‘ছাত্র-শিক্ষক-কৃষক ভাই, ইঁদুর দমনে সহযোগীতা চাই’ সেøাগানে গত ১০ অক্টোবর থেকে মাসব্যাপী জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান শুরু করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)। প্রতি বছরই মাসব্যাপী এই ‘ইঁদুর নিধন অভিযান’ হয়। কিন্তু যাদের এর উপকারভোগী হবার কথা তারা বলছেন বাস্তবে এর দেখা মেলে না। কোথাও কোনো কৃষকের কাছে বিতরণ হয়নি ইঁদুর নিধনের ফাঁদ কিংবা বিষ। কেউ দেখেননি অভিযানের মাসে সুনির্দিষ্ট একটি এলাকায় ইঁদুর নিধন করতে।
কৃষকরা জানিয়েছে, মৌসুমে ৫ থেকে ৭ ভাগ নষ্ট করে ইঁদুর। আমন ক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত থেকে ক্ষেতের ফসল রক্ষা করতে ফাঁদ ও বিষমিশ্রিত টোপ দিয়েও ইঁদুরের উৎপাত কমানো সম্ভব হচ্ছেনা। তারা নিজেদের মতো ফাঁদ পদ্ধতি প্রয়োগ করে ইঁদুর দমণের চেষ্টা করেন।
জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতি বছর দেশে প্রায় ৫০০ টন ধান, গমসহ বিভিন্ন খাদ্যশস্য নষ্ট করছে ইঁদুর। যার বাজারমূল্য ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। এছাড়াও বছরে ইদুরের কারণে প্রায় ৫০ হাজার টন গুদামজাত শস্য নষ্ট হয়।
ডিএই এর সাবেক ডিজি কৃষিবিদ মো. আসাদুল্লা বলেন, ‘সাধারণত ইঁদুর বর্ষার পরপরই বংশ বিস্তার করে। এই প্রোগ্রামটি নেয়া হয় কৃষককে জানানোর জন্য যে সময়ইটাই ইঁদুর মারার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এ কারণেই সারা বাংলাদেশে ইদুরে ১১ শতাংশ পর্যন্ত ফসলের ক্ষতি করে থাকে। ইদুর যে পরিমাণ ধানের ক্ষতি করে সেটা রাজশাহী কৃষি অঞ্চলের মোট উৎপাদিত ধানের সমান।’
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, ইঁদুর নিধন কর্মসূচি কৃষকদের কাছে ‘হাস্যকর’ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, তারা মাসব্যাপী ইঁদুর নিধনের বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করছে। দিচ্ছে নানা পরামর্শ। ইঁদুর নিধনের উপকরণ বিতরণে সরকারি কোনো বরাদ্দ না থাকায় শুধু পরামর্শেই এ অভিযান চলছে। কৃষকদের দাবি, কৃষি অফিসাররা কখনোই এ বিষয়ে ‘সচেতন করেননি’, এমনকি তারা সরকারি প্রোগ্রামের বিষয়ে জানেনা।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট, রংপুরের পীরগঞ্জ ও গাইবান্ধার কয়েকটি উপজেলার চাষিরা জানান, তাদের ক্ষেতে কিছু আগাম জাতের ধান এসেছে। ধানগাছের শীষ বেরোতে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময় ইঁদুর ধানের গাছ কেটে সাবাড় করে নিয়ে যাচ্ছে। ইদুরের তাড়ানো নিয়ে ধান চাষিরা বিপাকে পড়েছে। তাদের এমন বিপদে মাঠের কৃষি কর্মকর্তারাও কখনো পরামর্শ দেয়নি।
রংপুরের পীরগঞ্জের খালাশপীরের ধান চাষি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘হামার ভিউয়ের (জমির) সঙ্গেই বাঁশ ঝাড়, ওই জায়গায় (সেখানে) রাতের আন্ধকারে (অন্ধকারে) ইন্দুর (ইদুর) ভিউত (জমিতে) আসি (এসে) ধানের গাছ কাটা শুরু করে। কীটনাশক মেশানো ঔষধ দিয়েও কাম (কাজ) হচ্ছেনা। রাত জাগে কী ইদুর পাহাড়া দেয়া যায়।’
‘কৃষি অপিসের (অফিসের) কেউ কোনদিন ইঁদুর ধরার কথা কইনাই (বলেনাই)।’
পীরগঞ্জের চতরা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, আমি নবম শ্রেণীতে পড়লেও কোনদিন ইঁদুর মারা বিষয়ে কোনো পরামর্শ কেউ দেয়নি। সেখানকার কৃষক লোকনাথ চন্দ্র বলেন, ‘কোনদিন কোনো বিএস (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা) এসে ইঁদুর মারার (দমন) বিষয়ে কোনো পরামর্শ দেয় নাই।’
তবে, ডিএই বলছে ভিন্ন কথা। ইঁদুর দমন কর্মসূচি উপলক্ষে তাদের উপজেলা পর্যায়ের পর্যায়ে আলোচনা করে কর্মসূচি পালন করবে। যেমন, স্কুল-কলেজে ছেলেমেয়েদের উদ্বুদ্ধ করা করা, যাতে তারা সচেতন হয়। তাদের ইঁদুর দমন শিখানো। কিন্ত বাস্তবে তার সুফল কৃষক পর্যায়ে মিলছে না। গতমাসে ইঁদুর নিধন অভিযান শুরু হলেও গতকালও বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন সংবাদকে বলেন, ‘ডিএই’র যেহেতু জনবল আছে, সেহেতু এসব প্রোগ্রামে তাদের সম্পৃক্ত থাকা তো উচিত।’
বরগুনার তালতলি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল ৪ নভেস্বর বরগুনার তালতলিতে ইঁদুর নিধন অভিযানের উদ্ভোধন করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মো. ইলিয়াস। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমাসহ কয়েকজন কর্মকর্তা। তবে, সেখানে কোনো কৃষক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিল না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। উপজেলার কোনো কৃষি কর্মকর্তা ইঁদুর নিধনের জন্য কোনো কৃষকে পরামর্শ ও সহযোগীতা দেয়নি।
গতকাল ৪ নভেম্বর টাঙ্গাইলে ভূঞাপুরে মাসব্যাপী ইঁদুর নিধন অভিযান উদ্বোধন করা হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে মাসব্যাপী কার্যক্রমের ইঁদুর নিধন অভিযান উদ্বোধন করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে, নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা বিনতে আখতার। এ বিষয়ে মোখলেছুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জাতীয় প্রোগ্রাম শুরু হয় একমাস আগে আমরা উপজেলারটা এখন শুরু করছি।’
ডিএই-এর মহাপরিচালক(ডিজি) মো. ছাইফুল আলম সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের কৃষক গ্রুপ আছে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করা। আমাদের তালিকাভুক্ত কিছু লোক আছে তাদেরকে আমরা কাজে লাগাই। আমাদের এসও যারা আছেন মাঠ পর্যায়ে তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলবেন।’
এসব এলাকার কয়েকটি স্কুল-কলেজে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের কোনো প্রতিষ্ঠানে কোনো উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইঁদুর দমন নিয়ে কোনো কথা বলেননি।
উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং অতিরিক্ত পরিচালক (পেস্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিলেন্স এন্ড ফোরকাস্টিং) মোহাম্মদ আালী জিন্নাহ্ কাছে জানতে চাইলে তিনি উপ পরিচালক হাসান ইমামের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। হাসান ইমাম সংবাদকে বলেন, ‘উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আমাদের এ কার্যক্রমগুলো হয়। ইউনিয়নে যারা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা আছেন তারা কৃষকদের সঙ্গে কাজ করেন। তারা মূলত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলবে, পরামর্শ দিবে। কৃষকরা কিভাবে ইঁদুর মারবে, ইঁদুর মারার ক্ষেত্রে নতুন কী টেনোলজি এসেছে সেসব বিষয়ে আলোচনা করবে। আর যারা ইঁদুর মারবে সেগুলো উপ সহকারীরা সংগ্রহ করবে।’
ডিএই থেকে জানা গেছে, চলতি বছরে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযানে সরকারের বরাদ্দ রাখা হয়েছে, ৪৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। যারমধ্যে খামারবাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে খরচ ৫ লাখ টাকা। আর মুদ্রণ ও প্রকাশনায় ব্যয় ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
ছাইফুল আলম বলেন, ‘তবে, আমাদের বরাদ্দ কম। যেটুকু আছে সেটার বেশিরভাগই পাব্লিকেশন খাতে চলে যায়। আমরা সেন্ট্রালি নির্দেশিকা ছেপে সেটা সারাদেশের উপজেলা থেকে ব্লক পর্যায়ে চলে যায়।’
হাসান ইমাম বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে সরকারি কোনো বাজেটও নাই। অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ে ৫ হাজার ও জেলা পর্যায়ে ১২ হাজার টাকা বরাদ্দ আছে। এজন্য উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একটা অনুষ্ঠান করা হয়।’
অভিযোগ আছে, মাঠ পর্যায়ের কোন কর্মমর্তা কৃষককে ইঁদুর নিধনের কোনো পারমর্শ দেয়না। এর জবাবে তিনি বলেন, ‘ হয়তো এই তথ্যটি সব কৃষকের কাছে পৌঁছায় না, কিন্ত এখনও যারা আছেন তারা কাজ করেন। আমি যখন কৃষি অফিসার ছিলাম তখন আমি তো কাজ করেছি।’
শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪
‘ছাত্র-শিক্ষক-কৃষক ভাই, ইঁদুর দমনে সহযোগীতা চাই’ সেøাগানে গত ১০ অক্টোবর থেকে মাসব্যাপী জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান শুরু করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)। প্রতি বছরই মাসব্যাপী এই ‘ইঁদুর নিধন অভিযান’ হয়। কিন্তু যাদের এর উপকারভোগী হবার কথা তারা বলছেন বাস্তবে এর দেখা মেলে না। কোথাও কোনো কৃষকের কাছে বিতরণ হয়নি ইঁদুর নিধনের ফাঁদ কিংবা বিষ। কেউ দেখেননি অভিযানের মাসে সুনির্দিষ্ট একটি এলাকায় ইঁদুর নিধন করতে।
কৃষকরা জানিয়েছে, মৌসুমে ৫ থেকে ৭ ভাগ নষ্ট করে ইঁদুর। আমন ক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত থেকে ক্ষেতের ফসল রক্ষা করতে ফাঁদ ও বিষমিশ্রিত টোপ দিয়েও ইঁদুরের উৎপাত কমানো সম্ভব হচ্ছেনা। তারা নিজেদের মতো ফাঁদ পদ্ধতি প্রয়োগ করে ইঁদুর দমণের চেষ্টা করেন।
জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতি বছর দেশে প্রায় ৫০০ টন ধান, গমসহ বিভিন্ন খাদ্যশস্য নষ্ট করছে ইঁদুর। যার বাজারমূল্য ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। এছাড়াও বছরে ইদুরের কারণে প্রায় ৫০ হাজার টন গুদামজাত শস্য নষ্ট হয়।
ডিএই এর সাবেক ডিজি কৃষিবিদ মো. আসাদুল্লা বলেন, ‘সাধারণত ইঁদুর বর্ষার পরপরই বংশ বিস্তার করে। এই প্রোগ্রামটি নেয়া হয় কৃষককে জানানোর জন্য যে সময়ইটাই ইঁদুর মারার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এ কারণেই সারা বাংলাদেশে ইদুরে ১১ শতাংশ পর্যন্ত ফসলের ক্ষতি করে থাকে। ইদুর যে পরিমাণ ধানের ক্ষতি করে সেটা রাজশাহী কৃষি অঞ্চলের মোট উৎপাদিত ধানের সমান।’
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, ইঁদুর নিধন কর্মসূচি কৃষকদের কাছে ‘হাস্যকর’ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, তারা মাসব্যাপী ইঁদুর নিধনের বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করছে। দিচ্ছে নানা পরামর্শ। ইঁদুর নিধনের উপকরণ বিতরণে সরকারি কোনো বরাদ্দ না থাকায় শুধু পরামর্শেই এ অভিযান চলছে। কৃষকদের দাবি, কৃষি অফিসাররা কখনোই এ বিষয়ে ‘সচেতন করেননি’, এমনকি তারা সরকারি প্রোগ্রামের বিষয়ে জানেনা।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট, রংপুরের পীরগঞ্জ ও গাইবান্ধার কয়েকটি উপজেলার চাষিরা জানান, তাদের ক্ষেতে কিছু আগাম জাতের ধান এসেছে। ধানগাছের শীষ বেরোতে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময় ইঁদুর ধানের গাছ কেটে সাবাড় করে নিয়ে যাচ্ছে। ইদুরের তাড়ানো নিয়ে ধান চাষিরা বিপাকে পড়েছে। তাদের এমন বিপদে মাঠের কৃষি কর্মকর্তারাও কখনো পরামর্শ দেয়নি।
রংপুরের পীরগঞ্জের খালাশপীরের ধান চাষি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘হামার ভিউয়ের (জমির) সঙ্গেই বাঁশ ঝাড়, ওই জায়গায় (সেখানে) রাতের আন্ধকারে (অন্ধকারে) ইন্দুর (ইদুর) ভিউত (জমিতে) আসি (এসে) ধানের গাছ কাটা শুরু করে। কীটনাশক মেশানো ঔষধ দিয়েও কাম (কাজ) হচ্ছেনা। রাত জাগে কী ইদুর পাহাড়া দেয়া যায়।’
‘কৃষি অপিসের (অফিসের) কেউ কোনদিন ইঁদুর ধরার কথা কইনাই (বলেনাই)।’
পীরগঞ্জের চতরা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, আমি নবম শ্রেণীতে পড়লেও কোনদিন ইঁদুর মারা বিষয়ে কোনো পরামর্শ কেউ দেয়নি। সেখানকার কৃষক লোকনাথ চন্দ্র বলেন, ‘কোনদিন কোনো বিএস (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা) এসে ইঁদুর মারার (দমন) বিষয়ে কোনো পরামর্শ দেয় নাই।’
তবে, ডিএই বলছে ভিন্ন কথা। ইঁদুর দমন কর্মসূচি উপলক্ষে তাদের উপজেলা পর্যায়ের পর্যায়ে আলোচনা করে কর্মসূচি পালন করবে। যেমন, স্কুল-কলেজে ছেলেমেয়েদের উদ্বুদ্ধ করা করা, যাতে তারা সচেতন হয়। তাদের ইঁদুর দমন শিখানো। কিন্ত বাস্তবে তার সুফল কৃষক পর্যায়ে মিলছে না। গতমাসে ইঁদুর নিধন অভিযান শুরু হলেও গতকালও বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন সংবাদকে বলেন, ‘ডিএই’র যেহেতু জনবল আছে, সেহেতু এসব প্রোগ্রামে তাদের সম্পৃক্ত থাকা তো উচিত।’
বরগুনার তালতলি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল ৪ নভেস্বর বরগুনার তালতলিতে ইঁদুর নিধন অভিযানের উদ্ভোধন করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মো. ইলিয়াস। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমাসহ কয়েকজন কর্মকর্তা। তবে, সেখানে কোনো কৃষক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিল না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। উপজেলার কোনো কৃষি কর্মকর্তা ইঁদুর নিধনের জন্য কোনো কৃষকে পরামর্শ ও সহযোগীতা দেয়নি।
গতকাল ৪ নভেম্বর টাঙ্গাইলে ভূঞাপুরে মাসব্যাপী ইঁদুর নিধন অভিযান উদ্বোধন করা হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে মাসব্যাপী কার্যক্রমের ইঁদুর নিধন অভিযান উদ্বোধন করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে, নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা বিনতে আখতার। এ বিষয়ে মোখলেছুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জাতীয় প্রোগ্রাম শুরু হয় একমাস আগে আমরা উপজেলারটা এখন শুরু করছি।’
ডিএই-এর মহাপরিচালক(ডিজি) মো. ছাইফুল আলম সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের কৃষক গ্রুপ আছে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করা। আমাদের তালিকাভুক্ত কিছু লোক আছে তাদেরকে আমরা কাজে লাগাই। আমাদের এসও যারা আছেন মাঠ পর্যায়ে তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলবেন।’
এসব এলাকার কয়েকটি স্কুল-কলেজে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের কোনো প্রতিষ্ঠানে কোনো উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইঁদুর দমন নিয়ে কোনো কথা বলেননি।
উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং অতিরিক্ত পরিচালক (পেস্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিলেন্স এন্ড ফোরকাস্টিং) মোহাম্মদ আালী জিন্নাহ্ কাছে জানতে চাইলে তিনি উপ পরিচালক হাসান ইমামের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। হাসান ইমাম সংবাদকে বলেন, ‘উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আমাদের এ কার্যক্রমগুলো হয়। ইউনিয়নে যারা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা আছেন তারা কৃষকদের সঙ্গে কাজ করেন। তারা মূলত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলবে, পরামর্শ দিবে। কৃষকরা কিভাবে ইঁদুর মারবে, ইঁদুর মারার ক্ষেত্রে নতুন কী টেনোলজি এসেছে সেসব বিষয়ে আলোচনা করবে। আর যারা ইঁদুর মারবে সেগুলো উপ সহকারীরা সংগ্রহ করবে।’
ডিএই থেকে জানা গেছে, চলতি বছরে জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযানে সরকারের বরাদ্দ রাখা হয়েছে, ৪৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। যারমধ্যে খামারবাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে খরচ ৫ লাখ টাকা। আর মুদ্রণ ও প্রকাশনায় ব্যয় ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
ছাইফুল আলম বলেন, ‘তবে, আমাদের বরাদ্দ কম। যেটুকু আছে সেটার বেশিরভাগই পাব্লিকেশন খাতে চলে যায়। আমরা সেন্ট্রালি নির্দেশিকা ছেপে সেটা সারাদেশের উপজেলা থেকে ব্লক পর্যায়ে চলে যায়।’
হাসান ইমাম বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে সরকারি কোনো বাজেটও নাই। অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ে ৫ হাজার ও জেলা পর্যায়ে ১২ হাজার টাকা বরাদ্দ আছে। এজন্য উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একটা অনুষ্ঠান করা হয়।’
অভিযোগ আছে, মাঠ পর্যায়ের কোন কর্মমর্তা কৃষককে ইঁদুর নিধনের কোনো পারমর্শ দেয়না। এর জবাবে তিনি বলেন, ‘ হয়তো এই তথ্যটি সব কৃষকের কাছে পৌঁছায় না, কিন্ত এখনও যারা আছেন তারা কাজ করেন। আমি যখন কৃষি অফিসার ছিলাম তখন আমি তো কাজ করেছি।’