জুলাই আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে হত্যা, গুম ও আগুনে পোড়ানোর ঘটনায় সাড়ে ৬ মাসে সারাদেশের বিভিন্ন থানায় ১৪শ’র বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই সব মামলায় পুলিশের সাবেক ২ জন আইজিসহ ৪৫ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ১৩ হাজার সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে সাবেক আওয়ামী লীগ আমলের মন্ত্রী, এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের দেশের বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হত্যা, আহত ও পঙ্গুত্বের মামলায় প্রত্যেককে একাধিক বার রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, পলাতক অন্যদের ধরতে চলছে চলছে অভিযান।
তবে দেশ জুড়ে আলোচিত ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনকারি ডিবি হারুন ও বিপ্লবসহ অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। আয়না ঘর তৈরি করে দিনের পর দিন নির্যাতন চালিয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেই এখনও গ্রেপ্তার হয়নি।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, একের পর এক পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হওয়ায় মাঠ পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে। অনেকের মধ্যে এখন হতাশা বিরাজ করছে। সড়ক ও মহাসড়কে রাতে পুলিশের টহল এখনও আগের মতো নেই। অনেক সড়কে রাতে পুলিশ দেখা যায় না।
যার কারণে রাজধানী থেকে সারাদেশে সড়ক ও মহাসড়কে একের পর এক ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষে মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ঘটনার পর নড়েচড়ে আসামি ধরার চেষ্টা করলেও ঘটনার আগে অভিযোগ করতে গেলে ডিউটি অফিসার গরজও করেনি। অভিযোগ করলে পুলিশ পদে পদে আগের মতো গাফিলতি করছেন। যার কারণে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত এখনও ভিতিকর অবস্থা বিরাজ করছে।
সম্প্রতি পুলিশ সদরদপ্তর থেকে জানা গেছে, জুলাই-আগস্টের ঘটনায় প্রায় ৯শ’র বেশি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১ থেকে শুরু করে ১৭১টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। এই ভাবে মামলার সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। একজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ১৫৫টি মামলা, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকারের বিরুদ্ধে ৭টি মামলা, সাবেক আইজিপি একেএম শহিদুল হকের বিরুদ্ধে ২৩টি মামলা, সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারির বিরুদ্ধে ২টি মামলা, সাবেক আইজিপি বেনজিরের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে।
সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি আছাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪৮টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজি খন্দকার লুৎফুল কবিরের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজি হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১৭টি মামলা। সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমানের বিরুদ্ধে ২টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি নব বিক্রম কিশোরের বিরুদ্ধে ১টি মামলা।
পুলিশের আলোচিত ডিআইজি হারুন অর রশিদের (ডিবি হারুন) বিরুদ্ধে ১৭১টি মামলা, সাবেক ডিআইজি নূরে আলম মিনার বিরুদ্ধে ১টি মামলা, সাবেক ডিআইজি রিপন সরকারের বিরুদ্বে ১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ভাবে ২০ জনের বেশি ডিআইজির বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।
অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব কুমার সরকারের বিরুদ্ধে ১২৫টি মামলা, অতিরিক্ত ডিআইজি এসএম মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে ৩১টি মামলা রয়েছে।
এই ভাবে পুলিশের আইজি, অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, এসপি, এডিশনাল এসপি, এএসপি, ইন্সপেক্টর (ওসি), এসআই ও এএসআইসহ ৯৫২ জন পুলিশ অফিসার থেকে সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি, এডিশনাল ডিআইজি, এসপি, এডিশনার এসপি, এসি, ইন্সপেক্টরসহ ৪০জনের বেশি চাকুরি থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।
অনেককে সংযুক্ত করে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি সংযুক্ত এসপি তানভীর সালেহীন ইমনকে রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় আনা হয়েছে।
এ দিকে ৮ ফেব্রুয়ারি গত শনিবার রাত থেকে যৌথ বাহিনী বিশেষ অভিযান অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ শুরু হয়েছে। প্রতিদিন এই অভিযানে অনেকেই গ্রেপ্তার হচ্ছে। আবার বিশেষ অভিযানের বাইরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও অন্যান্য মামলায় অনেকেই গ্রেপ্তার হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই মামলায় আরও ৭৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর জানিয়েছেন, মামলা সমূহের তদন্তের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ঘটনা সমূহের তথ্য প্রমাণ ও ডিজিটাল এভিডেন্স সংগ্রহের পাশপাশি অপরাধীদের সনাক্ত করণ ও গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। তদন্তে যাদেরই সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
জুলাই আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে হত্যা, গুম ও আগুনে পোড়ানোর ঘটনায় সাড়ে ৬ মাসে সারাদেশের বিভিন্ন থানায় ১৪শ’র বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই সব মামলায় পুলিশের সাবেক ২ জন আইজিসহ ৪৫ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ১৩ হাজার সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে সাবেক আওয়ামী লীগ আমলের মন্ত্রী, এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের দেশের বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হত্যা, আহত ও পঙ্গুত্বের মামলায় প্রত্যেককে একাধিক বার রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, পলাতক অন্যদের ধরতে চলছে চলছে অভিযান।
তবে দেশ জুড়ে আলোচিত ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনকারি ডিবি হারুন ও বিপ্লবসহ অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। আয়না ঘর তৈরি করে দিনের পর দিন নির্যাতন চালিয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেই এখনও গ্রেপ্তার হয়নি।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, একের পর এক পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হওয়ায় মাঠ পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে। অনেকের মধ্যে এখন হতাশা বিরাজ করছে। সড়ক ও মহাসড়কে রাতে পুলিশের টহল এখনও আগের মতো নেই। অনেক সড়কে রাতে পুলিশ দেখা যায় না।
যার কারণে রাজধানী থেকে সারাদেশে সড়ক ও মহাসড়কে একের পর এক ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষে মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ঘটনার পর নড়েচড়ে আসামি ধরার চেষ্টা করলেও ঘটনার আগে অভিযোগ করতে গেলে ডিউটি অফিসার গরজও করেনি। অভিযোগ করলে পুলিশ পদে পদে আগের মতো গাফিলতি করছেন। যার কারণে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত এখনও ভিতিকর অবস্থা বিরাজ করছে।
সম্প্রতি পুলিশ সদরদপ্তর থেকে জানা গেছে, জুলাই-আগস্টের ঘটনায় প্রায় ৯শ’র বেশি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১ থেকে শুরু করে ১৭১টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। এই ভাবে মামলার সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। একজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ১৫৫টি মামলা, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকারের বিরুদ্ধে ৭টি মামলা, সাবেক আইজিপি একেএম শহিদুল হকের বিরুদ্ধে ২৩টি মামলা, সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারির বিরুদ্ধে ২টি মামলা, সাবেক আইজিপি বেনজিরের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে।
সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি আছাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪৮টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজি খন্দকার লুৎফুল কবিরের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজি হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১৭টি মামলা। সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমানের বিরুদ্ধে ২টি মামলা, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি নব বিক্রম কিশোরের বিরুদ্ধে ১টি মামলা।
পুলিশের আলোচিত ডিআইজি হারুন অর রশিদের (ডিবি হারুন) বিরুদ্ধে ১৭১টি মামলা, সাবেক ডিআইজি নূরে আলম মিনার বিরুদ্ধে ১টি মামলা, সাবেক ডিআইজি রিপন সরকারের বিরুদ্বে ১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ভাবে ২০ জনের বেশি ডিআইজির বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।
অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব কুমার সরকারের বিরুদ্ধে ১২৫টি মামলা, অতিরিক্ত ডিআইজি এসএম মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে ৩১টি মামলা রয়েছে।
এই ভাবে পুলিশের আইজি, অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, এসপি, এডিশনাল এসপি, এএসপি, ইন্সপেক্টর (ওসি), এসআই ও এএসআইসহ ৯৫২ জন পুলিশ অফিসার থেকে সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি, এডিশনাল ডিআইজি, এসপি, এডিশনার এসপি, এসি, ইন্সপেক্টরসহ ৪০জনের বেশি চাকুরি থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।
অনেককে সংযুক্ত করে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি সংযুক্ত এসপি তানভীর সালেহীন ইমনকে রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় আনা হয়েছে।
এ দিকে ৮ ফেব্রুয়ারি গত শনিবার রাত থেকে যৌথ বাহিনী বিশেষ অভিযান অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ শুরু হয়েছে। প্রতিদিন এই অভিযানে অনেকেই গ্রেপ্তার হচ্ছে। আবার বিশেষ অভিযানের বাইরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও অন্যান্য মামলায় অনেকেই গ্রেপ্তার হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই মামলায় আরও ৭৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর জানিয়েছেন, মামলা সমূহের তদন্তের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ঘটনা সমূহের তথ্য প্রমাণ ও ডিজিটাল এভিডেন্স সংগ্রহের পাশপাশি অপরাধীদের সনাক্ত করণ ও গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। তদন্তে যাদেরই সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।