এপ্রিল-মে মাসে বজ্রপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে। ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হলো সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও সিলেট
বাংলাদেশে বছরে গড়ে ৩ কোটি ৩৬ লাখ বজ্রপাত হয় এবং এতে প্রায় ৩৫০ জন মানুষ মারা যায়। দেশে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যুর হারের দিক থেকে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। এ অবস্থায় বজ্রপাত থেকে রক্ষার কৌশল পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। আন্তঃসরকার প্রতিষ্ঠান রাইমস’র আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ খান মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে বছরে গড়ে ৩.৩৬ মিলিয়ন বজ্রপাত হয়। এর ফলে প্রায় সাড়ে তিনশ মানুষের মৃত্যু হয়।’
শনিবার,(২৮ জুন ২০২৫) দেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক বজ্রপাত নিরাপত্তা দিবস জাতীয় পর্যায়ে উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ৯টায় র্যালির মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘বজ্রপাতের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হলো সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও সিলেট। বাংলাদেশে সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে বজ্রপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে। সম্প্রতি দেশে বজ্রপাতের হার ১০ শতাংশ বেড়েছে। সামনে আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
ইউরোপীয় সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড অপারেশনসের অর্থায়িত কনসোর্টিয়াম প্রকল্প ‘স্কেলিং আপ ফরকাস্ট-বেইজড অ্যাকশন অ্যান্ড লার্নিং ইন বাংলাদেশ (সুফল-২)’-এর আওতায়, কেয়ার বাংলাদেশের নেতৃত্বে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং আঞ্চলিক দুর্যোগ সহযোগী সংস্থা রিজিওনাল ইনটিগ্রেটেড মাল্টি-হেজার্ড আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমের (রাইমসের) অংশীদারিত্বে এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) সহযোগিতায় এটি পালিত হয়।
‘শুনলে বজ্রধ্বনি, ঘরে যাই তখনই’ স্লোগানকে সামনে রেখে দিবসটিতে দেশের বজ্রপাতে মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে জনসচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সরকার দেশে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন দুর্যোগ থেকে মৃত্যুর হার কমাতে যেভাবে সফল হয়েছে, বজ্রপাতের ঝুঁকি মোকাবিলায়ও ততটাই গুরুত্ব দেয়া হবে। তিনি বজ্রপাত প্রতিরোধে প্রযোজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।’
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, শুধু পূর্বাভাস নয়, সঠিক সময়ে সঠিক বার্তা পৌঁছে দেয়া এবং মানুষের আচরণগত পরিবর্তন ঘটানোই বজ্রপাতে প্রাণহানি রোধের মূল চাবিকাঠি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রাইমসের কান্ট্রি প্রোগ্রাম লিড মো. রায়হানুল হক খান। তিনি জানান, বিএমডির সঙ্গে অংশীদারিত্বে তৈরি করা পরীক্ষামূলক বজ্রপাত ‘নাউকাস্টিং সিস্টেম’ প্রযুক্তিকে টেকসই ও নিয়মিত কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিএমডির উপপরিচালক এস এম কামরুল হাসান চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালিত নতুন বজ্রপাত পূর্বাভাস ব্যবস্থার বিবরণ দেন। তিনি বলেন, এই পূর্বাভাস এখন বিএমডির ওয়েবসাইট, ফেইসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে উপকারভোগীদের কাছে প্রি-রেকর্ডেড অডিও বার্তার মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে।
বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমদুল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মোমেনুল ইসলাম এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উর্মি আহসান।
এপ্রিল-মে মাসে বজ্রপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে। ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হলো সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও সিলেট
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
বাংলাদেশে বছরে গড়ে ৩ কোটি ৩৬ লাখ বজ্রপাত হয় এবং এতে প্রায় ৩৫০ জন মানুষ মারা যায়। দেশে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যুর হারের দিক থেকে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। এ অবস্থায় বজ্রপাত থেকে রক্ষার কৌশল পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। আন্তঃসরকার প্রতিষ্ঠান রাইমস’র আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ খান মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে বছরে গড়ে ৩.৩৬ মিলিয়ন বজ্রপাত হয়। এর ফলে প্রায় সাড়ে তিনশ মানুষের মৃত্যু হয়।’
শনিবার,(২৮ জুন ২০২৫) দেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক বজ্রপাত নিরাপত্তা দিবস জাতীয় পর্যায়ে উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ৯টায় র্যালির মাধ্যমে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘বজ্রপাতের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হলো সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও সিলেট। বাংলাদেশে সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে বজ্রপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে। সম্প্রতি দেশে বজ্রপাতের হার ১০ শতাংশ বেড়েছে। সামনে আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
ইউরোপীয় সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড অপারেশনসের অর্থায়িত কনসোর্টিয়াম প্রকল্প ‘স্কেলিং আপ ফরকাস্ট-বেইজড অ্যাকশন অ্যান্ড লার্নিং ইন বাংলাদেশ (সুফল-২)’-এর আওতায়, কেয়ার বাংলাদেশের নেতৃত্বে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং আঞ্চলিক দুর্যোগ সহযোগী সংস্থা রিজিওনাল ইনটিগ্রেটেড মাল্টি-হেজার্ড আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমের (রাইমসের) অংশীদারিত্বে এবং বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) সহযোগিতায় এটি পালিত হয়।
‘শুনলে বজ্রধ্বনি, ঘরে যাই তখনই’ স্লোগানকে সামনে রেখে দিবসটিতে দেশের বজ্রপাতে মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে জনসচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সরকার দেশে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন দুর্যোগ থেকে মৃত্যুর হার কমাতে যেভাবে সফল হয়েছে, বজ্রপাতের ঝুঁকি মোকাবিলায়ও ততটাই গুরুত্ব দেয়া হবে। তিনি বজ্রপাত প্রতিরোধে প্রযোজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।’
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, শুধু পূর্বাভাস নয়, সঠিক সময়ে সঠিক বার্তা পৌঁছে দেয়া এবং মানুষের আচরণগত পরিবর্তন ঘটানোই বজ্রপাতে প্রাণহানি রোধের মূল চাবিকাঠি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রাইমসের কান্ট্রি প্রোগ্রাম লিড মো. রায়হানুল হক খান। তিনি জানান, বিএমডির সঙ্গে অংশীদারিত্বে তৈরি করা পরীক্ষামূলক বজ্রপাত ‘নাউকাস্টিং সিস্টেম’ প্রযুক্তিকে টেকসই ও নিয়মিত কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিএমডির উপপরিচালক এস এম কামরুল হাসান চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালিত নতুন বজ্রপাত পূর্বাভাস ব্যবস্থার বিবরণ দেন। তিনি বলেন, এই পূর্বাভাস এখন বিএমডির ওয়েবসাইট, ফেইসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে উপকারভোগীদের কাছে প্রি-রেকর্ডেড অডিও বার্তার মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে।
বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমদুল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মোমেনুল ইসলাম এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উর্মি আহসান।