৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত নিয়োগে বাদ পড়া প্রার্থীরা প্রজ্ঞাপনে তাদের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা দিয়েছেন। বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে প্রায় দুইশ চাকরিপ্রত্যাশী ঢাকায় সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নেন। পরে বেলা আড়াইটার দিকে তাদের চারজনের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দপ্তরে আবেদনটি জমা দেন।
এর আগে বেলা ১২টার দিকে সচিবালয়ের সামনে জড়ো হন প্রজ্ঞাপনে বাদ পড়া প্রার্থীরা। তারা বাদ পড়ার কারণ জানতে চান এবং প্রজ্ঞাপনে তাদের অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান।
*বাদ ২৬৭ জন*
৪৩তম বিসিএসের মাধ্যমে ক্যাডারের দুই হাজার ১৬৩ পদে নিয়োগ দিতে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পিএসসি (সরকারি কর্ম কমিশন)। মৌখিক পরীক্ষার পর সুপারিশকৃতদের মধ্যে থেকে ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে গত ১৫ অক্টোবর ২ হাজার ৬৪ জনকে নিয়োগে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
দুদিনের মাথায় (১৭ অক্টোবর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ ১৫ অক্টোবর ২০৬৪ জনের নিয়োগের ওই প্রজ্ঞাপন বাতিলসহ আওয়ামী লীগের আমলে শুরু হওয়া ৪৩ থেকে ৪৬ পর্যন্ত চারটি বিসিএস পরীক্ষার সব প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানান। বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আপস করার বিন্দুমাত্র কোনো সুযোগ নেই।’
*বিএনপির দাবি *
সালাহ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঢালাওভাবে সুপারিশকৃত শাসকদলীয় (আওয়ামী লীগ) প্রার্থীদের রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে নিয়োগ দান করা হলে তা হবে চরম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। দেশের হাজার হাজার যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীদের বঞ্চিত করে দলীয় (আওয়ামী লীগ) ভিত্তিতে বিবেচিত ও সুপারিশকৃত ৪৩তম বিসিএস বাতিল করার জন্য আমরা দেশ ও জাতির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এরপর ৩০ ডিসেম্বর ওই (১৫ অক্টোবরের) প্রজ্ঞাপন বাতিল করে আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাতে প্রথম প্রজ্ঞাপন থেকে বাদ পড়েন ১৬৮ জন।
দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশপ্রাপ্ত এক হাজার ৮৯৬ জন প্রার্থীকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারে প্রবেশ পদে নিয়োগ দেয়া হলো। এসব প্রার্থীকে ১৫ জানুয়ারি চাকরিতে যোগ দিতে হবে।
দুই প্রজ্ঞাপন মিলিয়ে বাদ পড়া ২৬৭ জনের অধিকাংশই বুধবার সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
*কারণ কী*
সচিবালয়ের সামনে অবস্থানরত বাদ পড়া প্রার্থীদের অনেকেই সাংবাদিকদের বলেন, প্রথম প্রজ্ঞাপনে নিয়োগ পাওয়ার পর দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে নাম কেন নেই, তা তারা কেউই জানেন না। বাদ পড়ার কারণ জানতেই তারা সচিবালয়ের ফটকের সামনে অবস্থান করছেন। তাদের প্রতিনিধি দল ভেতরে গিয়ে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন।
বাদ পড়াদের কয়েকজন জানান, ছাত্র জীবনে এবং পারিবারিকভাকে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ‘সম্পৃক্ততা না থাকার’ পরও তাদের নিয়োগ বাতিলের বিষয়টি তারা বুঝতে পারছেন না।
তাদের একজন বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আমার পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়েছে। এই সরকারের সময়ই আমি গেজেটেড হয়েছি। তাহলে কেমন ভেরিফিকেশন হলো? কোনো রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে আমি চাকরি দাবি করবো না।’
*আবেদন জমা*
প্রতিনিধিদের একজন আরিফ সচিবালয় থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের জানান, যারা বাদ পড়েছেন তাদের অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলেন। তবে তাদের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান দপ্তরে নেই। তার অনুমতি ছাড়া আবেদন গ্রহণ করা যাবে না।
পরে আবেদনটি গ্রহণ করা হয় বলে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়।
*আওয়ামী লীগের সময়ে*
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর ৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল, যাতে অংশ নিতে ৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৯০ জনের আবেদন জমা পড়ে। করোনা মহামারির মধ্যে ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ৬৫০ জন প্রার্থী অংশ নেন।
এরপর ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর এ বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার মিলে ২ হাজার ৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। এরমধ্যে ৬৪২ জনকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।
বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫
৪৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত নিয়োগে বাদ পড়া প্রার্থীরা প্রজ্ঞাপনে তাদের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা দিয়েছেন। বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে প্রায় দুইশ চাকরিপ্রত্যাশী ঢাকায় সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নেন। পরে বেলা আড়াইটার দিকে তাদের চারজনের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দপ্তরে আবেদনটি জমা দেন।
এর আগে বেলা ১২টার দিকে সচিবালয়ের সামনে জড়ো হন প্রজ্ঞাপনে বাদ পড়া প্রার্থীরা। তারা বাদ পড়ার কারণ জানতে চান এবং প্রজ্ঞাপনে তাদের অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান।
*বাদ ২৬৭ জন*
৪৩তম বিসিএসের মাধ্যমে ক্যাডারের দুই হাজার ১৬৩ পদে নিয়োগ দিতে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পিএসসি (সরকারি কর্ম কমিশন)। মৌখিক পরীক্ষার পর সুপারিশকৃতদের মধ্যে থেকে ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে গত ১৫ অক্টোবর ২ হাজার ৬৪ জনকে নিয়োগে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
দুদিনের মাথায় (১৭ অক্টোবর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ ১৫ অক্টোবর ২০৬৪ জনের নিয়োগের ওই প্রজ্ঞাপন বাতিলসহ আওয়ামী লীগের আমলে শুরু হওয়া ৪৩ থেকে ৪৬ পর্যন্ত চারটি বিসিএস পরীক্ষার সব প্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানান। বিএনপির পক্ষ থেকে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আপস করার বিন্দুমাত্র কোনো সুযোগ নেই।’
*বিএনপির দাবি *
সালাহ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঢালাওভাবে সুপারিশকৃত শাসকদলীয় (আওয়ামী লীগ) প্রার্থীদের রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে নিয়োগ দান করা হলে তা হবে চরম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। দেশের হাজার হাজার যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীদের বঞ্চিত করে দলীয় (আওয়ামী লীগ) ভিত্তিতে বিবেচিত ও সুপারিশকৃত ৪৩তম বিসিএস বাতিল করার জন্য আমরা দেশ ও জাতির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এরপর ৩০ ডিসেম্বর ওই (১৫ অক্টোবরের) প্রজ্ঞাপন বাতিল করে আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাতে প্রথম প্রজ্ঞাপন থেকে বাদ পড়েন ১৬৮ জন।
দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশপ্রাপ্ত এক হাজার ৮৯৬ জন প্রার্থীকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারে প্রবেশ পদে নিয়োগ দেয়া হলো। এসব প্রার্থীকে ১৫ জানুয়ারি চাকরিতে যোগ দিতে হবে।
দুই প্রজ্ঞাপন মিলিয়ে বাদ পড়া ২৬৭ জনের অধিকাংশই বুধবার সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
*কারণ কী*
সচিবালয়ের সামনে অবস্থানরত বাদ পড়া প্রার্থীদের অনেকেই সাংবাদিকদের বলেন, প্রথম প্রজ্ঞাপনে নিয়োগ পাওয়ার পর দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে নাম কেন নেই, তা তারা কেউই জানেন না। বাদ পড়ার কারণ জানতেই তারা সচিবালয়ের ফটকের সামনে অবস্থান করছেন। তাদের প্রতিনিধি দল ভেতরে গিয়ে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন।
বাদ পড়াদের কয়েকজন জানান, ছাত্র জীবনে এবং পারিবারিকভাকে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ‘সম্পৃক্ততা না থাকার’ পরও তাদের নিয়োগ বাতিলের বিষয়টি তারা বুঝতে পারছেন না।
তাদের একজন বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আমার পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়েছে। এই সরকারের সময়ই আমি গেজেটেড হয়েছি। তাহলে কেমন ভেরিফিকেশন হলো? কোনো রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে আমি চাকরি দাবি করবো না।’
*আবেদন জমা*
প্রতিনিধিদের একজন আরিফ সচিবালয় থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের জানান, যারা বাদ পড়েছেন তাদের অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলেন। তবে তাদের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান দপ্তরে নেই। তার অনুমতি ছাড়া আবেদন গ্রহণ করা যাবে না।
পরে আবেদনটি গ্রহণ করা হয় বলে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়।
*আওয়ামী লীগের সময়ে*
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর ৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল, যাতে অংশ নিতে ৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৯০ জনের আবেদন জমা পড়ে। করোনা মহামারির মধ্যে ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ৬৫০ জন প্রার্থী অংশ নেন।
এরপর ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর এ বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার মিলে ২ হাজার ৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। এরমধ্যে ৬৪২ জনকে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।