডেলচালিত অনেক রিকশায় ব্যাটারি লাগিয়ে যান্ত্রিক করা হচ্ছে। ফলে নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকে আহত হচ্ছেন, প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ কয়েক দফা অভিযান চালালেও থেমে নেই অবৈধ এসব বাহনের দৌরাত্ম্য।