করোনাভাইরাসে প্রতিদিন মৃত্যুর নতুন রেকর্ড করছে, অন্যদিকে দিন যত যাচ্ছে কঠোর বিধিনিষেধ ততই শিথিল হচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে বাড়ছে ঢাকামুখী মানুষ এবং যানবাহনের চাপ। গণপরিবহন না চললেও সিএনজি অটোরিকশাসহ ছোট ছোট সব ধরনের যানবাহনই আস্তে আস্তে রাস্তায় বের হয়ে আসছে। মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর ভেতরে পুলিশের চেকপোস্টগুলো এখন অনেকটাই ঢিলেঢালা।
লকডাউনের কারণে প্রধান সড়কগুলোতে মানুষের ভীড় কম থাকলেও ব্যাক্তিগত গাড়ী বেশী। আবার অলিগলিতে ব্যাক্তিগত যানবহন কম দেখা গেলেও মানুষের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। তাদের কেউ বের হয়েছেন বাজার করতে, কেউ সকালের নাস্তা করতে। আবার কেউবা বের হয়েছেন হাঁটতে। গলির কিছু কিছু দোকানের শাটার অর্ধেক খোলা রেখে বিক্রি চলছে। ছোট কয়েকটি হোটেলে বসে খাওয়ার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে। বিশেষকরে গলিতে গলিতে চায়ের দোকানগুলোতে আড্ডা থেমে নেই। মোহাম্মদপুরের এক চা-দোকানদারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশ দুইবার টহলে আসে তখন দোকানের ঝাপ বন্ধ রেখে দেই। কঠোর বিধিনিষেধের ষষ্ঠ দিনে আজ বুধবার সকাল থেকে সব সড়কে যানবাহন এবং মানুষের চাপ বেড়েছে। নানা প্রয়োজনে মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছেন। ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান, বেশকিছু সরকারি এবং স্বায়ত্ত শাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস খোলা থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের লোকজন অফিসে যাওয়ার জন্য রাস্তায় বের হয়েছেন।
বনানীতে একটি বেসরকারী অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সরোয়ার জাহান সজীব বলেন, অফিস চালূ থাকার কারণে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যেই অফিসে যেতে হয়। যেহেতু অফিসে যেতে হয় সেহেতু কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের সুফল মিলছে না। মতিঝিলে কাজ করা এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, এখানকার প্রায় ৯০শতাংশ অফিস খোলা। অফিস যেহেতু খোলা তাই বিধিনিষেধের মধ্যেই আসতে হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারে আমিনুল ইসলাম জানান, পুলিশ দেখলে মানুষ একটু সর্তক হলেও বাজারের অবস্থা ভিন্ন। সেখানে কেউ যেমন স্বাস্থ্যবিধী মানছেনা তেমনি অবাধে চলাচল করছে। বিক্রেতাদের কারো মুখে মাস্ক নেই। দুই এক জনের থাকলেও সেটা গালায় ঝোলানো বা থুতনীতে আটকানো। শ্যামলীতে রিকশাচালক আরিফ বলেন, ‘আজ রাস্তায় মানুষ বেশি। অন্যদিরে চেয়ে ভাড়া বেশি পাইচি। কিন্ত অন্যদিনের তুলনায় রাস্তায় রিক্সাও বেশি।
গণ পরিবহণে যাতায়াত কারা যাত্রীদের মধ্যে আক্ষেপও দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ, পুলিশের কোনো বাধা নেই। নিম্ন আয়ের মানুষের জীবিকার ব্যবস্থা না করে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কষ্টে পড়ে মানুষগুলো সড়কে নামছে।
রাজধানীর শ্যামলি, কলেজগেট, ধানমন্ডি, পাস্থপথ, শাহবাগ, কাওরানবাজার বাংলামটর, ইন্দিরা রোডসহ নগরীর প্রতিটি প্রতিটি পয়েন্টেই দায়িত্ব পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশরা। রাস্তায় যানবাহন এবং মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় নগরীর বিভিন্ন স্থানের চেকপোস্টগুলোতেও শিথিলতা লক্ষ করা গেছে। কারওয়ান বাজার এলাকায় পুলিশ চেকপোস্টে অবস্থান নিলেও সব যানবাহন এবং লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে তাদের কোন আগ্রহ দেখা যায়নি।
শ্যামলীতে দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আজ সকাল ৮টার পর থেকে সড়কে গাড়ির ভিড় বাড়তে থাকে। সবাই কোন না কোন হাসপাতাল বা রোগীর সাথে যোগাযোগ করার কথা বললেও তারা ব্যাক্তিগত কাজের বাহিরে বের হচ্ছে। আমরা সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছি।
গণভবন এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) আতিক মাহমুদ সংবাদকে বলেন, আমরা অনান্য সময়ের চেয়ে বেশি এক্টিভলি কাজ করছি। তবুও সামলাতে হিমসিম খাচ্ছি। রাস্তায় বের হওয়া মানুষের নানান অভিযোগ। বেশিরভাগ সাধারণ যাত্রী হাসপাতালে যাবার কথা বলেন, কেউবা নিজেরা অসুস্থ বলে চেক পোষ্ট অতিক্রম করতে চায়।তাদের তো না ছেড়ে পারিনা।
তিনি আরো বলেন, আমরা নিজেরাও সাধ্যমাত বোঝানোর চেষ্টা করছি মানুষদের তারা যেন অকারণে বের না হন। যতক্ষণ না মানুষ নিজেরা সচেতন না হয় ততদিন লকডাউন আইন দিয়ে বাস্তবায়ন সম্ভবনা।
সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার।
বিধিনিষেধের মধ্যে খাদ্য ও খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন/প্রক্রিয়াজাতকরণ মিল কারখানা, কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ওষুধ, অক্সিজেন ও কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদনকারী শিল্প-কারখানা ছাড়া বন্ধ আছে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি ও বেসরকারি অফিস এবং শিল্পকারখানা। বন্ধ রয়েছে দোকান ও শপিংমলও। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাইরে বের হওয়াও নিষেধ।
বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১
করোনাভাইরাসে প্রতিদিন মৃত্যুর নতুন রেকর্ড করছে, অন্যদিকে দিন যত যাচ্ছে কঠোর বিধিনিষেধ ততই শিথিল হচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে বাড়ছে ঢাকামুখী মানুষ এবং যানবাহনের চাপ। গণপরিবহন না চললেও সিএনজি অটোরিকশাসহ ছোট ছোট সব ধরনের যানবাহনই আস্তে আস্তে রাস্তায় বের হয়ে আসছে। মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর ভেতরে পুলিশের চেকপোস্টগুলো এখন অনেকটাই ঢিলেঢালা।
লকডাউনের কারণে প্রধান সড়কগুলোতে মানুষের ভীড় কম থাকলেও ব্যাক্তিগত গাড়ী বেশী। আবার অলিগলিতে ব্যাক্তিগত যানবহন কম দেখা গেলেও মানুষের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। তাদের কেউ বের হয়েছেন বাজার করতে, কেউ সকালের নাস্তা করতে। আবার কেউবা বের হয়েছেন হাঁটতে। গলির কিছু কিছু দোকানের শাটার অর্ধেক খোলা রেখে বিক্রি চলছে। ছোট কয়েকটি হোটেলে বসে খাওয়ার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে। বিশেষকরে গলিতে গলিতে চায়ের দোকানগুলোতে আড্ডা থেমে নেই। মোহাম্মদপুরের এক চা-দোকানদারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশ দুইবার টহলে আসে তখন দোকানের ঝাপ বন্ধ রেখে দেই। কঠোর বিধিনিষেধের ষষ্ঠ দিনে আজ বুধবার সকাল থেকে সব সড়কে যানবাহন এবং মানুষের চাপ বেড়েছে। নানা প্রয়োজনে মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছেন। ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান, বেশকিছু সরকারি এবং স্বায়ত্ত শাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস খোলা থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের লোকজন অফিসে যাওয়ার জন্য রাস্তায় বের হয়েছেন।
বনানীতে একটি বেসরকারী অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সরোয়ার জাহান সজীব বলেন, অফিস চালূ থাকার কারণে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যেই অফিসে যেতে হয়। যেহেতু অফিসে যেতে হয় সেহেতু কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের সুফল মিলছে না। মতিঝিলে কাজ করা এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, এখানকার প্রায় ৯০শতাংশ অফিস খোলা। অফিস যেহেতু খোলা তাই বিধিনিষেধের মধ্যেই আসতে হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারে আমিনুল ইসলাম জানান, পুলিশ দেখলে মানুষ একটু সর্তক হলেও বাজারের অবস্থা ভিন্ন। সেখানে কেউ যেমন স্বাস্থ্যবিধী মানছেনা তেমনি অবাধে চলাচল করছে। বিক্রেতাদের কারো মুখে মাস্ক নেই। দুই এক জনের থাকলেও সেটা গালায় ঝোলানো বা থুতনীতে আটকানো। শ্যামলীতে রিকশাচালক আরিফ বলেন, ‘আজ রাস্তায় মানুষ বেশি। অন্যদিরে চেয়ে ভাড়া বেশি পাইচি। কিন্ত অন্যদিনের তুলনায় রাস্তায় রিক্সাও বেশি।
গণ পরিবহণে যাতায়াত কারা যাত্রীদের মধ্যে আক্ষেপও দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ, পুলিশের কোনো বাধা নেই। নিম্ন আয়ের মানুষের জীবিকার ব্যবস্থা না করে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কষ্টে পড়ে মানুষগুলো সড়কে নামছে।
রাজধানীর শ্যামলি, কলেজগেট, ধানমন্ডি, পাস্থপথ, শাহবাগ, কাওরানবাজার বাংলামটর, ইন্দিরা রোডসহ নগরীর প্রতিটি প্রতিটি পয়েন্টেই দায়িত্ব পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশরা। রাস্তায় যানবাহন এবং মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় নগরীর বিভিন্ন স্থানের চেকপোস্টগুলোতেও শিথিলতা লক্ষ করা গেছে। কারওয়ান বাজার এলাকায় পুলিশ চেকপোস্টে অবস্থান নিলেও সব যানবাহন এবং লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে তাদের কোন আগ্রহ দেখা যায়নি।
শ্যামলীতে দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আজ সকাল ৮টার পর থেকে সড়কে গাড়ির ভিড় বাড়তে থাকে। সবাই কোন না কোন হাসপাতাল বা রোগীর সাথে যোগাযোগ করার কথা বললেও তারা ব্যাক্তিগত কাজের বাহিরে বের হচ্ছে। আমরা সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছি।
গণভবন এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) আতিক মাহমুদ সংবাদকে বলেন, আমরা অনান্য সময়ের চেয়ে বেশি এক্টিভলি কাজ করছি। তবুও সামলাতে হিমসিম খাচ্ছি। রাস্তায় বের হওয়া মানুষের নানান অভিযোগ। বেশিরভাগ সাধারণ যাত্রী হাসপাতালে যাবার কথা বলেন, কেউবা নিজেরা অসুস্থ বলে চেক পোষ্ট অতিক্রম করতে চায়।তাদের তো না ছেড়ে পারিনা।
তিনি আরো বলেন, আমরা নিজেরাও সাধ্যমাত বোঝানোর চেষ্টা করছি মানুষদের তারা যেন অকারণে বের না হন। যতক্ষণ না মানুষ নিজেরা সচেতন না হয় ততদিন লকডাউন আইন দিয়ে বাস্তবায়ন সম্ভবনা।
সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার।
বিধিনিষেধের মধ্যে খাদ্য ও খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন/প্রক্রিয়াজাতকরণ মিল কারখানা, কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ওষুধ, অক্সিজেন ও কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদনকারী শিল্প-কারখানা ছাড়া বন্ধ আছে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি ও বেসরকারি অফিস এবং শিল্পকারখানা। বন্ধ রয়েছে দোকান ও শপিংমলও। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাইরে বের হওয়াও নিষেধ।