জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ফেসবুকে ছড়ানো অপপ্রচারকে ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি নিশ্চিত করেছেন, এই টিকা বন্ধ্যাত্বের কোনো কারণ নয় এবং এমন গুজব জনমনে অযথা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেলে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাহাঙ্গীর আলম এ মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার থেকে চট্টগ্রাম জেলায় শুরু হতে যাওয়া মাসব্যাপী জাতীয় এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি-২০২৪ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ফেসবুকে অপপ্রচার এবং সিভিল সার্জনের মন্তব্য
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি ছড়ানো হয়েছে যে এইচপিভি টিকা দিলে নারীরা বন্ধ্যাত্ব হতে পারেন। এই প্রচারণা প্রসঙ্গে সিভিল সার্জনের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা সম্পূর্ণ অপপ্রচার। এইচপিভি টিকার এ ধরনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। প্রতিবারই কোনো টিকা প্রোগ্রাম নেওয়া হলে কিছু পক্ষ ভুল তথ্য ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। তবে, এ ধরনের গুজবের কোনো ভিত্তি নেই। এইচপিভি টিকা কোনো নতুন বিষয় নয়, এটি আগেও দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “আজকেও ফেসবুকে কিছু নেতিবাচক পোস্ট দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বাঁশখালীর একটি মাদ্রাসায় টিকা নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। তবে সেখানকার ওসি ও ইউএনও নিশ্চিত করেছেন যে, সবাই টিকা দেবেন। এই ধরনের ভুল তথ্য নিয়ে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই।”
জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির পরিকল্পনা
সিভিল সার্জন আরও জানান, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা আগে থেকেই প্রাইভেটলি দেওয়া হচ্ছিল। এখন এটি সরকারিভাবে ২০২৩ সালে ঢাকায় শুরু হয় এবং এবার চট্টগ্রামসহ দেশের সাতটি বিভাগে এটি পরিচালিত হবে।
বাংলাদেশে ক্যান্সারে মৃত্যুর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় জরায়ুমুখ ক্যান্সারে। সিভিল সার্জন জানান, “একটি টিকা দিলেই এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। বেলজিয়াম থেকে আনা এই টিকা আগামী বছর থেকে নিয়মিত টিকা কার্যক্রমের অংশ হবে।”
২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি উদ্বোধন করা হবে চট্টগ্রাম নগরীর ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। চার সপ্তাহের এই কর্মসূচির আওতায় প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই টিকা প্রদান করা হবে।
লক্ষ্যমাত্রা এবং টিকা দেওয়ার পদ্ধতি
চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলার ৪ হাজার ৩৮৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৩০ জন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কমিউনিটির ১০ হাজার ২১৯ জন কিশোরীকে এইচপিভি টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় ১ লাখ ৩৬ হাজার কিশোরী এই টিকা পাবে।
জাতীয় পর্যায়ে এই কর্মসূচির আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী ৯০ শতাংশ মেয়েকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
টিকা গ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীরা জন্ম নিবন্ধনের তথ্য দিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীরাও স্থানীয় ইপিআই কেন্দ্রগুলোতে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নিতে পারবে।
জরায়ুমুখ ক্যান্সারের পরিসংখ্যান
এইচপিভি ইনফরমেশন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি ১ লাখ নারীর মধ্যে ১১ জন জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার ৯৭১ জন নারী এই রোগে মৃত্যুবরণ করেন। এইচপিভি টিকা নারীদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সিভিল সার্জন।
বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ফেসবুকে ছড়ানো অপপ্রচারকে ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি নিশ্চিত করেছেন, এই টিকা বন্ধ্যাত্বের কোনো কারণ নয় এবং এমন গুজব জনমনে অযথা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেলে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাহাঙ্গীর আলম এ মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার থেকে চট্টগ্রাম জেলায় শুরু হতে যাওয়া মাসব্যাপী জাতীয় এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি-২০২৪ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ফেসবুকে অপপ্রচার এবং সিভিল সার্জনের মন্তব্য
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি ছড়ানো হয়েছে যে এইচপিভি টিকা দিলে নারীরা বন্ধ্যাত্ব হতে পারেন। এই প্রচারণা প্রসঙ্গে সিভিল সার্জনের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা সম্পূর্ণ অপপ্রচার। এইচপিভি টিকার এ ধরনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। প্রতিবারই কোনো টিকা প্রোগ্রাম নেওয়া হলে কিছু পক্ষ ভুল তথ্য ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। তবে, এ ধরনের গুজবের কোনো ভিত্তি নেই। এইচপিভি টিকা কোনো নতুন বিষয় নয়, এটি আগেও দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “আজকেও ফেসবুকে কিছু নেতিবাচক পোস্ট দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বাঁশখালীর একটি মাদ্রাসায় টিকা নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। তবে সেখানকার ওসি ও ইউএনও নিশ্চিত করেছেন যে, সবাই টিকা দেবেন। এই ধরনের ভুল তথ্য নিয়ে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই।”
জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির পরিকল্পনা
সিভিল সার্জন আরও জানান, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা আগে থেকেই প্রাইভেটলি দেওয়া হচ্ছিল। এখন এটি সরকারিভাবে ২০২৩ সালে ঢাকায় শুরু হয় এবং এবার চট্টগ্রামসহ দেশের সাতটি বিভাগে এটি পরিচালিত হবে।
বাংলাদেশে ক্যান্সারে মৃত্যুর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় জরায়ুমুখ ক্যান্সারে। সিভিল সার্জন জানান, “একটি টিকা দিলেই এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। বেলজিয়াম থেকে আনা এই টিকা আগামী বছর থেকে নিয়মিত টিকা কার্যক্রমের অংশ হবে।”
২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি উদ্বোধন করা হবে চট্টগ্রাম নগরীর ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। চার সপ্তাহের এই কর্মসূচির আওতায় প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই টিকা প্রদান করা হবে।
লক্ষ্যমাত্রা এবং টিকা দেওয়ার পদ্ধতি
চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলার ৪ হাজার ৩৮৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৩০ জন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কমিউনিটির ১০ হাজার ২১৯ জন কিশোরীকে এইচপিভি টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় ১ লাখ ৩৬ হাজার কিশোরী এই টিকা পাবে।
জাতীয় পর্যায়ে এই কর্মসূচির আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী ৯০ শতাংশ মেয়েকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
টিকা গ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীরা জন্ম নিবন্ধনের তথ্য দিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীরাও স্থানীয় ইপিআই কেন্দ্রগুলোতে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নিতে পারবে।
জরায়ুমুখ ক্যান্সারের পরিসংখ্যান
এইচপিভি ইনফরমেশন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি ১ লাখ নারীর মধ্যে ১১ জন জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার ৯৭১ জন নারী এই রোগে মৃত্যুবরণ করেন। এইচপিভি টিকা নারীদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সিভিল সার্জন।