alt

জাতীয়

জামায়াতের নিবন্ধনের অবৈধতার রায় বাতিল করলো আপিল বিভাগ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ০১ জুন ২০২৫

রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল করেছে আপিল বিভাগ। এর ফলে জামায়াতের নিবন্ধনসংক্রান্ত আইনি জটিলতা আপাতত কাটল। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ রোববার,(১ জুন ২০২৫) এ রায় দেয়।

নিবন্ধন এবং অন্য কোনো ইস্যু থাকলে ইসিকে নিষ্পত্তির নির্দেশ

ইসি অতিদ্রুত নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বুঝিয়ে দেবে: প্রত্যাশা আইনজীবী শিশির মনিরের

রায়ের কপি পেলে কমিশন বৈঠকে নিবন্ধন ও প্রতীকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: ইসি সচিব

রায়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, তা ন্যায়সঙ্গত হয়নি। গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় হাইকোর্ট বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে দেয়া ওই রায় ও আদেশ বাতিল করা হলো।

রায়ে আপিল বিভাগ আরও বলেছে, দলটির ক্ষেত্রে পেন্ডিং (অনিষ্পন্ন) রেজিস্ট্রেশন ইস্যু এবং অন্য কোনো ইস্যু যদি থেকে থাকে, তা সাংবিধানিক ম্যান্ডেট (বিচারগত ও আইনগত) পুরোপুরি প্রয়োগ করে নিষ্পত্তি করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নির্দেশ দেয়া হলো।

রায়ের পর জামায়াতের আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘কমিশন অতিদ্রুত নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বুঝিয়ে দেবে বলে প্রত্যাশা করি।’

ইসির সিনিয়র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, রায়ের কপি পাওয়ার পর সভা করবে কমিশন। ওই সভায় জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক ইস্যুতে সিদ্ধান্ত হবে।

২০০৯ সালে ২৫ জন ব্যক্তি রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে রায় (রুল অ্যাবসলিউট বা যথাযথ) দেয় হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর ইসি প্রজ্ঞাপন জারি করে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী নিয়মিত লিভ টু আপিল করে। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আপিল বিভাগ জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেয়, কারণ সেদিন আপিলকারীর পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। পরে ‘ডিসমিসড ফর ডিফল্ট’ আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য জামায়াত পক্ষ থেকে আবেদন জানালে ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর তা গ্রহণ করে আপিল পুনরুজ্জীবিত করে আদালত। এরপর গত ৩ ডিসেম্বর শুরু হয় জামায়াতের আপিল শুনানি। কয়েক ধাপে শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য রোববার দিন নির্ধারিত ছিল।অবশেষে রোববার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের ২০১৩ সালের রায় বাতিল করে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণার আদেশ প্রত্যাহার করে।

রায়ের পর এক ফেইসবুক পোস্টে শুকরিয়া জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। ইসি যেন দ্রুত নিবন্ধন ফিরিয়ে দেয়, সেজন্য আল্লাহর ‘সাহায্য’ চেয়েছেন তিনি।

*দাঁড়িপাল্লা প্রতীক*

২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের দুই বিভাগের বিচারপতিদের উপস্থিতিতে ফুল কোর্ট সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে একমাত্র সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহৃত হবে। অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে বা কোনো নির্বাচনে প্রার্থীর প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ বরাদ্দ করা যাবে না। আর যদি বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে, তাহলে তা বাতিল করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়ে ইসি সচিবসহসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে চিঠি পাঠানোর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ইসিকে চিঠি দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। তাতে বলা হয়, কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা বরাদ্দ না দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। এরপর ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা আরও সংশোধন করা হয়, যাতে ৬৪টি প্রতীকের তালিকা রয়েছে। এতে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক বাদ দেয়া হয়।

ফুল কোর্ট সভার ওই সিদ্ধান্ত বাতিল বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী গত ১২ মে আপিল বিভাগে আবেদন দাখিল করে। দলটির করা আপিল ও লিভ টু আপিলের সঙ্গে আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। গত ১২ মে করা আবেদনটি প্রত্যাহার চেয়ে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রতিকারে নির্বাচন কমিশনের প্রতি পর্যবেক্ষণ চেয়ে গত ১৪ মে একটি আবেদন দেয় জামায়াতে ইসলামী।

রায়ে আপিল বিভাগ বলেছেন, প্রত্যাহার আবেদন মঞ্জুর করা হলো, কোনো পর্যবেক্ষণ ছাড়াই।

*জামায়াতের আইনজীবীদের বক্তব্য*

রায়ের পর আপিলকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন এবং অন্য যে ইস্যু নির্বাচন কমিশনের সামনে আসবে, সেগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করে সে বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখানে ‘অন্য ইস্যু বলতে প্রতীক’ বোঝানো হয়েছে।

শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই রায়ের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী তার নিবন্ধন ফিরে পেল এবং প্রতীকের বিষয়টিও নির্বাচন কমিশনের সামনে পাঠানো হলো অন্য ইস্যু হিসেবে। আমরা সংক্ষিপ্ত আদেশ চেয়েছি। সংক্ষিপ্ত আদেশ নির্বাচন কমিশনের কাছে নিয়ে যাব। কমিশন অতিদ্রুত নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বুঝিয়ে দেবে বলে প্রত্যাশা করি।’

*ইসির বক্তব্য*

জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক নিয়ে রোববার ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীকের ব্যাপারে মাননীয় আদালতের কোনো পর্যবেক্ষণ আমরা পাইনি। পেলে এ বিষয়ে আইনগতভাবে যেটা প্রযোজ্য, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

রায়ের কপি পাওয়ার পর কমিশন বৈঠকে বসবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে তারা (জামায়ত) যা প্রাপ্য, তা পাবে। কোনো কাগজ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বক্তব্য আমি দিতে পারব না।’

*নিবন্ধন বাতিলের আবেদনে যা ছিল*

এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনে ইসি। সে সময় ৩৮টি দলের সঙ্গে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী জামায়াতে ইসলামীও দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে নিবন্ধিত হয়। আইন অনুযায়ী শুধু নিবন্ধিত দলগুলোই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জামায়াতকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালের জানুয়ারি হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন তরীকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন। তাতে বলা হয়, চার কারণে জামায়াত রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে পারে না।

প্রথমত, জামায়াত নীতিগতভাবে জনগণকে সব ক্ষমতার উৎস বলে মনে করে না। সেইসঙ্গে আইন প্রণয়নে জনপ্রতিনিধিদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাকেও স্বীকার করে না। দ্বিতীয়ত, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসারে কোনো সাম্প্রদায়িক দল নিবন্ধন পেতে পারে না। অথচ কাজে-কর্মে ও বিশ্বাসে জামায়াত একটি সাম্প্রদায়িক দল। তৃতীয়ত, নিবন্ধন পাওয়া রাজনৈতিক দল ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গের কোনো বৈষম্য করতে পারবে না। কিন্তু জামায়াতের শীর্ষপদে কখনও কোনো নারী বা অমুসলিম যেতে পারবে না। চতুর্থত, কোনো দলের বিদেশে কোনো শাখা থাকতে পারবে না। অথচ জামায়াত বিদেশের একটি সংগঠনের শাখা। তারা স্বীকারই করে তাদের জন্ম ভারতে, বিশ্বজুড়ে তাদের শাখা রয়েছে।

ওই রিটের পর ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করে। রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১)(বি)(২) ও ৯০(সি) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে।

নিবন্ধন বাঁচাতে দলীয় গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংশোধন করে জামায়াত। গঠনতন্ত্র থেকে ‘আল্লাহ প্রদত্ত ও রসুল প্রদর্শিত’ ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বাদ দিয়ে ‘গণতান্ত্রিক’ রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বলা হয়।

* এক নজরে জামায়াতে ইসলামী*

উপমহাদেশের ধর্মীয় রাজনীতিক আবুল আলা মওদুদীর নেতৃত্বে ১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট গোড়াপত্তন জামায়াতে ইসলামীর, তখন এর নাম ছিল জামায়াতে ইসলামী হিন্দ।

১৯৭১ সালের পর স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় জামায়াতও এর আওতায় পড়ে। আর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে সহায়তা করা ও প্রত্যক্ষ অংশ নেয়ার অভিযোগ আছে জামায়াতের বিরুদ্ধে। শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর জিয়াউর রহমানের আমলে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ পায় জামায়াত।

সামরিক শাসক এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে জামায়াত ১৮টি আসন পায় এবং সরকার গঠনে বিএনপিকে সমর্থন দেয়। এরপর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আসন কমে তিনটি হলেও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোট করে জামায়াত পায় ১৭ আসন। চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রিসভাতেও জায়গা পান জামায়াতের শীর্ষ দুই নেতা। সর্বশেষ ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছিল জামায়াত। সেবার তারা দুটি আসন পায়।

সেই সময় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়। তাতে জামায়াতের অনেক শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধেই যুদ্ধাপরাধ অর্থাৎ হত্যা, ধর্ষণ এবং অন্যান্য অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দলটির পাঁচ শীর্ষ নেতার মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়।

জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা তখনকার আমির গোলাম আযমকে টানা ৯০ বছর অথবা আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয় ট্রাইব্যুনালে। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা, উসকানি, হত্যাকাণ্ডে সাঁয় ও সহযোগিতা দেয়ার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। আপিল নিষ্পত্তির আগে হাসপাতালে গোলাম আযমের মৃত্যু হয়।

ছবি

জুলাইয়ের মধ্যেই ‘ন্যূনতম ঐক্যমতের’ ভিত্তিতে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করতে চান আলী রীয়াজ

ছবি

ঈদুল আজহার পাঁচ জামাত বায়তুল মোকাররমে, প্রথমটি সকাল ৭টায়

ছবি

এক দিনে ২৬৪ বিচারককে রদবদল

ছবি

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের প্রেস ব্রিফিং-সংগৃহীত

ছবি

সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন বহাল

জুলাই আন্দোলন: ১৯ ডাক্তারকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ

শেষ হলো হজ ফ্লাইট, সৌদি পৌঁছেছেন ৮৭১৫৭ হজযাত্রী

দূরত্ব যেটুকু আছে, ঘুচে যাবে: আশা প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

‘এ সুযোগ হারাব না’, রাজনৈতিক ঐকমত্যে জোর প্রধান উপদেষ্টার

আমিনুলের মনোনয়ন চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ফারুকের রিট

ছবি

চাকরি সংশোধনী অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আজও সচিবালয়ে বিক্ষোভ

ছবি

মেননের ৫ দিনের রিমান্ড, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক ওসি হাসান

ছবি

আজ ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করবেন অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ছয় আসামির যাবজ্জীবনও বহাল

ছবি

অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল, হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

সেনা ও পুলিশ পাহারায় নিজ কার্যালয়ে ফিরলেন এনবিআর চেয়ারম্যান

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের ‘অপপ্রয়োগের’ আশঙ্কা দেখছেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

জড়িতদের শনাক্তে বৈষম্যবিরোধী ও বিএনপি নেতাদের সহায়তা চাইলো সেনাবাহিনী

চট্টগ্রামে নারীকে লাথি মারা সাবেক শিবির কর্মী অবশেষে গ্রেপ্তার

অনিশ্চয়তার দোলাচলে অর্থনীতি, কোন পথে আগামীর বাজেট?

ছবি

কুমিল্লায় ঘূর্ণিঝড়ে বৈদ্যুতিক লাইন বিপর্যস্ত, ৬০ ঘণ্টায়ও বিদ্যুৎ চালু করা যায়নি

সারাদেশে বিশেষ অভিযানে আরও গ্রেপ্তার ১১৯০

সিলেটে টিলা ধসে একই পরিবারের ৪ জন নিহত

নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে নগদে অভিযান

ছবি

‘তথ্য আপা’দের যমুনামুখী মিছিল, প্রিজন ভ্যানে ‘সরিয়ে নিলো’ পুলিশ

২১ আগস্ট হামলা: রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানি ১ জুলাই

‘উৎপাদন কেন্দ্র’ গড়তে চীনা বিনিয়োগ চাইলেন ইউনূস

দুই দিন বিরতি দিয়ে ফের নগর ভবনে ইশরাক সমর্থকদের বিক্ষোভ

ছবি

ঈদ এলেই ভাড়া বাড়ে, এবারও বেড়েছে, কোথাও ‘দ্বিগুণ’

ছবি

সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের অধ্যাদেশে ত্রুটির কথা স্বীকার করলেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান

ছবি

বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে রূপান্তরের লক্ষ্যে চীনা বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে ককটেল সদৃশ বস্তুর বিস্ফোরণ

ছবি

জামায়াতের নিবন্ধনের অবৈধতা বাতিল করলো আপিল বিভাগ

নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিলের রায় রোববার

বিশেষ অভিযানে সারাদেশে গ্রেপ্তার ৯০০

স্রোতে ডুবে খাগড়াছড়ি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩ জনের মৃত্যু

tab

জাতীয়

জামায়াতের নিবন্ধনের অবৈধতার রায় বাতিল করলো আপিল বিভাগ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ০১ জুন ২০২৫

রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল করেছে আপিল বিভাগ। এর ফলে জামায়াতের নিবন্ধনসংক্রান্ত আইনি জটিলতা আপাতত কাটল। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ রোববার,(১ জুন ২০২৫) এ রায় দেয়।

নিবন্ধন এবং অন্য কোনো ইস্যু থাকলে ইসিকে নিষ্পত্তির নির্দেশ

ইসি অতিদ্রুত নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বুঝিয়ে দেবে: প্রত্যাশা আইনজীবী শিশির মনিরের

রায়ের কপি পেলে কমিশন বৈঠকে নিবন্ধন ও প্রতীকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: ইসি সচিব

রায়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, তা ন্যায়সঙ্গত হয়নি। গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় হাইকোর্ট বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে দেয়া ওই রায় ও আদেশ বাতিল করা হলো।

রায়ে আপিল বিভাগ আরও বলেছে, দলটির ক্ষেত্রে পেন্ডিং (অনিষ্পন্ন) রেজিস্ট্রেশন ইস্যু এবং অন্য কোনো ইস্যু যদি থেকে থাকে, তা সাংবিধানিক ম্যান্ডেট (বিচারগত ও আইনগত) পুরোপুরি প্রয়োগ করে নিষ্পত্তি করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নির্দেশ দেয়া হলো।

রায়ের পর জামায়াতের আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘কমিশন অতিদ্রুত নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বুঝিয়ে দেবে বলে প্রত্যাশা করি।’

ইসির সিনিয়র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, রায়ের কপি পাওয়ার পর সভা করবে কমিশন। ওই সভায় জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক ইস্যুতে সিদ্ধান্ত হবে।

২০০৯ সালে ২৫ জন ব্যক্তি রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে রায় (রুল অ্যাবসলিউট বা যথাযথ) দেয় হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর ইসি প্রজ্ঞাপন জারি করে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী নিয়মিত লিভ টু আপিল করে। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আপিল বিভাগ জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেয়, কারণ সেদিন আপিলকারীর পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। পরে ‘ডিসমিসড ফর ডিফল্ট’ আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য জামায়াত পক্ষ থেকে আবেদন জানালে ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর তা গ্রহণ করে আপিল পুনরুজ্জীবিত করে আদালত। এরপর গত ৩ ডিসেম্বর শুরু হয় জামায়াতের আপিল শুনানি। কয়েক ধাপে শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য রোববার দিন নির্ধারিত ছিল।অবশেষে রোববার আপিল বিভাগ হাইকোর্টের ২০১৩ সালের রায় বাতিল করে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণার আদেশ প্রত্যাহার করে।

রায়ের পর এক ফেইসবুক পোস্টে শুকরিয়া জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। ইসি যেন দ্রুত নিবন্ধন ফিরিয়ে দেয়, সেজন্য আল্লাহর ‘সাহায্য’ চেয়েছেন তিনি।

*দাঁড়িপাল্লা প্রতীক*

২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের দুই বিভাগের বিচারপতিদের উপস্থিতিতে ফুল কোর্ট সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে একমাত্র সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহৃত হবে। অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে বা কোনো নির্বাচনে প্রার্থীর প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ বরাদ্দ করা যাবে না। আর যদি বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে, তাহলে তা বাতিল করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়ে ইসি সচিবসহসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে চিঠি পাঠানোর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ইসিকে চিঠি দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। তাতে বলা হয়, কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা বরাদ্দ না দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। এরপর ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা আরও সংশোধন করা হয়, যাতে ৬৪টি প্রতীকের তালিকা রয়েছে। এতে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক বাদ দেয়া হয়।

ফুল কোর্ট সভার ওই সিদ্ধান্ত বাতিল বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী গত ১২ মে আপিল বিভাগে আবেদন দাখিল করে। দলটির করা আপিল ও লিভ টু আপিলের সঙ্গে আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। গত ১২ মে করা আবেদনটি প্রত্যাহার চেয়ে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রতিকারে নির্বাচন কমিশনের প্রতি পর্যবেক্ষণ চেয়ে গত ১৪ মে একটি আবেদন দেয় জামায়াতে ইসলামী।

রায়ে আপিল বিভাগ বলেছেন, প্রত্যাহার আবেদন মঞ্জুর করা হলো, কোনো পর্যবেক্ষণ ছাড়াই।

*জামায়াতের আইনজীবীদের বক্তব্য*

রায়ের পর আপিলকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন এবং অন্য যে ইস্যু নির্বাচন কমিশনের সামনে আসবে, সেগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করে সে বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখানে ‘অন্য ইস্যু বলতে প্রতীক’ বোঝানো হয়েছে।

শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই রায়ের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী তার নিবন্ধন ফিরে পেল এবং প্রতীকের বিষয়টিও নির্বাচন কমিশনের সামনে পাঠানো হলো অন্য ইস্যু হিসেবে। আমরা সংক্ষিপ্ত আদেশ চেয়েছি। সংক্ষিপ্ত আদেশ নির্বাচন কমিশনের কাছে নিয়ে যাব। কমিশন অতিদ্রুত নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বুঝিয়ে দেবে বলে প্রত্যাশা করি।’

*ইসির বক্তব্য*

জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক নিয়ে রোববার ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীকের ব্যাপারে মাননীয় আদালতের কোনো পর্যবেক্ষণ আমরা পাইনি। পেলে এ বিষয়ে আইনগতভাবে যেটা প্রযোজ্য, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

রায়ের কপি পাওয়ার পর কমিশন বৈঠকে বসবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে তারা (জামায়ত) যা প্রাপ্য, তা পাবে। কোনো কাগজ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বক্তব্য আমি দিতে পারব না।’

*নিবন্ধন বাতিলের আবেদনে যা ছিল*

এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনে ইসি। সে সময় ৩৮টি দলের সঙ্গে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী জামায়াতে ইসলামীও দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে নিবন্ধিত হয়। আইন অনুযায়ী শুধু নিবন্ধিত দলগুলোই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জামায়াতকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালের জানুয়ারি হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন তরীকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন। তাতে বলা হয়, চার কারণে জামায়াত রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে পারে না।

প্রথমত, জামায়াত নীতিগতভাবে জনগণকে সব ক্ষমতার উৎস বলে মনে করে না। সেইসঙ্গে আইন প্রণয়নে জনপ্রতিনিধিদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাকেও স্বীকার করে না। দ্বিতীয়ত, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসারে কোনো সাম্প্রদায়িক দল নিবন্ধন পেতে পারে না। অথচ কাজে-কর্মে ও বিশ্বাসে জামায়াত একটি সাম্প্রদায়িক দল। তৃতীয়ত, নিবন্ধন পাওয়া রাজনৈতিক দল ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গের কোনো বৈষম্য করতে পারবে না। কিন্তু জামায়াতের শীর্ষপদে কখনও কোনো নারী বা অমুসলিম যেতে পারবে না। চতুর্থত, কোনো দলের বিদেশে কোনো শাখা থাকতে পারবে না। অথচ জামায়াত বিদেশের একটি সংগঠনের শাখা। তারা স্বীকারই করে তাদের জন্ম ভারতে, বিশ্বজুড়ে তাদের শাখা রয়েছে।

ওই রিটের পর ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করে। রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১)(বি)(২) ও ৯০(সি) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে।

নিবন্ধন বাঁচাতে দলীয় গঠনতন্ত্রে ব্যাপক সংশোধন করে জামায়াত। গঠনতন্ত্র থেকে ‘আল্লাহ প্রদত্ত ও রসুল প্রদর্শিত’ ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বাদ দিয়ে ‘গণতান্ত্রিক’ রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বলা হয়।

* এক নজরে জামায়াতে ইসলামী*

উপমহাদেশের ধর্মীয় রাজনীতিক আবুল আলা মওদুদীর নেতৃত্বে ১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট গোড়াপত্তন জামায়াতে ইসলামীর, তখন এর নাম ছিল জামায়াতে ইসলামী হিন্দ।

১৯৭১ সালের পর স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় জামায়াতও এর আওতায় পড়ে। আর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে সহায়তা করা ও প্রত্যক্ষ অংশ নেয়ার অভিযোগ আছে জামায়াতের বিরুদ্ধে। শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর জিয়াউর রহমানের আমলে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ পায় জামায়াত।

সামরিক শাসক এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে জামায়াত ১৮টি আসন পায় এবং সরকার গঠনে বিএনপিকে সমর্থন দেয়। এরপর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আসন কমে তিনটি হলেও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোট করে জামায়াত পায় ১৭ আসন। চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রিসভাতেও জায়গা পান জামায়াতের শীর্ষ দুই নেতা। সর্বশেষ ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছিল জামায়াত। সেবার তারা দুটি আসন পায়।

সেই সময় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়। তাতে জামায়াতের অনেক শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধেই যুদ্ধাপরাধ অর্থাৎ হত্যা, ধর্ষণ এবং অন্যান্য অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দলটির পাঁচ শীর্ষ নেতার মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়।

জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা তখনকার আমির গোলাম আযমকে টানা ৯০ বছর অথবা আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয় ট্রাইব্যুনালে। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা, উসকানি, হত্যাকাণ্ডে সাঁয় ও সহযোগিতা দেয়ার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। আপিল নিষ্পত্তির আগে হাসপাতালে গোলাম আযমের মৃত্যু হয়।

back to top