দীর্ঘ চার দশক পর চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন সেবা খাতে মাশুল বা ট্যারিফ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। বর্তমানে এটি সরকারি গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক লাফে উল্লেখযোগ্য হারে মাশুল বৃদ্ধির ফলে এর প্রভাব ব্যবসা-বাণিজ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত ভোক্তা পর্যায়েও পড়বে।
শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিদর্শনে এসে নৌপরিবহন উপদেষ্টা মাশুল বাড়ানোর ইঙ্গিত দিলেও নির্দিষ্ট হারে কিছু জানাননি। তবে বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক শনিবার জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তির পর বিষয়টি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদনের পর গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে কার্যকর হবে নতুন মাশুল।
চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে সর্বশেষ মাশুল বাড়ানো হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। এরপর একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বন্দর সচিব জানান, দীর্ঘ সময় পরে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হারে মাশুল বাড়ানো হচ্ছে, যা তার মতে, “খুব বেশি নয়।”
তবে বন্দর ব্যবহারকারীদের দাবি, তারা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হারে মাশুল বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বাস্তবে নির্ধারিত হার তাদের প্রস্তাবের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। একটি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং চার্জ বর্তমানে যেখানে ৪৩ ডলার, সেখানে প্রস্তাবিত হারে তা দাঁড়াবে ৭০ ডলারেরও বেশি।
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, “এখন মাশুল বাড়ানোর সময় নয়। এটি ব্যবসায়ীদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।” সংগঠনটির পরিচালক খায়রুল আলম সুজনও মনে করেন, “চট্টগ্রাম বন্দর লাভজনক প্রতিষ্ঠান হলেও অতিরিক্ত ট্যারিফ ব্যবসা ও শিল্পে মন্দা এবং সামষ্টিক অর্থনীতিতে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে।”
বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, “বিভিন্ন চাপের মধ্যে ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে টিকে থাকার লড়াই করছে। এই অবস্থায় মাশুল বাড়ানো হলে তা হবে ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা।’”
বিশ্লেষকদের মতে, আমদানি-রপ্তানির খরচ বাড়লে তা সরাসরি প্রভাব ফেলবে পণ্যের বাজারমূল্যে। বিশেষ করে আমদানিনির্ভর কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্যে দাম বাড়বে, যার চাপ গিয়ে পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর।
তবে বন্দর সচিবের দাবি, “ভোক্তা পর্যায়ে এর খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। খুব সামান্য প্রভাব হতে পারে। সবদিক বিবেচনায় নিয়েই মাশুল সমন্বয় করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে বন্দরের ট্যারিফ হালনাগাদের কাজ শুরু হয়। স্পেনভিত্তিক একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ২০২২ সালে প্রস্তাব জমা দেয়, যা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর এ বছর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে রূপ নিয়েছে। বর্তমানে ৫২টি মাশুল খাতকে একীভূত করে ২৩টি খাতে নামিয়ে আনা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নয়ন অবশ্যই দরকার, তবে তা হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই। অন্যথায়, উন্নয়নের ভার বহন করতে গিয়ে ব্যবসা ও ভোক্তা দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
রোববার, ২৭ জুলাই ২০২৫
দীর্ঘ চার দশক পর চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন সেবা খাতে মাশুল বা ট্যারিফ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। বর্তমানে এটি সরকারি গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক লাফে উল্লেখযোগ্য হারে মাশুল বৃদ্ধির ফলে এর প্রভাব ব্যবসা-বাণিজ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত ভোক্তা পর্যায়েও পড়বে।
শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিদর্শনে এসে নৌপরিবহন উপদেষ্টা মাশুল বাড়ানোর ইঙ্গিত দিলেও নির্দিষ্ট হারে কিছু জানাননি। তবে বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক শনিবার জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তির পর বিষয়টি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদনের পর গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে কার্যকর হবে নতুন মাশুল।
চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে সর্বশেষ মাশুল বাড়ানো হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। এরপর একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বন্দর সচিব জানান, দীর্ঘ সময় পরে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হারে মাশুল বাড়ানো হচ্ছে, যা তার মতে, “খুব বেশি নয়।”
তবে বন্দর ব্যবহারকারীদের দাবি, তারা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হারে মাশুল বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বাস্তবে নির্ধারিত হার তাদের প্রস্তাবের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। একটি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং চার্জ বর্তমানে যেখানে ৪৩ ডলার, সেখানে প্রস্তাবিত হারে তা দাঁড়াবে ৭০ ডলারেরও বেশি।
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, “এখন মাশুল বাড়ানোর সময় নয়। এটি ব্যবসায়ীদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।” সংগঠনটির পরিচালক খায়রুল আলম সুজনও মনে করেন, “চট্টগ্রাম বন্দর লাভজনক প্রতিষ্ঠান হলেও অতিরিক্ত ট্যারিফ ব্যবসা ও শিল্পে মন্দা এবং সামষ্টিক অর্থনীতিতে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে।”
বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, “বিভিন্ন চাপের মধ্যে ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে টিকে থাকার লড়াই করছে। এই অবস্থায় মাশুল বাড়ানো হলে তা হবে ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা।’”
বিশ্লেষকদের মতে, আমদানি-রপ্তানির খরচ বাড়লে তা সরাসরি প্রভাব ফেলবে পণ্যের বাজারমূল্যে। বিশেষ করে আমদানিনির্ভর কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্যে দাম বাড়বে, যার চাপ গিয়ে পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর।
তবে বন্দর সচিবের দাবি, “ভোক্তা পর্যায়ে এর খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। খুব সামান্য প্রভাব হতে পারে। সবদিক বিবেচনায় নিয়েই মাশুল সমন্বয় করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে বন্দরের ট্যারিফ হালনাগাদের কাজ শুরু হয়। স্পেনভিত্তিক একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ২০২২ সালে প্রস্তাব জমা দেয়, যা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর এ বছর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে রূপ নিয়েছে। বর্তমানে ৫২টি মাশুল খাতকে একীভূত করে ২৩টি খাতে নামিয়ে আনা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নয়ন অবশ্যই দরকার, তবে তা হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই। অন্যথায়, উন্নয়নের ভার বহন করতে গিয়ে ব্যবসা ও ভোক্তা দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।