আবু সাইদ হত্যার চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করে বেরোবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ -সংবাদ
জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যা মামলায় আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউশনের তৈরি করা চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করেছে শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদেরে সাক্ষ্যগ্রহণ না নিয়ে এবং গণশুনানি না করে এ ধরনের প্রতিবেদন ঘরে বসে তৈরি করার অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এর প্রতিবাদে দিনভর প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরুতেই গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত বেরোবি শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাইদ হত্যা মামলায় আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটররা ঢাকায় বসে তদন্ত করে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য
উপস্থাপন এবং সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলামকে আবু সাইদ হত্যার মুল আসামি বানিয়ে বানোয়াট ও উগ্রতামূলক বক্তব্য প্রদান ও গণশুনানি না করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার,(২৬ জুন ২০২৫) বেলা ১১টা থেকে দিনভর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।
এতে শত শত সাধারণ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী উজ্জল, জেদিম, রায়হান, সিনথিয়াসহ অন্যরা।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটররা ঢাকায় বসে মনগড়া তদন্ত করেছেন তারা শহীদ আবু সাইদ হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরও কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ করেনি। এমন কী কোনো গণশুনানি করা হয়নি। অথচ চিফ প্রসিউকিটর তাজুল ইসলাম আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তা পুরোটাই বানানো তার মনগড়া গল্প। সে কারণে তার দেয়া তদন্ত
প্রতিবেদন ও চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
তারা অভিযোগ করেছে আবু সাইদ হত্যার মূল আসামিদের এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল সেই ঘটনাকে আড়াল করার জন্য সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলামকে এই হত্যা মামলায় প্রধান আসামি বানানো হয়েছে। অথচ জুলাই আন্দোলনের সময় তিনি আন্দোলনের সমর্থনে কাজ করেছেন। আবু সাইদ হত্যার সঙ্গে তার বিন্দু মাত্র সংম্পৃক্ততা নেই অথচ তাকেই মূল হোতাসহ বিভিন্ন ট্যাগ দেয়া হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক আদালতের প্রসিকিউটররা যে গল্প বলেছেন সেটা বলার আগে তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে প্রত্যক্ষদর্শী আর শহীদ আবু সাইদের সহযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাদের সাক্ষ্য নিয়েছেন গণশুনানি করেছেন তা হলে তিনি কিসের ভিত্তিতে আবু সাইদ হত্যার কথা বললেন এটা আমরা বুঝতে পারছি না। শিক্ষার্থীরা আবু সাইদ হত্যার ঘটনা নতুন করে তদন্ত গণশুনানি গ্রহণ করে সত্যিকার যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছে। সেই সঙ্গে সাবেক প্রক্টরকে মূল হোতা বানানোর চক্রান্ত আমরা মানি না বলে ঘোষণা দিয়ে তাদের দাবি মানা না হলে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানানো হয়।
এ ব্যাপারে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড, শওকত আলী বলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে আবু সাইদ হত্যার ব্যাপারে কী বলেছেন আমি তা জানি না। তবে চার্জশিট দেবার আগে ক্যাম্পাসে এসে প্রত্যক্ষদর্শীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
গণশুনানি করার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রথম শহীদ আবু সাইদ হত্যা মামলায় চার্জশিট দাখিলের আগে গণশুনানি করার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে বেরোবির শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যাবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গে আবু সাইদ হত্যার বিচারে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ভূমিকা গ্রহণ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মানবাধিকার সংস্থা নাগরিক সমাজের প্রতি আহবান জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংকালে এসব কথা বলা হয়। এ সময় শিক্ষকদের মধ্যে মাহমুদুল হক, বিজয় কুমার চাকি, হারুনর রশীদ, ফারজানা ইসলাম তৌসিসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, প্রেস বিফ্রিং কালে বক্তব্য দেন ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহারিয়ার সোহাগ, বেরোবি শিক্ষার্থী ও মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক রহমত আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নয়ন, শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আশিকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয় ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বেরোবির শিক্ষার্থীরা একটি যৌক্তিক আন্দোলনের অংশ করা কালে পুলিশের বর্বর গুলি বর্ষনের শিকার হয়। ওই ঘটনায় আমাদের প্রিয় সহযোদ্ধা আবু সাইদ শহীদ হন। শতাধিক শিক্ষার্থী গুরতর আহত হন। এই নির্মম পুলিশি নির্যাতনের চিত্র শুধু বাংলার জনগণ নয় সারাবিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে। এই বর্বর ঘটনার পর স্বৈরাচারি সরকারের পতন হলে শহীদ আবু সাইদের বড় ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে এবং আমরা আন্দোলনের সহযোদ্ধারা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা সাক্ষী হয়ে মামলা করি। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআই। পরে তদন্তের গতিশীলতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ট্রাইবুনাল তদন্তের দায়িত্ব পাবার পর বেরোবির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ করে। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই স্ব-প্রনোদিত হয়ে বিভিন্ন প্রমাণ সরবরাহ করে। কিন্তু গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি ট্রাইবুনাল কর্তৃক আয়োজিত প্রতিটি সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পিতভাবে পুলিশের
সংম্পৃক্তার বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে তারা এমন কিছু ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে উপস্থাপন করছে যারা ঘটনার পরিণতিতে আংশিক দায়ী। এর মাধ্যমে মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশ দাতাদের দায় মুক্তির সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
অভিযোগ করা হয় আজ ২৬ জন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে একটি তদন্ত প্রতিবেদনে ৩০ জনের সংম্পৃক্ততার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। তবে পূর্বেও ধারাবাহিকতায় এবারেও তারা পুলিশ সদস্যদের নাম উল্লেখ করেনি। বরং একটি প্রশাসনিক অবহেলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে অভিযুক্ত করেছে, যা শিক্ষার্থীদের কাছে প্রক্রিয়াগত বিচ্যুতি ও প্রহসনের সামিল।
এছাড়াও ২৩ জুন নির্ধারিত গণশুনানির পূর্ব ঘোষণা থাকলেও ট্রাইবুনালের একটি বিশেষ টিম রংপুরে অজ্ঞাত কারণে সেই গণশুনানি বাতিল করে। এবং তড়িঘড়ি করে প্রতিবেদন জমা দেবার প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যায়। এই আচরণ তদন্তের সচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরতর প্রশ্নের জন্ম
দিয়েছে।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ট্রাইবুনালের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেছে যেন প্রকৃত দায়ীদের বিশেষত যাদের নির্দেশে গুলিবর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে সংঘটিত হয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে প্রকৃত বিচারের প্রতিবেদন নিশ্চিত করা হয়। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মানবাধিকার সংস্থা ও নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানানো হয় তারা যেন এই বিচার প্রক্রিয়ায় যথাযথ সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গণশুনানি করার জন্য আলটিমেটাম প্রদান করেন অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেবার ঘোষণা দেয়া হয়।
আবু সাইদ হত্যার চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করে বেরোবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যা মামলায় আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউশনের তৈরি করা চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করেছে শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদেরে সাক্ষ্যগ্রহণ না নিয়ে এবং গণশুনানি না করে এ ধরনের প্রতিবেদন ঘরে বসে তৈরি করার অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এর প্রতিবাদে দিনভর প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরুতেই গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত বেরোবি শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাইদ হত্যা মামলায় আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটররা ঢাকায় বসে তদন্ত করে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য
উপস্থাপন এবং সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলামকে আবু সাইদ হত্যার মুল আসামি বানিয়ে বানোয়াট ও উগ্রতামূলক বক্তব্য প্রদান ও গণশুনানি না করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার,(২৬ জুন ২০২৫) বেলা ১১টা থেকে দিনভর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।
এতে শত শত সাধারণ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী উজ্জল, জেদিম, রায়হান, সিনথিয়াসহ অন্যরা।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটররা ঢাকায় বসে মনগড়া তদন্ত করেছেন তারা শহীদ আবু সাইদ হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরও কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ করেনি। এমন কী কোনো গণশুনানি করা হয়নি। অথচ চিফ প্রসিউকিটর তাজুল ইসলাম আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তা পুরোটাই বানানো তার মনগড়া গল্প। সে কারণে তার দেয়া তদন্ত
প্রতিবেদন ও চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
তারা অভিযোগ করেছে আবু সাইদ হত্যার মূল আসামিদের এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল সেই ঘটনাকে আড়াল করার জন্য সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলামকে এই হত্যা মামলায় প্রধান আসামি বানানো হয়েছে। অথচ জুলাই আন্দোলনের সময় তিনি আন্দোলনের সমর্থনে কাজ করেছেন। আবু সাইদ হত্যার সঙ্গে তার বিন্দু মাত্র সংম্পৃক্ততা নেই অথচ তাকেই মূল হোতাসহ বিভিন্ন ট্যাগ দেয়া হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক আদালতের প্রসিকিউটররা যে গল্প বলেছেন সেটা বলার আগে তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে প্রত্যক্ষদর্শী আর শহীদ আবু সাইদের সহযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাদের সাক্ষ্য নিয়েছেন গণশুনানি করেছেন তা হলে তিনি কিসের ভিত্তিতে আবু সাইদ হত্যার কথা বললেন এটা আমরা বুঝতে পারছি না। শিক্ষার্থীরা আবু সাইদ হত্যার ঘটনা নতুন করে তদন্ত গণশুনানি গ্রহণ করে সত্যিকার যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছে। সেই সঙ্গে সাবেক প্রক্টরকে মূল হোতা বানানোর চক্রান্ত আমরা মানি না বলে ঘোষণা দিয়ে তাদের দাবি মানা না হলে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানানো হয়।
এ ব্যাপারে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড, শওকত আলী বলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে আবু সাইদ হত্যার ব্যাপারে কী বলেছেন আমি তা জানি না। তবে চার্জশিট দেবার আগে ক্যাম্পাসে এসে প্রত্যক্ষদর্শীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
গণশুনানি করার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রথম শহীদ আবু সাইদ হত্যা মামলায় চার্জশিট দাখিলের আগে গণশুনানি করার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে বেরোবির শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যাবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গে আবু সাইদ হত্যার বিচারে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ভূমিকা গ্রহণ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মানবাধিকার সংস্থা নাগরিক সমাজের প্রতি আহবান জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংকালে এসব কথা বলা হয়। এ সময় শিক্ষকদের মধ্যে মাহমুদুল হক, বিজয় কুমার চাকি, হারুনর রশীদ, ফারজানা ইসলাম তৌসিসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, প্রেস বিফ্রিং কালে বক্তব্য দেন ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহারিয়ার সোহাগ, বেরোবি শিক্ষার্থী ও মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক রহমত আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নয়ন, শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আশিকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয় ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বেরোবির শিক্ষার্থীরা একটি যৌক্তিক আন্দোলনের অংশ করা কালে পুলিশের বর্বর গুলি বর্ষনের শিকার হয়। ওই ঘটনায় আমাদের প্রিয় সহযোদ্ধা আবু সাইদ শহীদ হন। শতাধিক শিক্ষার্থী গুরতর আহত হন। এই নির্মম পুলিশি নির্যাতনের চিত্র শুধু বাংলার জনগণ নয় সারাবিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে। এই বর্বর ঘটনার পর স্বৈরাচারি সরকারের পতন হলে শহীদ আবু সাইদের বড় ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে এবং আমরা আন্দোলনের সহযোদ্ধারা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা সাক্ষী হয়ে মামলা করি। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআই। পরে তদন্তের গতিশীলতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ট্রাইবুনাল তদন্তের দায়িত্ব পাবার পর বেরোবির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ করে। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই স্ব-প্রনোদিত হয়ে বিভিন্ন প্রমাণ সরবরাহ করে। কিন্তু গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি ট্রাইবুনাল কর্তৃক আয়োজিত প্রতিটি সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পিতভাবে পুলিশের
সংম্পৃক্তার বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে তারা এমন কিছু ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে উপস্থাপন করছে যারা ঘটনার পরিণতিতে আংশিক দায়ী। এর মাধ্যমে মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশ দাতাদের দায় মুক্তির সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
অভিযোগ করা হয় আজ ২৬ জন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে একটি তদন্ত প্রতিবেদনে ৩০ জনের সংম্পৃক্ততার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। তবে পূর্বেও ধারাবাহিকতায় এবারেও তারা পুলিশ সদস্যদের নাম উল্লেখ করেনি। বরং একটি প্রশাসনিক অবহেলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে অভিযুক্ত করেছে, যা শিক্ষার্থীদের কাছে প্রক্রিয়াগত বিচ্যুতি ও প্রহসনের সামিল।
এছাড়াও ২৩ জুন নির্ধারিত গণশুনানির পূর্ব ঘোষণা থাকলেও ট্রাইবুনালের একটি বিশেষ টিম রংপুরে অজ্ঞাত কারণে সেই গণশুনানি বাতিল করে। এবং তড়িঘড়ি করে প্রতিবেদন জমা দেবার প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যায়। এই আচরণ তদন্তের সচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরতর প্রশ্নের জন্ম
দিয়েছে।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ট্রাইবুনালের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেছে যেন প্রকৃত দায়ীদের বিশেষত যাদের নির্দেশে গুলিবর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে সংঘটিত হয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে প্রকৃত বিচারের প্রতিবেদন নিশ্চিত করা হয়। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মানবাধিকার সংস্থা ও নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানানো হয় তারা যেন এই বিচার প্রক্রিয়ায় যথাযথ সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গণশুনানি করার জন্য আলটিমেটাম প্রদান করেন অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেবার ঘোষণা দেয়া হয়।