নির্বাচনের সময় বাধাহীনভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা চেয়ে সংস্কার কমিশনের কাছে সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা। ‘আইনের প্রয়োগ হয় না’ দাবি করে নির্বাচনের সময় ইসি কর্মকর্তারা যেন বাধাগ্রস্ত না হন এবং কেউ যেন হস্তক্ষেপ করতে না পারেন, সে লক্ষ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কাছে সুপারিশ জানিয়েছে ইসি কর্মকর্তারা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় করে এসব প্রস্তাব দেয় ইসি কর্মকর্তাদের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন ইসি সচিব শফিউল আজিম। তিনি বলেন, ‘একটা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সংস্কার কমিশন এখানে কাজ করায় আমরা সম্মান বোধ করছি। আমরা সহায়তা দেয়ার জন্য চেষ্টা করছি। কারণ এটা আমাদের অঙ্গীকার। সংবিধানেরও অঙ্গীকার হলো গণপ্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। এটা নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানই দায়িত্ব দিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে।’
ইসি সচিব বলেন, ‘কোনো কোনো ক্ষেত্রে যেসব দুর্বলতা আছে, আমরা সেগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। মাঠের অভিজ্ঞতা ও গণমাধ্যমসহ অংশীজনের অভিজ্ঞতাগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। হস্তক্ষেপ কোথা থেকে কীভাবে হয় এবং আইনগত কর্তৃত্বের বাইরে নির্বাচনে কারা কীভাবে হস্তক্ষেপ করে, এগুলো নিয়ে আমরা খোলামেলা আলোচনা করেছি।’
শফিউল আজিম বলেন, ‘আলটিমেটলি মানুষের যে আশা, অর্থাৎ অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য যা যা করা দরকার সেসব সুপারিশ করেছি। আমরা আশা করি, কমিশন যদি সদয় হয়, আমরা আমাদের সুপারিশগুলো আরও কংক্রিট আকারে দিতে পারব।’ সংবিধান ও আইনে নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেয়া আছে, সেই ক্ষমতা যেন পুরোপুরি প্রয়োগ করা যায় তার দাবি জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাব আমরা যেটা বলেছি, নির্বাচন কমিশন তো নির্বাচন একা করে না। সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রের সব অর্গান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ পুরোপুরি হয় না। আইনের প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে যাতে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশনাররা, নির্বাচন কর্মকর্তারা কোনও ধরনের কোনো কর্তৃপক্ষ দ্বারা বাধাগ্রস্ত না হন, অন্য কেউ যাতে এখানে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, আমাদের সেই সুপারিশ আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা সুপারিশ হলো সংবিধানে যে ক্ষমতা দেয়া আছে, সেটা যাতে আরও সুনির্দিষ্ট করা যায় আইনের মাধ্যমে। আরেকটা হলো নির্বাচন ব্যয় ও নির্বাচন অপরাধের বিচার যাতে আরও সুনির্দিষ্ট করা যায়, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে অন্য কোথাও যাতে চলে যেতে না পারে, সেই সুযোগ যেন না থাকে। অর্থাৎ নির্বাচনের সময় কেউ কোনো কুকর্ম করে থাকলে পরেও যেন বিচার করা যায়, সেই ক্ষমতা যেন ইসির থাকে, সেই সুপারিশও করেছি।’
মিডিয়াকে নিরপেক্ষ আচরণের আহ্বান জানিয়ে শফিউল আজিম বলেন, ‘ভালোকে ভালো, মন্দকে মন্দ বলা, সেটা আমরা আশা করি। সবাই নিরপেক্ষ থাকলে সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব।’
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ক কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘ইসি সচিবের নেতৃত্বে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা মতবিনিময় করেছি। ওনারা আগে নির্বাচন করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন। ওনারা অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। কী বিষয়ে আমাদের মনোযোগ দেওয়া দরকার এবং অগ্রাধিকার দেয়া দরকার, সে মতামত নিয়েছি। ওনারা অনেকগুলো বিষয় আলোকপাত করেছেন। খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।’
কমিশন প্রধান বলেন, ‘একটা বিষয় সুস্পষ্টভাবে এসেছে। সেটা হলো, আমাদের আইনকানুন বিধিবিধানের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেগুলো দূরীভূত করা দরকার। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রয়োগ। নির্বাচন কমিশনকে সংবিধান ও আদালতের মাধ্যমে অগাধ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তবে এটা প্রয়োগের সমস্যা ছিল। এই সমস্যাটা দূরীভূত করতে হবে। আপিল বিভাগের একটা রায়ে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা আছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের খাতিরে তারা বিধিবিধানের সঙ্গে সংযোজনও করতে পারে।’
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
নির্বাচনের সময় বাধাহীনভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা চেয়ে সংস্কার কমিশনের কাছে সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা। ‘আইনের প্রয়োগ হয় না’ দাবি করে নির্বাচনের সময় ইসি কর্মকর্তারা যেন বাধাগ্রস্ত না হন এবং কেউ যেন হস্তক্ষেপ করতে না পারেন, সে লক্ষ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কাছে সুপারিশ জানিয়েছে ইসি কর্মকর্তারা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় করে এসব প্রস্তাব দেয় ইসি কর্মকর্তাদের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন ইসি সচিব শফিউল আজিম। তিনি বলেন, ‘একটা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সংস্কার কমিশন এখানে কাজ করায় আমরা সম্মান বোধ করছি। আমরা সহায়তা দেয়ার জন্য চেষ্টা করছি। কারণ এটা আমাদের অঙ্গীকার। সংবিধানেরও অঙ্গীকার হলো গণপ্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। এটা নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানই দায়িত্ব দিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে।’
ইসি সচিব বলেন, ‘কোনো কোনো ক্ষেত্রে যেসব দুর্বলতা আছে, আমরা সেগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। মাঠের অভিজ্ঞতা ও গণমাধ্যমসহ অংশীজনের অভিজ্ঞতাগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। হস্তক্ষেপ কোথা থেকে কীভাবে হয় এবং আইনগত কর্তৃত্বের বাইরে নির্বাচনে কারা কীভাবে হস্তক্ষেপ করে, এগুলো নিয়ে আমরা খোলামেলা আলোচনা করেছি।’
শফিউল আজিম বলেন, ‘আলটিমেটলি মানুষের যে আশা, অর্থাৎ অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য যা যা করা দরকার সেসব সুপারিশ করেছি। আমরা আশা করি, কমিশন যদি সদয় হয়, আমরা আমাদের সুপারিশগুলো আরও কংক্রিট আকারে দিতে পারব।’ সংবিধান ও আইনে নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেয়া আছে, সেই ক্ষমতা যেন পুরোপুরি প্রয়োগ করা যায় তার দাবি জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাব আমরা যেটা বলেছি, নির্বাচন কমিশন তো নির্বাচন একা করে না। সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রের সব অর্গান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ পুরোপুরি হয় না। আইনের প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে যাতে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশনাররা, নির্বাচন কর্মকর্তারা কোনও ধরনের কোনো কর্তৃপক্ষ দ্বারা বাধাগ্রস্ত না হন, অন্য কেউ যাতে এখানে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, আমাদের সেই সুপারিশ আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা সুপারিশ হলো সংবিধানে যে ক্ষমতা দেয়া আছে, সেটা যাতে আরও সুনির্দিষ্ট করা যায় আইনের মাধ্যমে। আরেকটা হলো নির্বাচন ব্যয় ও নির্বাচন অপরাধের বিচার যাতে আরও সুনির্দিষ্ট করা যায়, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে অন্য কোথাও যাতে চলে যেতে না পারে, সেই সুযোগ যেন না থাকে। অর্থাৎ নির্বাচনের সময় কেউ কোনো কুকর্ম করে থাকলে পরেও যেন বিচার করা যায়, সেই ক্ষমতা যেন ইসির থাকে, সেই সুপারিশও করেছি।’
মিডিয়াকে নিরপেক্ষ আচরণের আহ্বান জানিয়ে শফিউল আজিম বলেন, ‘ভালোকে ভালো, মন্দকে মন্দ বলা, সেটা আমরা আশা করি। সবাই নিরপেক্ষ থাকলে সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব।’
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ক কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘ইসি সচিবের নেতৃত্বে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা মতবিনিময় করেছি। ওনারা আগে নির্বাচন করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন। ওনারা অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। কী বিষয়ে আমাদের মনোযোগ দেওয়া দরকার এবং অগ্রাধিকার দেয়া দরকার, সে মতামত নিয়েছি। ওনারা অনেকগুলো বিষয় আলোকপাত করেছেন। খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।’
কমিশন প্রধান বলেন, ‘একটা বিষয় সুস্পষ্টভাবে এসেছে। সেটা হলো, আমাদের আইনকানুন বিধিবিধানের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেগুলো দূরীভূত করা দরকার। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রয়োগ। নির্বাচন কমিশনকে সংবিধান ও আদালতের মাধ্যমে অগাধ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তবে এটা প্রয়োগের সমস্যা ছিল। এই সমস্যাটা দূরীভূত করতে হবে। আপিল বিভাগের একটা রায়ে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা আছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের খাতিরে তারা বিধিবিধানের সঙ্গে সংযোজনও করতে পারে।’