alt

সারাদেশ

নির্বিচারে পাহাড় নিধন চলছেই: কক্সবাজারে এক যুগে পাহাড় ধসে নিহত ৩০০

ঝুঁকিতে আড়াই লাখ মানুষ

জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার : বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১

কক্সবাজারে পাহাড়ের ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর পাহাড় দখল করে এরা বসবাস করছেন। সাধারণ মানুষকে ঢাল বানিয়ে মূলত এসব পাহাড় দখলে রেখেছে প্রভাবশালীরা।

এ অঞ্চলে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, চিহ্নিত অপরাধী, এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্য পাহাড় দখল করে বসতি গড়ছে। শুধু তাই নয়, তারা বিক্রি করছে সরকারি পাহাড়ের দখলস্বত্বও। আর বসতি স্থাপনের জন্য কক্সবাজার অঞ্চলে কাটা হয় পাহাড়।

আর বর্ষা এলেই শুরু হয় পাহাড়কাটার ধুম, লক্ষ্য ভূমি সমতল করে বসতি গড়া। এতে ঘটে পাহাড় ধসের ঘটনা। কক্সবাজারের বহুল আলোচিত ৫১ একর পাহাড় কেটে প্লট তৈরি করেছে খোদ প্রশাসনের লোকজন।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পরিসংখ্যান মতে, বিগত এক যুগে পাহাড় ধসে ৩ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পাহাড় ধস হয় ২০১০ সালের ১৫ জুন। এদিন রামু উপজেলার হিমছড়ি এলাকার ১৭ ইসিবি সেনা ক্যাম্পের ৬ সেনাসদস্যসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে প্রায় ৬২ জন প্রাণ হারায়।

২০০৮ সালের ৪ ও ৬ জুলাই টেকনাফে ফকিরামুরা ও টুন্যার পাহাড় ধসের একই পরিবারের চারজনসহ ১৩ জন, ২০১২ সালে ২৬ ও ২৭ জুন পাহাড় ধসের ঘটনায় ২৯ জন। ২০০৯ সালে চকরিয়া, উখিয়া ও রামুতে ৫ জন, ২০১১-১৩ সালে পাহাড় ধসে মারা যায় ১৯ জন। ২০১৫ সালে কক্সবাজার শহরের রাডারের পাহাড় ধসে ৫ জন। ২০১৬ সালে পাহাড় ধসে মারা যায় ১৭ জন। ২০১৭ সালে ২৬ জন। ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার বাঁচামিয়ার ঘোনা এলাকায় ২৮ জন। ২০১৯ সালে ২২ জন। ২০২০ সালে ১৫ জন এবং সর্বশেষ গত ২ দিনে মারা গেল ১৪ জন।

কক্সবাজার জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কক্সবাজারে পাহাড় ধসের ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা তার জানা নেই। তবে গত ২ দিনে ১৩ জন পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রতি বছর কক্সবাজার জেলায় পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুধুমাত্র বর্ষা এলে কিছুটা চোখে পড়ে। বর্ষা চলে গেলে থেমে যায় সবকিছু। এর ফলে অনেকটা বাধাহীনভাবে চলছে কক্সবাজারের পাহাড় নিধন।

এসব পাহাড় এবং পাহাড়ের পাদদেশের ভূমি জেলা প্রশাসনের ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত ও বনবিভাগের মালিকানাধীন হলেও এসব জমির দখল-বেচাকেনা চলে সারা বছর। সরকারি জমি বেচাকেনা আইনত অপরাধ তবুও নোটারি পাবলিক কার্যালয় থেকে এসব খাস জমির দখল ও বেচাকেনা হয়।

কতটা পাহাড়ি এলাকা তথা খাস জমি অবৈধ দখলে রয়েছে তার সঠিক এবং সর্বশেষ পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। কক্সবাজার বন বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় মোট বনভূমির পরিমাণ ৭৩ হাজার ৩৫৮ হেক্টর। এর মধ্যে অবৈধ দখলে রয়েছে ৯ হাজার ৬৫৭ হেক্টর বনভূমি। এসব জমি দখল করে বসবাস করছে প্রায় ১০ লাখ মানুষ। আর পাহাড়ি জমিতে বসবাস করছে ১৩ হাজার ৮২৬টি পরিবারের ৩ লাখ মানুষ। এর মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে। জেলার মোট জনসংখ্যা ২৩ লাখ।

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করা এসব লোকজনকে অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেন। মাইকিং করে সতর্কমূলক প্রচারণা চালান। এখনও প্রচারণা চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। এ সময় কিছু মানুষ সরে এলেও পরে আবার এসে আগের জায়গায় বসবাস শুরু করে। গত দুদিনের দুর্ঘটনার পর কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তৎপরতা ছিল ঠিক আগের মতই।

কক্সবাজার জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জেলায় ৫২ স্পটে ৮৯৮ পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছে। কক্সবাজার পৌরসভায় ৬টি ওয়ার্ডে ৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এবারের বৃষ্টিতে ঝুঁকিতে বসবাস করা লোকজনদের জোর করে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, পাশাপাশি কক্সবাজারের মহেশখালী, টেকনাফ, উখিয়া, রামু, চকরিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে যারা ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাস করছেন তাদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার অভ্যন্তরে ৬টি ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি মানুষ ঝুঁকিতে বসবাস করছে। তাদের সরিয়ে আনাটা একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। তারপরও ঝুঁকি এড়াতে কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ সংক্রান্ত একটি জরুরি সভা হয়েছে। সেখানে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের প্রধান করে একটি উপকমিটিও গঠন করা হয়। তালিকা প্রণয়নে কাজ করা এনজিওকেও সহযোগি হিসেবে কাজ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ জানান, পাহাড়ে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করছে।

কক্সবাজার পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি ফজলুল কাদের চেীধুরী জানান, কক্সবাজারের পাহাড় সংরক্ষণে উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করলে প্রতি বছর এতো প্রাণহাণির ঘটনা ঘটতো না।

ছবি

নড়াইলে মাদক মামলায় ২ জনের যাবতজ্জীবন

আনসার সদস্যের ‘আত্মহত্যা’র কারণ খুঁজছে পুলিশ

ছবি

বাগেরহাটে যাত্রীবাহি বাস নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে, নিহত ১

ছবি

৫ জুন চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট

ছবি

ফরিদপুরে দুই ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

ছবি

নন্দীগ্রামে মসজিদের মিটিংয়ে হুমকি, নামাজ শেষে হামলা

ছবি

কক্সবাজারের তিন উপজেলায় কে কোন প্রতীক পেলেন

ছবি

গাজীপুরে মহাসড়কের পাশ থেকে হাতী মরদেহ উদ্ধার

ছবি

মোরেলগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইসতেস্কার নামাজ আদায়

ছবি

তীব্র গরম ও তাপদাহে অতিষ্ঠ মধুপুরবাসী বাড়ছে নানা রোগ

ছবি

মধুপুরে জৈব কৃষি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

ছবি

নন্দীগ্রামে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ

ছবি

কেএনএফের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতাসহ ৭ জন কারাগারে

ছবি

এবার কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত

ছবি

খুলনা, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগে তীব্র গরম, কিছুটা স্বস্তি সিলেটে

ছবি

অপহ্নত পল্লী চিকিৎসকসহ ২ জনকে উদ্ধার

ছবি

কুমিল্লায় ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যায় ১৪ জনের যাবজ্জীবন

সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় পিতাকে কুপিয়ে জখম, মা আহত

ছবি

জামালপুরে সরকারী খাস জমিতে পুকুর খনন করে ইট ভাটায় মাটি বিক্রি

নারায়ণগঞ্জে নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে তরুণ আনসার সদস্যের ‘আত্মহত্যা’

ছবি

কেএনএফ সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে আরও ৩ নারী গ্রেপ্তার

ছবি

নাফনদীতে ২ বাংলাদেশি জেলেকে গুলি : মায়ানমারের বিজিপির কাছে প্রতিবাদ জানালো বিজিবি

রামুর গর্জনিয়ায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলি ও দায়ের কোপে পিতা-পুত্র নিহত

নোয়াখালীর চৌমুহনীতে এসির আগুনে পুড়ল ২৫ দোকান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

ছবি

সুইমিং পুলে গোসল করতে নেমে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি

তীব্র দাবদাহে বৃষ্টির আশায় ইস্তিসকার নামাজ আদায়

ছবি

মনোহরদীতে ১৬ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল

ছবি

‘ডাকাতদলের’ আক্রমণে পিতা-পুত্র নিহত

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

ছবি

টেকনাফে সিএনজি থামিয়ে চিকিৎসকসহ দুই যাত্রীকে অপহরণ

ছবি

গাছে ধাক্কা লেগে উড়ে গেলো বাসের ছাদ, যাত্রী নিহত

তীব্র তাপপ্রবাহে চুনারুঘাটে দিশেহারা মানুষ, হাসপাতালে রোগীর চাপ

ছবি

পদ্মায় গোসলে নেমে স্কুল শিক্ষার্থীসহ ২ জনের মৃত্যু

ছবি

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ত্রিপুরা সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার

ছবি

নারায়ণগঞ্জে বকেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ, শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ

tab

সারাদেশ

নির্বিচারে পাহাড় নিধন চলছেই: কক্সবাজারে এক যুগে পাহাড় ধসে নিহত ৩০০

ঝুঁকিতে আড়াই লাখ মানুষ

জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার

বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১

কক্সবাজারে পাহাড়ের ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর পাহাড় দখল করে এরা বসবাস করছেন। সাধারণ মানুষকে ঢাল বানিয়ে মূলত এসব পাহাড় দখলে রেখেছে প্রভাবশালীরা।

এ অঞ্চলে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, চিহ্নিত অপরাধী, এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্য পাহাড় দখল করে বসতি গড়ছে। শুধু তাই নয়, তারা বিক্রি করছে সরকারি পাহাড়ের দখলস্বত্বও। আর বসতি স্থাপনের জন্য কক্সবাজার অঞ্চলে কাটা হয় পাহাড়।

আর বর্ষা এলেই শুরু হয় পাহাড়কাটার ধুম, লক্ষ্য ভূমি সমতল করে বসতি গড়া। এতে ঘটে পাহাড় ধসের ঘটনা। কক্সবাজারের বহুল আলোচিত ৫১ একর পাহাড় কেটে প্লট তৈরি করেছে খোদ প্রশাসনের লোকজন।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পরিসংখ্যান মতে, বিগত এক যুগে পাহাড় ধসে ৩ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পাহাড় ধস হয় ২০১০ সালের ১৫ জুন। এদিন রামু উপজেলার হিমছড়ি এলাকার ১৭ ইসিবি সেনা ক্যাম্পের ৬ সেনাসদস্যসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে প্রায় ৬২ জন প্রাণ হারায়।

২০০৮ সালের ৪ ও ৬ জুলাই টেকনাফে ফকিরামুরা ও টুন্যার পাহাড় ধসের একই পরিবারের চারজনসহ ১৩ জন, ২০১২ সালে ২৬ ও ২৭ জুন পাহাড় ধসের ঘটনায় ২৯ জন। ২০০৯ সালে চকরিয়া, উখিয়া ও রামুতে ৫ জন, ২০১১-১৩ সালে পাহাড় ধসে মারা যায় ১৯ জন। ২০১৫ সালে কক্সবাজার শহরের রাডারের পাহাড় ধসে ৫ জন। ২০১৬ সালে পাহাড় ধসে মারা যায় ১৭ জন। ২০১৭ সালে ২৬ জন। ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার বাঁচামিয়ার ঘোনা এলাকায় ২৮ জন। ২০১৯ সালে ২২ জন। ২০২০ সালে ১৫ জন এবং সর্বশেষ গত ২ দিনে মারা গেল ১৪ জন।

কক্সবাজার জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কক্সবাজারে পাহাড় ধসের ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা তার জানা নেই। তবে গত ২ দিনে ১৩ জন পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রতি বছর কক্সবাজার জেলায় পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুধুমাত্র বর্ষা এলে কিছুটা চোখে পড়ে। বর্ষা চলে গেলে থেমে যায় সবকিছু। এর ফলে অনেকটা বাধাহীনভাবে চলছে কক্সবাজারের পাহাড় নিধন।

এসব পাহাড় এবং পাহাড়ের পাদদেশের ভূমি জেলা প্রশাসনের ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত ও বনবিভাগের মালিকানাধীন হলেও এসব জমির দখল-বেচাকেনা চলে সারা বছর। সরকারি জমি বেচাকেনা আইনত অপরাধ তবুও নোটারি পাবলিক কার্যালয় থেকে এসব খাস জমির দখল ও বেচাকেনা হয়।

কতটা পাহাড়ি এলাকা তথা খাস জমি অবৈধ দখলে রয়েছে তার সঠিক এবং সর্বশেষ পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। কক্সবাজার বন বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় মোট বনভূমির পরিমাণ ৭৩ হাজার ৩৫৮ হেক্টর। এর মধ্যে অবৈধ দখলে রয়েছে ৯ হাজার ৬৫৭ হেক্টর বনভূমি। এসব জমি দখল করে বসবাস করছে প্রায় ১০ লাখ মানুষ। আর পাহাড়ি জমিতে বসবাস করছে ১৩ হাজার ৮২৬টি পরিবারের ৩ লাখ মানুষ। এর মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে। জেলার মোট জনসংখ্যা ২৩ লাখ।

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করা এসব লোকজনকে অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেন। মাইকিং করে সতর্কমূলক প্রচারণা চালান। এখনও প্রচারণা চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। এ সময় কিছু মানুষ সরে এলেও পরে আবার এসে আগের জায়গায় বসবাস শুরু করে। গত দুদিনের দুর্ঘটনার পর কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তৎপরতা ছিল ঠিক আগের মতই।

কক্সবাজার জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জেলায় ৫২ স্পটে ৮৯৮ পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছে। কক্সবাজার পৌরসভায় ৬টি ওয়ার্ডে ৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এবারের বৃষ্টিতে ঝুঁকিতে বসবাস করা লোকজনদের জোর করে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, পাশাপাশি কক্সবাজারের মহেশখালী, টেকনাফ, উখিয়া, রামু, চকরিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে যারা ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাস করছেন তাদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার অভ্যন্তরে ৬টি ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি মানুষ ঝুঁকিতে বসবাস করছে। তাদের সরিয়ে আনাটা একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। তারপরও ঝুঁকি এড়াতে কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ সংক্রান্ত একটি জরুরি সভা হয়েছে। সেখানে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের প্রধান করে একটি উপকমিটিও গঠন করা হয়। তালিকা প্রণয়নে কাজ করা এনজিওকেও সহযোগি হিসেবে কাজ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ জানান, পাহাড়ে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করছে।

কক্সবাজার পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি ফজলুল কাদের চেীধুরী জানান, কক্সবাজারের পাহাড় সংরক্ষণে উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করলে প্রতি বছর এতো প্রাণহাণির ঘটনা ঘটতো না।

back to top