ডিজিটাল কপিরাইট লঙ্ঘন
অবৈধ লাইভ স্ট্রিমিং পরিচালনায় অভিযুক্ত, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার একজন, বাংলাদেশের একজন পলাতক
নূর নবী চৌধুরী (৫৬) এবং মোহাম্মদ রহমান (৩৬) নামের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, পরিচয় গোপন করে বেআইনি ডিজিটাল লাইভ স্ট্রিমিং পরিষেবা পরিচালনা করে তাঁরা গ্রাহকদের কাছ থেকে ৭০ লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন। এই দুই ভাইয়ের মধ্যে নূর নবী যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের চিকতোয়াগায় বসবাস করেন এবং মোহাম্মদ রহমান ঢাকায় অবস্থান করেন।
বর্তমানে নূর নবী যুক্তরাষ্ট্রে আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি, কারণ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং নিউইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট ফেডারেল আদালতে তাঁর বিচার চলছে। মার্কিন বিচার বিভাগের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে গত মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়।
অভিযোগ অনুযায়ী, নূর নবী চৌধুরী এবং মোহাম্মদ রহমান ‘২৪৭ টিভি স্ট্রিম’ নামে একটি ডিজিটাল সম্প্রচার পরিষেবা পরিচালনা করতেন, যা অবৈধভাবে বিভিন্ন কন্টেন্ট দেখার সুযোগ দিত। গ্রাহকেরা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে এই পরিষেবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে পারতেন, যার মাধ্যমে তারা সরাসরি খেলা, টেলিভিশনের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো এবং অন্যান্য কন্টেন্ট দেখতে পেতেন। অনেক কন্টেন্ট মেধাস্বত্বের আওতাধীন ছিল, যা প্রকৃত কপিরাইট মালিকদের অনুমতি ছাড়াই প্রচার করা হতো।
আদালতের নথিতে প্রকাশ, এই দুই ভাই বেশ কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে এই কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। এই পরিষেবার মাধ্যমে তারা ৭০ লাখ ডলারেরও বেশি সাবস্ক্রিপশন ফি সংগ্রহ করেছেন। অনুমান করা হচ্ছে যে, তাঁদের কর্মকাণ্ডের কারণে প্রকৃত কপিরাইট মালিকদের ১০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হল, তারা নিজেদের পরিচয় গোপন করে অন্যের পরিচয় ব্যবহার করতেন।
মার্কিন বিচার বিভাগের ফৌজদারি শাখার প্রধান ও প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল নিকোল এম আর্জেন্টিয়েরি এই অভিযোগ নিয়ে বলেন, “অভিযুক্ত দুই ভাই অনুমোদন ছাড়াই অন্যের কপিরাইট কন্টেন্ট নিজেদের প্ল্যাটফর্মে প্রচার করেছেন। এভাবে বৈধ ব্যক্তিদের অর্থনৈতিকভাবে বিপুল ক্ষতি করেছেন।”
এখন পর্যন্ত নূর নবী চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, মোহাম্মদ রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এই মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে, তাঁদের প্রত্যেককে ২ থেকে সর্বাধিক ২০ বছরের কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হবে, যা বিভিন্ন অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে।
ডিজিটাল যুগে কপিরাইট সুরক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তির অগ্রগতি যেমন গ্রাহকদের বিনোদনের সুযোগ বাড়িয়েছে, তেমনি কপিরাইট লঙ্ঘনের ঝুঁকিও বেড়েছে। এ ধরনের অপরাধের কারণে কপিরাইট মালিকরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন, যা বৈধ কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য গুরুতর সমস্যার কারণ হতে পারে।
এ ক্ষেত্রে মার্কিন বিচার বিভাগের কঠোর পদক্ষেপ কপিরাইট লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে একটি সতর্কবার্তা প্রদান করে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কন্টেন্ট সম্প্রচার করতে হলে বৈধ অনুমতি এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে কপিরাইট সুরক্ষিত থাকে এবং নির্মাতারা তাঁদের কাজের যথাযথ স্বীকৃতি ও আর্থিক সুবিধা পান।
এই ঘটনা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম পরিচালনাকারী ব্যক্তিদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে। গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করতে এবং বৈধ ব্যবসার ভিত্তি গড়ে তুলতে স্বচ্ছতা বজায় রাখা অপরিহার্য। ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ রোধে কপিরাইট আইন প্রয়োগ এবং ডিজিটাল সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
নূর নবী চৌধুরী ও মোহাম্মদ রহমানের বিচারিক প্রক্রিয়া এখনও চলমান এবং এই মামলার ফলাফল পরবর্তীতে ডিজিটাল অপরাধের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তাদের অপরাধ প্রমাণিত হলে, শাস্তির কঠোরতা এ ধরনের অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং বৈধ ব্যবসা পরিচালনার গুরুত্ব তুলে ধরবে।
ডিজিটাল কপিরাইট লঙ্ঘন
অবৈধ লাইভ স্ট্রিমিং পরিচালনায় অভিযুক্ত, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার একজন, বাংলাদেশের একজন পলাতক
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
নূর নবী চৌধুরী (৫৬) এবং মোহাম্মদ রহমান (৩৬) নামের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, পরিচয় গোপন করে বেআইনি ডিজিটাল লাইভ স্ট্রিমিং পরিষেবা পরিচালনা করে তাঁরা গ্রাহকদের কাছ থেকে ৭০ লাখ ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন। এই দুই ভাইয়ের মধ্যে নূর নবী যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের চিকতোয়াগায় বসবাস করেন এবং মোহাম্মদ রহমান ঢাকায় অবস্থান করেন।
বর্তমানে নূর নবী যুক্তরাষ্ট্রে আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি, কারণ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং নিউইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট ফেডারেল আদালতে তাঁর বিচার চলছে। মার্কিন বিচার বিভাগের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে গত মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়।
অভিযোগ অনুযায়ী, নূর নবী চৌধুরী এবং মোহাম্মদ রহমান ‘২৪৭ টিভি স্ট্রিম’ নামে একটি ডিজিটাল সম্প্রচার পরিষেবা পরিচালনা করতেন, যা অবৈধভাবে বিভিন্ন কন্টেন্ট দেখার সুযোগ দিত। গ্রাহকেরা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে এই পরিষেবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে পারতেন, যার মাধ্যমে তারা সরাসরি খেলা, টেলিভিশনের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো এবং অন্যান্য কন্টেন্ট দেখতে পেতেন। অনেক কন্টেন্ট মেধাস্বত্বের আওতাধীন ছিল, যা প্রকৃত কপিরাইট মালিকদের অনুমতি ছাড়াই প্রচার করা হতো।
আদালতের নথিতে প্রকাশ, এই দুই ভাই বেশ কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে এই কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। এই পরিষেবার মাধ্যমে তারা ৭০ লাখ ডলারেরও বেশি সাবস্ক্রিপশন ফি সংগ্রহ করেছেন। অনুমান করা হচ্ছে যে, তাঁদের কর্মকাণ্ডের কারণে প্রকৃত কপিরাইট মালিকদের ১০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হল, তারা নিজেদের পরিচয় গোপন করে অন্যের পরিচয় ব্যবহার করতেন।
মার্কিন বিচার বিভাগের ফৌজদারি শাখার প্রধান ও প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল নিকোল এম আর্জেন্টিয়েরি এই অভিযোগ নিয়ে বলেন, “অভিযুক্ত দুই ভাই অনুমোদন ছাড়াই অন্যের কপিরাইট কন্টেন্ট নিজেদের প্ল্যাটফর্মে প্রচার করেছেন। এভাবে বৈধ ব্যক্তিদের অর্থনৈতিকভাবে বিপুল ক্ষতি করেছেন।”
এখন পর্যন্ত নূর নবী চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, মোহাম্মদ রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এই মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে, তাঁদের প্রত্যেককে ২ থেকে সর্বাধিক ২০ বছরের কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হবে, যা বিভিন্ন অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে।
ডিজিটাল যুগে কপিরাইট সুরক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তির অগ্রগতি যেমন গ্রাহকদের বিনোদনের সুযোগ বাড়িয়েছে, তেমনি কপিরাইট লঙ্ঘনের ঝুঁকিও বেড়েছে। এ ধরনের অপরাধের কারণে কপিরাইট মালিকরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন, যা বৈধ কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য গুরুতর সমস্যার কারণ হতে পারে।
এ ক্ষেত্রে মার্কিন বিচার বিভাগের কঠোর পদক্ষেপ কপিরাইট লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে একটি সতর্কবার্তা প্রদান করে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কন্টেন্ট সম্প্রচার করতে হলে বৈধ অনুমতি এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে কপিরাইট সুরক্ষিত থাকে এবং নির্মাতারা তাঁদের কাজের যথাযথ স্বীকৃতি ও আর্থিক সুবিধা পান।
এই ঘটনা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম পরিচালনাকারী ব্যক্তিদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে। গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করতে এবং বৈধ ব্যবসার ভিত্তি গড়ে তুলতে স্বচ্ছতা বজায় রাখা অপরিহার্য। ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ রোধে কপিরাইট আইন প্রয়োগ এবং ডিজিটাল সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
নূর নবী চৌধুরী ও মোহাম্মদ রহমানের বিচারিক প্রক্রিয়া এখনও চলমান এবং এই মামলার ফলাফল পরবর্তীতে ডিজিটাল অপরাধের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তাদের অপরাধ প্রমাণিত হলে, শাস্তির কঠোরতা এ ধরনের অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং বৈধ ব্যবসা পরিচালনার গুরুত্ব তুলে ধরবে।