মুঠোফোনে টিভ্যাস সেবার নামে প্রতারণা
মুঠোফোন ব্যবহারীদের অজান্তে টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্র্ভিস (টিভ্যাস) সেবার নামে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে ফোন কোম্পানিগুলো। গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, এয়ারটেল-রবি ও টেলিটক, এ ৪ অপারেটর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন এসব ফোন কোম্পানির অপারেটিং সিস্টেমের ফাঁদে পড়ে গ্রাহকরা প্রতারিত হচ্ছে। সম্প্রতি এ প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ পায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি। অভিযোগের পর তদন্তে নেমে প্রতারণার সত্যতাও খুঁজে পেয়েছে বিটিআরসি।
বিটিআরসি জানিয়েছে, গ্রাহকের অজান্তে টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিসের (টিভ্যাস) মাধ্যমে সংিশ্লষ্ট ফোন অপরারেটর প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। টিভ্যাস সেবার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ফোন অপারেটরা গ্রাহকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ কেটে নিচ্ছে। গ্রাহকের অজান্তে প্রতিদিন বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের টাকা কেটে নেয়ার বিষয়টি বিটিআরসির নজরে এসেছে।
বিটিআরসির উপ-পরিচালক (মিডিয়া) মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, টিভ্যাস-এর পূর্ণরূপ হলো টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস। মুঠোফোন অপারেটরের গ্রাহকদের সমসাময়িক নিউজ অ্যালার্ট, ওয়েলকাম টিউন, গান, ওয়াল পেপার, ভিডিও, বিভিন্ন তথ্য (কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ধর্ম ইত্যাদিবিষয়ক), লাইফ স্টাইল, মুঠোফোনের গেম, ব্যাক গ্রাউন্ড মিউজিক ইত্যাদি সেবা টিভ্যাস হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে ২০১০ সালের দিকে স্বল্প পরিসরে টিভ্যাস সেবা প্রদান শুরু হয়। কিন্তু ২০১৮ সাল নাগাদ এর ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিটিআরসি হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য গাইডলাইন আইন প্রণয়ন করা হয় এবং সে সময় হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদান শুরু করা হয়। বর্তমানে বিটিআরসির অনুমোদিত টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (টিভ্যাস) প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ১৮২টি। টিভ্যাস প্রোভাইডাররা চারটি মুঠোফোন অপারেটরের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে মুঠোফোন গ্রাহকদের শর্টকোড, এসএমএস, আইভিআর, ওয়াপ, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিভ্যাস সেবা দিয়ে থাকে। সেবার বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রাপ্য অর্থের একটা অংশ সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক মুঠোফোন অপারেটররা পেয়ে থাকে। এছাড়া টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অর্জিত রাজস্বের মোট ৬.৫% বিটিআরসি সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বিটিআরসি জানিয়েছে, সম্প্রতি টিভ্যাস সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে কিছু অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সার্ভিস এক্টিভেট করে টাকা কেটে নিয়ে যায় ফোন কোম্পানিগুলো। গ্রাহকের জন্য বিরক্তিকর অথবা প্রয়োজন নেই এমন সেবা চালু করে দিয়ে গ্রাহকের টাকা কেটে নিচ্ছে ফোন কোম্পানিগুলো। গ্রামীণফোন, এয়ারটেল, রবি, এবং বাংলালিংক এ চারটি ফোন কোম্পানিতে টিভ্যাস সেবার নামে গ্রাহকদের টাকা কেটে নেয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি।
বিটিআরসি জানিয়েছে, বিটিআরসির প্রাপ্য রাজস্ব পরিশোধ না করে কিছু প্রতিষ্ঠান টিভ্যাস সেবার নামে টাকা কেটে নিচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে বিটিআরসি থেকে টিভ্যাস সেবা দিতে রেজিস্ট্রেশনকারী ১১টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছে বিটিআরসি। এর মধ্যে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের অনিয়মও খুঁজে পেয়েছে বিটিআরসি। কিছু প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা সঠিক ছিল না। অর্থাৎ রেজিস্ট্রেশন নেয়ার সময় বিটিআরসিতে যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে ওই ঠিকানায় অফিস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া বিটিআরসি থেকে সার্ভিস এবং ট্যারিফ অনুমোদন ছাড়াই টিভ্যাস সেবা দিয়ে আসছে কিছু প্রতিষ্ঠান। কিছু প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব মনিটরিং টার্মিনাল বা অনলাইন মনিটরিং থাকার কথা থাকলেও তা পাওয়া যায়নি। বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে দেখা গেছে, অডিট রিপোর্ট প্রদান করা হয় না। ইনফ্রাকট্রাকচার শেয়ারিং অ্যাগ্রিমেন্ট না করে সার্ভার স্থাপন করে কিছু প্রতিষ্ঠান এ সেবা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বিটিআরসির রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি তো রয়েছেই। বিটিআরসি অভিযান চালিয়ে ফোন অপারেটিং কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তিতে টিভ্যাস সেবা দেয়ার যথাযথ নীয়ম না মানায় এবং নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকায় উইম মিয়াকি লি., মিয়াকি মিডিয়া লি. এবং বিনবিট মোবাইল এন্টারটেইনমেন্ট লি.কে জরিমানা করা হয়েছে।
মুঠোফোনে টিভ্যাস সেবার নামে প্রতারণা
রোববার, ১৮ এপ্রিল ২০২১
মুঠোফোন ব্যবহারীদের অজান্তে টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্র্ভিস (টিভ্যাস) সেবার নামে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে ফোন কোম্পানিগুলো। গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, এয়ারটেল-রবি ও টেলিটক, এ ৪ অপারেটর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন এসব ফোন কোম্পানির অপারেটিং সিস্টেমের ফাঁদে পড়ে গ্রাহকরা প্রতারিত হচ্ছে। সম্প্রতি এ প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ পায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি। অভিযোগের পর তদন্তে নেমে প্রতারণার সত্যতাও খুঁজে পেয়েছে বিটিআরসি।
বিটিআরসি জানিয়েছে, গ্রাহকের অজান্তে টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিসের (টিভ্যাস) মাধ্যমে সংিশ্লষ্ট ফোন অপরারেটর প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। টিভ্যাস সেবার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ফোন অপারেটরা গ্রাহকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ কেটে নিচ্ছে। গ্রাহকের অজান্তে প্রতিদিন বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের টাকা কেটে নেয়ার বিষয়টি বিটিআরসির নজরে এসেছে।
বিটিআরসির উপ-পরিচালক (মিডিয়া) মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, টিভ্যাস-এর পূর্ণরূপ হলো টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস। মুঠোফোন অপারেটরের গ্রাহকদের সমসাময়িক নিউজ অ্যালার্ট, ওয়েলকাম টিউন, গান, ওয়াল পেপার, ভিডিও, বিভিন্ন তথ্য (কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ধর্ম ইত্যাদিবিষয়ক), লাইফ স্টাইল, মুঠোফোনের গেম, ব্যাক গ্রাউন্ড মিউজিক ইত্যাদি সেবা টিভ্যাস হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে ২০১০ সালের দিকে স্বল্প পরিসরে টিভ্যাস সেবা প্রদান শুরু হয়। কিন্তু ২০১৮ সাল নাগাদ এর ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিটিআরসি হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য গাইডলাইন আইন প্রণয়ন করা হয় এবং সে সময় হতে টিভ্যাস রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রদান শুরু করা হয়। বর্তমানে বিটিআরসির অনুমোদিত টেলিকমিউনিকেশন ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস (টিভ্যাস) প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় ১৮২টি। টিভ্যাস প্রোভাইডাররা চারটি মুঠোফোন অপারেটরের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে মুঠোফোন গ্রাহকদের শর্টকোড, এসএমএস, আইভিআর, ওয়াপ, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিভ্যাস সেবা দিয়ে থাকে। সেবার বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রাপ্য অর্থের একটা অংশ সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক মুঠোফোন অপারেটররা পেয়ে থাকে। এছাড়া টিভ্যাস প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অর্জিত রাজস্বের মোট ৬.৫% বিটিআরসি সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বিটিআরসি জানিয়েছে, সম্প্রতি টিভ্যাস সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে কিছু অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে গ্রাহকের অজান্তে টিভ্যাস সার্ভিস এক্টিভেট করে টাকা কেটে নিয়ে যায় ফোন কোম্পানিগুলো। গ্রাহকের জন্য বিরক্তিকর অথবা প্রয়োজন নেই এমন সেবা চালু করে দিয়ে গ্রাহকের টাকা কেটে নিচ্ছে ফোন কোম্পানিগুলো। গ্রামীণফোন, এয়ারটেল, রবি, এবং বাংলালিংক এ চারটি ফোন কোম্পানিতে টিভ্যাস সেবার নামে গ্রাহকদের টাকা কেটে নেয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি।
বিটিআরসি জানিয়েছে, বিটিআরসির প্রাপ্য রাজস্ব পরিশোধ না করে কিছু প্রতিষ্ঠান টিভ্যাস সেবার নামে টাকা কেটে নিচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে বিটিআরসি থেকে টিভ্যাস সেবা দিতে রেজিস্ট্রেশনকারী ১১টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছে বিটিআরসি। এর মধ্যে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের অনিয়মও খুঁজে পেয়েছে বিটিআরসি। কিছু প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা সঠিক ছিল না। অর্থাৎ রেজিস্ট্রেশন নেয়ার সময় বিটিআরসিতে যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে ওই ঠিকানায় অফিস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া বিটিআরসি থেকে সার্ভিস এবং ট্যারিফ অনুমোদন ছাড়াই টিভ্যাস সেবা দিয়ে আসছে কিছু প্রতিষ্ঠান। কিছু প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব মনিটরিং টার্মিনাল বা অনলাইন মনিটরিং থাকার কথা থাকলেও তা পাওয়া যায়নি। বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে দেখা গেছে, অডিট রিপোর্ট প্রদান করা হয় না। ইনফ্রাকট্রাকচার শেয়ারিং অ্যাগ্রিমেন্ট না করে সার্ভার স্থাপন করে কিছু প্রতিষ্ঠান এ সেবা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বিটিআরসির রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি তো রয়েছেই। বিটিআরসি অভিযান চালিয়ে ফোন অপারেটিং কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তিতে টিভ্যাস সেবা দেয়ার যথাযথ নীয়ম না মানায় এবং নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকায় উইম মিয়াকি লি., মিয়াকি মিডিয়া লি. এবং বিনবিট মোবাইল এন্টারটেইনমেন্ট লি.কে জরিমানা করা হয়েছে।