লকডাউনে রাজধানীর চকবাজারের শাহী মসজিদের সামনের রাস্তায় পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতারির বাজারে হাঁকডাক এবার নেই। তবে কিছু স্থায়ী খাবারের দোকান সীমিত পরিসরে ইফতারির আইটেম নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছে।
গতকাল রমজানের প্রথম শুক্রবার দুপুরের পর সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ভোজন রসিক হিসেবে পুরান ঢাকার মানুষের আলাদা একটা সুনাম থাকলেও এবার তাদের এলাকার অলিগলির হোটেল ও রেস্তোরাঁ থেকেই ইফতারি কিনতে হচ্ছে।
সরেজমিনে চকবাজারসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঐতিহ্যবাহী ইফতারির বাজার চকবাজারে তেমন কোন আয়োজন নেই। জুমার নামাজের পর কিছু ভিড় জমলেও তা কেটে যায় দ্রুতই।
এছাড়া পুরান ঢাকার ইফতারির অন্যতম আয়োজন বা আইটেমগুলোও এবার চোখে পড়েনি সেভাবে। বিশেষত ‘বড় বাপের পোলায় খাই’ এর পসরা সাজিয়েছেন মাত্র একজন। শাহী জিলাপিতে একটা জিলাপির ওজনই যেখানে ২৫ কেজি পর্যন্ত হয়, এবার তার জায়গা দখল করেছে ছোট চিকন জিলাপি। এছাড়া বিভিন্ন মুরগি ও কোয়েলের রোস্টসহ বিভিন্ন শাহী পরটা, শাহী কাবাব এবং সুতি কাবাবের আয়োজনও দেখা গেছে সীমিত পরিসরে। একই রকম ছিল পানীয় জাতীয় খাবারও।
‘বড় বাপের পোলাই খায়’ এর একজন বিক্রেতা বলেন, প্রতিবছর আমাদের তিনটি দোকান থাকে ইফতারি বিক্রির জন্য কিন্তু এবার একটা ছোট্ট জায়গাতেই পসরা সাজাতে হয়েছে। বিক্রিও খুব সামান্য। মানুষ আসছে না, ফলে সেভাবে বিক্রি নেই।
অপর একজন ইফতারি বিক্রেতা জানান, এবার একদমই ব্যবসা নেই। করোনাভাইরাসের জন্য কেউ বাইরে বেরুচ্ছে না, পুলিশ কাউকে বাইরে থাকতে দিচ্ছে না, দোকান বসাতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ফলে দোকানে পণ্যও তোলা যায়নি সেভাবে। যেটুকু তোলা হয়েছে, সন্ধ্যার আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামান্যই বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জানান, প্রত্যেকবার পুরান ঢাকায় ইফতারি বিক্রির জন্য আলাদা একটা জায়গা থাকে। তবে এবার তা হচ্ছে না। তাই ফল অথবা অন্যকিছু দিয়েই ইফতারের প্রস্তুতি সারতে হচ্ছে। পুরান ঢাকার ইফতারি মানেই ঐতিহ্য, যা আমরা দুই বছর ধরে হারাতে বসেছি। এমনিতেই পুরান ঢাকার ঐতিহ্য হারানোর পথে। তবে সরকারের উচিত, থানাভিত্তিক প্রত্যেক এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইফতারির দোকানের জন্য অনুমোদন দেয়া। কারণ পুরান ঢাকার স্থবির এ ইফতারির বাজার কেউই চান না।
তাদের মতে, হাতেগোনা কয়েকটি খাবারের দোকান ছাড়া এলাকার সব দোকান বন্ধ। ফলে একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, তেমনি ঐতিহ্যবাহী বিখ্যাত ইফতার সামগ্রীর স্বাদ না পাওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে পুরান ঢাকাবাসীর মধ্যেও।
এদিকে পুরান ঢাকায় চকবাজার এলাকায় লকডাউনে টহলরত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জনসমাগম এড়াতে এবার ইফতারির বাজার বসতে দেয়া হয়নি বরং সবাইকে সচেতন করতেই তারা এখন বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
প্রতি বছর রমজানে পুরান ঢাকার বাহারি ইফতার সামগ্রীর স্বাদ নিতে রাজধানীর পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করতো। হরেক রকমের মুখরোচক খাবার নিয়ে বিক্রেতাদের হাঁকডাকে দুপুর থেকে সন্ধ্যার পরও মেতে থাকতো পুরো এলাকা। করোনার কারণে এবার যেমন বন্ধ, তেমনি গত বছরও চকবাজারসহ পুরান ঢাকায় ইফতারির বাজার বসেনি। এতে পুরান ঢাকার ইফতারির বাজারের যে জৌলুস ছিল, সেটি এখন হারাতে বসেছে বলেই মন্তব্য স্থানীয় বাসিন্দাদের।
শনিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২১
লকডাউনে রাজধানীর চকবাজারের শাহী মসজিদের সামনের রাস্তায় পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতারির বাজারে হাঁকডাক এবার নেই। তবে কিছু স্থায়ী খাবারের দোকান সীমিত পরিসরে ইফতারির আইটেম নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছে।
গতকাল রমজানের প্রথম শুক্রবার দুপুরের পর সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ভোজন রসিক হিসেবে পুরান ঢাকার মানুষের আলাদা একটা সুনাম থাকলেও এবার তাদের এলাকার অলিগলির হোটেল ও রেস্তোরাঁ থেকেই ইফতারি কিনতে হচ্ছে।
সরেজমিনে চকবাজারসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঐতিহ্যবাহী ইফতারির বাজার চকবাজারে তেমন কোন আয়োজন নেই। জুমার নামাজের পর কিছু ভিড় জমলেও তা কেটে যায় দ্রুতই।
এছাড়া পুরান ঢাকার ইফতারির অন্যতম আয়োজন বা আইটেমগুলোও এবার চোখে পড়েনি সেভাবে। বিশেষত ‘বড় বাপের পোলায় খাই’ এর পসরা সাজিয়েছেন মাত্র একজন। শাহী জিলাপিতে একটা জিলাপির ওজনই যেখানে ২৫ কেজি পর্যন্ত হয়, এবার তার জায়গা দখল করেছে ছোট চিকন জিলাপি। এছাড়া বিভিন্ন মুরগি ও কোয়েলের রোস্টসহ বিভিন্ন শাহী পরটা, শাহী কাবাব এবং সুতি কাবাবের আয়োজনও দেখা গেছে সীমিত পরিসরে। একই রকম ছিল পানীয় জাতীয় খাবারও।
‘বড় বাপের পোলাই খায়’ এর একজন বিক্রেতা বলেন, প্রতিবছর আমাদের তিনটি দোকান থাকে ইফতারি বিক্রির জন্য কিন্তু এবার একটা ছোট্ট জায়গাতেই পসরা সাজাতে হয়েছে। বিক্রিও খুব সামান্য। মানুষ আসছে না, ফলে সেভাবে বিক্রি নেই।
অপর একজন ইফতারি বিক্রেতা জানান, এবার একদমই ব্যবসা নেই। করোনাভাইরাসের জন্য কেউ বাইরে বেরুচ্ছে না, পুলিশ কাউকে বাইরে থাকতে দিচ্ছে না, দোকান বসাতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ফলে দোকানে পণ্যও তোলা যায়নি সেভাবে। যেটুকু তোলা হয়েছে, সন্ধ্যার আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামান্যই বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জানান, প্রত্যেকবার পুরান ঢাকায় ইফতারি বিক্রির জন্য আলাদা একটা জায়গা থাকে। তবে এবার তা হচ্ছে না। তাই ফল অথবা অন্যকিছু দিয়েই ইফতারের প্রস্তুতি সারতে হচ্ছে। পুরান ঢাকার ইফতারি মানেই ঐতিহ্য, যা আমরা দুই বছর ধরে হারাতে বসেছি। এমনিতেই পুরান ঢাকার ঐতিহ্য হারানোর পথে। তবে সরকারের উচিত, থানাভিত্তিক প্রত্যেক এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইফতারির দোকানের জন্য অনুমোদন দেয়া। কারণ পুরান ঢাকার স্থবির এ ইফতারির বাজার কেউই চান না।
তাদের মতে, হাতেগোনা কয়েকটি খাবারের দোকান ছাড়া এলাকার সব দোকান বন্ধ। ফলে একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, তেমনি ঐতিহ্যবাহী বিখ্যাত ইফতার সামগ্রীর স্বাদ না পাওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে পুরান ঢাকাবাসীর মধ্যেও।
এদিকে পুরান ঢাকায় চকবাজার এলাকায় লকডাউনে টহলরত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জনসমাগম এড়াতে এবার ইফতারির বাজার বসতে দেয়া হয়নি বরং সবাইকে সচেতন করতেই তারা এখন বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
প্রতি বছর রমজানে পুরান ঢাকার বাহারি ইফতার সামগ্রীর স্বাদ নিতে রাজধানীর পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করতো। হরেক রকমের মুখরোচক খাবার নিয়ে বিক্রেতাদের হাঁকডাকে দুপুর থেকে সন্ধ্যার পরও মেতে থাকতো পুরো এলাকা। করোনার কারণে এবার যেমন বন্ধ, তেমনি গত বছরও চকবাজারসহ পুরান ঢাকায় ইফতারির বাজার বসেনি। এতে পুরান ঢাকার ইফতারির বাজারের যে জৌলুস ছিল, সেটি এখন হারাতে বসেছে বলেই মন্তব্য স্থানীয় বাসিন্দাদের।