alt

আন্তর্জাতিক

জলবায়ু পরিবর্তনে দায়ী দেশের বিরুদ্ধে মামলার সুযোগ দিলো জাতিসংঘ আদালত

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তনের দায়ে একটি দেশের বিরুদ্ধে আরেক দেশ মামলা করতে পারবে—এমন ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক প্রতিষ্ঠান, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)। এই রায়ের মধ্য দিয়ে জলবায়ু ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগের নতুন দ্বার খুলে গেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার দেওয়া রায়ে আইসিজে জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, তার জন্য দায়ী দেশগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করা বৈধ। এমনকি যুগ যুগ ধরে যেসব দেশ উচ্চমাত্রায় কার্বন নিঃসরণ করে আসছে, তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা যেতে পারে। যদিও আদালত এটাও বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কোন অংশের জন্য কে দায়ী, তা নির্ধারণ করা জটিল হতে পারে।

আইসিজের এই রায়ের কোনো বাধ্যতামূলক প্রয়োগ না থাকলেও এর আন্তর্জাতিক প্রভাব বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়বে বলেই ধারণা। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো এটি একটি বিজয় হিসেবে দেখছে। যারা দীর্ঘদিন ধরেই জলবায়ু সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপে অগ্রগতি না দেখে হতাশায় ছিল, তারা এই রায়কে নতুন আশার আলো হিসেবে দেখছেন।

এই উদ্যোগটির শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের একদল তরুণ আইন শিক্ষার্থীর হাতে। তারাই প্রথম আইসিজেতে জলবায়ু ইস্যুতে মামলা করার ধারণা সামনে আনেন। এই প্রেক্ষাপটে ভানুয়াতুর পরিবেশকর্মী ফ্লোরা ভ্যানো রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আজ রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারব। আইসিজে আমাদের ভোগান্তি, সহনশীলতা ও ভবিষ্যতের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে।”

ভানুয়াতু জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর একটি। ফ্লোরা ভ্যানো বলেন, “এই রায় শুধু আমাদের জন্য নয়, বরং পৃথিবীর প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত গোষ্ঠীর জন্য একটি জয়।”

বিশ্বের সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে আইসিজের বিচারিক এখতিয়ার সারা পৃথিবীজুড়ে বিস্তৃত। জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার আইনজীবীরা বলছেন, বহু বছর ধরে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে যারা বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়িয়েছে, তাদের কাছ থেকে এখন ক্ষতিপূরণ আদায়ের পথ অনেকটা সহজ হলো।

বেশ কয়েকটি দরিদ্র ও জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশ এই মামলায় সমর্থন জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, ধনী রাষ্ট্রগুলো জলবায়ু বিষয়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালন করছে না। যদিও উন্নত দেশগুলো, যেমন যুক্তরাজ্য, দাবি করছে—২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সমঝোতাই যথেষ্ট, নতুন করে আইনি বাধ্যবাধকতার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আইসিজে বুধবারের রায়ে এই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে।

রায়ে বিচারক আওয়াসা ওয়াইউজি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে ধনী দেশগুলো যদি যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ না করে, তাহলে সেটিকে প্যারিস চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এমনকি যারা প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি, বা যুক্তরাষ্ট্রের মতো যারা তা থেকে সরে যেতে চায়, তাদেরও পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখতে হবে।

এই রায় পরামর্শমূলক হলেও অতীতে দেখা গেছে, অনেক দেশ আইসিজের এমন রায় বাস্তবায়ন করেছে। যেমন—গত বছর যুক্তরাজ্য আইসিজের রায় মেনে মরিশাসকে দ্বীপপুঞ্জ ফিরিয়ে দেয়।

‘সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ল’র (সিআইইএল) জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়ী চৌধুরী বলেন, “এই রায় ঐতিহাসিক। প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে এসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আজ একটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের ক্ষতিপূরণসহ প্রতিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে—আদালত এটি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে।”

ছবি

‘বন্ধু’ এপস্টিনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন ট্রাম্প-ক্লিনটন

ছবি

সীমান্তে গোলাবর্ষণ ও ভারী অস্ত্রের সংঘাতে উত্তপ্ত থাই-কম্বোডিয়া সম্পর্ক

অনাহারের ঝুঁকিতে গাজার সাংবাদিকরা, সংবাদ সংস্থাগুলোর সতর্কতা

ছবি

ম্যাখোঁর সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র

প্রয়োজনে আবার ভাষা আন্দোলন হবে, মাতৃভাষাকে রক্ষা করতেই হবে : মমতা

ছবি

খেতে না পেয়ে অজ্ঞান হচ্ছেন গাজাবাসী

বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের ইন্টারনেট বিভ্রাট, আড়াই ঘণ্টা অচল স্টারলিংক

ছবি

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া পুরোনো বিরোধ নতুন সংঘাতে রূপ নিল কেন

যুদ্ধে নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহে ‘সাইবার তেলাপোকা’ উদ্ভাবন জার্মানির

ছবি

শান্তি আলোচনা শেষ হতেই রাশিয়া-ইউক্রেন পাল্টাপাল্টি ড্রোন হামলা

৪৯ আরোহীসহ রুশ বিমান বিধ্বস্ত, সব যাত্রী নিহত!

ছবি

কেন সংঘর্ষে জড়িয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া?

শুল্ক হার ১৫ শতাংশের নিচে নয়, ঘোষণা ট্রাম্পের

ছবি

গাজায় অন্তহীন দুঃস্বপ্ন, ক্ষুধায় পথে পথে পড়ে আছে মানুষ

ছবি

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষ, কূটনৈতিক সম্পর্ক অবনমিত

ছবি

ভারতে আল-কায়েদার চার সদস্য গ্রেপ্তার, ফোনে ‘অটো-ডিলিট অ্যাপ’ ব্যবহার

আইন ভাঙলে বাতিল হবে ভিসা, কড়া হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি

পশ্চিমাদের ঠেকাতে ত্রিপক্ষীয় ঐক্য, তেহরানে রাশিয়া-চীন-ইরান বৈঠক

যুদ্ধবিরতি টেকসই নয়, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য ইরান প্রস্তুত : পেজেশকিয়ান

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র-জাপান ‘বিশাল’ বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা ট্রাম্পের

ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি : ইসরায়েলি সেনাপ্রধান

ছবি

গাজায় নিরুপায় মায়ের চোখের সামনেই মরছে ক্ষুধার্ত শিশু

ছবি

ট্রাম্পের তহবিল বন্ধ, অর্ধসমাপ্ত পানির প্রকল্পে ঝুঁকিতে লাখো মানুষ

পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগের পরিকল্পনা নেই : ইরান

ছবি

ইসরায়েল দ্বিতীয়বারের মতো ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত হুদাইদা বন্দরেবিমান হামলা

বুধবার তুরস্কে শান্তি আলোচনায় বসবে ইউক্রেন ও রাশিয়া : জেলেনস্কি

ছবি

গাজায় ‘এখনই যুদ্ধ থামাতে’ যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সসহ ২৮ দেশের আহ্বান

নির্বাচনে হেরেও ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ জাপানের প্রধানমন্ত্রী

স্থল ও আকাশপথে আবারও হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল

ছবি

পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে আলোচনায় বসবে ইরান

মুম্বাইয়ে ট্রেন বিস্ফোরণ মামলা: ১৯ বছর পর সাজাপ্রাপ্ত সবাই খালাস

ছবি

নারী-পুরুষকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১১

গাজায় ত্রাণপ্রত্যাশী ৯৩ জনকে গুলি করে হত্যা, যুদ্ধের নৃশংসতার নিন্দা জানালেন পোপ

ছবি

ইসরায়েলি হামলার ধাক্কা সামলে আকাশ প্রতিরক্ষা মজবুত করল তেহরান

রাশিয়াকে নতুন করে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব জেলেনস্কির

ছবি

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও সিরিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা

tab

আন্তর্জাতিক

জলবায়ু পরিবর্তনে দায়ী দেশের বিরুদ্ধে মামলার সুযোগ দিলো জাতিসংঘ আদালত

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তনের দায়ে একটি দেশের বিরুদ্ধে আরেক দেশ মামলা করতে পারবে—এমন ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক প্রতিষ্ঠান, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)। এই রায়ের মধ্য দিয়ে জলবায়ু ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগের নতুন দ্বার খুলে গেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার দেওয়া রায়ে আইসিজে জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, তার জন্য দায়ী দেশগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করা বৈধ। এমনকি যুগ যুগ ধরে যেসব দেশ উচ্চমাত্রায় কার্বন নিঃসরণ করে আসছে, তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা যেতে পারে। যদিও আদালত এটাও বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কোন অংশের জন্য কে দায়ী, তা নির্ধারণ করা জটিল হতে পারে।

আইসিজের এই রায়ের কোনো বাধ্যতামূলক প্রয়োগ না থাকলেও এর আন্তর্জাতিক প্রভাব বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়বে বলেই ধারণা। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো এটি একটি বিজয় হিসেবে দেখছে। যারা দীর্ঘদিন ধরেই জলবায়ু সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপে অগ্রগতি না দেখে হতাশায় ছিল, তারা এই রায়কে নতুন আশার আলো হিসেবে দেখছেন।

এই উদ্যোগটির শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের একদল তরুণ আইন শিক্ষার্থীর হাতে। তারাই প্রথম আইসিজেতে জলবায়ু ইস্যুতে মামলা করার ধারণা সামনে আনেন। এই প্রেক্ষাপটে ভানুয়াতুর পরিবেশকর্মী ফ্লোরা ভ্যানো রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আজ রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারব। আইসিজে আমাদের ভোগান্তি, সহনশীলতা ও ভবিষ্যতের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে।”

ভানুয়াতু জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর একটি। ফ্লোরা ভ্যানো বলেন, “এই রায় শুধু আমাদের জন্য নয়, বরং পৃথিবীর প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত গোষ্ঠীর জন্য একটি জয়।”

বিশ্বের সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে আইসিজের বিচারিক এখতিয়ার সারা পৃথিবীজুড়ে বিস্তৃত। জলবায়ু ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার আইনজীবীরা বলছেন, বহু বছর ধরে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে যারা বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়িয়েছে, তাদের কাছ থেকে এখন ক্ষতিপূরণ আদায়ের পথ অনেকটা সহজ হলো।

বেশ কয়েকটি দরিদ্র ও জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশ এই মামলায় সমর্থন জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, ধনী রাষ্ট্রগুলো জলবায়ু বিষয়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালন করছে না। যদিও উন্নত দেশগুলো, যেমন যুক্তরাজ্য, দাবি করছে—২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সমঝোতাই যথেষ্ট, নতুন করে আইনি বাধ্যবাধকতার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আইসিজে বুধবারের রায়ে এই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে।

রায়ে বিচারক আওয়াসা ওয়াইউজি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে ধনী দেশগুলো যদি যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ না করে, তাহলে সেটিকে প্যারিস চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, এমনকি যারা প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি, বা যুক্তরাষ্ট্রের মতো যারা তা থেকে সরে যেতে চায়, তাদেরও পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখতে হবে।

এই রায় পরামর্শমূলক হলেও অতীতে দেখা গেছে, অনেক দেশ আইসিজের এমন রায় বাস্তবায়ন করেছে। যেমন—গত বছর যুক্তরাজ্য আইসিজের রায় মেনে মরিশাসকে দ্বীপপুঞ্জ ফিরিয়ে দেয়।

‘সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ল’র (সিআইইএল) জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়ী চৌধুরী বলেন, “এই রায় ঐতিহাসিক। প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে এসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আজ একটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের ক্ষতিপূরণসহ প্রতিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে—আদালত এটি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে।”

back to top