বাড়ানো হয়েছে ফেরি, যাচ্ছে শুধু যাত্রী নিয়ে
কঠোর লকডাউনের ৯ম দিনে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপে বেসামাল পরিস্থিতি হয়েছে। বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী চাপে ফেরিতে জরুরী গাড়ি উঠাতে হিমশিম খাচ্ছে। গার্মেন্টসসহ রপ্তানীমুখী কল কারখানা খোলার ঘোষণায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিসি সুত্র দাবী করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ফেরির সংখ্যা ৬ থেকে বাড়িয়ে ১০ করা হয়েছে। শিমুলীয়া ঘাট থেকে এ পর্যন্ত ১২ টি খালি ফেরি আনা হয়েছে বাংলাবাজার ঘাটে। যাত্রীদের চাপে এদিন অন্তত ১০ ফেরি বাংলাবাজার ঘাট থেকে শুধুমাত্র যাত্রী নিয়ে শিমুলীয়া উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা যায়, গার্মেন্টসসহ রপ্তানীমুখী কল কারখানা খোলার ঘোষনায় শনিবার সকাল থেকেই বাংলাবাজার-শিমুলীয়া নৌরুটে যাত্রীদের ভীড় শুরু হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে যাত্রী চাপ আরো বৃদ্ধি পায়। দক্ষিনাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে হাজার হাজার যাত্রীরা বাংলাবাজার ঘাটে পৌছেন।
বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, মাদারীপুরসহ দক্ষিনাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে মটরসাইকেল, ঈজিবাইক, থ্রীহুইলারসহ হালকা যানবাহনে চড়ে ঘাটে আসছেন যাত্রীরা । প্রতিটি হালকা যানবাহনেই প্রায় তিনগুন ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। এদিন যাত্রী চাপে ফেরি সংখ্যা ৬ থেকে বাড়িয়ে ১০ টি করে বিআইডব্লিউটিসি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১২ টি খালী ফেরি শিমুলীয়া ঘাট থেকে বাংলাবাজার ঘাটে আনা হয়। অন্তত ১০ টি ফেরি কোন গাড়ি ছাড়াই শুধুমাত্র যাত্রী নিয়ে শিমুলীয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ফেরিতে যাত্রীরা গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। ফলে দেখা যায়নি স্বাস্থ্যবিধি মানতে। অনেকের মুখে ছিলো না কোন মাক্স। এরুটের লঞ্চসহ অন্যান্য নৌযান বন্ধ রয়েছে। এদিকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় স্রোতের গতিও বৃদ্ধি পেয়ে ফেরি পারাপারে দীর্ঘ সময় লাগছে।
বরিশাল থেকে আসা গাজীপুরের একটি পোষাক কারখানার শ্রমিক আলমগীর হোসেন বলেন, গার্মেন্টস বন্ধ হওয়ার পর পরিবারের সবাইকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে এসেছিলাম। এখন কালকে থেকে গার্মেন্টস খোলা তাই আবার গাজীপুর ফিরে যাচ্ছি। সময়মত গার্মেন্টেসে উপস্থিত না হলে চাকরী থাকবে না।
পটুয়াখালী থেকে আসা ঢাকার সাভারের একটি পোষাক কারখানার শ্রমিক শিউলী আক্তার বলেন, করোনার কারনে সব কিছু বন্ধ তবু গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হলো। এটা কেমন সিদ্ধান্ত ? আমি আর আমার স্বামী দুজনেই গার্মেন্টেসে চাকুরী করি। যদি গার্মেন্টেসে না যাই তবে চাকুরী থাকবে না। করোনা হোক আর যাই হোক পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে সময়মত কাজে যোগ দিতেই হবে।
মাদারীপুরের মোহনা আক্তার বলেন, আমি ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করি। সরকার লকডাউনে সব কিছু বন্ধ রাখলো কিন্তু গামেন্টস খুলে দিলো। চাকুরী বাঁচাতে আমরা এখন ঢাকায় যাচ্ছি। অথচ সকল পরিবহন বন্ধ। ইজিবাইকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বাংলাবাজার ঘাট পর্যন্ত ৮ শ টাকা ভাড়া দিলাম। এখন ঘাটে ফেরিতে যে ভীড় তাতে উঠতেই পারছিনা। আর স্বাস্থ্যবিধি এখানে কেউ মানছে না। অনেকের মুখে মাক্সও নেই। লঞ্চগুলো যদি চালু থাকতো তাহলে এই সমস্যা হতো না।
খুলনার সাইদুর রহমান বলেন, সরকার গামেন্টস খুলে দিলো ঠিক আছে তবে আমাদের মত শ্রমিকদের ঢাকায় পৌছানোর জন্য পরিবহনও খুলে দেওয়া হোক। তিনগুন ভাড়া দিয়ে ভোগান্তি মাথায় নিয়ে চাকুরী বাঁচাতে যেতে হচ্ছে ঢাকায়। আর ফেরিতে যে ভীড় দেখছি তাতে করোনা নেই বললেই চলে।
রো রো ফেরি শাহ পরানের মাস্টার ইনচার্জ মো: সিরাজ বলেন, ফেরিতে যাত্রীদের প্রচন্ড চাপ থাকায় ঠিকমত গাড়ি উঠতে পারছে না। মূলত গার্মেন্টস কর্মীদের জন্যই এই ভীড়।
বাংলাবাজার ঘাট ম্যানেজার মো: সালাউদ্দিন বলেন, গার্মেন্টস কর্মীদের প্রচন্ড চাপ রয়েছে সকাল থেকে। এজন্য ফেরি সংখ্যা ৬ থেকে ১০ বাড়ানো হয়েছে। এরপরও প্রচন্ড চাপ রয়েছে ঘাটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ পর্যন্ত শিমুলীয়া থেকে ১২ টি খালি ফেরি বাংলাবাজার ঘাটে আনা হয়েছে।
বাড়ানো হয়েছে ফেরি, যাচ্ছে শুধু যাত্রী নিয়ে
শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১
কঠোর লকডাউনের ৯ম দিনে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপে বেসামাল পরিস্থিতি হয়েছে। বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী চাপে ফেরিতে জরুরী গাড়ি উঠাতে হিমশিম খাচ্ছে। গার্মেন্টসসহ রপ্তানীমুখী কল কারখানা খোলার ঘোষণায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিসি সুত্র দাবী করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ফেরির সংখ্যা ৬ থেকে বাড়িয়ে ১০ করা হয়েছে। শিমুলীয়া ঘাট থেকে এ পর্যন্ত ১২ টি খালি ফেরি আনা হয়েছে বাংলাবাজার ঘাটে। যাত্রীদের চাপে এদিন অন্তত ১০ ফেরি বাংলাবাজার ঘাট থেকে শুধুমাত্র যাত্রী নিয়ে শিমুলীয়া উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা যায়, গার্মেন্টসসহ রপ্তানীমুখী কল কারখানা খোলার ঘোষনায় শনিবার সকাল থেকেই বাংলাবাজার-শিমুলীয়া নৌরুটে যাত্রীদের ভীড় শুরু হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে যাত্রী চাপ আরো বৃদ্ধি পায়। দক্ষিনাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে হাজার হাজার যাত্রীরা বাংলাবাজার ঘাটে পৌছেন।
বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, মাদারীপুরসহ দক্ষিনাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে মটরসাইকেল, ঈজিবাইক, থ্রীহুইলারসহ হালকা যানবাহনে চড়ে ঘাটে আসছেন যাত্রীরা । প্রতিটি হালকা যানবাহনেই প্রায় তিনগুন ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। এদিন যাত্রী চাপে ফেরি সংখ্যা ৬ থেকে বাড়িয়ে ১০ টি করে বিআইডব্লিউটিসি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১২ টি খালী ফেরি শিমুলীয়া ঘাট থেকে বাংলাবাজার ঘাটে আনা হয়। অন্তত ১০ টি ফেরি কোন গাড়ি ছাড়াই শুধুমাত্র যাত্রী নিয়ে শিমুলীয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ফেরিতে যাত্রীরা গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। ফলে দেখা যায়নি স্বাস্থ্যবিধি মানতে। অনেকের মুখে ছিলো না কোন মাক্স। এরুটের লঞ্চসহ অন্যান্য নৌযান বন্ধ রয়েছে। এদিকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় স্রোতের গতিও বৃদ্ধি পেয়ে ফেরি পারাপারে দীর্ঘ সময় লাগছে।
বরিশাল থেকে আসা গাজীপুরের একটি পোষাক কারখানার শ্রমিক আলমগীর হোসেন বলেন, গার্মেন্টস বন্ধ হওয়ার পর পরিবারের সবাইকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে এসেছিলাম। এখন কালকে থেকে গার্মেন্টস খোলা তাই আবার গাজীপুর ফিরে যাচ্ছি। সময়মত গার্মেন্টেসে উপস্থিত না হলে চাকরী থাকবে না।
পটুয়াখালী থেকে আসা ঢাকার সাভারের একটি পোষাক কারখানার শ্রমিক শিউলী আক্তার বলেন, করোনার কারনে সব কিছু বন্ধ তবু গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হলো। এটা কেমন সিদ্ধান্ত ? আমি আর আমার স্বামী দুজনেই গার্মেন্টেসে চাকুরী করি। যদি গার্মেন্টেসে না যাই তবে চাকুরী থাকবে না। করোনা হোক আর যাই হোক পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে সময়মত কাজে যোগ দিতেই হবে।
মাদারীপুরের মোহনা আক্তার বলেন, আমি ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করি। সরকার লকডাউনে সব কিছু বন্ধ রাখলো কিন্তু গামেন্টস খুলে দিলো। চাকুরী বাঁচাতে আমরা এখন ঢাকায় যাচ্ছি। অথচ সকল পরিবহন বন্ধ। ইজিবাইকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বাংলাবাজার ঘাট পর্যন্ত ৮ শ টাকা ভাড়া দিলাম। এখন ঘাটে ফেরিতে যে ভীড় তাতে উঠতেই পারছিনা। আর স্বাস্থ্যবিধি এখানে কেউ মানছে না। অনেকের মুখে মাক্সও নেই। লঞ্চগুলো যদি চালু থাকতো তাহলে এই সমস্যা হতো না।
খুলনার সাইদুর রহমান বলেন, সরকার গামেন্টস খুলে দিলো ঠিক আছে তবে আমাদের মত শ্রমিকদের ঢাকায় পৌছানোর জন্য পরিবহনও খুলে দেওয়া হোক। তিনগুন ভাড়া দিয়ে ভোগান্তি মাথায় নিয়ে চাকুরী বাঁচাতে যেতে হচ্ছে ঢাকায়। আর ফেরিতে যে ভীড় দেখছি তাতে করোনা নেই বললেই চলে।
রো রো ফেরি শাহ পরানের মাস্টার ইনচার্জ মো: সিরাজ বলেন, ফেরিতে যাত্রীদের প্রচন্ড চাপ থাকায় ঠিকমত গাড়ি উঠতে পারছে না। মূলত গার্মেন্টস কর্মীদের জন্যই এই ভীড়।
বাংলাবাজার ঘাট ম্যানেজার মো: সালাউদ্দিন বলেন, গার্মেন্টস কর্মীদের প্রচন্ড চাপ রয়েছে সকাল থেকে। এজন্য ফেরি সংখ্যা ৬ থেকে ১০ বাড়ানো হয়েছে। এরপরও প্রচন্ড চাপ রয়েছে ঘাটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ পর্যন্ত শিমুলীয়া থেকে ১২ টি খালি ফেরি বাংলাবাজার ঘাটে আনা হয়েছে।