তালেবান অপ্রত্যাশিতভাবে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলে নেয়ায় বিদেশের বিভিন্ন দূর্তাবাসে বেকায়দায় পড়েছেন দায়িত্বরত শত শত আফগান কূটনীতিক। একদিকে তাদের কাজ চালানোর অর্থ ফুরিয়ে যাচ্ছে। আরেক দিকে দেশে থাকা পরিবার নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তা। মরিয়া হয়ে তারা এখন বিদেশেই আশ্রয় খুঁজতে শুরু করেছেন।
আফগানিস্তানে তালেবান গত ১৫ অগাস্ট পশ্চিমা সমর্থিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার পর গত মঙ্গলবার বলেছে, তারা সব দেশেই দূতাবাসগুলোতে চিঠি দিয়ে আফগান কূটনীতিকদেরকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৮ দূতাবাসকর্মী নিজ নিজ দূতাবাসে স্থবিরতা এবং হতাশা দেখা দেয়ার কথা বলেছেন। এর মধ্যে কানাডা, জার্মানি ও জাপানের আফগান দূতাবাসের কর্মীরাও রয়েছেন।
বার্লিনে নিযুক্ত এক আফগান কূটনীতিক বলেন, এখানে আমার সহকর্মীরা এবং আরও বহু দেশের কর্মীরা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে তাদেরকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য মিনতি করছেন।
কাবুলে থেকে যাওয়া স্ত্রী ও চার মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন এই কূটনীতিক বলেন, আমি আক্ষরিক অর্থেই ভিক্ষা চাইছি।কূটনীতিকরা এখন শরণার্থী হয়ে যেতে ইচ্ছুক। কাবুলের একটি বড় বাড়িসহ নিজের যা কিছু আছে তা বিক্রি করে দিয়ে আবার নতুন করে সব শুরু করতে হবে।
বিশ্বের অনেক দেশই এখনও আফগানিস্তানের নতুন তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেবে কি না তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় থাকায় সেইসব দেশে অবস্থিত আফগান দূতাবাসগুলোও নিদারণ অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আফজাল আশরাফ।
তিনি বলেন, এই দূতাবাসগুলো কীই বা করতে পারে? তারা একটা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে না। বাস্তবায়নের জন্য তাদের কোনও নীতি নেই। কিন্তু দূতাবাসের কর্মীরা আফগানিস্তানে ফিরে গেলে নিরাপত্তা নিয়ে হুমকিতে পড়ার আশঙ্কা আছে। তাই তারা বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে পারে বলে জানান আশরাফ।
আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি অবশ্য গত মঙ্গলবার কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সব আফগান দূতাবাসেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার বার্তা পাঠিয়েছে তালেবান। আফগানিস্তান আপনাদের জন্য প্রচুর বিনিয়োগ করেছে, আপনারা আফগানিস্তানের সম্পদ।
ঊধ্র্বতন এক আফগান কূটনীতিক আনুমানিক হিসাব দিয়ে বলেছেন, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের আফগান দূতাবাসগুলোতে প্রায় তিন হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছে কিংবা তাদের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল হয়ে আছে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর আশরাফ গণির উৎখাত হওয়া প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তালেবান সরকারকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে দূতাবাসগুলোকে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু এসব আহ্বানে মাঠ পর্যায়ের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কোনও দিশা পাচ্ছেন না কূটনীতিকরা।
কানাডার রাজধানীতে অবস্থিত আফগান দূতাবাসের এক কর্মী বলেন, অর্থ নেই। এ অবস্থায় কাজ চালানো সম্ভব নয়। এ মুহূর্তে আমাকে বেতন দেয়া হচ্ছে না।
ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে আফগান দূতাবাসের দুই কর্মীও বলেছেন, কাজ চালানোর মতো অর্থ তাদের নেই। তারা এও বলছেন যে, তারা আফগানিস্তানে ফিরে যাবেন না। কারণ, আগের আফগান সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে তারা তালেবানের নিশানা হতে পারেন বলে শঙ্কা আছে। তাই ভারতেই আশ্রয় পেতে চান তারা।
শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
তালেবান অপ্রত্যাশিতভাবে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলে নেয়ায় বিদেশের বিভিন্ন দূর্তাবাসে বেকায়দায় পড়েছেন দায়িত্বরত শত শত আফগান কূটনীতিক। একদিকে তাদের কাজ চালানোর অর্থ ফুরিয়ে যাচ্ছে। আরেক দিকে দেশে থাকা পরিবার নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তা। মরিয়া হয়ে তারা এখন বিদেশেই আশ্রয় খুঁজতে শুরু করেছেন।
আফগানিস্তানে তালেবান গত ১৫ অগাস্ট পশ্চিমা সমর্থিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার পর গত মঙ্গলবার বলেছে, তারা সব দেশেই দূতাবাসগুলোতে চিঠি দিয়ে আফগান কূটনীতিকদেরকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৮ দূতাবাসকর্মী নিজ নিজ দূতাবাসে স্থবিরতা এবং হতাশা দেখা দেয়ার কথা বলেছেন। এর মধ্যে কানাডা, জার্মানি ও জাপানের আফগান দূতাবাসের কর্মীরাও রয়েছেন।
বার্লিনে নিযুক্ত এক আফগান কূটনীতিক বলেন, এখানে আমার সহকর্মীরা এবং আরও বহু দেশের কর্মীরা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে তাদেরকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য মিনতি করছেন।
কাবুলে থেকে যাওয়া স্ত্রী ও চার মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন এই কূটনীতিক বলেন, আমি আক্ষরিক অর্থেই ভিক্ষা চাইছি।কূটনীতিকরা এখন শরণার্থী হয়ে যেতে ইচ্ছুক। কাবুলের একটি বড় বাড়িসহ নিজের যা কিছু আছে তা বিক্রি করে দিয়ে আবার নতুন করে সব শুরু করতে হবে।
বিশ্বের অনেক দেশই এখনও আফগানিস্তানের নতুন তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেবে কি না তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় থাকায় সেইসব দেশে অবস্থিত আফগান দূতাবাসগুলোও নিদারণ অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আফজাল আশরাফ।
তিনি বলেন, এই দূতাবাসগুলো কীই বা করতে পারে? তারা একটা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে না। বাস্তবায়নের জন্য তাদের কোনও নীতি নেই। কিন্তু দূতাবাসের কর্মীরা আফগানিস্তানে ফিরে গেলে নিরাপত্তা নিয়ে হুমকিতে পড়ার আশঙ্কা আছে। তাই তারা বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে পারে বলে জানান আশরাফ।
আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি অবশ্য গত মঙ্গলবার কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সব আফগান দূতাবাসেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার বার্তা পাঠিয়েছে তালেবান। আফগানিস্তান আপনাদের জন্য প্রচুর বিনিয়োগ করেছে, আপনারা আফগানিস্তানের সম্পদ।
ঊধ্র্বতন এক আফগান কূটনীতিক আনুমানিক হিসাব দিয়ে বলেছেন, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের আফগান দূতাবাসগুলোতে প্রায় তিন হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছে কিংবা তাদের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল হয়ে আছে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর আশরাফ গণির উৎখাত হওয়া প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তালেবান সরকারকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে দূতাবাসগুলোকে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু এসব আহ্বানে মাঠ পর্যায়ের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কোনও দিশা পাচ্ছেন না কূটনীতিকরা।
কানাডার রাজধানীতে অবস্থিত আফগান দূতাবাসের এক কর্মী বলেন, অর্থ নেই। এ অবস্থায় কাজ চালানো সম্ভব নয়। এ মুহূর্তে আমাকে বেতন দেয়া হচ্ছে না।
ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে আফগান দূতাবাসের দুই কর্মীও বলেছেন, কাজ চালানোর মতো অর্থ তাদের নেই। তারা এও বলছেন যে, তারা আফগানিস্তানে ফিরে যাবেন না। কারণ, আগের আফগান সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে তারা তালেবানের নিশানা হতে পারেন বলে শঙ্কা আছে। তাই ভারতেই আশ্রয় পেতে চান তারা।