alt

সারাদেশ

সংক্রমণ ঢাকা-চট্টগ্রামের পর কুমিল্লায় বেশি, মৃত্যুতেও তৃতীয়

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১

সংক্রমণ বেড়েই চলছে, বিভিন্ন স্থান ও গ্রাম থেকে করোনা আক্রান্তদের নিয়ে হাসপাতালে ভিড় করছেন স্বজনরা। বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল থেকে তোলা ছবি-সংবাদ

ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছাড়া অন্য জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে কুমিল্লায়। মৃত্যুতেও তৃতীয় অবস্থানে কুমিল্লা। এই জেলায় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণ শনাক্তের এখনও ৪০ শতাংশের ওপরে।

গত পাঁচদিনেই কুমিল্লায় সাড়ে তিন হাজার করোনা (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। জেলায় সংক্রমণের ‘উচ্চ’ হার থাকলেও জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দাবি পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রণে’ রয়েছে। তারা বলছেন, আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সংক্রমণ অনেকটাই কমে আসবে।

কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসেইন বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সংবাদকে বলেন, ‘সংক্রমণ সারাদেশেই বেশি। এখানে টেস্ট বেশি হওয়ায় শনাক্তও বেশি হচ্ছে। সংক্রমণ একেবারে বেশি তা বলা যাবে না। আজকে নয়শ’ জনের কিছু বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। আমরা আশা করছি, ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসে যাবে।’ জুলাইয়ের প্রথম দিকে কুমিল্লায় করোনা সংক্রমণ হার ৪৮ শতাংশের বেশি ছিল জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘এখন তা প্রায় ৪০ শতাংশ। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে। আক্রান্তদের চিকিৎসাও ঠিকভাবেই হচ্ছে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গত পাঁচদিনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঢাকা মহানগরসহ ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি মানুষের করোনা সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছে। এরপর চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় শনাক্তের সংখ্যায় খুব বেশি পার্থক্য নেই। তবে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণ শনাক্তের হারে ঢাকা ও চট্টগামের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে কুমিল্লা।

বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় চার হাজার ৭১৮ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে কুমিল্লায় ৮৪৬ জন এবং চট্টগ্রাম জেলায় এক হাজার ৩১৫ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এর আগে গতকাল ২৮ জুলাই ঢাকায় ছয় হাজার ২৬৯ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এদিন চট্টগ্রামে ৯১৫ জন এবং কুমিল্লায় ৮৫৩ জনের সংক্রমণ পাওয়া যায়।

২৭ জুলাই ঢাকা জেলায় চার হাজার ১৭২ জনের শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়। এদিন চট্টগ্রামে এক হাজার ৩১০ জন এবং কুমিল্লায় ৮৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

২৬ জুলাই ছয় হাজার ৪০ জনের করোনা সংক্রমণ পাওয়া যায় ঢাকায়। এদিন চট্টগ্রামে ৮৪৮ জন এবং কুমিল্লায় ৭০১ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

২৫ জুলাই ঢাকা জেলায় করোনা সংক্রমণ পাওয়া যায় তিন হাজার ৪৫৫ জনের শরীরে। এদিন চট্টগ্রামে ৮০১ জন এবং কুমিল্লায় ২৬৩ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

রাজধানী ঢাকার পর করোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা জেলায়। এই দুই জেলায় ইতোমধ্যে মৃত্যু হাজারের ঘর ছাড়িয়েছে। এককভাবে আর কোন জেলায় এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়নি।

মহানগরসহ ঢাকা জেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ছয় হাজার ৩৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামে। এই জেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক হাজার ৭১ জন মারা গেছেন। মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে কুমিল্লা। এই জেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক হাজার ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচদিনে কুমিল্লায় ৮৭ জন মারা গেছেন করোনায়। এর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জন, ২৮ জুলাই ১৮ জন, ২৭ জুলাই ১৫ জন, ২৬ জুলাই ২৭ জন ও ২৫ জুলাই ১৪ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ২৩৯ জন ও শনাক্ত ১৫ হাজারের বেশি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে বলা হয়, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের নিয়ে সরকারি হিসাবে মোট ২০ হাজার ২৫৫ জনের মৃত্যু হলো।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৫ হাজার ২৭১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত ১২ লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

ওই ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ১৪ হাজার ৩৩৬ জন সুস্থ হয়েছেন। তাদের নিয়ে দেশে মোট সুস্থ হলেন দশ লাখ ৫০ হাজার ২২০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫২ হাজার ২৮২টি। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮৭০টি।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ২১ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ শতাংশ।

আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৬৫ শতাংশ।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১২৩ জন এবং নারী ১১৬ জন। আর এ পর্যন্ত মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ৭৫০ জন এবং নারী ছয় হাজার ৫০৫ জন। গত একদিনে মারা যাওয়া ২৩৯ জনের মধ্যে ১৫ জন বাসায় মারা গেছেন। বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭৬ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া চট্টগ্রামে ৫৭, রাজশাহীতে ১৩, খুলনায় ৪৫, বরিশালে ১৪, সিলেটে ১৪, রংপুরে ১১ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে। অন্যদের মধ্যে ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৬৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে তিনজন এবং শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

৩৬ জেলায় একশ’জনের বেশি রোগী শনাক্ত

২৪ ঘণ্টায় মহানগরসহ ঢাকা জেলায় চার হাজার ৭১৮ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই বিভাগের অন্য জেলার মধ্যে ফরিদপুরে ১৪৪ জন, গাজীপুরে ২৬৬ জন, গোপালগঞ্জে ২০৪ জন, কিশোরগঞ্জে ১৩২ জন, মানিকগঞ্জে ২০৩ জন, মুন্সীগঞ্জে ২৯৪ জন, নারায়ণগঞ্জে ২৫৪ জন, নরসিংদীতে ২৭৯ জন, রাজবাড়ীতে ১৪৭ জন, শরীয়তপুরে ১৬৩ জন ও টাঙ্গাইলে ১২৫ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় ৪৫৮ জন ও নেত্রকোনায় ১০২ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় এক হাজার ৩১৫ জন, কক্সবাজারে ৩২৪ জন, ফেনীতে ২১৭ জন, নোয়াখালীতে ২২৮ জন, লক্ষ্মীপুরে ২০৫ জন, চাঁদপুরে ২৪১ জন, কুমিল্লায় ৮৪৬ জন ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ২৪৪ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগের মধ্যে রাজশাহীতে ২১২ জন, পাবনায় ১১৫ জন, সিরাজগঞ্জে ১৪৯ জন ও বগুড়ায় ১১২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

রংপুর বিভাগের মধ্যে রংপুর জেলায় ১৭৬ জন ও দিনাজপুরে ১৮০ জনের দেহে সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

খুলনা বিভাগের মধ্যে যশোরে ২৭৯ জন, খুলনায় ১৮০ জন ও কুষ্টিয়ায় ১৪৯ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

বরিশাল বিভাগের মধ্যে বরিশাল জেলায় ২৬৫ জন, পটুয়াখালীতে ১৭৮ জন ও ভোলায় ১১৩ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

সিলেট বিভাগের মধ্যে সিলেটে ৩৮৬ জন ও সুনামগঞ্জে ১৩০ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে আবারও একদিনে সর্বোচ্চ করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় মারা গেছেন ১৭ জন। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর একদিনে এত আক্রান্ত শনাক্ত হয়নি। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৮ জন নগরীর এবং ৯ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। চট্টগ্রামে গত বছরের ৩ এপ্রিল প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ৯ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম কোন ব্যক্তি মারা যান।

সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৭৫১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ৫৯ হাজার ৮২২ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা ১৯ হাজার ৯২৯ জন। করোনায় এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে মারা গেছেন মোট ৯৪৯ জন। এর মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ৫৬৯ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা ৩৮০ জন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের দিন বুধবার ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন ল্যাবে ৩ হাজার ৫১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৩১৫ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর ৮৫৮ জন এবং ৪৫৭ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। সংক্রমণের হার ৩৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। উপজেলাগুলোর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ফটিকছড়িতে। এদিন ফটিকছড়িতে ৭৮ জন, রাউজানে ৬৯ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৪২ জন, আনোয়ারায় ৪১ জন, লোহাগাড়ায় ৩৭, হাটহাজারীতে ৩৫, পটিয়ায় ৩৩, বোয়ালখালীতে ৩২, সাতকানিয়ায় ২৭, বাঁশখালীতে ২৫, সীতাকু-ে ১৭, সন্দ্বীপে ১৩, মীরসরাইয়ে ৭ জন ও চন্দনাইশে একজন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন।

এদিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তানজিদা মোরশেদ। বৃহস্পতিবার ভোরে চট্টগ্রাম ডায়বেটিস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

তানজিদা মোরশেদের সহপাঠী মো. শওকত আলী বলেন, ঈদের আগ থেকে তানজিদার জ্বর ছিল। অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় গতকাল বুধবার বিকেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ায় আইসিইউতে পাঠানো হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।

তানজিদা চবি ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্স বর্ষের শিক্ষার্থী। বিভাগে তিনি ফার্স্ট ক্লাস সেকেন্ড ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তানজিদার পরিবারে মা ও বড় বোন আছেন। তিনি পরিবারের সঙ্গে নগরের হালিশহর থানার বি-ব্লক আবাসিকে থাকতেন। সকাল সাড়ে ১০টায় জানায়া শেষে হালিশহরে তাকে দাফন করা হয়।

ছবি

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সুনামগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁওয়ে দুই বাংলাদেশি নিহত

ছবি

আশুলিয়ায় সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি ‘হত্যা’

ছবি

ফেনীতে বন্যার পর রান্নাঘরে সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু

ছবি

ফেনীতে বন্যা: ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৩৪ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে ঘরে ফিরছেন

শ্রীনগরে ধর্ষণ মামলায় ইউপি সদস্য স্বপন মেম্বার গ্রেফতার হওয়ায় এলাকাবাসীর স্বস্তি! মিষ্টি বিতরণ

এবার ভোটের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার দাবি বিএনপির

ছবি

ছিনতাইয়ের ফোন রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও প্রতিবেশী দেশে পাচার, চট্টগ্রামে অভিযান

ছবি

সন্ধান মেলেনি সাগরে নিখোঁজ চবি শিক্ষার্থী অরিত্র হাসানের

ছবি

তিস্তা-যমুনা চরের দারিদ্র্যতার ঝুঁকিতে ১৫ লাখ মানুষ

ছবি

বোয়ালখালীতে নিষিদ্ধ গাছের চারা ধ্বংস

নবাবগঞ্জে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু

চট্টগ্রামে স্ত্রীকে খুন করে পালিয়ে গেল স্বামী

নিজ ঘরে স্টিলের বাক্সে গৃহবধূর মরদেহ, স্বামী পুলিশ হেফাজতে

যাত্রাবাড়ীতে কয়েল জ্বালানোর সময় বিস্ফোরণ, মারা গেলেন ইতি আক্তার

বোরকা পরে স্ত্রীকে তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে পোশাকশ্রমিক নিহত

ছবি

মোহনগঞ্জ সাধারণ পাঠাগার আলো ছড়ানোর ৩৭ বছর

হত্যার হুমকি দিয়ে স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

কুষ্টিয়ায় অটোচালককে হত্যার প্রতিবাদে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী মহাসড়ক অবরোধ

লালমাইয়ে চার মাদকসেবী দণ্ডিত

ছবি

যমুনায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে ভাঙন দিশাহারা নদীপাড়ের মানুষ

ছবি

চকরিয়ায় সওজের জমি থেকে অবৈধ মার্কেট উচ্ছেদ অভিযান

স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা পরিষ্কার করলো যুবসমাজ

বিষ প্রয়োগে পুকুরের মাছ নিধনের অভিযোগ

ছবি

৪০ টাকার কাঁচা মরিচ এক সপ্তাহের ব্যবধানে নওগাঁয় ২৪০ টাকা

শ্রীমঙ্গলে অবৈধ ভারতীয় চা পাতা উদ্ধার, জরিমানা

নিখোঁজ তানজিদের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

অবশেষে কাশিমপুর ক্রসবাঁধ অপসারিত

জীবন্ত গাছের নীরব কান্না পেরেক ঢুকিয়ে ফেস্টুন টাঙিয়ে প্রচার-প্রচারণা

৯ মাস পর লিবিয়া থেকে ফিরলেন সাগর, মানবপাচারের ফাঁদ থেকে মুক্ত

সুন্দরবনে ৩টি ট্রলারসহ ২৭ জেলে আটক

১১ বছর পরে ফরিদপুরে রাজন হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

ছবি

পুনঃপ্রতিষ্ঠা পাচ্ছে মধুপুর শালবন

শেরপুরে নবম শ্রেণীর ছাত্রকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল

দৌলতপুরের সাবেক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুদক

ছবি

দশমিনার সবুজবাগে সরকারি খালটি মৃতপ্রায় জলাবদ্ধ শত শত পরিবার

tab

সারাদেশ

সংক্রমণ ঢাকা-চট্টগ্রামের পর কুমিল্লায় বেশি, মৃত্যুতেও তৃতীয়

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সংক্রমণ বেড়েই চলছে, বিভিন্ন স্থান ও গ্রাম থেকে করোনা আক্রান্তদের নিয়ে হাসপাতালে ভিড় করছেন স্বজনরা। বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল থেকে তোলা ছবি-সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১

ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছাড়া অন্য জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে কুমিল্লায়। মৃত্যুতেও তৃতীয় অবস্থানে কুমিল্লা। এই জেলায় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণ শনাক্তের এখনও ৪০ শতাংশের ওপরে।

গত পাঁচদিনেই কুমিল্লায় সাড়ে তিন হাজার করোনা (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। জেলায় সংক্রমণের ‘উচ্চ’ হার থাকলেও জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দাবি পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রণে’ রয়েছে। তারা বলছেন, আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সংক্রমণ অনেকটাই কমে আসবে।

কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসেইন বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সংবাদকে বলেন, ‘সংক্রমণ সারাদেশেই বেশি। এখানে টেস্ট বেশি হওয়ায় শনাক্তও বেশি হচ্ছে। সংক্রমণ একেবারে বেশি তা বলা যাবে না। আজকে নয়শ’ জনের কিছু বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। আমরা আশা করছি, ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসে যাবে।’ জুলাইয়ের প্রথম দিকে কুমিল্লায় করোনা সংক্রমণ হার ৪৮ শতাংশের বেশি ছিল জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘এখন তা প্রায় ৪০ শতাংশ। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে। আক্রান্তদের চিকিৎসাও ঠিকভাবেই হচ্ছে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গত পাঁচদিনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঢাকা মহানগরসহ ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি মানুষের করোনা সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছে। এরপর চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় শনাক্তের সংখ্যায় খুব বেশি পার্থক্য নেই। তবে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণ শনাক্তের হারে ঢাকা ও চট্টগামের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে কুমিল্লা।

বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় চার হাজার ৭১৮ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে কুমিল্লায় ৮৪৬ জন এবং চট্টগ্রাম জেলায় এক হাজার ৩১৫ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এর আগে গতকাল ২৮ জুলাই ঢাকায় ছয় হাজার ২৬৯ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এদিন চট্টগ্রামে ৯১৫ জন এবং কুমিল্লায় ৮৫৩ জনের সংক্রমণ পাওয়া যায়।

২৭ জুলাই ঢাকা জেলায় চার হাজার ১৭২ জনের শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়। এদিন চট্টগ্রামে এক হাজার ৩১০ জন এবং কুমিল্লায় ৮৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

২৬ জুলাই ছয় হাজার ৪০ জনের করোনা সংক্রমণ পাওয়া যায় ঢাকায়। এদিন চট্টগ্রামে ৮৪৮ জন এবং কুমিল্লায় ৭০১ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

২৫ জুলাই ঢাকা জেলায় করোনা সংক্রমণ পাওয়া যায় তিন হাজার ৪৫৫ জনের শরীরে। এদিন চট্টগ্রামে ৮০১ জন এবং কুমিল্লায় ২৬৩ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

রাজধানী ঢাকার পর করোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা জেলায়। এই দুই জেলায় ইতোমধ্যে মৃত্যু হাজারের ঘর ছাড়িয়েছে। এককভাবে আর কোন জেলায় এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়নি।

মহানগরসহ ঢাকা জেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ছয় হাজার ৩৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামে। এই জেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক হাজার ৭১ জন মারা গেছেন। মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে কুমিল্লা। এই জেলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক হাজার ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচদিনে কুমিল্লায় ৮৭ জন মারা গেছেন করোনায়। এর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জন, ২৮ জুলাই ১৮ জন, ২৭ জুলাই ১৫ জন, ২৬ জুলাই ২৭ জন ও ২৫ জুলাই ১৪ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ২৩৯ জন ও শনাক্ত ১৫ হাজারের বেশি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে বলা হয়, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের নিয়ে সরকারি হিসাবে মোট ২০ হাজার ২৫৫ জনের মৃত্যু হলো।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৫ হাজার ২৭১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত ১২ লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

ওই ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ১৪ হাজার ৩৩৬ জন সুস্থ হয়েছেন। তাদের নিয়ে দেশে মোট সুস্থ হলেন দশ লাখ ৫০ হাজার ২২০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫২ হাজার ২৮২টি। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮৭০টি।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ২১ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ শতাংশ।

আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৬৫ শতাংশ।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১২৩ জন এবং নারী ১১৬ জন। আর এ পর্যন্ত মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ৭৫০ জন এবং নারী ছয় হাজার ৫০৫ জন। গত একদিনে মারা যাওয়া ২৩৯ জনের মধ্যে ১৫ জন বাসায় মারা গেছেন। বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭৬ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া চট্টগ্রামে ৫৭, রাজশাহীতে ১৩, খুলনায় ৪৫, বরিশালে ১৪, সিলেটে ১৪, রংপুরে ১১ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে। অন্যদের মধ্যে ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৬৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে তিনজন এবং শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

৩৬ জেলায় একশ’জনের বেশি রোগী শনাক্ত

২৪ ঘণ্টায় মহানগরসহ ঢাকা জেলায় চার হাজার ৭১৮ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই বিভাগের অন্য জেলার মধ্যে ফরিদপুরে ১৪৪ জন, গাজীপুরে ২৬৬ জন, গোপালগঞ্জে ২০৪ জন, কিশোরগঞ্জে ১৩২ জন, মানিকগঞ্জে ২০৩ জন, মুন্সীগঞ্জে ২৯৪ জন, নারায়ণগঞ্জে ২৫৪ জন, নরসিংদীতে ২৭৯ জন, রাজবাড়ীতে ১৪৭ জন, শরীয়তপুরে ১৬৩ জন ও টাঙ্গাইলে ১২৫ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় ৪৫৮ জন ও নেত্রকোনায় ১০২ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় এক হাজার ৩১৫ জন, কক্সবাজারে ৩২৪ জন, ফেনীতে ২১৭ জন, নোয়াখালীতে ২২৮ জন, লক্ষ্মীপুরে ২০৫ জন, চাঁদপুরে ২৪১ জন, কুমিল্লায় ৮৪৬ জন ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ২৪৪ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগের মধ্যে রাজশাহীতে ২১২ জন, পাবনায় ১১৫ জন, সিরাজগঞ্জে ১৪৯ জন ও বগুড়ায় ১১২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

রংপুর বিভাগের মধ্যে রংপুর জেলায় ১৭৬ জন ও দিনাজপুরে ১৮০ জনের দেহে সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

খুলনা বিভাগের মধ্যে যশোরে ২৭৯ জন, খুলনায় ১৮০ জন ও কুষ্টিয়ায় ১৪৯ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

বরিশাল বিভাগের মধ্যে বরিশাল জেলায় ২৬৫ জন, পটুয়াখালীতে ১৭৮ জন ও ভোলায় ১১৩ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

সিলেট বিভাগের মধ্যে সিলেটে ৩৮৬ জন ও সুনামগঞ্জে ১৩০ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে আবারও একদিনে সর্বোচ্চ করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় মারা গেছেন ১৭ জন। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর একদিনে এত আক্রান্ত শনাক্ত হয়নি। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৮ জন নগরীর এবং ৯ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। চট্টগ্রামে গত বছরের ৩ এপ্রিল প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ৯ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম কোন ব্যক্তি মারা যান।

সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৭৫১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ৫৯ হাজার ৮২২ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা ১৯ হাজার ৯২৯ জন। করোনায় এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে মারা গেছেন মোট ৯৪৯ জন। এর মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ৫৬৯ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা ৩৮০ জন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের দিন বুধবার ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন ল্যাবে ৩ হাজার ৫১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৩১৫ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর ৮৫৮ জন এবং ৪৫৭ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। সংক্রমণের হার ৩৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। উপজেলাগুলোর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ফটিকছড়িতে। এদিন ফটিকছড়িতে ৭৮ জন, রাউজানে ৬৯ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৪২ জন, আনোয়ারায় ৪১ জন, লোহাগাড়ায় ৩৭, হাটহাজারীতে ৩৫, পটিয়ায় ৩৩, বোয়ালখালীতে ৩২, সাতকানিয়ায় ২৭, বাঁশখালীতে ২৫, সীতাকু-ে ১৭, সন্দ্বীপে ১৩, মীরসরাইয়ে ৭ জন ও চন্দনাইশে একজন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন।

এদিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তানজিদা মোরশেদ। বৃহস্পতিবার ভোরে চট্টগ্রাম ডায়বেটিস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

তানজিদা মোরশেদের সহপাঠী মো. শওকত আলী বলেন, ঈদের আগ থেকে তানজিদার জ্বর ছিল। অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় গতকাল বুধবার বিকেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ায় আইসিইউতে পাঠানো হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।

তানজিদা চবি ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্স বর্ষের শিক্ষার্থী। বিভাগে তিনি ফার্স্ট ক্লাস সেকেন্ড ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তানজিদার পরিবারে মা ও বড় বোন আছেন। তিনি পরিবারের সঙ্গে নগরের হালিশহর থানার বি-ব্লক আবাসিকে থাকতেন। সকাল সাড়ে ১০টায় জানায়া শেষে হালিশহরে তাকে দাফন করা হয়।

back to top