ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (বিরতিহীন উড়াল সড়কপথ) নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। রাজধানীর উত্তরা বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়াল সড়কটির ডিপিপি অনুমোদন হয় ২০০৯ সালে।
পরে ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ৫ বছরের সড়ক নির্মাণকাজ চলছে ১২ বছর ধরে। এর মধ্যে দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। ২০২২ সালের মার্চে শেষ হওয়ার কথা ছিল পুরো প্রকল্প। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৩১ শতাংশ। সর্বশেষ প্রকল্পের মেয়াদ দ্বিতীয় দফা বাড়ানো হয়েছে। তাতে ২০২৩ সালের জুনে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা।
তবে এর মধ্যে আবার নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে। কমলাপুর অংশে একটি র্যাম নির্মাণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে রেলওয়ের সঙ্গে। উড়াল সড়কটির তৃতীয় পর্যায়ের একটি র্যাম কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সামনে এসে নামার কথা রয়েছে। কিন্তু কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘিরে মাল্টি মোডাল ট্রানজিট হাব (একই স্থানে একাধিক গণপরিবহন টার্মিনাল) নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে রেলওয়ে বিভাগের। কমলাপুর এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম নির্মাণ হলে হাবে নকশায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই যুক্তিতে কমলাপুর এলাকায় উড়াল সড়কের র্যাম নির্মাণের বিরোধিতা করা হয় রেলওয়ে পক্ষ থেকে। তাই র্যাম নির্মাণের এই জটিলতার কারণে আবারও উড়াল সড়কের নির্মাণকাজ পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন কর্মকর্তারা।
এর আগে প্রকল্পের প্রথম ধাপে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বনানী রেল স্টেশন পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত কাজ ২০২০ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল, দ্বিতীয় ধাপে বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার অংশ ২০২০ ডিসেম্বরে ও তৃতীয় ধাপে মগবাজার থেকে কুতুুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার অংশের কাজ ২০২২ সালের মার্চে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রুট জটিলতায় ও অর্থায়ন সমস্যার কারণে এর নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর। এই প্রকল্পের অর্থায়নের বিষয়ে চায়না এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হলে প্রকল্পের কাজে গতি পায় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
এ বিষয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম শাখাওয়াত আকতার সংবাদকে বলেন, ‘প্রথম ধাপের ভৌত অগ্রগতি শতকরা ৬৬ দশমিক ২৫ ভাগ, দ্বিতীয় ধাপের ভৌত অগ্রগতি শতকরা ২১ দশমিক ৫০ ভাগ এবং তৃতীয় ধাপের ভৌত অগ্রগতি শতকরা ২ দশমিক ৩৩ ভাগ। ২০২২ সালের ডিসেম্বর বিমানবন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর ২০২৩ সালে জুনে পুরো প্রকল্পের শেষ হবে। কমলাপুর অংশের একটি র্যাম নির্মাণ নিয়ে রেলওয়ে পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দেয়া হয়নি। তবে র্যামের কিছু অংশ মাটির নিচ দিয়ে নির্মাণ করলে তাদের সুবিধা হবে বলে সুপারিশ করেছে।’ এখনও বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।
রেলওয়ের সূত্র জানায়, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডবল লাইন ও পদ্মা সেতু প্রকল্প সহ তিন থেকে চারটি রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া মাল্টি মোডাল ট্রানজিট হাবের বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি মেট্রোরেল-৬’র স্টেশন নির্মাণ করা কমলাপুরে। এর মধ্যে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি র্যাম কমলাপুরে নামানো হলে জটিলতা তৈরি হবে। তাই র্যামের পরিবর্তে টিটিপাড়া লেভেল ক্রসিংয়ে একটি পাতাল সড়ক নির্মাণের সুপারিশ করা হয়; যা ঢাকা এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে র্যামের সঙ্গে যুক্ত হবে। এটা তৈরির জন্য পদ্মা রেল-সংযোগ প্রকল্প পরিচালককে পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
এ সমস্যা সমাধানের আন্তঃমন্ত্রণালের সভায় সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন পদ্মা রেল-সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসেন। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘পদ্মা রেল-সংযোগ প্রকল্পে টিটিপাড়া এলাকায় আন্ডারপাস নির্মাণের কোন সিদ্ধান্ত ছিল না। তবে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে একটি সুপারিশ করা হয়েছে। এখনো কোন চূড়ান্ত হয়নি।’
১২ বছরের উড়াল সড়কের অগ্রগতি ৩১ শতাংশ : ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা-কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি অংশীদার ভিত্তিতে (পিপিপি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘ রুট জটিলতা ও অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ আর শুরু হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে এক্সপ্রেসওয়ের রুট সংশোধন করা হয়। এর ভিত্তিতে সংশোধন করা হয় এক্সপ্রেসওয়ের নকশা। পরে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়।
৮ হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন ধাপে নির্মাণ হচ্ছে প্রকল্পটি। এর মধ্যে চায়না-এক্সিম ব্যাংক ও আইসিবি চায়না যৌথভাবে ৭ হাজার ৩১৮ কোটি কাটা ঋণ সহায়তা দেবে। বাকি টাকা বাংলাদেশ সরকারে ফান্ড থেকে ব্যয় করা হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি।
আগামী বছরের শেষের দিকে রাজধানীর কাওলা থেকে তেজগাঁও রেল স্টেশন পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি প্রকল্প এলাকায় পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এক্সপ্রেসের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৩১ ভাগ। এর মধ্যে কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশে শেষ হয়েছে ৬৬ ভাগ কাজ। করোনার কারণে সেতুর কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বিমানবন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।’
২৫ বছর টোল আদায় করবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে টোল দিয়ে চলাচল করবে সব যানবাহন। প্রাথমিকভাবে টোল ধরা হয়েছে প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য মোটরগাড়িতে ১২৫ টাকা, যাত্রীবাহী বাসে ২৫০ টাকা, ৬ চাকার ট্রাকে ৫০০ টাকা আর ৬ চাকার বেশি ট্রাকের জন্য ৬২৫ টাকা। তবে তিন বছর পর পর টোলের হার সমন্বয় করা হবে। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ২৫ বছর টোল আদায় করবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তাই প্রকল্প ব্যয় ও টোলের হার বৃদ্ধি- সংক্রান্ত প্রস্তাব ২০১৩ সালের নভেম্বরে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটিতে অনুমোদন করা হয় বলে সেতু বিভাগের সূত্র জানায়।
এ বিষয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম শাখাওয়াত আকতার সংবাদকে বলেন, ‘পিপিপি ভিত্তিতে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২৫ বছর টোল আদায়ের মাধ্যমে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। তিন ধাপে নির্মাণ করা হচ্ছে প্রকল্পটি। দীর্ঘ অর্থায়ন জটিলতার কাজ ধীরগতি ছিল।’ এখন এই সমস্যা কেঁটে গেছে তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (বিরতিহীন উড়াল সড়কপথ) নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। রাজধানীর উত্তরা বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়াল সড়কটির ডিপিপি অনুমোদন হয় ২০০৯ সালে।
পরে ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ৫ বছরের সড়ক নির্মাণকাজ চলছে ১২ বছর ধরে। এর মধ্যে দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। ২০২২ সালের মার্চে শেষ হওয়ার কথা ছিল পুরো প্রকল্প। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৩১ শতাংশ। সর্বশেষ প্রকল্পের মেয়াদ দ্বিতীয় দফা বাড়ানো হয়েছে। তাতে ২০২৩ সালের জুনে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা।
তবে এর মধ্যে আবার নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে। কমলাপুর অংশে একটি র্যাম নির্মাণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে রেলওয়ের সঙ্গে। উড়াল সড়কটির তৃতীয় পর্যায়ের একটি র্যাম কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সামনে এসে নামার কথা রয়েছে। কিন্তু কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘিরে মাল্টি মোডাল ট্রানজিট হাব (একই স্থানে একাধিক গণপরিবহন টার্মিনাল) নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে রেলওয়ে বিভাগের। কমলাপুর এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম নির্মাণ হলে হাবে নকশায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই যুক্তিতে কমলাপুর এলাকায় উড়াল সড়কের র্যাম নির্মাণের বিরোধিতা করা হয় রেলওয়ে পক্ষ থেকে। তাই র্যাম নির্মাণের এই জটিলতার কারণে আবারও উড়াল সড়কের নির্মাণকাজ পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন কর্মকর্তারা।
এর আগে প্রকল্পের প্রথম ধাপে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বনানী রেল স্টেশন পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত কাজ ২০২০ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল, দ্বিতীয় ধাপে বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার অংশ ২০২০ ডিসেম্বরে ও তৃতীয় ধাপে মগবাজার থেকে কুতুুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার অংশের কাজ ২০২২ সালের মার্চে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রুট জটিলতায় ও অর্থায়ন সমস্যার কারণে এর নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর। এই প্রকল্পের অর্থায়নের বিষয়ে চায়না এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হলে প্রকল্পের কাজে গতি পায় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
এ বিষয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম শাখাওয়াত আকতার সংবাদকে বলেন, ‘প্রথম ধাপের ভৌত অগ্রগতি শতকরা ৬৬ দশমিক ২৫ ভাগ, দ্বিতীয় ধাপের ভৌত অগ্রগতি শতকরা ২১ দশমিক ৫০ ভাগ এবং তৃতীয় ধাপের ভৌত অগ্রগতি শতকরা ২ দশমিক ৩৩ ভাগ। ২০২২ সালের ডিসেম্বর বিমানবন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর ২০২৩ সালে জুনে পুরো প্রকল্পের শেষ হবে। কমলাপুর অংশের একটি র্যাম নির্মাণ নিয়ে রেলওয়ে পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দেয়া হয়নি। তবে র্যামের কিছু অংশ মাটির নিচ দিয়ে নির্মাণ করলে তাদের সুবিধা হবে বলে সুপারিশ করেছে।’ এখনও বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।
রেলওয়ের সূত্র জানায়, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডবল লাইন ও পদ্মা সেতু প্রকল্প সহ তিন থেকে চারটি রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া মাল্টি মোডাল ট্রানজিট হাবের বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি মেট্রোরেল-৬’র স্টেশন নির্মাণ করা কমলাপুরে। এর মধ্যে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি র্যাম কমলাপুরে নামানো হলে জটিলতা তৈরি হবে। তাই র্যামের পরিবর্তে টিটিপাড়া লেভেল ক্রসিংয়ে একটি পাতাল সড়ক নির্মাণের সুপারিশ করা হয়; যা ঢাকা এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে র্যামের সঙ্গে যুক্ত হবে। এটা তৈরির জন্য পদ্মা রেল-সংযোগ প্রকল্প পরিচালককে পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
এ সমস্যা সমাধানের আন্তঃমন্ত্রণালের সভায় সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন পদ্মা রেল-সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসেন। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘পদ্মা রেল-সংযোগ প্রকল্পে টিটিপাড়া এলাকায় আন্ডারপাস নির্মাণের কোন সিদ্ধান্ত ছিল না। তবে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে একটি সুপারিশ করা হয়েছে। এখনো কোন চূড়ান্ত হয়নি।’
১২ বছরের উড়াল সড়কের অগ্রগতি ৩১ শতাংশ : ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা-কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি অংশীদার ভিত্তিতে (পিপিপি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘ রুট জটিলতা ও অর্থায়ন নিশ্চিত না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ আর শুরু হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে এক্সপ্রেসওয়ের রুট সংশোধন করা হয়। এর ভিত্তিতে সংশোধন করা হয় এক্সপ্রেসওয়ের নকশা। পরে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়।
৮ হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন ধাপে নির্মাণ হচ্ছে প্রকল্পটি। এর মধ্যে চায়না-এক্সিম ব্যাংক ও আইসিবি চায়না যৌথভাবে ৭ হাজার ৩১৮ কোটি কাটা ঋণ সহায়তা দেবে। বাকি টাকা বাংলাদেশ সরকারে ফান্ড থেকে ব্যয় করা হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি।
আগামী বছরের শেষের দিকে রাজধানীর কাওলা থেকে তেজগাঁও রেল স্টেশন পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি প্রকল্প এলাকায় পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এক্সপ্রেসের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৩১ ভাগ। এর মধ্যে কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত অংশে শেষ হয়েছে ৬৬ ভাগ কাজ। করোনার কারণে সেতুর কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বিমানবন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।’
২৫ বছর টোল আদায় করবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে টোল দিয়ে চলাচল করবে সব যানবাহন। প্রাথমিকভাবে টোল ধরা হয়েছে প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য মোটরগাড়িতে ১২৫ টাকা, যাত্রীবাহী বাসে ২৫০ টাকা, ৬ চাকার ট্রাকে ৫০০ টাকা আর ৬ চাকার বেশি ট্রাকের জন্য ৬২৫ টাকা। তবে তিন বছর পর পর টোলের হার সমন্বয় করা হবে। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ২৫ বছর টোল আদায় করবে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তাই প্রকল্প ব্যয় ও টোলের হার বৃদ্ধি- সংক্রান্ত প্রস্তাব ২০১৩ সালের নভেম্বরে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটিতে অনুমোদন করা হয় বলে সেতু বিভাগের সূত্র জানায়।
এ বিষয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম শাখাওয়াত আকতার সংবাদকে বলেন, ‘পিপিপি ভিত্তিতে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২৫ বছর টোল আদায়ের মাধ্যমে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। তিন ধাপে নির্মাণ করা হচ্ছে প্রকল্পটি। দীর্ঘ অর্থায়ন জটিলতার কাজ ধীরগতি ছিল।’ এখন এই সমস্যা কেঁটে গেছে তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।