দফায় দফায় সংলাপ শেষে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে পাওয়া মতামতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রবর্তনের একটি সমন্বিত খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রস্তাবটির ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর চূড়ান্ত সম্মতি পাওয়ার জন্য এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। দুই-তিন দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
রোববার কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পদ্ধতি নিয়ে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে একমত হয়েছে। অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা নিজ নিজ দলীয় পর্যায়ে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিশনকে তাদের চূড়ান্ত মত জানাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, মঙ্গলবারের মধ্যে কমিশনের পক্ষ থেকে একমত অবস্থান স্পষ্টভাবে জানানো সম্ভব হবে।”
কমিশনের খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ সংশোধন করে সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর কিংবা সংসদ ভেঙে যাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি সংবিধানের ৫৮(খ) অনুচ্ছেদ সংশোধনের মাধ্যমে বলা হয়েছে, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৫ দিনের মধ্যে অথবা সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ চূড়ান্ত করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এবং সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি। কমিটির সভাপতিত্ব করবেন স্পিকার। সংসদ ভাঙার ৩০ দিন আগে এ কমিটি গঠন করার বিধান রাখা হয়েছে।
কমিটি গঠনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, সংসদ সদস্য এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা পদের জন্য একজন করে প্রার্থী নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। বাছাই কমিটি নিজস্ব অনুসন্ধানসহ জমা দেওয়া নামগুলো নিয়ে আলোচনা করে একজন উপযুক্ত প্রার্থী চূড়ান্ত করবে এবং রাষ্ট্রপতি তাকে নিয়োগ দেবেন।
যদি পাঁচ দিনের মধ্যে কমিটি কাউকে মনোনীত করতে না পারে, তবে সরকারদলীয় জোট, প্রধান বিরোধী জোট এবং তৃতীয় বৃহত্তম দল বা জোট থেকে নির্ধারিত সংখ্যক প্রার্থীর নাম নিয়ে নতুন করে আলোচনার সুযোগ থাকবে। তাতেও সমঝোতা না হলে প্রার্থীদের নাম নিয়ে গোপন ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে ‘র্যাংক চয়েজ’ পদ্ধতিতে একজনকে মনোনীত করা হবে।
মনোনীত প্রার্থীকে রাষ্ট্রপতি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেবেন। তবে যদি তখন সংসদ বহাল থাকে, তাহলে তিনি শপথ নেবেন না। প্রধান উপদেষ্টার পদ শূন্য হলে ‘র্যাংক চয়েজ’ ভোটে দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হবে। তিনি রাজি না হলে তালিকার পরবর্তী ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
উপদেষ্টা পরিষদে সর্বোচ্চ ১৫ জন সদস্য থাকবেন। প্রধান উপদেষ্টা উপযুক্ত নাগরিকদের মধ্য থেকে নাম প্রস্তাব করবেন এবং রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন। প্রধান উপদেষ্টার বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৭৫ বছর নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা ও সুবিধা ভোগ করবেন এবং উপদেষ্টারা পাবেন মন্ত্রীর মর্যাদা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৯০ দিন। তবে দুর্যোগ বা অনিবার্য কারণে প্রয়োজনে আরও ৩০ দিন সময় বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। নতুন সংসদ গঠিত হলে এবং প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করলে নির্বাচনকালীন সরকার বিলুপ্ত হবে।
সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
দফায় দফায় সংলাপ শেষে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে পাওয়া মতামতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রবর্তনের একটি সমন্বিত খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রস্তাবটির ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর চূড়ান্ত সম্মতি পাওয়ার জন্য এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। দুই-তিন দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
রোববার কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পদ্ধতি নিয়ে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে একমত হয়েছে। অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা নিজ নিজ দলীয় পর্যায়ে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিশনকে তাদের চূড়ান্ত মত জানাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, মঙ্গলবারের মধ্যে কমিশনের পক্ষ থেকে একমত অবস্থান স্পষ্টভাবে জানানো সম্ভব হবে।”
কমিশনের খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ সংশোধন করে সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর কিংবা সংসদ ভেঙে যাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি সংবিধানের ৫৮(খ) অনুচ্ছেদ সংশোধনের মাধ্যমে বলা হয়েছে, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৫ দিনের মধ্যে অথবা সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ চূড়ান্ত করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এবং সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি। কমিটির সভাপতিত্ব করবেন স্পিকার। সংসদ ভাঙার ৩০ দিন আগে এ কমিটি গঠন করার বিধান রাখা হয়েছে।
কমিটি গঠনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, সংসদ সদস্য এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা পদের জন্য একজন করে প্রার্থী নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। বাছাই কমিটি নিজস্ব অনুসন্ধানসহ জমা দেওয়া নামগুলো নিয়ে আলোচনা করে একজন উপযুক্ত প্রার্থী চূড়ান্ত করবে এবং রাষ্ট্রপতি তাকে নিয়োগ দেবেন।
যদি পাঁচ দিনের মধ্যে কমিটি কাউকে মনোনীত করতে না পারে, তবে সরকারদলীয় জোট, প্রধান বিরোধী জোট এবং তৃতীয় বৃহত্তম দল বা জোট থেকে নির্ধারিত সংখ্যক প্রার্থীর নাম নিয়ে নতুন করে আলোচনার সুযোগ থাকবে। তাতেও সমঝোতা না হলে প্রার্থীদের নাম নিয়ে গোপন ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে ‘র্যাংক চয়েজ’ পদ্ধতিতে একজনকে মনোনীত করা হবে।
মনোনীত প্রার্থীকে রাষ্ট্রপতি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেবেন। তবে যদি তখন সংসদ বহাল থাকে, তাহলে তিনি শপথ নেবেন না। প্রধান উপদেষ্টার পদ শূন্য হলে ‘র্যাংক চয়েজ’ ভোটে দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হবে। তিনি রাজি না হলে তালিকার পরবর্তী ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
উপদেষ্টা পরিষদে সর্বোচ্চ ১৫ জন সদস্য থাকবেন। প্রধান উপদেষ্টা উপযুক্ত নাগরিকদের মধ্য থেকে নাম প্রস্তাব করবেন এবং রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন। প্রধান উপদেষ্টার বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৭৫ বছর নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা ও সুবিধা ভোগ করবেন এবং উপদেষ্টারা পাবেন মন্ত্রীর মর্যাদা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৯০ দিন। তবে দুর্যোগ বা অনিবার্য কারণে প্রয়োজনে আরও ৩০ দিন সময় বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। নতুন সংসদ গঠিত হলে এবং প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করলে নির্বাচনকালীন সরকার বিলুপ্ত হবে।