এ সময় অন্য দেশে কমে, দেশে বাড়ে
রমজান মাসে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে নিত্যপণ্যের দাম কমে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষ কিছুটা স্বচ্ছন্দে জীবন নির্বাহ করতে পারে। তবে বাংলাদেশে এর বিপরিত চিত্র দেখা যায় প্রতিবছরই। রমজান মাস আসলেই বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে ভোক্তারা। আসন্ন রমজানের আগেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আর কয়েকদিন পর শুরু হবে রমজান। আর ইতোমধ্যেই বেড়ে গেছে কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এসব বাজারে দেখা যায়, বিভিন্ন ইফতারি সামগ্রির দাম এখনই বেড়ে গেছে। নতুন করে বেড়েছে বেসন তৈরির অন্যতম উপকরণ অ্যাংকার ডালের দাম। আরও বেড়েছে, বোতলজাত সয়াবিন, খোলা ময়দা, আলু, রসুন, আদা ও গুড়ো দুধের দাম। বেড়েছে সব ধরনের সবজির দামও। মোটা চালের দামও কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৪৪ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৬-৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবি’র পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ২০ শতাংশ। খোলা ময়দার দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। আরও এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা ময়দার দাম বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে এই ময়দার প্রতি কেজির দাম ছিল ৩৪-৩৬ টাকা।
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে আরও দেখা যায়, বাজারে আলুর দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৪ টাকা। ১৬ টাকা কেজি আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজিতে। চলতি সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেসন তৈরির অ্যাংকার ডালের দাম। ৩৮ টাকা কেজি অ্যাংকার ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। সরকারি হিসাবে, এই ডালের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেড়েছে দেশি আদার দাম। ১০০ টাকা কেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি আদার কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। বাজারে ৫ লিটার ওজনের সয়াবিনের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে এই সয়াবিন বিক্রি হয় ৬৪০ টাকায়।
এছাড়া চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগি। গরু ও খাসির মাংস দীর্ঘদিন ধরেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে কাঁচামরিচ, পেঁয়াজের দাম ক্রেতাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা। আর কক মুরগির কেজি ২৪০-২৬০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ৯০-৯৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকায়। মাঝারি আকারের একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। পটল, বেগুন, শিম, ধুন্দল, বরবটি, ঢেঁড়স, লাউ, সজনে ডাটা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটোসহ প্রায় সব ধরনের সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ সবজির কেজি এখন ৫০ টাকার ওপরে।
বাজারে সজনে ডাটা এক কেজি কিনতে ক্রেতাদের একশ’ টাকা গুণতে হচ্ছে। বাজার ও মানভেদে সজনে ডাটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা। এছাড়াও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পটল, বরবটি, বেগুন, ঢেঁড়স। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজি। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। দাম বেড়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শিমেরও। ২০-৩০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম বেড়ে ৩০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শিমের দাম বেড়ে ৪০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রতি কেজি ধুন্দল, চিচিঙ্গা কিনতেও ভোক্তাদের ৫০ টাকার ওপরে গুণতে হচ্ছে। বাজার ও মানভেদে ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে চিচিঙ্গা। শশা আগের সপ্তাহের মতো ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ১৫-২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পেঁপের কেজি আগের মতোই ৩০-৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গাঁজরের কেজিও আগের সপ্তাহের মতো ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে নিত্যপণ্যের দাম ক্রমে বাড়ার কারণে স্বল্পমূল্যের পণ্য বিক্রয়কারী টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে দিন দিন ভিড় বাড়ছে। আর এরমধ্যেই তিন পণ্য যথা তেল, চিনি ও পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে টিসিবি। টিসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, রমজান এলে পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই পণ্যের পরিমাণ ও ট্রাকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আমদানি খরচ বাড়তে থাকায় পণ্যের দামও কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।
জানা গেছে, তেল লিটারে ১০ টাকা বাড়িয়ে প্রতি লিটার ১০০ টাকা, চিনি কেজিতে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ টাকা ও পেঁয়াজ পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে। গত মাসের মাঝামাঝি থেকে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৯০ টাকা করা হয়েছিল। সেই হিসাবে দেড় মাসে টিসিবির তেলের দাম বাড়ল লিটারে ২০ টাকা। অবশ্য এর আগে টিসিবি সব সময় সয়াবিন তেল ৮০ টাকা করেই বিক্রি করত। মসুর ডালের দাম গত ১৭ মার্চ থেকে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ টাকা করা হয়েছিল। রোজার ছয় থেকে সাত দিন আগে দেয়া হবে খেজুর। প্রতিটি ট্রাকে ১০০ কেজি করে খেজুর থাকবে। ৮০ টাকা করে একজন ক্রেতা কিনতে পারবে এক কেজি।
এ সময় অন্য দেশে কমে, দেশে বাড়ে
শুক্রবার, ০২ এপ্রিল ২০২১
রমজান মাসে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে নিত্যপণ্যের দাম কমে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষ কিছুটা স্বচ্ছন্দে জীবন নির্বাহ করতে পারে। তবে বাংলাদেশে এর বিপরিত চিত্র দেখা যায় প্রতিবছরই। রমজান মাস আসলেই বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে ভোক্তারা। আসন্ন রমজানের আগেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আর কয়েকদিন পর শুরু হবে রমজান। আর ইতোমধ্যেই বেড়ে গেছে কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এসব বাজারে দেখা যায়, বিভিন্ন ইফতারি সামগ্রির দাম এখনই বেড়ে গেছে। নতুন করে বেড়েছে বেসন তৈরির অন্যতম উপকরণ অ্যাংকার ডালের দাম। আরও বেড়েছে, বোতলজাত সয়াবিন, খোলা ময়দা, আলু, রসুন, আদা ও গুড়ো দুধের দাম। বেড়েছে সব ধরনের সবজির দামও। মোটা চালের দামও কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৪৪ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৬-৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবি’র পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ২০ শতাংশ। খোলা ময়দার দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। আরও এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা ময়দার দাম বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে এই ময়দার প্রতি কেজির দাম ছিল ৩৪-৩৬ টাকা।
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে আরও দেখা যায়, বাজারে আলুর দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৪ টাকা। ১৬ টাকা কেজি আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজিতে। চলতি সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেসন তৈরির অ্যাংকার ডালের দাম। ৩৮ টাকা কেজি অ্যাংকার ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। সরকারি হিসাবে, এই ডালের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেড়েছে দেশি আদার দাম। ১০০ টাকা কেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি আদার কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। বাজারে ৫ লিটার ওজনের সয়াবিনের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে এই সয়াবিন বিক্রি হয় ৬৪০ টাকায়।
এছাড়া চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগি। গরু ও খাসির মাংস দীর্ঘদিন ধরেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে কাঁচামরিচ, পেঁয়াজের দাম ক্রেতাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা। আর কক মুরগির কেজি ২৪০-২৬০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ৯০-৯৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকায়। মাঝারি আকারের একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। পটল, বেগুন, শিম, ধুন্দল, বরবটি, ঢেঁড়স, লাউ, সজনে ডাটা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটোসহ প্রায় সব ধরনের সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ সবজির কেজি এখন ৫০ টাকার ওপরে।
বাজারে সজনে ডাটা এক কেজি কিনতে ক্রেতাদের একশ’ টাকা গুণতে হচ্ছে। বাজার ও মানভেদে সজনে ডাটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা। এছাড়াও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পটল, বরবটি, বেগুন, ঢেঁড়স। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজি। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। দাম বেড়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শিমেরও। ২০-৩০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম বেড়ে ৩০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শিমের দাম বেড়ে ৪০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রতি কেজি ধুন্দল, চিচিঙ্গা কিনতেও ভোক্তাদের ৫০ টাকার ওপরে গুণতে হচ্ছে। বাজার ও মানভেদে ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে চিচিঙ্গা। শশা আগের সপ্তাহের মতো ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ১৫-২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পেঁপের কেজি আগের মতোই ৩০-৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গাঁজরের কেজিও আগের সপ্তাহের মতো ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে নিত্যপণ্যের দাম ক্রমে বাড়ার কারণে স্বল্পমূল্যের পণ্য বিক্রয়কারী টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে দিন দিন ভিড় বাড়ছে। আর এরমধ্যেই তিন পণ্য যথা তেল, চিনি ও পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে টিসিবি। টিসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, রমজান এলে পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই পণ্যের পরিমাণ ও ট্রাকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আমদানি খরচ বাড়তে থাকায় পণ্যের দামও কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।
জানা গেছে, তেল লিটারে ১০ টাকা বাড়িয়ে প্রতি লিটার ১০০ টাকা, চিনি কেজিতে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ টাকা ও পেঁয়াজ পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে। গত মাসের মাঝামাঝি থেকে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৯০ টাকা করা হয়েছিল। সেই হিসাবে দেড় মাসে টিসিবির তেলের দাম বাড়ল লিটারে ২০ টাকা। অবশ্য এর আগে টিসিবি সব সময় সয়াবিন তেল ৮০ টাকা করেই বিক্রি করত। মসুর ডালের দাম গত ১৭ মার্চ থেকে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ টাকা করা হয়েছিল। রোজার ছয় থেকে সাত দিন আগে দেয়া হবে খেজুর। প্রতিটি ট্রাকে ১০০ কেজি করে খেজুর থাকবে। ৮০ টাকা করে একজন ক্রেতা কিনতে পারবে এক কেজি।