ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রোববার দিবাগত রাত দেড়টায়ও উত্তেজনা বিরাজ করছিল। রাত ১১টার পর থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি নীলক্ষেত মোড় থেকে নিউমার্কেটের সামনের সড়কে অবস্থান নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যেতে চাইলেও কাঁদানে গ্যাসের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে রাত একটার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
এদিকে সংঘর্ষের একপর্যায়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সমর্থনে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে আসেন এবং কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।
রাত দেড়টার সময়ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে অবস্থান নেন। অন্যদিকে ইডেন কলেজের ছাত্রীরাসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেটের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। কিছু শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মাঝখানে অবস্থান নেয় এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত সাত কলেজের কয়েক শ শিক্ষার্থী সন্ধ্যা থেকে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের দিকে মিছিল নিয়ে আসেন এবং নীলক্ষেত মোড়ে মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে অবস্থান নেন।
একপর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ শিক্ষার্থী বেরিয়ে এসে তাঁদের ধাওয়া দেন, ফলে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা কিছুটা পিছিয়ে যান। তবে কিছুক্ষণ পর তাঁরা আবার একজোট হয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে রাত ১২টার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং চার প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়।
সাত কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তাঁরা যখন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যান, তখন তিনি তাঁদের অপমান করেন। এর প্রতিবাদেই তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন এবং দাবি করেছেন, সহ-উপাচার্যকে তাঁদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
অন্যদিকে, অধ্যাপক মামুন আহমেদ জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করা হয়নি। তিনি বলেন, "তারা এসেছিল আমার সঙ্গে কথা বলতে। আমি বলি, তোমরা সবাই না এসে দুজন আসো। কিন্তু অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ধাক্কাধাক্কি করে ভেতরে ঢুকে যায়। ঘটনা এতটুকুই।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি নিয়ে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সাত কলেজ বিষয়ক কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পরে গভীর রাতে এক ভিডিও বার্তায় সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন। তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: ২০২৪-২৫ সেশন থেকেই সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিল করা। শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি না করা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা। ভর্তি পরীক্ষায় ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কাটার নিয়ম চালু করা। সাত কলেজের ভর্তি ফির স্বচ্ছতা নিশ্চিতে মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত নতুন অ্যাকাউন্টে ভর্তি ফি জমা রাখা।
সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রোববার দিবাগত রাত দেড়টায়ও উত্তেজনা বিরাজ করছিল। রাত ১১টার পর থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি নীলক্ষেত মোড় থেকে নিউমার্কেটের সামনের সড়কে অবস্থান নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যেতে চাইলেও কাঁদানে গ্যাসের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে রাত একটার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
এদিকে সংঘর্ষের একপর্যায়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সমর্থনে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে আসেন এবং কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।
রাত দেড়টার সময়ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে অবস্থান নেন। অন্যদিকে ইডেন কলেজের ছাত্রীরাসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেটের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। কিছু শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মাঝখানে অবস্থান নেয় এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত সাত কলেজের কয়েক শ শিক্ষার্থী সন্ধ্যা থেকে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের দিকে মিছিল নিয়ে আসেন এবং নীলক্ষেত মোড়ে মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে অবস্থান নেন।
একপর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ শিক্ষার্থী বেরিয়ে এসে তাঁদের ধাওয়া দেন, ফলে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা কিছুটা পিছিয়ে যান। তবে কিছুক্ষণ পর তাঁরা আবার একজোট হয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে রাত ১২টার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং চার প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়।
সাত কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তাঁরা যখন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যান, তখন তিনি তাঁদের অপমান করেন। এর প্রতিবাদেই তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন এবং দাবি করেছেন, সহ-উপাচার্যকে তাঁদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
অন্যদিকে, অধ্যাপক মামুন আহমেদ জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করা হয়নি। তিনি বলেন, "তারা এসেছিল আমার সঙ্গে কথা বলতে। আমি বলি, তোমরা সবাই না এসে দুজন আসো। কিন্তু অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ধাক্কাধাক্কি করে ভেতরে ঢুকে যায়। ঘটনা এতটুকুই।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি নিয়ে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সাত কলেজ বিষয়ক কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পরে গভীর রাতে এক ভিডিও বার্তায় সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন। তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: ২০২৪-২৫ সেশন থেকেই সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিল করা। শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি না করা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা। ভর্তি পরীক্ষায় ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কাটার নিয়ম চালু করা। সাত কলেজের ভর্তি ফির স্বচ্ছতা নিশ্চিতে মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত নতুন অ্যাকাউন্টে ভর্তি ফি জমা রাখা।