করোনাকালে সরকারের দেয়া প্রণোদনার টাকা পাওয়ার আশায় প্রতারণার শিকার হয়ে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ভুক্তভোগী পাঁচ দিনমজুরকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের চেম্বার আদালত। এ সময় আদালত ওই দিনমজুরদের প্রসঙ্গে বলেন, তারা তো কিছুই জানেন না, তারা তো ভিকটিম।’
আদালতে বিনা ফি-তে ভুক্তভোগীদের জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন, আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরোয়ার হোসেন বাপ্পি। এর আগে গত ৬ অক্টোবর ওই পাঁচজনকে এক বছরের জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে সেই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। পাঁচ দিনমজুর হলেন, বিধবা ফুলমনি রানি, রণজিৎ কুমার, প্রভাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র রায় ও নিখিল চন্দ্র বর্মণ।
এর আগে গত ৩ অক্টোবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে পাঁচজনের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। গত ১২ জুলাই একটি নিউজ পোর্টালে ‘প্রণোদনার কথা বলে ফাঁসিয়ে দিল পাঁচ কৃষককে’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবস গ্রামের বাসিন্দা রণজিৎ কুমার, প্রভাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র রায়, সুবল চন্দ্র মোহন্ত। সহজ-সরল দিনমজুর ও খেটে খাওয়া এসব কৃষকের জীবন চলে দারিদ্র্যের চরম কষাঘাতে। তাদের কাছে হঠাৎ একদিন এসে হাজির হন স্বপন মিয়া নামে এক ব্যক্তি। অভাব ঘোঁচাতে তাদের সরকারি সহায়তা পাইয়ে দেয়ার কথা বলেন স্বপন। বলেন, সহায়তা আসবে ব্যাংকে, তাই সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
স্বপনের কথায় রাজি হয়ে যান রণজিৎ কুমার আর প্রভাস চন্দ্ররা। নিজের নামটুকুও লিখতে না পারা এসব কৃষকের নামে সোনালী ব্যাংক নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) শাখায় খোলা হয় সঞ্চয়ী হিসাব। এরপর কাগজপত্র স্বাক্ষর করতে হবে বলে তাদের পাঁচজনকে ঢাকায় নিয়ে যান স্বপন মিয়া। সেখানে অনেক কাগজে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে তাদের বাড়িতে ফেরত পাঠান। কিছুদিনের মধ্যে রণজিৎ কুমারের সঞ্চয়ী হিসাবে ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার ৭২০ টাকা, প্রভাস চন্দ্র রায়ের হিসাব নম্বরে ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ১২০ টাকা, সুবল চন্দ্রের হিসাব নম্বরে ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৭২০ টাকা, কমল চন্দ্রের হিসাব নম্বরে ৪২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৮০ টাকা এবং ফুলমণি রানির হিসাব নম্বরে ৪৮ লাখ ৭০ হাজার ৫২০ টাকা জমা হয়। তবে এত টাকা জমা হওয়ার খবর ওই কৃষকরা পাননি। গাড়ি ভাড়ার টাকা ছাড়া তেমন কোন অর্থ সহায়তাও স্বপন মিয়া তাদের দেননি। সরকারি সহায়তা পাওয়ার আশায় তারা দিন গুনছিলেন।
জানা গেছে, গত ১ জুলাই গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের একটি ভুয়া অ্যাডভাইস দাখিলের মাধ্যমে জালিয়াতি করে সোনালী ব্যাংক থেকে দুই কোটি ৪৬ লাখ নয় হাজার ৯৬০ টাকা তুলে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে নয়জনের নামে মামলা হয়েছে। গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানায় মামলাটি করেন সোনালী ব্যাংক শ্রীপুর থানা হেডকোয়ার্টার শাখার ব্যবস্থাপক রেজাউল হক। সেই মামলায় নয়জনের মধ্যে পাঁচজন হলেন রণজিৎ কুমার, প্রভাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র, ফুলমণি রানি ও নিখিল চন্দ্র বর্মণ।
এ মামলায় অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিরা হলেন, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রশিদ, অফিসের অডিটর আরিফুর রহমান, মাস্টার রোলে কর্মরত তানভীর ও ঢাকার উত্তরখান জামতলা এলাকার শাহেনা আক্তার।
মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর ২০২১
করোনাকালে সরকারের দেয়া প্রণোদনার টাকা পাওয়ার আশায় প্রতারণার শিকার হয়ে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ভুক্তভোগী পাঁচ দিনমজুরকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের চেম্বার আদালত। এ সময় আদালত ওই দিনমজুরদের প্রসঙ্গে বলেন, তারা তো কিছুই জানেন না, তারা তো ভিকটিম।’
আদালতে বিনা ফি-তে ভুক্তভোগীদের জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন, আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরোয়ার হোসেন বাপ্পি। এর আগে গত ৬ অক্টোবর ওই পাঁচজনকে এক বছরের জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে সেই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। পাঁচ দিনমজুর হলেন, বিধবা ফুলমনি রানি, রণজিৎ কুমার, প্রভাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র রায় ও নিখিল চন্দ্র বর্মণ।
এর আগে গত ৩ অক্টোবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে পাঁচজনের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। গত ১২ জুলাই একটি নিউজ পোর্টালে ‘প্রণোদনার কথা বলে ফাঁসিয়ে দিল পাঁচ কৃষককে’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবস গ্রামের বাসিন্দা রণজিৎ কুমার, প্রভাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র রায়, সুবল চন্দ্র মোহন্ত। সহজ-সরল দিনমজুর ও খেটে খাওয়া এসব কৃষকের জীবন চলে দারিদ্র্যের চরম কষাঘাতে। তাদের কাছে হঠাৎ একদিন এসে হাজির হন স্বপন মিয়া নামে এক ব্যক্তি। অভাব ঘোঁচাতে তাদের সরকারি সহায়তা পাইয়ে দেয়ার কথা বলেন স্বপন। বলেন, সহায়তা আসবে ব্যাংকে, তাই সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
স্বপনের কথায় রাজি হয়ে যান রণজিৎ কুমার আর প্রভাস চন্দ্ররা। নিজের নামটুকুও লিখতে না পারা এসব কৃষকের নামে সোনালী ব্যাংক নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) শাখায় খোলা হয় সঞ্চয়ী হিসাব। এরপর কাগজপত্র স্বাক্ষর করতে হবে বলে তাদের পাঁচজনকে ঢাকায় নিয়ে যান স্বপন মিয়া। সেখানে অনেক কাগজে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে তাদের বাড়িতে ফেরত পাঠান। কিছুদিনের মধ্যে রণজিৎ কুমারের সঞ্চয়ী হিসাবে ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার ৭২০ টাকা, প্রভাস চন্দ্র রায়ের হিসাব নম্বরে ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ১২০ টাকা, সুবল চন্দ্রের হিসাব নম্বরে ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৭২০ টাকা, কমল চন্দ্রের হিসাব নম্বরে ৪২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৮০ টাকা এবং ফুলমণি রানির হিসাব নম্বরে ৪৮ লাখ ৭০ হাজার ৫২০ টাকা জমা হয়। তবে এত টাকা জমা হওয়ার খবর ওই কৃষকরা পাননি। গাড়ি ভাড়ার টাকা ছাড়া তেমন কোন অর্থ সহায়তাও স্বপন মিয়া তাদের দেননি। সরকারি সহায়তা পাওয়ার আশায় তারা দিন গুনছিলেন।
জানা গেছে, গত ১ জুলাই গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের একটি ভুয়া অ্যাডভাইস দাখিলের মাধ্যমে জালিয়াতি করে সোনালী ব্যাংক থেকে দুই কোটি ৪৬ লাখ নয় হাজার ৯৬০ টাকা তুলে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে নয়জনের নামে মামলা হয়েছে। গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানায় মামলাটি করেন সোনালী ব্যাংক শ্রীপুর থানা হেডকোয়ার্টার শাখার ব্যবস্থাপক রেজাউল হক। সেই মামলায় নয়জনের মধ্যে পাঁচজন হলেন রণজিৎ কুমার, প্রভাস চন্দ্র, কমল চন্দ্র, ফুলমণি রানি ও নিখিল চন্দ্র বর্মণ।
এ মামলায় অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিরা হলেন, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রশিদ, অফিসের অডিটর আরিফুর রহমান, মাস্টার রোলে কর্মরত তানভীর ও ঢাকার উত্তরখান জামতলা এলাকার শাহেনা আক্তার।