জানা গেছে, এরই মধ্যে ‘এইচ অ্যান্ড এম কোং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়ে গেছেন। বিষয়টি নিয়ে যাতে কোনো আন্দোলন না হয় সে কারণে সম্পূর্ণ গোপনে এটি সম্পন্ন করা হচ্ছে
বেনাপোল-খুলনা-মোংলা ভায়া যশোর রুটে লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলাচলকারী বেনাপোল কমিউটার (বেতনা) ট্রেন বেসরকারি খাতে দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। বর্তমান আয় থেকে বেশি পাওয়া যাবে এই অজুহাতে ট্রেনটি বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আরও জানা যায়, ট্রেনটি বেসরকারি খাতে লিজ দিতে রেলওয়ের কিছু কর্মকর্তা উঠে-পড়ে লেগেছে।
রেলের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, লাভজনক এই রুটটিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দেয়ার লক্ষ্যে গত ২২ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করা হয়। মে মাসের ১৯ তারিখে দরপত্র খোলা হয়। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে যাচাই-বাছাই শেষে রেলের মূল্যায়ন কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। তিন বছরের জন্য লিজ দেয়া হচ্ছে এই রুটের ট্রেনটি।
তবে রেলের অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘এইচ অ্যান্ড এম কোং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কার্যদেশ পেয়ে গেছেন। বিষয়টি নিয়ে যাতে কোনো আন্দোলন না হয় সে কারণে সম্পূর্ণ গোপনে এটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।
রেল সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সাল থেকে দীর্ঘদিন এই রুটে রেল চলাচল বন্ধ থাকার পর ১৯৯৬ সালে তখনকার সরকার ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বেনাপোল-খুলনা-মোংলা ভায়া যশোর যাত্রীবাহী কমিউটার ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৯ সালের ২৩ নভেম্বর এই রুটে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করা হয়। যা প্রায় ১১ বছর (২০১০ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত) সরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এরপর ট্রেনটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হয়। প্রথমে বেসরকারি কোম্পানি ‘মেসার্স বান্না এন্টারপ্রাইজ’ ও পরে ‘ইসলাম শিপ বিল্ডার্স’ চুক্তিবদ্ধ হয়ে এই ট্রেন পরিচালনা করে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাত্রীসেবার মান নিম্নমুখী হওয়ায় ও চোরা কারবারি, টানাপাটির দখলে চলে যাওয়ায় ২০১৩ সাল থেকে আবার সরকারি তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসা হয়। লাভজনক ও যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধিতে ২০১৭ সালের ১ মার্চ থেকে এ রুটে দিনে দুইবার যাত্রীবাহী কমিউটার ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রতিদিন সকাল ছয়টায় খুলনা থেকে কমিউটার ট্রেন যাত্রী নিয়ে বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা হয়ে দৌলতপুর, নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া, যশোর, ঝিকরগাছা, নাভারণ স্টেশন পার হয়ে সকাল সাড়ে আটটায় বেনাপোল পৌঁছায়। এসব স্টেশন থেকে ওঠা বেশিরভাগ যাত্রী ভারতে যান। পরে সকাল নয়টা ১৫ মি. বেনাপোল স্টেশন ত্যাগ করে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে খুলনার পাশে মোহাম্মদ নগর পৌঁছায় ট্রেনটি। ট্রেনটি আবার মোংলায় বেলা ১২টা ৪৫ মি. পৌঁছায়। মোংলা স্টেশন থেকে ছাড়ে দুপুর ১টায়। বেনাপোলে পৌঁছায় ৪টা ৩০ মি.। বিকেল ৫টায় খুলনার উদ্দেশে বেনাপোল ত্যাগ করে কমিউটার বেতনা ট্রেনটি।
রেলওয়ের সূত্রমতে, দিন দিন ট্রেনে যাত্রী বাড়ছে। স্থলপথে ভারত যাতায়াতের জন্য দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোলে। দেশের অন্যান্য স্থান ছাড়াও খুলনা-যশোর অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক যাত্রী এই পথে ভারত-বাংলাদেশ আসা-যাওয়া করেন। অনেক চাকরিজীবী মোংলা, খুলনা, যশোরসহ মধ্যবর্তী শহরগুলোতে যাতায়াত করেন এই ট্রেনে চেপে। বেনাপোল থেকে যশোরে ভাড়া ২০ টাকা ও খুলনার ভাড়া ৪৫ টাকা, মোহাম্মদ নগর ভাড়া ৫০ টাকা, মোংলা ৮৫ টাকা।
বেনাপোল থেকে ছেড়ে যাওয়া কমিউটার ট্রেনে দেখা গেছে, বিপুল সংখ্যক যাত্রী টিকেট না কেটে ট্রেনে ওঠেন। এরা অর্ধেক পয়সায় গন্তব্যে পৌঁছে যান। আবার অনেকে টিকেটের গোটা টাকাই ফাঁকি দেন।
এছাড়াও এ রুটে প্রতিদিন কয়েকশ’ নারী চোরাচালানী খুলনা, দৌলতপুর, নোয়াপাড়া, যশোর থেকে উঠে বেনাপোল আসে এবং আবার চোরাই মালামাল নিয়ে গন্তব্যে চলে যায়। অভিযোগ রয়েছে, রেলওয়ের টিটি, জিআরপি পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) এদের কিছুই বলে না। টিকেট কেটে যাত্রীরা রেলের সিটে বসতে না পেরে দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। অথচ এসব মহিলা চোরাচালানীরা দলবদ্ধভাবে সিট দখল করে বসে খোশগল্প করে থাকে। আবার যাওয়ার সময় রেলের কামরায় মালামাল রাখার ব্যাংকার, সিটের ওপর-নিচে পণ্য রেখে যাত্রীদের ভ্রমণকে কষ্টকর করে তোলে। কিছু বললে পাল্টা বলে এটা তাদের ট্রেন। এর ফলে হাজার হাজার টাকা রাজম্ব আয় থেকে রেল বঞ্চিত হচ্ছে।
এসব কারণ দেখিয়ে রাষ্ট্রীয় এ ট্রেনটিকে বেসরকারি খাতে দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে রেলওয়ে। অথচ খুলনা থেকে বাসে বেনাপোল যেতে সময় লাগে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। ভাড়া দুইশত টাকা। আর কমিউটার ট্রেনে খুলনা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা, ভাড়া মাত্র ৫০/৪৫ টাকা। এ কারণে খুলনা থেকে যশোরসহ ভারতে যাতায়াতকারীরা বাসের চেয়ে কম খরচে ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু আগের তুলনায় কমিউটার ট্রেন থেকে সরকারি কোষাগারে বেশি টাকা জমা হচ্ছে। বর্তমানে গড়ে প্রতি মাসে এ ট্রেন থেকে ৩৫ লাখ টাকা আয় করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এই লাভজনক ট্রেনটির প্রতি নজর পড়েছে সুযোগসন্ধানীদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাকশীতে কর্মরত রেলওয়ের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মিহির কুমার গুহ বলেন, নীতিমালা মেনেই ট্রেন বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া হয়। লোকসানের কারণে অনেক সময় বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া হয়। কোনো কোম্পানি যদি শেষ ছয় মাসের আয়ের চেয়ে বেশি টাকা দিতে চায়, তাহলে তাদের অনুকূলে লিজ দেয়া যেতে পারে।
বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, আপনারা যেভাবে জেনেছেন আমিও ওইভাবে জেনেছি। তবে লিজ দেয়া হয়েছে কিনা আমি জানি না। এ সংক্রান্ত কোনো কাগজ আমি হাতে পায়নি।
টেন্ডার পাওয়া এইচ এন্ড এম কোম্পানির মালিক হুমায়ন আহমেদ জানান, আমরা কাজ পেয়েছি। জুলাই মাসের প্রথমার্ধে আমাদের দায়িত্বে এ রুটটি চলার কথা ছিল। তবে বাজেটসহ অন্যান্য কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। এ মাসের মধ্যে না হলেও আগামী আগস্ট মাসের প্রথম দিকে বেসরকারিভাবে আমাদের দায়িত্বে এ রুটে ট্রেন চলাচল করবে।
রাজশাহী রেলওয়ে ভবনের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ^াস জানান, বেনাপোল-খুলনা-মোংলা রুটের কমিউটার বেতনা ট্রেনটি বেসরকারি খাতে দেয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। দরপত্রগুলো যাচাই বাছাই করে মূল্যায়ন শাখায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রশাসনিক শাখায় এখনও আসেনি। এর পর কাগজপত্র ঢাকা পাঠানো হবে। সেখান থেকে সর্বোচ্চ দরপত্রদাতাকে কাজ দেয়া হবে।
জানা গেছে, এরই মধ্যে ‘এইচ অ্যান্ড এম কোং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়ে গেছেন। বিষয়টি নিয়ে যাতে কোনো আন্দোলন না হয় সে কারণে সম্পূর্ণ গোপনে এটি সম্পন্ন করা হচ্ছে
রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫
বেনাপোল-খুলনা-মোংলা ভায়া যশোর রুটে লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলাচলকারী বেনাপোল কমিউটার (বেতনা) ট্রেন বেসরকারি খাতে দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। বর্তমান আয় থেকে বেশি পাওয়া যাবে এই অজুহাতে ট্রেনটি বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আরও জানা যায়, ট্রেনটি বেসরকারি খাতে লিজ দিতে রেলওয়ের কিছু কর্মকর্তা উঠে-পড়ে লেগেছে।
রেলের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, লাভজনক এই রুটটিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দেয়ার লক্ষ্যে গত ২২ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করা হয়। মে মাসের ১৯ তারিখে দরপত্র খোলা হয়। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে যাচাই-বাছাই শেষে রেলের মূল্যায়ন কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। তিন বছরের জন্য লিজ দেয়া হচ্ছে এই রুটের ট্রেনটি।
তবে রেলের অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘এইচ অ্যান্ড এম কোং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কার্যদেশ পেয়ে গেছেন। বিষয়টি নিয়ে যাতে কোনো আন্দোলন না হয় সে কারণে সম্পূর্ণ গোপনে এটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।
রেল সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সাল থেকে দীর্ঘদিন এই রুটে রেল চলাচল বন্ধ থাকার পর ১৯৯৬ সালে তখনকার সরকার ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বেনাপোল-খুলনা-মোংলা ভায়া যশোর যাত্রীবাহী কমিউটার ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৯ সালের ২৩ নভেম্বর এই রুটে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করা হয়। যা প্রায় ১১ বছর (২০১০ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত) সরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এরপর ট্রেনটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হয়। প্রথমে বেসরকারি কোম্পানি ‘মেসার্স বান্না এন্টারপ্রাইজ’ ও পরে ‘ইসলাম শিপ বিল্ডার্স’ চুক্তিবদ্ধ হয়ে এই ট্রেন পরিচালনা করে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাত্রীসেবার মান নিম্নমুখী হওয়ায় ও চোরা কারবারি, টানাপাটির দখলে চলে যাওয়ায় ২০১৩ সাল থেকে আবার সরকারি তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসা হয়। লাভজনক ও যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধিতে ২০১৭ সালের ১ মার্চ থেকে এ রুটে দিনে দুইবার যাত্রীবাহী কমিউটার ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রতিদিন সকাল ছয়টায় খুলনা থেকে কমিউটার ট্রেন যাত্রী নিয়ে বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা হয়ে দৌলতপুর, নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া, যশোর, ঝিকরগাছা, নাভারণ স্টেশন পার হয়ে সকাল সাড়ে আটটায় বেনাপোল পৌঁছায়। এসব স্টেশন থেকে ওঠা বেশিরভাগ যাত্রী ভারতে যান। পরে সকাল নয়টা ১৫ মি. বেনাপোল স্টেশন ত্যাগ করে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে খুলনার পাশে মোহাম্মদ নগর পৌঁছায় ট্রেনটি। ট্রেনটি আবার মোংলায় বেলা ১২টা ৪৫ মি. পৌঁছায়। মোংলা স্টেশন থেকে ছাড়ে দুপুর ১টায়। বেনাপোলে পৌঁছায় ৪টা ৩০ মি.। বিকেল ৫টায় খুলনার উদ্দেশে বেনাপোল ত্যাগ করে কমিউটার বেতনা ট্রেনটি।
রেলওয়ের সূত্রমতে, দিন দিন ট্রেনে যাত্রী বাড়ছে। স্থলপথে ভারত যাতায়াতের জন্য দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোলে। দেশের অন্যান্য স্থান ছাড়াও খুলনা-যশোর অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক যাত্রী এই পথে ভারত-বাংলাদেশ আসা-যাওয়া করেন। অনেক চাকরিজীবী মোংলা, খুলনা, যশোরসহ মধ্যবর্তী শহরগুলোতে যাতায়াত করেন এই ট্রেনে চেপে। বেনাপোল থেকে যশোরে ভাড়া ২০ টাকা ও খুলনার ভাড়া ৪৫ টাকা, মোহাম্মদ নগর ভাড়া ৫০ টাকা, মোংলা ৮৫ টাকা।
বেনাপোল থেকে ছেড়ে যাওয়া কমিউটার ট্রেনে দেখা গেছে, বিপুল সংখ্যক যাত্রী টিকেট না কেটে ট্রেনে ওঠেন। এরা অর্ধেক পয়সায় গন্তব্যে পৌঁছে যান। আবার অনেকে টিকেটের গোটা টাকাই ফাঁকি দেন।
এছাড়াও এ রুটে প্রতিদিন কয়েকশ’ নারী চোরাচালানী খুলনা, দৌলতপুর, নোয়াপাড়া, যশোর থেকে উঠে বেনাপোল আসে এবং আবার চোরাই মালামাল নিয়ে গন্তব্যে চলে যায়। অভিযোগ রয়েছে, রেলওয়ের টিটি, জিআরপি পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) এদের কিছুই বলে না। টিকেট কেটে যাত্রীরা রেলের সিটে বসতে না পেরে দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। অথচ এসব মহিলা চোরাচালানীরা দলবদ্ধভাবে সিট দখল করে বসে খোশগল্প করে থাকে। আবার যাওয়ার সময় রেলের কামরায় মালামাল রাখার ব্যাংকার, সিটের ওপর-নিচে পণ্য রেখে যাত্রীদের ভ্রমণকে কষ্টকর করে তোলে। কিছু বললে পাল্টা বলে এটা তাদের ট্রেন। এর ফলে হাজার হাজার টাকা রাজম্ব আয় থেকে রেল বঞ্চিত হচ্ছে।
এসব কারণ দেখিয়ে রাষ্ট্রীয় এ ট্রেনটিকে বেসরকারি খাতে দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে রেলওয়ে। অথচ খুলনা থেকে বাসে বেনাপোল যেতে সময় লাগে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। ভাড়া দুইশত টাকা। আর কমিউটার ট্রেনে খুলনা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা, ভাড়া মাত্র ৫০/৪৫ টাকা। এ কারণে খুলনা থেকে যশোরসহ ভারতে যাতায়াতকারীরা বাসের চেয়ে কম খরচে ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু আগের তুলনায় কমিউটার ট্রেন থেকে সরকারি কোষাগারে বেশি টাকা জমা হচ্ছে। বর্তমানে গড়ে প্রতি মাসে এ ট্রেন থেকে ৩৫ লাখ টাকা আয় করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এই লাভজনক ট্রেনটির প্রতি নজর পড়েছে সুযোগসন্ধানীদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাকশীতে কর্মরত রেলওয়ের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মিহির কুমার গুহ বলেন, নীতিমালা মেনেই ট্রেন বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া হয়। লোকসানের কারণে অনেক সময় বেসরকারি খাতে লিজ দেয়া হয়। কোনো কোম্পানি যদি শেষ ছয় মাসের আয়ের চেয়ে বেশি টাকা দিতে চায়, তাহলে তাদের অনুকূলে লিজ দেয়া যেতে পারে।
বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, আপনারা যেভাবে জেনেছেন আমিও ওইভাবে জেনেছি। তবে লিজ দেয়া হয়েছে কিনা আমি জানি না। এ সংক্রান্ত কোনো কাগজ আমি হাতে পায়নি।
টেন্ডার পাওয়া এইচ এন্ড এম কোম্পানির মালিক হুমায়ন আহমেদ জানান, আমরা কাজ পেয়েছি। জুলাই মাসের প্রথমার্ধে আমাদের দায়িত্বে এ রুটটি চলার কথা ছিল। তবে বাজেটসহ অন্যান্য কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। এ মাসের মধ্যে না হলেও আগামী আগস্ট মাসের প্রথম দিকে বেসরকারিভাবে আমাদের দায়িত্বে এ রুটে ট্রেন চলাচল করবে।
রাজশাহী রেলওয়ে ভবনের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ^াস জানান, বেনাপোল-খুলনা-মোংলা রুটের কমিউটার বেতনা ট্রেনটি বেসরকারি খাতে দেয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। দরপত্রগুলো যাচাই বাছাই করে মূল্যায়ন শাখায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রশাসনিক শাখায় এখনও আসেনি। এর পর কাগজপত্র ঢাকা পাঠানো হবে। সেখান থেকে সর্বোচ্চ দরপত্রদাতাকে কাজ দেয়া হবে।