গ্রাম থেকে রাজধানীতে আসছে করোনা রোগীরা, কিন্তু হাসপাতালে শয্যা খালি নেই, তাই স্বজনরা রোগী নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে ছুটছে আরেক হাসপাতালে। শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানো হচ্ছে মুমূর্ষু রোগী-সংবাদ
শুক্রবার (৩০ জুলাই) সকালে পর পর দুটি অ্যাম্বুলেন্স এসে থামে মহাখালীর ডিএনসিসি কোভিড-১৯ হাসপাতালে। দুই রোগীর অবস্থাই আশঙ্কাজনক। এর মধ্যে একজন হাসনা বেগম। তার বাড়ি নরসিংদীতে, বয়স ৬০। হাসনার স্বজনরা জানান, সপ্তাহ খানেক আগে তার করোনা পজেটিভ আসে। ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার অবস্থা খারাপ হলে নরসিংদী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অক্সিজেন ও আইসিইউ সংকট থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক ঢাকায় আনার পরামর্শ দেন। তড়িঘড়ি করে সকালেই ঢাকায় নিয়ে আসি। প্রথমে মুগদা হাসপাতালে নেয়া হলেও বেড খালি নেই বলে তারা ভর্তি করাত রাজি হননি। সেখান থেকে নিয়ে এসেছি মহাখালীতে। অন্য রোগী শামসু মিয়ারও একই অবস্থা। ফেনী থেকে এসেছেন ঢাকায়। একাধিক হাসপাতাল ঘুরে থেমেছেন মহাখালী ডিএনসিসি কোভিড-১৯ হাসপাতালে।
রোগী নিয়ে ছোটাছুটি করা স্বজনদের ব্যস্ততা থেমে নেই এই লকডাউনে। দিন যত যাচ্ছে, মৃত্যুশয্যায় থাকা রোগীর স্বজনদের হাহাকারও যেন আরও বাড়ছে। করোনার হুঙ্কারে চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে সিট ফাঁকা নেই। সব মিলিয়ে রাজধানীর হাসপাতালগুলো এখন যেন আর রোগীর ভার সইতে পারছে না। কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের সামনে ‘সিট খালি’ নেই জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি টানাতে বাধ্য হচ্ছে।
শুক্রবার বিকেলে ৫টার দিকে আরও কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স এসে থামে মহাখালী ডিএনসিসি কোভিড-১৯ হাসপাতালের সামনে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেলসহ একাধিক হাসপাতাল ঘুরে এখানে এসেছেন বেশ কয়েকজন রোগী। যাদের প্রত্যেকেই করোনা আক্রান্ত। তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অক্সিজেন সংকট ও বেড খালি না থাকায় ঘুরতে হয়েছে একাধিক হাসপাতাল। এদিকে সময় যত যাচ্ছে রোগীর অবস্থাও তত আশঙ্কাজনক হচ্ছে। এমতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করতে পারবেন নাকি অ্যাম্বুলেন্সেই স্বজনকে হারাবেন, সেই শঙ্কায় আছেন তারা।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে করোনা ইউনিটে ভর্তি হতে এসেছেন সুমাইয়া (১৮)। চিকিৎসা না পেয়ে মেয়েকে নিয়ে ফিরে যান মা মাজেদা বেগম। সংবাদকে তিনি বলেন, ‘শ্বাষকষ্ট দেইখা মাইয়ারে বালা করনের লইগা ঢাকা মেডিকেল করোনা ইউনিটে নিয়া আইছিলাম। মেডিকেল-২ এর নিচতালা, যেহানে করোনা রোগী ভর্তির রুম, সেখানে ডাক্তার আমার মাইয়ারে ভর্তি করে নাই। ডাক্তার কইছে, আপনার মাইয়ারে বাইত নিয়া যান, কিছু ওষুধ খাওয়ান, তাইলে বালা অইয়া যাইবো। বাবা অহন আমরা কই যামু, আমরা গরিব মানুষ, সুমাইয়ার বাবা মিস্ত্রি কাম করে। বাইরে হাসপাতালালে অসুস্থ মেয়েকে চিকিৎসা করাতে তো মেলা টাহা লাগবো’ বলে কান্না করেন তিনি।
শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হতে এসেছেন আরেক রোগী জাহানারা (৫৫)। মুগদা এলাকা থেকে ঢামেকে করোনা ইউনিটে এসেছেন ভর্তি হওয়ার জন্য। কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও ঢামেকে ভর্তি হতে না পেরে অবশেষে স্বজনরা রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করান।
রাজধানীর একাধিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সংবাদ। তারা জানান, সাধারণ বেডে ভর্তি রোগীর ছুটি হলে নতুন রোগী ভর্তি করাতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ রোগীদের চাপ এত বেশি যে, বেশিরভাগ রোগীকেই ফেরত দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক সংবাদকে জানান, প্রতিদিন গ্রাম থেকে প্রচুর করোনা রোগী ঢাকা মেডিকেলে আসছে। রীতিমত আমরা হিমশিম খাচ্ছি। একটা অক্সিজেন পোর্ট তিন থেকে চারজন করোনা রোগীকে ভাগ করে দিতে হয়। অক্সিজেন পোর্ট বেশি পরিমাণে দরকার।
তিনি জানান, ঢাকা মেডিকেলে করোনা ইউনিটে নতুন ১৩টি আইসিউ বেড সংযোজন করা হয়েছে। সেগুলোর কয়েকটি রোগীদের দেয়া যাচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে আরও বেড চালু হবে। তখন সংকট আরেকটু কমবে।
ঢাকার হাসপাতালে শয্যা সংকট তৈরি হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে আটজনই গ্রাম থেকে এসেছেন।
তিনি জানান, পরে ঢাকার অন্যান্য হাসপাতালে খোঁজ নিয়েও দেখা গেছে, ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ গ্রাম থেকে আসা। একই সঙ্গে ভর্তি থাকা রোগীদের ৯০ শতাংশই টিকা নেননি। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়, গ্রামে সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সুতরাং গ্রামে ব্যাপকভিত্তিক টিকাদান শুরু করতে হবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যথায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রাজধানীতে সরকারি ও বেসরকারি করোনা হাসপাতালের সংখ্যা ৪৩টি। এসব হাসপাতালের ৫ হাজার ৭৯৯টি বেড আছে। এসব বেডের মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে সর্বোচ্চ দেড় হাজারের মতো খালি হচ্ছে, যা মোট বেডের ২৫ শতাংশ। বাকি সাড়ে চার হাজার অর্থাৎ ৭৫ শতাংশই রোগী ভর্তি।
অন্যদিকে এসব হাসপাতালে আইসিইউ বেডের সংখ্যা ৮৮৬টি। এর মধ্যে ঈদের পর থেকে সর্বোচ্চ ১০০ সিট খালি থাকছে। যা মোট আইসিইউয়ের মাত্র ১০ শতাংশ। বাকি ৭৮৬টি, অর্থাৎ ৯০ শতাংশ আইসিইউতে রোগী।
রোগী বাড়লে হাসপাতালে শয্যা সংকট তৈরি হবে বলে মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও। এর আগে তিনি বলেছেন, ইতোমধ্যে রাজধানীর কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে শয্যার ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। অনেক হাসপাতালে আইসিইউর পাশাপাশি সাধারণ শয্যাও ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না। একটি শয্যা ফাঁকা হলে ১০ থেকে ১৫ জন রোগী সিরিয়ালে থাকছেন। কার আগে কে ভর্তি হবেন- এমন প্রতিযোগিতা চলছে। ঢাকায় বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে গ্রাম থেকে আক্রান্তরা ঢাকায় ভিড় করছেন। সব মিলিয়ে ঢাকার হাসপাতালে শয্যা সংকট তৈরি হয়েছে। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে কোন চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাই কাজে আসবে না। সুতরাং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
গ্রাম থেকে রাজধানীতে আসছে করোনা রোগীরা, কিন্তু হাসপাতালে শয্যা খালি নেই, তাই স্বজনরা রোগী নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে ছুটছে আরেক হাসপাতালে। শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানো হচ্ছে মুমূর্ষু রোগী-সংবাদ
শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১
শুক্রবার (৩০ জুলাই) সকালে পর পর দুটি অ্যাম্বুলেন্স এসে থামে মহাখালীর ডিএনসিসি কোভিড-১৯ হাসপাতালে। দুই রোগীর অবস্থাই আশঙ্কাজনক। এর মধ্যে একজন হাসনা বেগম। তার বাড়ি নরসিংদীতে, বয়স ৬০। হাসনার স্বজনরা জানান, সপ্তাহ খানেক আগে তার করোনা পজেটিভ আসে। ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার অবস্থা খারাপ হলে নরসিংদী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অক্সিজেন ও আইসিইউ সংকট থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক ঢাকায় আনার পরামর্শ দেন। তড়িঘড়ি করে সকালেই ঢাকায় নিয়ে আসি। প্রথমে মুগদা হাসপাতালে নেয়া হলেও বেড খালি নেই বলে তারা ভর্তি করাত রাজি হননি। সেখান থেকে নিয়ে এসেছি মহাখালীতে। অন্য রোগী শামসু মিয়ারও একই অবস্থা। ফেনী থেকে এসেছেন ঢাকায়। একাধিক হাসপাতাল ঘুরে থেমেছেন মহাখালী ডিএনসিসি কোভিড-১৯ হাসপাতালে।
রোগী নিয়ে ছোটাছুটি করা স্বজনদের ব্যস্ততা থেমে নেই এই লকডাউনে। দিন যত যাচ্ছে, মৃত্যুশয্যায় থাকা রোগীর স্বজনদের হাহাকারও যেন আরও বাড়ছে। করোনার হুঙ্কারে চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে সিট ফাঁকা নেই। সব মিলিয়ে রাজধানীর হাসপাতালগুলো এখন যেন আর রোগীর ভার সইতে পারছে না। কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের সামনে ‘সিট খালি’ নেই জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি টানাতে বাধ্য হচ্ছে।
শুক্রবার বিকেলে ৫টার দিকে আরও কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স এসে থামে মহাখালী ডিএনসিসি কোভিড-১৯ হাসপাতালের সামনে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেলসহ একাধিক হাসপাতাল ঘুরে এখানে এসেছেন বেশ কয়েকজন রোগী। যাদের প্রত্যেকেই করোনা আক্রান্ত। তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অক্সিজেন সংকট ও বেড খালি না থাকায় ঘুরতে হয়েছে একাধিক হাসপাতাল। এদিকে সময় যত যাচ্ছে রোগীর অবস্থাও তত আশঙ্কাজনক হচ্ছে। এমতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করতে পারবেন নাকি অ্যাম্বুলেন্সেই স্বজনকে হারাবেন, সেই শঙ্কায় আছেন তারা।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে করোনা ইউনিটে ভর্তি হতে এসেছেন সুমাইয়া (১৮)। চিকিৎসা না পেয়ে মেয়েকে নিয়ে ফিরে যান মা মাজেদা বেগম। সংবাদকে তিনি বলেন, ‘শ্বাষকষ্ট দেইখা মাইয়ারে বালা করনের লইগা ঢাকা মেডিকেল করোনা ইউনিটে নিয়া আইছিলাম। মেডিকেল-২ এর নিচতালা, যেহানে করোনা রোগী ভর্তির রুম, সেখানে ডাক্তার আমার মাইয়ারে ভর্তি করে নাই। ডাক্তার কইছে, আপনার মাইয়ারে বাইত নিয়া যান, কিছু ওষুধ খাওয়ান, তাইলে বালা অইয়া যাইবো। বাবা অহন আমরা কই যামু, আমরা গরিব মানুষ, সুমাইয়ার বাবা মিস্ত্রি কাম করে। বাইরে হাসপাতালালে অসুস্থ মেয়েকে চিকিৎসা করাতে তো মেলা টাহা লাগবো’ বলে কান্না করেন তিনি।
শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হতে এসেছেন আরেক রোগী জাহানারা (৫৫)। মুগদা এলাকা থেকে ঢামেকে করোনা ইউনিটে এসেছেন ভর্তি হওয়ার জন্য। কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও ঢামেকে ভর্তি হতে না পেরে অবশেষে স্বজনরা রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করান।
রাজধানীর একাধিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সংবাদ। তারা জানান, সাধারণ বেডে ভর্তি রোগীর ছুটি হলে নতুন রোগী ভর্তি করাতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ রোগীদের চাপ এত বেশি যে, বেশিরভাগ রোগীকেই ফেরত দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক সংবাদকে জানান, প্রতিদিন গ্রাম থেকে প্রচুর করোনা রোগী ঢাকা মেডিকেলে আসছে। রীতিমত আমরা হিমশিম খাচ্ছি। একটা অক্সিজেন পোর্ট তিন থেকে চারজন করোনা রোগীকে ভাগ করে দিতে হয়। অক্সিজেন পোর্ট বেশি পরিমাণে দরকার।
তিনি জানান, ঢাকা মেডিকেলে করোনা ইউনিটে নতুন ১৩টি আইসিউ বেড সংযোজন করা হয়েছে। সেগুলোর কয়েকটি রোগীদের দেয়া যাচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে আরও বেড চালু হবে। তখন সংকট আরেকটু কমবে।
ঢাকার হাসপাতালে শয্যা সংকট তৈরি হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে আটজনই গ্রাম থেকে এসেছেন।
তিনি জানান, পরে ঢাকার অন্যান্য হাসপাতালে খোঁজ নিয়েও দেখা গেছে, ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ গ্রাম থেকে আসা। একই সঙ্গে ভর্তি থাকা রোগীদের ৯০ শতাংশই টিকা নেননি। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়, গ্রামে সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সুতরাং গ্রামে ব্যাপকভিত্তিক টিকাদান শুরু করতে হবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যথায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রাজধানীতে সরকারি ও বেসরকারি করোনা হাসপাতালের সংখ্যা ৪৩টি। এসব হাসপাতালের ৫ হাজার ৭৯৯টি বেড আছে। এসব বেডের মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে সর্বোচ্চ দেড় হাজারের মতো খালি হচ্ছে, যা মোট বেডের ২৫ শতাংশ। বাকি সাড়ে চার হাজার অর্থাৎ ৭৫ শতাংশই রোগী ভর্তি।
অন্যদিকে এসব হাসপাতালে আইসিইউ বেডের সংখ্যা ৮৮৬টি। এর মধ্যে ঈদের পর থেকে সর্বোচ্চ ১০০ সিট খালি থাকছে। যা মোট আইসিইউয়ের মাত্র ১০ শতাংশ। বাকি ৭৮৬টি, অর্থাৎ ৯০ শতাংশ আইসিইউতে রোগী।
রোগী বাড়লে হাসপাতালে শয্যা সংকট তৈরি হবে বলে মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও। এর আগে তিনি বলেছেন, ইতোমধ্যে রাজধানীর কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে শয্যার ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। অনেক হাসপাতালে আইসিইউর পাশাপাশি সাধারণ শয্যাও ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না। একটি শয্যা ফাঁকা হলে ১০ থেকে ১৫ জন রোগী সিরিয়ালে থাকছেন। কার আগে কে ভর্তি হবেন- এমন প্রতিযোগিতা চলছে। ঢাকায় বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে গ্রাম থেকে আক্রান্তরা ঢাকায় ভিড় করছেন। সব মিলিয়ে ঢাকার হাসপাতালে শয্যা সংকট তৈরি হয়েছে। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে কোন চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাই কাজে আসবে না। সুতরাং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।