বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা
খেলাপি ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর কাছে থাকা বন্ধকি সম্পদ বিক্রির বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষণা দিয়েছে, ব্যাংকের খেলাপি ঋণের বিপরীতে বন্ধকি সম্পদে মালিকানা প্রতিষ্ঠার পর তা দ্রুত বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। বন্ধকি সম্পদমূল্য মোট পাওনার চেয়ে বেশি হলে গ্রাহককে খেলাপিমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করে সিআইবিতে (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) রিপোর্ট করতে হবে। আর সম্পদমূল্য কম হলে অনাদায়ী অংশ আদায়ের জন্য আইনি ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে হবে।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) এই নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘অ-ব্যাংকিং সম্পদ (নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট বা এনবিএ) সংক্রান্ত নীতিমালা’ শীর্ষক প্রজ্ঞাপনটি সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়, ব্যাংকের কোন দাবি বা প্রাপ্য পরিশোধের সূত্রে অর্জিত সম্পদকে ব্যাংকের ব্যালেন্সশিটে অ-ব্যাংকিং সম্পদ হিসেবে দেখানো হয়। সাধারণত ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত ঋণ অনাদায়ে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঋণের বিপরীতে নেয়া জামানত বা বন্ধকি সম্পদের মালিকানা লাভ করলে এ ধরনের সম্পদ সৃষ্টি হয়। ঋণের বিপরীতে এই বন্ধকি সম্পদের মালিকানা ব্যাংকের অনুকূলে পাওয়ার পর দ্রুত তা ব্যাংকের নামে রেজিস্ট্রেশন ও মিউটেশন করে দাখিল স্বত্ব নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে ঋণ সমন্বয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনভাবেই এ ধরনের সম্পদ বেশি দিন নিজ অধিকারে রাখা যাবে না। সম্পদ অর্জনের পর যত দ্রুত সম্ভব বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করতে হবে।’
‘ঋণগ্রহীতার ঋণ সমন্বয়পূর্বক প্রাপ্ত সম্পদ ব্যাংকের হিসাবে নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট’ হিসাবে অন্তভুর্ক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে সেগুলো হলো, নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট’ ব্যাংকের হিসাবে অন্তর্ভুক্তিকালে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে মূল্যায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কমপক্ষে তিনজন কর্মকর্তা বা নির্বাহীর সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে তাদের মাধ্যমে মূল্যায়ন করতে হবে। মূল্যায়ন কমিটি সম্পদের যে মূল্য নির্ধারণ করবে, তার সঙ্গে সরকার নির্ধারিত মূল্যের পার্থক্য হলে মূল্যায়ন প্রতিবেদনের যৌক্তিকতা থাকতে হবে। ব্যাংক কর্মকর্তা বা নির্বাহীর সমন্বয়ে গঠিত কমিটি দিয়ে সম্পদ মূল্যায়নের পাশাপাশি ভ্যালুয়ার ফার্ম বা পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও মূল্যায়ন করতে হবে। পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান এবং কমিটির মূল্যের মধ্যে যেটি কম সেটিকে সম্পদের বাজার মূল্য হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। সম্পদের বাজার মূল্য ঠিক হওয়ার পর তা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী অনুমোদন করবেন।’
‘সম্পদের বাজার মূল্য নির্ধারণের সময় টিন বা সেমি পাকা দালান, ব্যবহার অযোগ্য স্থাপনা ও মেশিনারি যতদূর সম্ভব স্বল্পতম সময়ের মধ্যে বিক্রি করে ঋণের বিপরীতে জমা করতে হবে। কোনভাবেই এ সম্পদকে নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট হিসেবে অন্তভুর্ক্ত করা যাবে না। তবে যে জমির উপর টিন বা সেমি পাকা দালান, ব্যবহার বা বিক্রয় অযোগ্য স্থাপনা ও মেশিনারি থাকবে সে জমির বাজার মূল্য থেকে সেই স্থাপনা বা যন্ত্রপাতি অপসারণ করার ব্যয় বাদ দিতে হবে।’
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ‘নন-ব্যাংকিং অ্যাসেটের দ্বারা ঋণগ্রহীতার ঋণ সমন্বয়ের আগে ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে ব্যাংকের মোট পাওনা হিসাব করে ঋণের স্থিতি নিরূপণ করতে হবে। অনারোপিত সুদকে অবশ্যই ‘ইন্টারেস্ট সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে’ স্থানান্তর করতে হবে। সম্পদের বাজার মূল্য ঋণের মোট স্থিতির সমান বা বেশি হলে ঋণ স্থিতির সমপরিমাণ অর্থ দ্বারা সংশ্লিষ্ট ‘নন-ব্যাংকিং অ্যাসেটকে (খাত-ভিত্তিক) ডেবিট করে ঋণের স্থিতি সমন্বয় করতে হবে। বন্ধকি সম্পদমূল্য মোট পাওনার চেয়ে বেশি হলে গ্রাহককে খেলাপিমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করে সিআইবিতে (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) রিপোর্ট করতে হবে। আর সম্পদমূল্য কম হলে অনাদায়ি অংশ আদায়ের জন্য আইনি ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে হবে। অবলোপন করা ঋণের বিপরীতে প্রাপ্ত ‘নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট’ দ্বারা অবলোপন করা ঋণগ্রহীতার ঋণ সমন্বয়ের আগে ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে অনারোপিত সুদসহ সব পাওনা অন্তভুর্ক্ত করে (আদালতে ভিন্নরূপ নির্দেশনা না থাকলে) ব্যাংকের মোট পাওনা নিরূপণ করতে হবে।’
‘সম্পদের মূল্য অবলোপন করা ঋণের বিপরীতে মোট পাওনার সমান বা বেশি হলে ব্যাংকের মোট পাওনার সমপরিমাণ অর্থ দ্বারা সংশ্লিষ্ট ‘নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট’ কে (খাত-ভিত্তিক) ডেবিট করে সমপরিমাণ অর্থ এনবিএ এর বিপরীতে প্রভিশন হিসেবে ক্রেডিট করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ঋণ স্থিতির সম্পূর্ণ অংশ সমন্বিত হওয়ায় ঋণগ্রহীতাকে ঋণের দায় হতে অব্যাহতি দিতে হবে এবং সিআইবিতে উক্ত ঋণগ্রহীতাকে খেলাপি হিসেবে প্রদর্শন করা যাবে না। আর সম্পদের মূল্য অবলোপন করা ঋণের বিপরীতে মোট পাওনার তুলনায় কম হলে কম হলে অনাদায়ী অংশ আদায়ের জন্য আইনি ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা
মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১
খেলাপি ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর কাছে থাকা বন্ধকি সম্পদ বিক্রির বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষণা দিয়েছে, ব্যাংকের খেলাপি ঋণের বিপরীতে বন্ধকি সম্পদে মালিকানা প্রতিষ্ঠার পর তা দ্রুত বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। বন্ধকি সম্পদমূল্য মোট পাওনার চেয়ে বেশি হলে গ্রাহককে খেলাপিমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করে সিআইবিতে (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) রিপোর্ট করতে হবে। আর সম্পদমূল্য কম হলে অনাদায়ী অংশ আদায়ের জন্য আইনি ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে হবে।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) এই নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘অ-ব্যাংকিং সম্পদ (নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট বা এনবিএ) সংক্রান্ত নীতিমালা’ শীর্ষক প্রজ্ঞাপনটি সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়, ব্যাংকের কোন দাবি বা প্রাপ্য পরিশোধের সূত্রে অর্জিত সম্পদকে ব্যাংকের ব্যালেন্সশিটে অ-ব্যাংকিং সম্পদ হিসেবে দেখানো হয়। সাধারণত ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত ঋণ অনাদায়ে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঋণের বিপরীতে নেয়া জামানত বা বন্ধকি সম্পদের মালিকানা লাভ করলে এ ধরনের সম্পদ সৃষ্টি হয়। ঋণের বিপরীতে এই বন্ধকি সম্পদের মালিকানা ব্যাংকের অনুকূলে পাওয়ার পর দ্রুত তা ব্যাংকের নামে রেজিস্ট্রেশন ও মিউটেশন করে দাখিল স্বত্ব নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে ঋণ সমন্বয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনভাবেই এ ধরনের সম্পদ বেশি দিন নিজ অধিকারে রাখা যাবে না। সম্পদ অর্জনের পর যত দ্রুত সম্ভব বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করতে হবে।’
‘ঋণগ্রহীতার ঋণ সমন্বয়পূর্বক প্রাপ্ত সম্পদ ব্যাংকের হিসাবে নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট’ হিসাবে অন্তভুর্ক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে সেগুলো হলো, নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট’ ব্যাংকের হিসাবে অন্তর্ভুক্তিকালে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে মূল্যায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কমপক্ষে তিনজন কর্মকর্তা বা নির্বাহীর সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে তাদের মাধ্যমে মূল্যায়ন করতে হবে। মূল্যায়ন কমিটি সম্পদের যে মূল্য নির্ধারণ করবে, তার সঙ্গে সরকার নির্ধারিত মূল্যের পার্থক্য হলে মূল্যায়ন প্রতিবেদনের যৌক্তিকতা থাকতে হবে। ব্যাংক কর্মকর্তা বা নির্বাহীর সমন্বয়ে গঠিত কমিটি দিয়ে সম্পদ মূল্যায়নের পাশাপাশি ভ্যালুয়ার ফার্ম বা পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও মূল্যায়ন করতে হবে। পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান এবং কমিটির মূল্যের মধ্যে যেটি কম সেটিকে সম্পদের বাজার মূল্য হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। সম্পদের বাজার মূল্য ঠিক হওয়ার পর তা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী অনুমোদন করবেন।’
‘সম্পদের বাজার মূল্য নির্ধারণের সময় টিন বা সেমি পাকা দালান, ব্যবহার অযোগ্য স্থাপনা ও মেশিনারি যতদূর সম্ভব স্বল্পতম সময়ের মধ্যে বিক্রি করে ঋণের বিপরীতে জমা করতে হবে। কোনভাবেই এ সম্পদকে নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট হিসেবে অন্তভুর্ক্ত করা যাবে না। তবে যে জমির উপর টিন বা সেমি পাকা দালান, ব্যবহার বা বিক্রয় অযোগ্য স্থাপনা ও মেশিনারি থাকবে সে জমির বাজার মূল্য থেকে সেই স্থাপনা বা যন্ত্রপাতি অপসারণ করার ব্যয় বাদ দিতে হবে।’
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ‘নন-ব্যাংকিং অ্যাসেটের দ্বারা ঋণগ্রহীতার ঋণ সমন্বয়ের আগে ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে ব্যাংকের মোট পাওনা হিসাব করে ঋণের স্থিতি নিরূপণ করতে হবে। অনারোপিত সুদকে অবশ্যই ‘ইন্টারেস্ট সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে’ স্থানান্তর করতে হবে। সম্পদের বাজার মূল্য ঋণের মোট স্থিতির সমান বা বেশি হলে ঋণ স্থিতির সমপরিমাণ অর্থ দ্বারা সংশ্লিষ্ট ‘নন-ব্যাংকিং অ্যাসেটকে (খাত-ভিত্তিক) ডেবিট করে ঋণের স্থিতি সমন্বয় করতে হবে। বন্ধকি সম্পদমূল্য মোট পাওনার চেয়ে বেশি হলে গ্রাহককে খেলাপিমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করে সিআইবিতে (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) রিপোর্ট করতে হবে। আর সম্পদমূল্য কম হলে অনাদায়ি অংশ আদায়ের জন্য আইনি ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে হবে। অবলোপন করা ঋণের বিপরীতে প্রাপ্ত ‘নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট’ দ্বারা অবলোপন করা ঋণগ্রহীতার ঋণ সমন্বয়ের আগে ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে অনারোপিত সুদসহ সব পাওনা অন্তভুর্ক্ত করে (আদালতে ভিন্নরূপ নির্দেশনা না থাকলে) ব্যাংকের মোট পাওনা নিরূপণ করতে হবে।’
‘সম্পদের মূল্য অবলোপন করা ঋণের বিপরীতে মোট পাওনার সমান বা বেশি হলে ব্যাংকের মোট পাওনার সমপরিমাণ অর্থ দ্বারা সংশ্লিষ্ট ‘নন-ব্যাংকিং অ্যাসেট’ কে (খাত-ভিত্তিক) ডেবিট করে সমপরিমাণ অর্থ এনবিএ এর বিপরীতে প্রভিশন হিসেবে ক্রেডিট করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ঋণ স্থিতির সম্পূর্ণ অংশ সমন্বিত হওয়ায় ঋণগ্রহীতাকে ঋণের দায় হতে অব্যাহতি দিতে হবে এবং সিআইবিতে উক্ত ঋণগ্রহীতাকে খেলাপি হিসেবে প্রদর্শন করা যাবে না। আর সম্পদের মূল্য অবলোপন করা ঋণের বিপরীতে মোট পাওনার তুলনায় কম হলে কম হলে অনাদায়ী অংশ আদায়ের জন্য আইনি ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে হবে।’