রোগীর চাপে নাকাল দেশের সবকটি ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল। প্রতিদিনই রোগী শনাক্তের হার বাড়তে থাকায় কয়েক দফা শয্যা বৃদ্ধি করে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাচ্ছে না। করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিয়োজিত সারা দেশের মোট ১৩৪টি হাসপাতালের মধ্যে ন্যূনতম ২০টিতেই মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) মোট শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি ছিল। আর গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ‘আইসিইউ’ শয্যা (নিবিড় পরিচর্চা কেন্দ্র) খালি ছিল না বললেই চলে।
হাসপাতালে আসন সংকট দেখা দেয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কম ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের হোটেলে রেখে চিকিৎসা দেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে হাসপাতালে ৯০ শতাংশ সিট ভর্তি হয়ে গেছে; রোগী আছে সিট ফাঁকা নাই। আইসিইউ অলরেডি ৯৫ শতাংশ অকুপাইড।’
তবে জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সরকারের পর্যাপ্ত অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও হোটেল ভাড়া করে রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কোনো যুক্তি নেই। ঢাকার বড় দু-একটি কলেজেই অস্থায়ীভাবে রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ‘কোভিড-১৯’ প্রতিরোধে সরকার গঠিত ‘জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র সদস্য ও বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘রোগীর চিকিৎসার জন্য হোটেল কেন ভাড়া করতে হবে? জানি না এখানে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না। জেলা পর্যায়ের হাসপাতালের হাসপাতালে অক্সিজেন ও হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সরবরাহ করলেই হয়, আইসিইউ দিলেই হয়। যেখানে ডাক্তার কম সেখানে ডাক্তার পদায়ন করলেই হয়। হোটেল ভাড়া করলে কি চিকিৎসক, চিকিৎসা সরঞ্জাম লাগবে না?’
জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়েই রোগীরা ঢাকায় আসছেন-মন্তব্য বরে খ্যাতিমান এই রোগত্ত্ববিদ বলেন, ‘এখানেও চিকিৎসা নেই। অক্সিজেন না পেয়ে, হাসাপতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে রোগী মারা যাচ্ছে। জেলার হাসপাতালগুলোতেও রোগী ভর্তি নিচ্ছে না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩ জন। তাদের মধ্যে মোট সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ২৫ হাজার ৪৫ জন। আর মারা গেছেন ২১ হাজার ৩৯৭ জন।
এ হিসেবে, এ পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে চিকিৎসাধীন (অ্যাক্টিভ কেস) রোগী থাকে এক লাখ ৪৯ হাজার ৬৫১ জন। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ১১ হাজার ৫৬৫ জন। এ হিসেবে চিকিৎসাধীন রোগীর মধ্যে মাত্র ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি আছেন বা ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার বিকালে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে মোট ১৬ হাজার ৪৫৮টি সাধারণ শয্যার মধ্যে খালি ছিল চার হাজার ৮৯৩টি। যদিও ঢাকার হাসপাতালগুলোতে নতুন রোগী ভর্তি দেয়া যাচ্ছে না। আইসিইউ সংকটও চরম তীব্র হচ্ছে। রাজধানীর ছয়টিসহ সারাদেশের ২০টি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারা দেশের মোট এক হাজার ৩২৬টি ‘আইসিইউ’ শয্যার মধ্যে মঙ্গলবার খালি ছিল ১৬৩টি। অথচ গুরুতর অসুস্থ রোগী বা সিরিয়াস ক্রিটিক্যাল রোগী ছিল এক হাজার ৩৮১ জন। এ হিসেবে ‘গুরুতর অসুস্থ’ অনেক রোগীই আইসিইউ বা অক্সিজেন সাপোর্ট পাচ্ছে না।
রোগীর চাপ সামাল দিতে ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেটার কাজ চলমান। সেখানে ইমিডিয়েটলি আমরা হয়তো ৫০০ থেকে ৬০০ বেড রেডি করতে পারব। পরে তা এক হাজার বেডে নেয়া যাবে।’
করোনা আক্রান্ত সবাইকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ে না, জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘যেগুলো হালকা, মাইল্ড কেস, সে সব রোগীর জন্য আমরা আলাদা হোটেল ভাড়া করার চিন্তা করেছি। যে হোটেলের মধ্যে আমাদের ডাক্তার থাকবেন, নার্স থাকবেন, ওষুধপত্র থাকবে, কিছু অক্সিজেনের ব্যবস্থাও আমরা রাখব।’
হাসপাতাল করার আর জায়গা নেই, দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘হাসপাতাল খালিও নেই। তাই আমরা এখন হোটেল খুঁজছি।’
একদিনে মৃত্যু ২৩৫ জনের, শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ :
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্তদের মারা গেছেন ২৩৫ জন। তাদের নিয়ে দেশে করোনায় সরকারি হিসেবে মোট ২১ হাজার ৩৯৭ জনের মৃত্যু হলো।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৭৭৬ জনের দেহে। এ নিয়ে দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩ জনে।
এই একদিনে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৬ হাজার ২৯৭ জন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ২৫ হাজার ৪৫ জন।
২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৫ হাজার ২৮৪টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭৮ লাখ ৯৯ হাজার ১৬৯টি। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আর এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৬৫ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৪০ জন এবং নারী ৯৫ জন। আর এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার ৪১৯ জন এবং ছয় হাজার ৯৭৮ জন নারীর মৃত্যু হয়েছে।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে চারজনের বয়স ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে ছিল। অন্যদের মধ্যে ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪১ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৮০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে চারজন এবং ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বিভাগভিত্তিক তথ্যে দেখা গেছে, একদিনে সবচেয়ে বেশি ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ৬৫ জন, রাজশাহীতে ২১ জন, খুলনায় ৩২ জন, বরিশালে আটজন এবং সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ জন করে করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
মারা যাওয়া ২৩৫ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ১৭৩ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৪৬ জন, বাড়িতে ১৫ জন এবং হাসপাতালে মৃত অবস্থায় একজনকে আনা হয় বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
মঙ্গলবার, ০৩ আগস্ট ২০২১
রোগীর চাপে নাকাল দেশের সবকটি ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল। প্রতিদিনই রোগী শনাক্তের হার বাড়তে থাকায় কয়েক দফা শয্যা বৃদ্ধি করে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাচ্ছে না। করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিয়োজিত সারা দেশের মোট ১৩৪টি হাসপাতালের মধ্যে ন্যূনতম ২০টিতেই মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) মোট শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি ছিল। আর গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ‘আইসিইউ’ শয্যা (নিবিড় পরিচর্চা কেন্দ্র) খালি ছিল না বললেই চলে।
হাসপাতালে আসন সংকট দেখা দেয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কম ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের হোটেলে রেখে চিকিৎসা দেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে হাসপাতালে ৯০ শতাংশ সিট ভর্তি হয়ে গেছে; রোগী আছে সিট ফাঁকা নাই। আইসিইউ অলরেডি ৯৫ শতাংশ অকুপাইড।’
তবে জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সরকারের পর্যাপ্ত অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও হোটেল ভাড়া করে রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কোনো যুক্তি নেই। ঢাকার বড় দু-একটি কলেজেই অস্থায়ীভাবে রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ‘কোভিড-১৯’ প্রতিরোধে সরকার গঠিত ‘জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’র সদস্য ও বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘রোগীর চিকিৎসার জন্য হোটেল কেন ভাড়া করতে হবে? জানি না এখানে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না। জেলা পর্যায়ের হাসপাতালের হাসপাতালে অক্সিজেন ও হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সরবরাহ করলেই হয়, আইসিইউ দিলেই হয়। যেখানে ডাক্তার কম সেখানে ডাক্তার পদায়ন করলেই হয়। হোটেল ভাড়া করলে কি চিকিৎসক, চিকিৎসা সরঞ্জাম লাগবে না?’
জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়েই রোগীরা ঢাকায় আসছেন-মন্তব্য বরে খ্যাতিমান এই রোগত্ত্ববিদ বলেন, ‘এখানেও চিকিৎসা নেই। অক্সিজেন না পেয়ে, হাসাপতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে রোগী মারা যাচ্ছে। জেলার হাসপাতালগুলোতেও রোগী ভর্তি নিচ্ছে না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩ জন। তাদের মধ্যে মোট সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ২৫ হাজার ৪৫ জন। আর মারা গেছেন ২১ হাজার ৩৯৭ জন।
এ হিসেবে, এ পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে চিকিৎসাধীন (অ্যাক্টিভ কেস) রোগী থাকে এক লাখ ৪৯ হাজার ৬৫১ জন। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ১১ হাজার ৫৬৫ জন। এ হিসেবে চিকিৎসাধীন রোগীর মধ্যে মাত্র ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি আছেন বা ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার বিকালে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে মোট ১৬ হাজার ৪৫৮টি সাধারণ শয্যার মধ্যে খালি ছিল চার হাজার ৮৯৩টি। যদিও ঢাকার হাসপাতালগুলোতে নতুন রোগী ভর্তি দেয়া যাচ্ছে না। আইসিইউ সংকটও চরম তীব্র হচ্ছে। রাজধানীর ছয়টিসহ সারাদেশের ২০টি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারা দেশের মোট এক হাজার ৩২৬টি ‘আইসিইউ’ শয্যার মধ্যে মঙ্গলবার খালি ছিল ১৬৩টি। অথচ গুরুতর অসুস্থ রোগী বা সিরিয়াস ক্রিটিক্যাল রোগী ছিল এক হাজার ৩৮১ জন। এ হিসেবে ‘গুরুতর অসুস্থ’ অনেক রোগীই আইসিইউ বা অক্সিজেন সাপোর্ট পাচ্ছে না।
রোগীর চাপ সামাল দিতে ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেটার কাজ চলমান। সেখানে ইমিডিয়েটলি আমরা হয়তো ৫০০ থেকে ৬০০ বেড রেডি করতে পারব। পরে তা এক হাজার বেডে নেয়া যাবে।’
করোনা আক্রান্ত সবাইকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ে না, জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘যেগুলো হালকা, মাইল্ড কেস, সে সব রোগীর জন্য আমরা আলাদা হোটেল ভাড়া করার চিন্তা করেছি। যে হোটেলের মধ্যে আমাদের ডাক্তার থাকবেন, নার্স থাকবেন, ওষুধপত্র থাকবে, কিছু অক্সিজেনের ব্যবস্থাও আমরা রাখব।’
হাসপাতাল করার আর জায়গা নেই, দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘হাসপাতাল খালিও নেই। তাই আমরা এখন হোটেল খুঁজছি।’
একদিনে মৃত্যু ২৩৫ জনের, শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ :
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্তদের মারা গেছেন ২৩৫ জন। তাদের নিয়ে দেশে করোনায় সরকারি হিসেবে মোট ২১ হাজার ৩৯৭ জনের মৃত্যু হলো।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৭৭৬ জনের দেহে। এ নিয়ে দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩ জনে।
এই একদিনে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৬ হাজার ২৯৭ জন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ২৫ হাজার ৪৫ জন।
২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৫ হাজার ২৮৪টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭৮ লাখ ৯৯ হাজার ১৬৯টি। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আর এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৬৫ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৪০ জন এবং নারী ৯৫ জন। আর এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার ৪১৯ জন এবং ছয় হাজার ৯৭৮ জন নারীর মৃত্যু হয়েছে।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে চারজনের বয়স ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে ছিল। অন্যদের মধ্যে ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪১ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৮০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে চারজন এবং ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বিভাগভিত্তিক তথ্যে দেখা গেছে, একদিনে সবচেয়ে বেশি ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ৬৫ জন, রাজশাহীতে ২১ জন, খুলনায় ৩২ জন, বরিশালে আটজন এবং সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ জন করে করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
মারা যাওয়া ২৩৫ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ১৭৩ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৪৬ জন, বাড়িতে ১৫ জন এবং হাসপাতালে মৃত অবস্থায় একজনকে আনা হয় বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।