অন্তর্বর্তী সরকার ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ঘোষণাপত্র প্রকাশের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার কথা থাকলেও তা কবে হবে, সে বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট তারিখ ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র প্রকাশে বৈষম্যবিরোধীদের সময়সীমার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেছেন, কিছুদিনের মধ্যে হবে। সে লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে এবং এটি নিয়ে কাজ হচ্ছে। এটা নিয়ে সামনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও কথাবার্তা হবে। সে আলোকেই খসড়া হবে। তারা আশা করছেন, এ নিয়ে সামনে আরও অগ্রগতি দেখা যাবে।
কিছুদিনের মধ্যে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের ঘোষণা দেয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে একই ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর ৩১ ডিসেম্বর ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই কর্মসূচি থেকে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়।
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ নিয়ে এই সময়সীমার বিষয়ে রোববার ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা আমাদের ঘোষণায় কিন্তু বলেছিলাম, কিছুদিনের মধ্যে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’
তখন আরেকজন সাংবাদিক জানতে চান, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হবে কিনা? জবাবে শফিকুল আলম আগের উত্তরের কথাই মনে করিয়ে দেন।
*শেখ হাসিনাকে ফেরানো*
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা আশাবাদী। পৃথিবীতে কেউ কোনো খুনিকে জায়গা দিতে চায় না। হাসিনার হরর স্টোরি ভারতীয় গণমাধ্যমের অনেকে জানতোই না। ইদানিং অনেকেই লেখা শুরু করেছেন। পুরো পৃথিবী যখন বিষয়টি জানবে চাপটা তৈরি হবে। আমরা তাকে ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। যদি না পারি, পরে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা করবেন। এটা জাতির আকাক্সক্ষা।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘হাসিনা তার বাবার খুনিদের পার্স্যু করে অনেক জায়গা থেকে ফিরিয়ে এনে বিচার করেছিল। তার দ্বিগুণ পার্স্যু করে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা হবে।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ছয় সাংবাদিক হত্যার বিচারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘এটা আমাদের অগ্রাধিকার। অপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন করা হবে।’
আয়নাঘর
সাইবার সুরক্ষা আইনের বিষয়ে টিআইবির সমালোচনার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা সমালোচনাকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করি। এটা নিয়ে আসিফ নজরুল সাহেব কথা বলবেন।’ গুম কমিশন ভালো কাজ করছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘দুই-একটা আয়নাঘরে আপনাদের (সাংবাদিক) পরিদর্শনের ব্যবস্থা করব। সেখানে কী ভয়াবহভাবে গুম করা হতো, সেই চিত্র দেখতে পারবেন। হাসিনার আমলে পাপাচারের শেষ নেই।’
এ সময় তিনটি নির্বাচন, শাপলা চত্বরের ঘটনা, টাকা পাচারের ঘটনা উল্লেখ করেন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বিষয় নিয়ে কাজ হচ্ছে। হাসিনাকে আমরা বিচারের আওতায় আনবো।’
*সাগর-রুনি*
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘বিষয়টি আজকে (রোববার) পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) প্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছে। কারণ তারা ত্রিশ বছর আগের খুনের তদন্তও সফলভাবে করেছে। তাই তাদের সক্ষমতা আছে। বিষয়টি কষ্টসাধ্য হলেও প্রচুর সময় দিচ্ছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’
*বিটিভি-বাসস*
বিটিভি ও বাসসের স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিতে সরকার উদ্যোগ নেবে কিনা- এমন প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা সরকারি সংস্থাগুলোকে আরও বড় ও ক্ষমতাশালী করার চেষ্টা করছি। বিটিভি ও বাসসকে স্বাধীনতা দেয়া আছে। নিজ নিজ রোল অনুযায়ী প্রেস ফ্রিডম ব্যবহার করতে পারবেন। গত পাঁচমাসে দেশের গণমাধ্যম যতটা স্বাধীন ছিল, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে ছিল না।’
*ভিসা সেন্টার*
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘বুলগেরিয়া ভিসা সেন্টার ভারত থেকে ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে হস্তান্তরের কথা আগেই জানিয়েছে। ১২২ জন বাংলাদেশি ছাত্রকে তারা ভিসা দিয়েছে। রোমানিয়া, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের দূতাবাস থেকে ভিসা দেয়ার কথা জানিয়েছে। কাজাকিস্তান জানিয়েছে ব্যাংকক থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা দেবে। এ ছাড়া অন্যান্য দেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ও পশ্চিম ইউরোপীয় ডেস্ক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।’
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব আশরোফা ইমদাদ ও সুচিস্মিতা তিথি।
সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকার ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ঘোষণাপত্র প্রকাশের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার কথা থাকলেও তা কবে হবে, সে বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট তারিখ ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র প্রকাশে বৈষম্যবিরোধীদের সময়সীমার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেছেন, কিছুদিনের মধ্যে হবে। সে লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে এবং এটি নিয়ে কাজ হচ্ছে। এটা নিয়ে সামনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও কথাবার্তা হবে। সে আলোকেই খসড়া হবে। তারা আশা করছেন, এ নিয়ে সামনে আরও অগ্রগতি দেখা যাবে।
কিছুদিনের মধ্যে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের ঘোষণা দেয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে একই ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর ৩১ ডিসেম্বর ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি পালন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই কর্মসূচি থেকে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়।
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ নিয়ে এই সময়সীমার বিষয়ে রোববার ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা আমাদের ঘোষণায় কিন্তু বলেছিলাম, কিছুদিনের মধ্যে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’
তখন আরেকজন সাংবাদিক জানতে চান, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হবে কিনা? জবাবে শফিকুল আলম আগের উত্তরের কথাই মনে করিয়ে দেন।
*শেখ হাসিনাকে ফেরানো*
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা আশাবাদী। পৃথিবীতে কেউ কোনো খুনিকে জায়গা দিতে চায় না। হাসিনার হরর স্টোরি ভারতীয় গণমাধ্যমের অনেকে জানতোই না। ইদানিং অনেকেই লেখা শুরু করেছেন। পুরো পৃথিবী যখন বিষয়টি জানবে চাপটা তৈরি হবে। আমরা তাকে ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। যদি না পারি, পরে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা করবেন। এটা জাতির আকাক্সক্ষা।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘হাসিনা তার বাবার খুনিদের পার্স্যু করে অনেক জায়গা থেকে ফিরিয়ে এনে বিচার করেছিল। তার দ্বিগুণ পার্স্যু করে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা হবে।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ছয় সাংবাদিক হত্যার বিচারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘এটা আমাদের অগ্রাধিকার। অপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন করা হবে।’
আয়নাঘর
সাইবার সুরক্ষা আইনের বিষয়ে টিআইবির সমালোচনার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা সমালোচনাকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করি। এটা নিয়ে আসিফ নজরুল সাহেব কথা বলবেন।’ গুম কমিশন ভালো কাজ করছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘দুই-একটা আয়নাঘরে আপনাদের (সাংবাদিক) পরিদর্শনের ব্যবস্থা করব। সেখানে কী ভয়াবহভাবে গুম করা হতো, সেই চিত্র দেখতে পারবেন। হাসিনার আমলে পাপাচারের শেষ নেই।’
এ সময় তিনটি নির্বাচন, শাপলা চত্বরের ঘটনা, টাকা পাচারের ঘটনা উল্লেখ করেন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বিষয় নিয়ে কাজ হচ্ছে। হাসিনাকে আমরা বিচারের আওতায় আনবো।’
*সাগর-রুনি*
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘বিষয়টি আজকে (রোববার) পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) প্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছে। কারণ তারা ত্রিশ বছর আগের খুনের তদন্তও সফলভাবে করেছে। তাই তাদের সক্ষমতা আছে। বিষয়টি কষ্টসাধ্য হলেও প্রচুর সময় দিচ্ছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’
*বিটিভি-বাসস*
বিটিভি ও বাসসের স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিতে সরকার উদ্যোগ নেবে কিনা- এমন প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা সরকারি সংস্থাগুলোকে আরও বড় ও ক্ষমতাশালী করার চেষ্টা করছি। বিটিভি ও বাসসকে স্বাধীনতা দেয়া আছে। নিজ নিজ রোল অনুযায়ী প্রেস ফ্রিডম ব্যবহার করতে পারবেন। গত পাঁচমাসে দেশের গণমাধ্যম যতটা স্বাধীন ছিল, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে ছিল না।’
*ভিসা সেন্টার*
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘বুলগেরিয়া ভিসা সেন্টার ভারত থেকে ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে হস্তান্তরের কথা আগেই জানিয়েছে। ১২২ জন বাংলাদেশি ছাত্রকে তারা ভিসা দিয়েছে। রোমানিয়া, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের দূতাবাস থেকে ভিসা দেয়ার কথা জানিয়েছে। কাজাকিস্তান জানিয়েছে ব্যাংকক থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা দেবে। এ ছাড়া অন্যান্য দেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ও পশ্চিম ইউরোপীয় ডেস্ক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।’
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব আশরোফা ইমদাদ ও সুচিস্মিতা তিথি।