কল্পনা করুন এমন একটি পৃথিবী, যেখানে সূর্যের দেখা মেলে না। গ্রীষ্মেও পথে-প্রান্তরে জমে থাকে বরফ। পৃথিবীময় একটাই ঋতু– শীত। বাগানে ফোটে না ফুল, ওড়ে না প্রজাপতি। আকাশজুড়ে শুধু গাঢ় ধোঁয়া। তাপমাত্রা কম হওয়ায় মাঠে ফসল উৎপাদন হয় না। দোকানে নেই শাকসবজি, ফল।
কোনো কল্পকাহিনি নয়; এটি পারমাণবিক শীতকালের বাস্তবতা। বিশ্বব্যাপী পারমাণু যুদ্ধ বাধলে মানুষকে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। পুরো মানবসভ্যতা বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়বে। দ্য পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির (পেন স্টেট) বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় জানার চেষ্টা করেছেন, কীভাবে পারমাণবিক শীতকাল বিশ্বব্যাপী ভুট্টার উৎপাদনকে প্রভাবিত করতে পারে। ভুট্টা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত শস্য। গবেষকরা পারমাণবিক যুদ্ধ পরিস্থিতির ছয়টি মডেল তৈরি করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে আঞ্চলিক থেকে শুরু করে বৃহৎ আকারের বৈশ্বিক সংঘাত। তারা বলছেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে পারমাণবিক অগ্নিঝড় থেকে বায়ুম-লে বিপুল পরিমাণ ক্ষতিকর পদার্থ নির্গত হবে। এর পরিমাণ হতে পারে পাঁচ থেকে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টন পর্যন্ত।
গবেষণায় দেখা যায়, সবচেয়ে ভালো পরিস্থিতিতেও ভুট্টার উৎপাদন ৭ শতাংশ কমেছে। খারাপ ক্ষেত্রে উৎপাদন ৮০ শতাংশ কমেছে। পেন স্টেটের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইউনিং শি বলেন, বিশ্বব্যাপী ফসল উৎপাদনে ৭ শতাংশ হ্রাসও খাদ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। উৎপাদন যদি ৮০ শতাংশ হ্রাস পায়, তাহলে ভয়াবহ পরিণতি হবে।
শুধু ভুট্টা নয়, অন্য ফসলের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হবে। গবেষণায় ভুট্টাকে প্রতিনিধিত্বকারী ফসল হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। এটি বেশ জলবায়ু সংবেদনশীল। তাই এর ক্ষেত্রে যেমনটা ঘটবে, অন্য ক্ষেত্রেও তেমন ঘটার সম্ভাবনা বেশি। এর ব্যাখ্যা পেতে পেন স্টেটের কৃষিবিজ্ঞান কলেজের বিজ্ঞানীদের তৈরি কৃষি বাস্তুতন্ত্র চক্র মডেল ব্যবহার করা হয়েছে। পারমাণবিক যুদ্ধ হলে যে ধুলা ও তেজস্ক্রিয় পদার্থ নির্গত হবে, তা পৃথিবীর রক্ষাকবচ বায়ুম-লের ওজোন স্তরকে ধ্বংস করে দেবে। এতে সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি-বি রশ্মি পৃথিবীতে সরাসরি প্রবেশ করবে। এ রশ্মি মানুষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করে; পাশাপাশি উদ্ভিদের খাদ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে। বর্তমানে পৃথিবীর নানা প্রান্তে যুদ্ধ-সংঘাত লেগে আছে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো তাদের পেশিশক্তি প্রদর্শন ও সাম্রাজ্য বিস্তৃত করতে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এর পেছনে অস্ত্র বিক্রির উদ্দেশ্যও আছে। যুদ্ধে পরমাণু শক্তিধর দেশগুলো সরাসরি অংশ নিচ্ছে। বিষয়টি খুবই ভয়ংকর। যে কোনো সময় পৃথিবীতে পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি রয়েছে।
পারমাণু যুদ্ধ নিয়ে আসতে পারে ভয়ংকর পারমাণবিক শীতকাল। এটি এমন এক অবস্থা, যা মানুষের কল্পনারও বাইরে। এ অবস্থায় সাহারা মরুভূমির মতো স্থানেও জমতে পারে বরফ। পুরো বিশ্ব উজাড় হয়ে যেতে পারে। মানুষই এখন মানুষের অস্তিত্বের সবচেয়ে বড় হুমকি।
শনিবার, ০৯ আগস্ট ২০২৫
কল্পনা করুন এমন একটি পৃথিবী, যেখানে সূর্যের দেখা মেলে না। গ্রীষ্মেও পথে-প্রান্তরে জমে থাকে বরফ। পৃথিবীময় একটাই ঋতু– শীত। বাগানে ফোটে না ফুল, ওড়ে না প্রজাপতি। আকাশজুড়ে শুধু গাঢ় ধোঁয়া। তাপমাত্রা কম হওয়ায় মাঠে ফসল উৎপাদন হয় না। দোকানে নেই শাকসবজি, ফল।
কোনো কল্পকাহিনি নয়; এটি পারমাণবিক শীতকালের বাস্তবতা। বিশ্বব্যাপী পারমাণু যুদ্ধ বাধলে মানুষকে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। পুরো মানবসভ্যতা বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়বে। দ্য পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির (পেন স্টেট) বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় জানার চেষ্টা করেছেন, কীভাবে পারমাণবিক শীতকাল বিশ্বব্যাপী ভুট্টার উৎপাদনকে প্রভাবিত করতে পারে। ভুট্টা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত শস্য। গবেষকরা পারমাণবিক যুদ্ধ পরিস্থিতির ছয়টি মডেল তৈরি করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে আঞ্চলিক থেকে শুরু করে বৃহৎ আকারের বৈশ্বিক সংঘাত। তারা বলছেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে পারমাণবিক অগ্নিঝড় থেকে বায়ুম-লে বিপুল পরিমাণ ক্ষতিকর পদার্থ নির্গত হবে। এর পরিমাণ হতে পারে পাঁচ থেকে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টন পর্যন্ত।
গবেষণায় দেখা যায়, সবচেয়ে ভালো পরিস্থিতিতেও ভুট্টার উৎপাদন ৭ শতাংশ কমেছে। খারাপ ক্ষেত্রে উৎপাদন ৮০ শতাংশ কমেছে। পেন স্টেটের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইউনিং শি বলেন, বিশ্বব্যাপী ফসল উৎপাদনে ৭ শতাংশ হ্রাসও খাদ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। উৎপাদন যদি ৮০ শতাংশ হ্রাস পায়, তাহলে ভয়াবহ পরিণতি হবে।
শুধু ভুট্টা নয়, অন্য ফসলের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হবে। গবেষণায় ভুট্টাকে প্রতিনিধিত্বকারী ফসল হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। এটি বেশ জলবায়ু সংবেদনশীল। তাই এর ক্ষেত্রে যেমনটা ঘটবে, অন্য ক্ষেত্রেও তেমন ঘটার সম্ভাবনা বেশি। এর ব্যাখ্যা পেতে পেন স্টেটের কৃষিবিজ্ঞান কলেজের বিজ্ঞানীদের তৈরি কৃষি বাস্তুতন্ত্র চক্র মডেল ব্যবহার করা হয়েছে। পারমাণবিক যুদ্ধ হলে যে ধুলা ও তেজস্ক্রিয় পদার্থ নির্গত হবে, তা পৃথিবীর রক্ষাকবচ বায়ুম-লের ওজোন স্তরকে ধ্বংস করে দেবে। এতে সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি-বি রশ্মি পৃথিবীতে সরাসরি প্রবেশ করবে। এ রশ্মি মানুষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করে; পাশাপাশি উদ্ভিদের খাদ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করে। বর্তমানে পৃথিবীর নানা প্রান্তে যুদ্ধ-সংঘাত লেগে আছে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো তাদের পেশিশক্তি প্রদর্শন ও সাম্রাজ্য বিস্তৃত করতে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এর পেছনে অস্ত্র বিক্রির উদ্দেশ্যও আছে। যুদ্ধে পরমাণু শক্তিধর দেশগুলো সরাসরি অংশ নিচ্ছে। বিষয়টি খুবই ভয়ংকর। যে কোনো সময় পৃথিবীতে পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি রয়েছে।
পারমাণু যুদ্ধ নিয়ে আসতে পারে ভয়ংকর পারমাণবিক শীতকাল। এটি এমন এক অবস্থা, যা মানুষের কল্পনারও বাইরে। এ অবস্থায় সাহারা মরুভূমির মতো স্থানেও জমতে পারে বরফ। পুরো বিশ্ব উজাড় হয়ে যেতে পারে। মানুষই এখন মানুষের অস্তিত্বের সবচেয়ে বড় হুমকি।