যশোর: বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছায় নবনির্মিত ব্রিজটি কপোতাক্ষ নদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্রিজের নিচ দিয়ে কোন ছোট-বড় নৌকা চলাচল করতে পারছে না-সংবাদ
এশিয়ান হাইওয়ের ঝিকরগাছায় (যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক) ভুল পরিকল্পনায় ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ এলাকাবাসী ও নদী সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টদের। দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে জাইকার অর্থায়নে ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি ব্রিজ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
কপোতাক্ষ নদের উপর নির্মিত নতুন ব্রিজের গার্ডারের নিচের অংশ এখনই সামান্য বৃষ্টিতে পানি ছুঁতে চলেছে। ফলে ভরা মৌসুমে এই ব্রিজের নিচ দিয়ে কোন নৌকা চলাচল করতে পারবে না। মূলত ব্রিজটি নদের গলার কাঁটায় পরিণত হবে।
দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল যেতে ঝিকরগাছা কপোতাক্ষ নদের উপর ৬০ বছরের পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের উপর দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করতে হয়। যে কারণে ব্রিজটি ভেঙে নদের উপর নতুন দুটি ব্রিজ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
দেড় বছর আগে এ ব্রিজটির পাশে শুরু হয় ৬ লেনের রাস্তার জন্য দুইটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ। তার মধ্যে একটি ব্রিজ নির্মাণ শেষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন দুইটি ব্রিজের মধ্যে একটির কাজ শেষ হয়েছে। শীঘ্রই এর পাশে শুরু হবে আরেকটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ। প্রতিটি ব্রিজ ১২০ মিটার লম্বা ও ১৫ মিটার চওড়া। দুটি করে পায়ার বা পিলার ও এবাটমেন্ট ওয়াল এবং ২১ গার্ডার বা ভিম দেয়া হয়েছে। পুরাতন ব্রিজটির চেয়ে দেড় মিটার উঁচু করা হয়েছে। ব্রিজটি পিসট্রেজ বা সমান করা আছে। কাজটি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মনিকো এবং ডেনকো। সম্প্রতি নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া ব্রিজটি দেখে এলাকাবাসী হতাশ হয়েছেন। পুরাতন ব্রিজের নিচের অংশ বা তলোদেশ কখনও নদের পানি স্পর্শ করতে পারেনি। অথচ, বৃষ্টিতে নদে পানি সামান্য বাড়ায় নির্মাণাধীন নতুন ব্রিজের নিচের অংশ বা তলোদেশকে পানি ছুঁতে চলেছে। ফলে, এলাকাবাসীর আশঙ্কা ভরা মৌসুমে নতুন এ ব্রিজের নিচ দিয়ে কপোতাক্ষ নদে কোনও নৌকাতো দূরের কথা একটি ডুঙ্গাও চলাচল করতে পারবে না।
এলাকাবাসী বলছে, নতুন ব্রিজ অনেক নিচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। এ ব্রিজের কারণে কপোতাক্ষ নদ আরও মরে গেলো। ঝিকরগাছা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইমরান রশীদ জানান, নতুন এ ব্রিজের কারণে নদ তার নাব্যতা হারাবে। ব্রিজের নকশা ঠিক হয়নি। ঝিকরগাছা মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ ইলিয়াস উদ্দীন জানান, আমরা শুনেছিলাম যে ব্রিজের কথা, তা তো নির্মাণ হলো না। পুরাতনটির নিচ দিয়ে নৌকা, জাহাজ চলাচল করতে পারলেও নতুন ব্রিজটির নিচ দিয়ে একটি ডুঙ্গাও যেতে পারবে না। নদকে মেরে ফেলতে নতুন ব্রিজই যথেষ্ট।
কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের ওয়াকার্স পাটির (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা ইকবাল কবীর জাহিদ জানান, নদের ওপর ব্রিজ করতে হলে অবশ্যই বিএডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নকশা অনুমোদন করতে হয়। কিন্তু ভুল নকশায় সওজ ব্রিজ দুটি নির্মাণ করছে। ব্রিজের নিচ দিয়ে কোন নৌযান চলাচল করতে পারবে না। সরকার যে নদী-খননকাজ করছে ব্রিজটি তার গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে।
উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বসু জানান, বন্যা বা প্রবল বর্ষায় ব্রিজের নিচ দিয়ে কোনও কিছু চলাচল করতে পারবে না। ব্রিজের গার্ডারের উচ্চতা কম করায় এমন হয়েছে। এক্ষেত্রে নদী পুনঃখনন করতে হবে। যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে। আমরা খতিয়ে দেখছি ভুল নকশায় ব্রিজটি করা হয়েছে কি না। কেননা, শীঘ্রই আমাদের কপোতাক্ষ খননকাজ শুরু করা হবে। ৮শ কোটি টাকার এই কাজের মধ্যে ইতোমধ্যে ৩৪ কিলোমিটারের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। ভুলভাবে ব্রিজটি করা হলে সবার জন্য ক্ষতির কারণ হবে।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ব্রিজ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান জানান, বিশেজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্রিজ দুটির নকশা করা হয়েছে। পুরাতন ব্রিজের মাপে এটি করা হচ্ছে। নদীর পানি যদি গার্ডারে লেগে যায় তাহলে নদী খনন করতে হবে। তা না হলে নিচ দিয়ে নৌযান চলতে পারবে না।
যশোর: বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছায় নবনির্মিত ব্রিজটি কপোতাক্ষ নদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্রিজের নিচ দিয়ে কোন ছোট-বড় নৌকা চলাচল করতে পারছে না-সংবাদ
বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১
এশিয়ান হাইওয়ের ঝিকরগাছায় (যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক) ভুল পরিকল্পনায় ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ এলাকাবাসী ও নদী সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টদের। দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে জাইকার অর্থায়নে ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি ব্রিজ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
কপোতাক্ষ নদের উপর নির্মিত নতুন ব্রিজের গার্ডারের নিচের অংশ এখনই সামান্য বৃষ্টিতে পানি ছুঁতে চলেছে। ফলে ভরা মৌসুমে এই ব্রিজের নিচ দিয়ে কোন নৌকা চলাচল করতে পারবে না। মূলত ব্রিজটি নদের গলার কাঁটায় পরিণত হবে।
দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল যেতে ঝিকরগাছা কপোতাক্ষ নদের উপর ৬০ বছরের পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের উপর দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করতে হয়। যে কারণে ব্রিজটি ভেঙে নদের উপর নতুন দুটি ব্রিজ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
দেড় বছর আগে এ ব্রিজটির পাশে শুরু হয় ৬ লেনের রাস্তার জন্য দুইটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ। তার মধ্যে একটি ব্রিজ নির্মাণ শেষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন দুইটি ব্রিজের মধ্যে একটির কাজ শেষ হয়েছে। শীঘ্রই এর পাশে শুরু হবে আরেকটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ। প্রতিটি ব্রিজ ১২০ মিটার লম্বা ও ১৫ মিটার চওড়া। দুটি করে পায়ার বা পিলার ও এবাটমেন্ট ওয়াল এবং ২১ গার্ডার বা ভিম দেয়া হয়েছে। পুরাতন ব্রিজটির চেয়ে দেড় মিটার উঁচু করা হয়েছে। ব্রিজটি পিসট্রেজ বা সমান করা আছে। কাজটি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মনিকো এবং ডেনকো। সম্প্রতি নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া ব্রিজটি দেখে এলাকাবাসী হতাশ হয়েছেন। পুরাতন ব্রিজের নিচের অংশ বা তলোদেশ কখনও নদের পানি স্পর্শ করতে পারেনি। অথচ, বৃষ্টিতে নদে পানি সামান্য বাড়ায় নির্মাণাধীন নতুন ব্রিজের নিচের অংশ বা তলোদেশকে পানি ছুঁতে চলেছে। ফলে, এলাকাবাসীর আশঙ্কা ভরা মৌসুমে নতুন এ ব্রিজের নিচ দিয়ে কপোতাক্ষ নদে কোনও নৌকাতো দূরের কথা একটি ডুঙ্গাও চলাচল করতে পারবে না।
এলাকাবাসী বলছে, নতুন ব্রিজ অনেক নিচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। এ ব্রিজের কারণে কপোতাক্ষ নদ আরও মরে গেলো। ঝিকরগাছা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইমরান রশীদ জানান, নতুন এ ব্রিজের কারণে নদ তার নাব্যতা হারাবে। ব্রিজের নকশা ঠিক হয়নি। ঝিকরগাছা মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ ইলিয়াস উদ্দীন জানান, আমরা শুনেছিলাম যে ব্রিজের কথা, তা তো নির্মাণ হলো না। পুরাতনটির নিচ দিয়ে নৌকা, জাহাজ চলাচল করতে পারলেও নতুন ব্রিজটির নিচ দিয়ে একটি ডুঙ্গাও যেতে পারবে না। নদকে মেরে ফেলতে নতুন ব্রিজই যথেষ্ট।
কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের ওয়াকার্স পাটির (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা ইকবাল কবীর জাহিদ জানান, নদের ওপর ব্রিজ করতে হলে অবশ্যই বিএডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নকশা অনুমোদন করতে হয়। কিন্তু ভুল নকশায় সওজ ব্রিজ দুটি নির্মাণ করছে। ব্রিজের নিচ দিয়ে কোন নৌযান চলাচল করতে পারবে না। সরকার যে নদী-খননকাজ করছে ব্রিজটি তার গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে।
উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বসু জানান, বন্যা বা প্রবল বর্ষায় ব্রিজের নিচ দিয়ে কোনও কিছু চলাচল করতে পারবে না। ব্রিজের গার্ডারের উচ্চতা কম করায় এমন হয়েছে। এক্ষেত্রে নদী পুনঃখনন করতে হবে। যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে। আমরা খতিয়ে দেখছি ভুল নকশায় ব্রিজটি করা হয়েছে কি না। কেননা, শীঘ্রই আমাদের কপোতাক্ষ খননকাজ শুরু করা হবে। ৮শ কোটি টাকার এই কাজের মধ্যে ইতোমধ্যে ৩৪ কিলোমিটারের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। ভুলভাবে ব্রিজটি করা হলে সবার জন্য ক্ষতির কারণ হবে।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ব্রিজ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান জানান, বিশেজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্রিজ দুটির নকশা করা হয়েছে। পুরাতন ব্রিজের মাপে এটি করা হচ্ছে। নদীর পানি যদি গার্ডারে লেগে যায় তাহলে নদী খনন করতে হবে। তা না হলে নিচ দিয়ে নৌযান চলতে পারবে না।