alt

জাতীয়

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন

ঈদযাত্রায় ২৬২ দুর্ঘটনায় ২৯৫ জন নিহত, ৪৮৮ জন আহত

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১

এবার ঈদুল আজহায় শহর থেকে গ্রামে যাওয়া এবং ছুটি শেষে শহরে ফিরে আসার সময় সড়ক, রেল ও নৌ-পথে ২৬২টি দুর্ঘটনায় ২৯৫ জন নিহত ও ৪৮৮ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সমিতির পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তন হলে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০২১ প্রকাশকালে এই তথ্য তুলে ধরেন। সংগঠনটির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল প্রতি বছরের ন্যায় এবারো প্রতিবেদনটি তৈরি করে।

লকডাউনের কারণে মানুষের যাতায়াত সীমিত হলেও স্বল্পসময়ের জন্য গণপরিবহন চালু করায় সড়কে গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগতযান বিশেষ করে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, অটোরিক্সা-ব্যাটারীচালিত রিক্সা, ট্রাক-পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানে একসাথে গাদাগাদি করে যাতায়াতের কারণে বিগত ৬ বছরের তুলনায় এবারের ঈদে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহাণি দুটোই বেড়েছে।

ঈদযাত্রা শুরুর দিন গত ১৪ জুলাই থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ২৮ জুলাই পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ২৪০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭৩ জন নিহত ৪৪৭ জন আহত হয়েছে। উল্লেখিত সময়ে রেলপথে ০৯ টি ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ০৫ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ১৩ টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ৩৬ জন আহত এবং ২১ জন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা মিলেছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে যৌথভাবে ২৬২টি দুর্ঘটনায় ২৯৫ জন নিহত ও ৪৮৮ জন আহত হয়েছে। তবে ২৩ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হওয়ার পর ২৫ জুলাই থেকে সড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণহাণি কমতে থাকে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ৮৭ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৯৩ জন নিহত, ৫৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৬.২৫ শতাংশ, নিহতের ৩৪.০৬ শতাংশ এবং আহতের ১৩.১৯ শতাংশ প্রায়।

এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় পড়েছেন এমন ১০৬ জন চালক, ১৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬৪ জন পথচারী, ৩৮ জন নারী, ৩১ জন শিশু, ১২ জন শিক্ষার্থী, ০৩ জন সাংবাদিক, ০৫ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১২ জন শিক্ষক, ০৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং ০১ জন প্রকৌশলীর পরিচয় মিলেছে।

এর মধ্যে নিহত হয়েছে ০২ জন পুলিশ সদস্য, ০১ জন সেনাবাহিনীর সদস্য, ০১ জন বিজিবি, ২৭ জন নারী, ১৭ জন শিশু , ০৯ জন শিক্ষার্থী, ০৯ জন শিক্ষক, ৮৭ জন চালক, ১৬ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৩ জন পথচারী, ০৩ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক ও অনলাইন দৈনিক এ প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।

সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ২৮.৪৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৮.৭৮ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-লরি, ৭.৪১ শতাংশ কার-মাইক্রো-জিপ, ৮.৬০ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা-মাহিন্দ্রা, ১০.৩৮ শতাংশ অটোরিক্সা, ৭.৭১ শতাংশ ব্যাটারী রিক্সা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল, ও ৮.৬০ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

সংগঠিত দুর্ঘটনার ২৫.৮৩ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪৪.২৫ শতাংশ পথচারীকে গাড়ী চাপা দেয়ার ঘটনা, ১৮.৩৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, ৭.৯১ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারনে ও ০.৮৩ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁছিয়ে এবং ০.৮৩ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৩.৩৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৪৩.৩৩ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ১৮.৩৩ শতাংশ ফিডার রোডে এবং ০.৮৩ শতাংশ রেল ক্রসিং এ সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩.৩৩ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৮৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে সংঘটিত হয়।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বিগত ঈদগুলোতে সরকারের নানা মহলের তৎপরতা থাকায় দুর্ঘটনার লাঘাম কিছুটা টেনে ধরা সক্ষম হলেও কঠোর লকডাউনের কারনে মানুষের যাতায়াত সীমিত থাকার পরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় এবারের ঈদযাত্রায় সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি তুলনামূলকভাবে বেড়েছে।

তিনি বলেন, সরকার সড়কের অবকাঠামোর উন্নয়নে যতটা মনযোগী সড়ক নিরাপত্তায় ততটা উদাসীন। বিগত একযুগে ধারাবাহিকভাবে সড়ক নিরাপত্তায় নানা প্রতিশ্রুতি, নানা চমকপ্রদ বক্তব্য, নানা আশ্বাস, নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও কোনকিছুই বাস্তবায়নে আলোর মুখ দেখে না। দুর্ঘটনার কারণসমূহঃ

১. লকডাউনের কারণে যানবাহনের বেপরোয়া গতিতে যাতায়াত।

২. জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মাকিং, সড়কবাতি না থাকা৩. জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকা,

৪. মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা। ৫. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন ইত্যাদি।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশঃ ১. জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা।২. দক্ষ চালক তৈরি ও যানবাহনের ত্রুটি সারানোর উদ্যোগ গ্রহন।৩. ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা।৪. সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘন্টা সুনিশ্চিত করা। ৫. সড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা।৬. সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে বাস্তবায়ন করা। ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ রোধ করা।৭. গণপরিবহন বিকশিত করা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।৮. মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।

ছবি

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের ‘পূর্ণ সমর্থন’ রয়েছে: রাষ্ট্রদূত

ছবি

সাবেক এমপি ও ক্রিকেট অধিনায়ক দুর্জয় গ্রেপ্তার

সাবেক সিইসি নূরুল হুদার জামিন নামঞ্জুর

‘দুর্নীতি করতে বিদেশে জনশক্তি পাঠানোর প্রক্রিয়া জটিল করা হয়’

ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১, আক্রান্ত ৪১৬ জন

ভুয়া তথ্য ঠেকাতে জাতিসংঘের উদ্যোগ চান প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

দালাই লামা জানালেন, পুরনো নিয়ম মেনে উত্তরসূরি ঠিক করবে ট্রাস্ট

ছবি

কন্যা-বাবা সহপাঠী, একই সঙ্গে দিচ্ছেন এইচএসসি

ছবি

পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মহাসড়ক অবরোধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা

এলপি গ্যাস: ১২ কেজি সিলিন্ডারে দাম কমলো ৩৯ টাকা

‘ভবিষ্যতে এনআইডি সেবা নিয়ে কোনো হয়রানির অভিযোগ থাকবে না’

৫ আগস্ট ‘জুলাই অভ্যুত্থান দিবসে’ সাধারণ ছুটি

ছবি

গত পাঁচ সপ্তাহে খাবারের জন্য অপেক্ষারত ৬০০-র বেশি প্যালেস্টাইনিকে হত্যা

এবার এনবিআরের তিন সদস্য ও এক কমিশনারকে অবসরে পাঠালো সরকার

৫ লাখ রিয়াল ছিনতাই: অর্ধেক উদ্ধার করে পুলিশ বলছে ঘটনা ‘পরিকল্পিত’

এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলনে বড় ধরনের ঝামেলায় পড়েছিল সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

সংসদ নির্বাচনে ইসিকে ৪.৮ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে জাপান

সীমানা নির্ধারণ ও তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে ‘ঐকমত্য হয়েছে’: আলী রীয়াজ

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে নৌবাহিনী, এরপর বিবেচনায় ডিপি ওয়ার্ল্ড

ছবি

আদালত অবমাননা: শেখ হাসিনাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড

ছবি

জুলাইয়ের তিনটি দিনকে বিশেষ দিবস ঘোষণা করল অন্তর্বর্তী সরকার

ছবি

আদালত অবমাননায় পলাতক শেখ হাসিনার ৬ মাস কারাদণ্ড

ছবি

জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে সমঝোতায় পৌঁছার আশা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের: আলী রীয়াজ

ছবি

আমরা জোর করে আসিনি, উড়ে এসেও বসিনি: সিইসি

ছবি

সংসদে প্রতিনিধিত্ব চায় জুলাই শহীদ পরিবার

ছবি

জুলাই শহীদদের তালিকায় যুক্ত হলো আরও ১০ জন

আগামী ছয় মাস নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলবে নিউমুরিং টার্মিনাল: অর্থ উপদেষ্টা

জ্যেষ্ঠতা যোগদানের তারিখ থেকে, রুল হাইকোর্টের

মগবাজারে হোটেলে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু

ডেঙ্গু: আরও ৩৮৬ জন আক্রান্ত, মৃত্যু ১

আদালতে সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ‘স্বীকারোক্তিমূলক’ জবানবন্দি

ছবি

বারোমাসিয়া নদীর ভাঙা সাঁকোয় বারোমাসই দুঃখ

ছবি

কক্সবাজারের সাবেক ডিসি, জজসহ ৫ জনের বিচার শুরু আগামী ৩ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ

ছবি

মুরাদনগরে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির ১৫ সদস্যের দল

ছবি

ইস্টার্ন রিফাইনারিতে গত অর্থবছরে তেল শোধন ১৫ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন

ছবি

এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

tab

জাতীয়

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন

ঈদযাত্রায় ২৬২ দুর্ঘটনায় ২৯৫ জন নিহত, ৪৮৮ জন আহত

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১

এবার ঈদুল আজহায় শহর থেকে গ্রামে যাওয়া এবং ছুটি শেষে শহরে ফিরে আসার সময় সড়ক, রেল ও নৌ-পথে ২৬২টি দুর্ঘটনায় ২৯৫ জন নিহত ও ৪৮৮ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সমিতির পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তন হলে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০২১ প্রকাশকালে এই তথ্য তুলে ধরেন। সংগঠনটির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল প্রতি বছরের ন্যায় এবারো প্রতিবেদনটি তৈরি করে।

লকডাউনের কারণে মানুষের যাতায়াত সীমিত হলেও স্বল্পসময়ের জন্য গণপরিবহন চালু করায় সড়কে গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগতযান বিশেষ করে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, অটোরিক্সা-ব্যাটারীচালিত রিক্সা, ট্রাক-পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানে একসাথে গাদাগাদি করে যাতায়াতের কারণে বিগত ৬ বছরের তুলনায় এবারের ঈদে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহাণি দুটোই বেড়েছে।

ঈদযাত্রা শুরুর দিন গত ১৪ জুলাই থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ২৮ জুলাই পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ২৪০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭৩ জন নিহত ৪৪৭ জন আহত হয়েছে। উল্লেখিত সময়ে রেলপথে ০৯ টি ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ০৫ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ১৩ টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ৩৬ জন আহত এবং ২১ জন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা মিলেছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে যৌথভাবে ২৬২টি দুর্ঘটনায় ২৯৫ জন নিহত ও ৪৮৮ জন আহত হয়েছে। তবে ২৩ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হওয়ার পর ২৫ জুলাই থেকে সড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণহাণি কমতে থাকে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ৮৭ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৯৩ জন নিহত, ৫৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৬.২৫ শতাংশ, নিহতের ৩৪.০৬ শতাংশ এবং আহতের ১৩.১৯ শতাংশ প্রায়।

এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় পড়েছেন এমন ১০৬ জন চালক, ১৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬৪ জন পথচারী, ৩৮ জন নারী, ৩১ জন শিশু, ১২ জন শিক্ষার্থী, ০৩ জন সাংবাদিক, ০৫ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১২ জন শিক্ষক, ০৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং ০১ জন প্রকৌশলীর পরিচয় মিলেছে।

এর মধ্যে নিহত হয়েছে ০২ জন পুলিশ সদস্য, ০১ জন সেনাবাহিনীর সদস্য, ০১ জন বিজিবি, ২৭ জন নারী, ১৭ জন শিশু , ০৯ জন শিক্ষার্থী, ০৯ জন শিক্ষক, ৮৭ জন চালক, ১৬ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৩ জন পথচারী, ০৩ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক ও অনলাইন দৈনিক এ প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।

সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ২৮.৪৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৮.৭৮ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-লরি, ৭.৪১ শতাংশ কার-মাইক্রো-জিপ, ৮.৬০ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা-মাহিন্দ্রা, ১০.৩৮ শতাংশ অটোরিক্সা, ৭.৭১ শতাংশ ব্যাটারী রিক্সা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল, ও ৮.৬০ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

সংগঠিত দুর্ঘটনার ২৫.৮৩ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪৪.২৫ শতাংশ পথচারীকে গাড়ী চাপা দেয়ার ঘটনা, ১৮.৩৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, ৭.৯১ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারনে ও ০.৮৩ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁছিয়ে এবং ০.৮৩ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৩.৩৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৪৩.৩৩ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ১৮.৩৩ শতাংশ ফিডার রোডে এবং ০.৮৩ শতাংশ রেল ক্রসিং এ সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩.৩৩ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৮৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে সংঘটিত হয়।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বিগত ঈদগুলোতে সরকারের নানা মহলের তৎপরতা থাকায় দুর্ঘটনার লাঘাম কিছুটা টেনে ধরা সক্ষম হলেও কঠোর লকডাউনের কারনে মানুষের যাতায়াত সীমিত থাকার পরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় এবারের ঈদযাত্রায় সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি তুলনামূলকভাবে বেড়েছে।

তিনি বলেন, সরকার সড়কের অবকাঠামোর উন্নয়নে যতটা মনযোগী সড়ক নিরাপত্তায় ততটা উদাসীন। বিগত একযুগে ধারাবাহিকভাবে সড়ক নিরাপত্তায় নানা প্রতিশ্রুতি, নানা চমকপ্রদ বক্তব্য, নানা আশ্বাস, নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও কোনকিছুই বাস্তবায়নে আলোর মুখ দেখে না। দুর্ঘটনার কারণসমূহঃ

১. লকডাউনের কারণে যানবাহনের বেপরোয়া গতিতে যাতায়াত।

২. জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মাকিং, সড়কবাতি না থাকা৩. জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকা,

৪. মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা। ৫. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন ইত্যাদি।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশঃ ১. জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা।২. দক্ষ চালক তৈরি ও যানবাহনের ত্রুটি সারানোর উদ্যোগ গ্রহন।৩. ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা।৪. সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘন্টা সুনিশ্চিত করা। ৫. সড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা।৬. সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে বাস্তবায়ন করা। ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ রোধ করা।৭. গণপরিবহন বিকশিত করা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।৮. মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।

back to top