২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯৪ জন, মোট আক্রান্ত ২২৯২
প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও। ২৪ ঘণ্টার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৯৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সরকারি হিসাবে বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৬৪২ জন।
ডেঙ্গুজ্বর এতদিন ঢাকায় ছিল। এখন ঢাকার বাইরে থেকেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় নতুন ভর্তি ১৮১ জন ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন শহরে আরও ১৩ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ভর্তি হয়েছেন ২২৯২ জন। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. কামরুল কিবরিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে ডাক্তারদের চেম্বারে গিয়ে চিকিৎসা নেন। তারা বাসায় থাকেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, নতুন করে হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে মিটফোর্ড হাসপাতালে ৩৬ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৯ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ জন, পিলখানা বিজিবি হাসপাতালে ১ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১০ জন ভর্তি হয়েছেন।
ঢাকার বাইরে খুলনা বিভাগে ৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন, ঢাকার আশপাশ এলাকায় আরও ৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ২ জন ডেঙ্গু হেমরোজিকে আক্রান্ত।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. সৈয়দ সফি আহমেদ সংবাদকে জানান, দিনের বেলা ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিশ মশা শিশুদের বেশি কামড়ায়। এখন শিশু হাসপাতালে ২৫ জন শিশু ভর্তি আছে। শিশুদের রক্ষায় বাসাবাড়ি নিজেদেরই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোথাও ডেঙ্গুজ্বরের লার্ভা যাতে না থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রো-ভিসি (একাডেমি) প্রফেসর ডা. একেএম মোশারফ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংবাদ প্রতিবেদককে জানান, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী হাসপাতাল ছাড়া চিকিৎসকদের চেম্বারে যান। ডেঙ্গু ও করোনা (দুই ধরনের ভাইরাস ) আক্রান্ত এমন একজন রোগী তার কাছে চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন। তার বয়স ৩৪ বছর। তার করোনা ছাড়াও জ্বর ও গায়ে ব্যথা ছিল।
এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসায় সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। রক্ত পরীক্ষা করে অনুচক্রিকা কি অবস্থায় আছে তা দেখে চিকিৎসা করতে হবে। ডেঙ্গুতে অনুচক্রিকা কমে। তবে রক্তক্ষরণের প্রবণতা দেখা দেয়। ওই সময় চিকিৎসায় সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার।
করোনা আক্রান্ত রোগী সর্দি, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথার সিমট্রম থাকে। আর ডেঙ্গু রোগীর প্রথমে তীব্র জ্বর, গায়ে, পিঠে তীব্র ব্যথাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া ডেঙ্গুতে সর্দি, কাশি থাকে না। তাই জ্বরের রোগী হলে পরীক্ষা করে চিকিৎসা করা দরকার।
এ বিশেষজ্ঞ বলেন, অনেকই বাসা-বাড়ির ছাদে টবে শখের বাগান করছেন। সেখানে পানি জমে থাকে। তাই কিছু কিছু বাড়ির ছাদেও মশার প্রজননক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। এডিশ মশার বংশ ধ্বংস না করলে পরিস্থিতির অবনতি হবে। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে মশারি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে বলে তিনি পরামর্শ দেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোজাম্মেল হক সংবাদকে জানান, বৃহস্পতিবার মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগে ৫ শিশুর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে একজনকে ভর্তি করা হয়েছে। এতে বুঝা যাচ্ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ আগের চেয়ে বাড়ছে। ডেঙ্গু ও করোনা দুটি বিষয়কে মাথায় রেখে চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দেয়া হচ্ছে।
এ বিশেষজ্ঞ বলেন, শিশুদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু রোগের উপসর্গ তীব্র। তাদের সাধারণভাবে চিকিৎসা দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই তাদের শিশু আইসিইউতে (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) রেখে চিকিৎসা করতে হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়িতে মশার যন্ত্রণায় টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এমনকি বিভিন্ন অফিসে মশার উপদ্রব দেখা গেছে। পুরানা পল্টন, নয়া পল্টন, বাসাবো, খিলগাঁও, শাহজাহানপুর, যাত্রাবাড়ী, ধলপুর, উত্তরা, শান্তিবাগ, মিরপুর, গাবতলী, কল্যাণপুর, তাঁতীবাজার, মিটফোর্ড, আরমানীটোলা, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় এডিশ মশার উপদ্রব বাড়ছে।
২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯৪ জন, মোট আক্রান্ত ২২৯২
বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১
প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও। ২৪ ঘণ্টার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৯৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সরকারি হিসাবে বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৬৪২ জন।
ডেঙ্গুজ্বর এতদিন ঢাকায় ছিল। এখন ঢাকার বাইরে থেকেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় নতুন ভর্তি ১৮১ জন ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন শহরে আরও ১৩ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ভর্তি হয়েছেন ২২৯২ জন। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. কামরুল কিবরিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে ডাক্তারদের চেম্বারে গিয়ে চিকিৎসা নেন। তারা বাসায় থাকেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, নতুন করে হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে মিটফোর্ড হাসপাতালে ৩৬ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৯ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ জন, পিলখানা বিজিবি হাসপাতালে ১ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১০ জন ভর্তি হয়েছেন।
ঢাকার বাইরে খুলনা বিভাগে ৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন, ঢাকার আশপাশ এলাকায় আরও ৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ২ জন ডেঙ্গু হেমরোজিকে আক্রান্ত।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. সৈয়দ সফি আহমেদ সংবাদকে জানান, দিনের বেলা ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিশ মশা শিশুদের বেশি কামড়ায়। এখন শিশু হাসপাতালে ২৫ জন শিশু ভর্তি আছে। শিশুদের রক্ষায় বাসাবাড়ি নিজেদেরই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোথাও ডেঙ্গুজ্বরের লার্ভা যাতে না থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রো-ভিসি (একাডেমি) প্রফেসর ডা. একেএম মোশারফ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংবাদ প্রতিবেদককে জানান, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী হাসপাতাল ছাড়া চিকিৎসকদের চেম্বারে যান। ডেঙ্গু ও করোনা (দুই ধরনের ভাইরাস ) আক্রান্ত এমন একজন রোগী তার কাছে চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন। তার বয়স ৩৪ বছর। তার করোনা ছাড়াও জ্বর ও গায়ে ব্যথা ছিল।
এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসায় সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। রক্ত পরীক্ষা করে অনুচক্রিকা কি অবস্থায় আছে তা দেখে চিকিৎসা করতে হবে। ডেঙ্গুতে অনুচক্রিকা কমে। তবে রক্তক্ষরণের প্রবণতা দেখা দেয়। ওই সময় চিকিৎসায় সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার।
করোনা আক্রান্ত রোগী সর্দি, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথার সিমট্রম থাকে। আর ডেঙ্গু রোগীর প্রথমে তীব্র জ্বর, গায়ে, পিঠে তীব্র ব্যথাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া ডেঙ্গুতে সর্দি, কাশি থাকে না। তাই জ্বরের রোগী হলে পরীক্ষা করে চিকিৎসা করা দরকার।
এ বিশেষজ্ঞ বলেন, অনেকই বাসা-বাড়ির ছাদে টবে শখের বাগান করছেন। সেখানে পানি জমে থাকে। তাই কিছু কিছু বাড়ির ছাদেও মশার প্রজননক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। এডিশ মশার বংশ ধ্বংস না করলে পরিস্থিতির অবনতি হবে। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে মশারি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে বলে তিনি পরামর্শ দেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোজাম্মেল হক সংবাদকে জানান, বৃহস্পতিবার মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগে ৫ শিশুর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে একজনকে ভর্তি করা হয়েছে। এতে বুঝা যাচ্ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ আগের চেয়ে বাড়ছে। ডেঙ্গু ও করোনা দুটি বিষয়কে মাথায় রেখে চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দেয়া হচ্ছে।
এ বিশেষজ্ঞ বলেন, শিশুদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু রোগের উপসর্গ তীব্র। তাদের সাধারণভাবে চিকিৎসা দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই তাদের শিশু আইসিইউতে (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) রেখে চিকিৎসা করতে হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়িতে মশার যন্ত্রণায় টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এমনকি বিভিন্ন অফিসে মশার উপদ্রব দেখা গেছে। পুরানা পল্টন, নয়া পল্টন, বাসাবো, খিলগাঁও, শাহজাহানপুর, যাত্রাবাড়ী, ধলপুর, উত্তরা, শান্তিবাগ, মিরপুর, গাবতলী, কল্যাণপুর, তাঁতীবাজার, মিটফোর্ড, আরমানীটোলা, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় এডিশ মশার উপদ্রব বাড়ছে।