alt

জাতীয়

করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও শনাক্ত জুলাইয়ে

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১

করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে জুলাই মাসে। এই মাসেই করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ছয় হাজার ১৮২ জন। আর বিদায়ী মাসে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে তিন লাখ ৩৬ হাজার ২২৬ জনের শরীরে। দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা শনাক্তের কোনও মাসেই এত বেশি প্রাণহানি ও রোগী শনাক্ত হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ জুন পর্যন্ত করোনায় মোট ১৪ হাজার ৫০৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওইদিন পর্যন্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল নয় লাখ ১৩ হাজার ২৫৮ জন। আর শনিবার (৩১ জুলাই) মোট মৃত্যু দাঁড়ায় ২০ হাজার ৬৮৫ জনে, শনাক্ত দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ জনে।

এক সপ্তাহে দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত প্রায় ৫৮ শতাংশ বেড়েছে। এই সময়ে মৃত্যু বেড়েছে ১৯ শতাংশের বেশি। এক সপ্তাহে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হলেও নমুনা পরীক্ষা ও সুস্থতার হার বেড়েছে।

তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে নমুনা পরীক্ষা কম হওয়ায় করোনা শনাক্তের সংখ্যা কমেছে। শনাক্ত কমলেও পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার কমেনি। এই হার শনিবারও ৩০ শতাংশের ওপরেই ছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের ২২টি জেলার প্রতিটিতে একশ জনের বেশি মানুষের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আর সাত জেলায় প্রতিটিতে অর্ধশতকের বেশি করে রোগী পাওয়া গেছে।

জেলাভিত্তিক হিসেবে, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় প্রায় আড়াই হাজার, চট্টগ্রামে প্রায় সাড়ে সাতশ ও কুমিল্লায় সাত শতাধিক মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পেয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

এক সপ্তাহের সংক্রমণ ও মৃত্যুহার
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৫ জুলাই থেকে শনিবার পর্যন্ত এক সপ্তাহে দেশে ৯৬ হাজার ১৪০ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আগের সপ্তাহে ৬০ হাজার ৯৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এ হিসাবে এক সপ্তাহে সংক্রমণ বেড়েছে ৫৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

আগের সপ্তাহে দেশে করোনায় এক হাজার ৩৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আর গত এক সপ্তাহে মারা গেছেন এক হাজার ৬৩৯ জন। এ হিসাবে এক সপ্তাহে মৃত্যু বেড়েছে ১৯ দশমিক ০৩ শতাংশ।

এছাড়া গত এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা ৫৯ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৩৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়েছে।

একদিনে মৃত্যু ২১৮ জন ও শনাক্ত ৯,৩৬৯ জন :

দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ২১৮ জন। এই সময়ে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে ৯ হাজার ৩৬৯ জনের শরীরে।

একদিনে মারা যাওয়া লোকজনকে নিয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ২০ হাজার ৬৮৫ জনে। আর নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীদের নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ জনে।

শনিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ১৭ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হলেন দশ লাখ ৭৮ হাজার ২১২ জন।

পরীক্ষা কম, তাই শনাক্তও কম :

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩০ হাজার ৯৮০টি। এর আগের দিন ৪৫ হাজারের বেশি। ২৯ জুলাই ৫২ হাজারের বেশি ও ২৮ জুলাই ৫৪ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষার কথা জানানো হয়।

অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাধারণত শুক্রবার ছুটির দিনে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা কম হয়। কারণ, অনেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছুটিতে থাকেন, আবার বন্ধের দিনে অনেক রোগীও নমুনা দিতে খুব একটা আগ্রহ দেখায় না।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার পরীক্ষাসহ এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭৭ লাখ ৪০ হাজার ৮৯৪টি। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং মোট শনাক্ত অনুপাতে মৃত্যুর হার এক দশমিক ৬৬ শতাংশ।

একদিনে মারা যাওয়া ২১৮ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩৪ জন এবং নারী ৮৪ জন। এ পর্যন্ত মারা যাওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার তিনজন এবং নারী ছিলেন ছয় হাজার ৬৮২ জন।

বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় গেছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে দুইজনের বয়স ১০০ বছরের বেশি ছিল। এছাড়া ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে চারজন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৩৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৬৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৩৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৭ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছয়জন এবং শূন্য থেকে দশ বছরের মধ্যে এক জন মারা গেছেন।

বিভাগভিত্তিক তথ্যে দেখা যায়, একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন ৬৭ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ৫৫ জন, রাজশাহীতে ২২ জন, খুলনায় ২৭ জন, বরিশালে ১০ জন, সিলেটে নয়জন, রংপুরে ১৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সরকারি হাসপাতালে ১৫৬ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৪৯ জন এবং বাসায় মারা গেছেন ১৩ জন।

শনাক্ত বেশি ২৯ জেলায় :

জেলা হিসেবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকায়। এদিন মহানগরসহ ঢাকা জেলায় দুই হাজার ৫৮৩ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

২৪ ঘণ্টায় আরও ২১টি জেলায় একশ জনের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের অন্য জেলার মধ্যে ফরিদপুরে ১৩২ জন, গাজীপুরে ২৫৭ জন, গোপালগঞ্জে ১৩০ জন, কিশোরগঞ্জে ১৪১ জন, মুন্সিগঞ্জে ২৬৭ জন, নারায়ণগঞ্জে ২২১ জন, নরসিংদীতে ১০২ জন, রাজবাড়ীতে ১৫১ জন, টাঙ্গাইলে ১১৬ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়াও মাদারীপুরে ৫০ জন, মানিকগঞ্জে ৮৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

চট্রগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৭৪২ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই বিভাগের অন্য জেলার মধ্যে কক্সবাজারে ২০১ জন, ফেনীতে ১২০ জন, নোয়াখালীতে ২২১ জন, লক্ষীপুরে ২২২ জন, চাঁদপুরে ২৯২ জন, কুমিল্লায় ৭১৬ জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৬০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে।

রাজশাহী বিভাগের মধ্যে রাজশাহী জেলায় একদিনে ১১১ জন, সিরাজগঞ্জে ১৭০ জন, বগুড়ায় ১০১ জন ও পাবনায় ৬৮ জন ‘কোভিড-১৯’ রোগী পাওয়া গেছে।

খুলনা বিভাগের মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় যশোরে ১০৯ জন, খুলনায় ১৪৫ জন, ঝিনাইদহে ৮১ জন, মেহেরপুরে ৭৯ জন ও মাগুরায় ৫৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।

বরিশাল বিভাগের মধ্যে একদিনে ভোলায় ১৫৯ জন ও বরিশাল জেলায় ১১৯ জনের করোনা পাওয়া গেছে।

সিলেট বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলায় ২০৯ জন ও মৌলভীবাজারে ৫৫ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এছাড়া ময়মনসিংহে ২০৭ জন ও রংপুরে ৭৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

ছবি

পদত্যাগ না করেই ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন

ছবি

বান্দরবানের তিন উপজেলায় ভোট স্থগিত : ইসি সচিব

ছবি

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড , আছে লোড শেডিংও

ছবি

বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই

ছবি

ঢাকা থেকে প্রধান ১৫টি রুটে ট্রেনের ভাড়া যত বাড়ল

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কাতারের আমির

ছবি

তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বাড়লো আরও ৩ দিন, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ

ছবি

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক আর্মি কমান্ড এর যৌথ অংশগ্রহণে টিএল-২০২৪ উদ্বোধন

ছবি

শিশু অধিকার বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টিতে মিডিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ--স্পীকার

ছবি

দু’দিনের সফরে কাতারের আমির ঢাকায়

ছবি

পাঁচ দিনের সফরে বুধবার থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

৪ মে থেকে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া

ছবি

আনু মুহাম্মদের পায়ে ‌‘কম্বাইন্ড অপারেশন’ দরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ছবি

আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা

ছবি

তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা, বাড়লো আরও ৩ দিন

ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই কি এত তাপ?

ছবি

ভারতের উজানে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ায় তিস্তা মরা খালে পরিনত হয়েছে

ছবি

তাপদাহ : হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

ছবি

পিছিয়ে নেই নারীরাও তামিলনাড়ু থেকে ট্রাক নিয়ে বেনাপোল এলেন অন্নপূর্ণা

ছবি

দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা আসছেন কাতারের আমির, ১১ টি চুক্তি-সমঝোতা

ছবি

অন্যায় আবদারের কাছে মাথানত করবো না: ইসি আলমগীর

ছবি

তীব্র গরম : হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রাখতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশ

ছবি

দাবদাহ : হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

ছবি

বোরো মৌসুমে ৩২ টাকা কেজি দরে ধান কিনবে সরকার

ছবি

ব্যারিস্টার খোকনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি

ছবি

‘মুজিব ব্যাটারি’ কমপ্লেক্স উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

দীর্ঘ ছুটি শেষে খুলেছে সুপ্রিম কোর্ট

ছবি

হিট অ্যালার্টের মধ্যেই ৬০ কি.মি. বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে

দাবদাহে ‘কপাল পোড়ার’ শঙ্কায় কৃষক, শুকিয়ে যাচ্ছে ধান ক্ষেত, মরছে সবজির গাছ

ছবি

সোমবার থেকে ৪ দিনব্যাপী ন্যাপ এক্সপো, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে দেয়া হবে:প্রতিমন্ত্রী

ছবি

গরমের কারণে সব সরকারি স্কুল, কলেজ আরও ৭ দিন বন্ধ

ছবি

ট্রাফিক সদস্যদের ছাতা-স্যালাইন-জুস-শরবত দিলেন আইজিপি

ছবি

ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮ : যাত্রী কল্যাণ সমিতি

ছবি

ফুলেল শ্রদ্ধায় শিব নারায়ণ দাশকে বিদায়

ছবি

দেশে ইন্টারনেট সেবায় ব্যাঘাত

tab

জাতীয়

করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও শনাক্ত জুলাইয়ে

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১

করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে জুলাই মাসে। এই মাসেই করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ছয় হাজার ১৮২ জন। আর বিদায়ী মাসে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে তিন লাখ ৩৬ হাজার ২২৬ জনের শরীরে। দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা শনাক্তের কোনও মাসেই এত বেশি প্রাণহানি ও রোগী শনাক্ত হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ জুন পর্যন্ত করোনায় মোট ১৪ হাজার ৫০৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওইদিন পর্যন্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল নয় লাখ ১৩ হাজার ২৫৮ জন। আর শনিবার (৩১ জুলাই) মোট মৃত্যু দাঁড়ায় ২০ হাজার ৬৮৫ জনে, শনাক্ত দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ জনে।

এক সপ্তাহে দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত প্রায় ৫৮ শতাংশ বেড়েছে। এই সময়ে মৃত্যু বেড়েছে ১৯ শতাংশের বেশি। এক সপ্তাহে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হলেও নমুনা পরীক্ষা ও সুস্থতার হার বেড়েছে।

তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে নমুনা পরীক্ষা কম হওয়ায় করোনা শনাক্তের সংখ্যা কমেছে। শনাক্ত কমলেও পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার কমেনি। এই হার শনিবারও ৩০ শতাংশের ওপরেই ছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের ২২টি জেলার প্রতিটিতে একশ জনের বেশি মানুষের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আর সাত জেলায় প্রতিটিতে অর্ধশতকের বেশি করে রোগী পাওয়া গেছে।

জেলাভিত্তিক হিসেবে, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় প্রায় আড়াই হাজার, চট্টগ্রামে প্রায় সাড়ে সাতশ ও কুমিল্লায় সাত শতাধিক মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পেয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

এক সপ্তাহের সংক্রমণ ও মৃত্যুহার
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৫ জুলাই থেকে শনিবার পর্যন্ত এক সপ্তাহে দেশে ৯৬ হাজার ১৪০ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আগের সপ্তাহে ৬০ হাজার ৯৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এ হিসাবে এক সপ্তাহে সংক্রমণ বেড়েছে ৫৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

আগের সপ্তাহে দেশে করোনায় এক হাজার ৩৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আর গত এক সপ্তাহে মারা গেছেন এক হাজার ৬৩৯ জন। এ হিসাবে এক সপ্তাহে মৃত্যু বেড়েছে ১৯ দশমিক ০৩ শতাংশ।

এছাড়া গত এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা ৫৯ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৩৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়েছে।

একদিনে মৃত্যু ২১৮ জন ও শনাক্ত ৯,৩৬৯ জন :

দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ২১৮ জন। এই সময়ে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে ৯ হাজার ৩৬৯ জনের শরীরে।

একদিনে মারা যাওয়া লোকজনকে নিয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ২০ হাজার ৬৮৫ জনে। আর নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীদের নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ জনে।

শনিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ১৭ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হলেন দশ লাখ ৭৮ হাজার ২১২ জন।

পরীক্ষা কম, তাই শনাক্তও কম :

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩০ হাজার ৯৮০টি। এর আগের দিন ৪৫ হাজারের বেশি। ২৯ জুলাই ৫২ হাজারের বেশি ও ২৮ জুলাই ৫৪ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষার কথা জানানো হয়।

অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাধারণত শুক্রবার ছুটির দিনে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা কম হয়। কারণ, অনেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছুটিতে থাকেন, আবার বন্ধের দিনে অনেক রোগীও নমুনা দিতে খুব একটা আগ্রহ দেখায় না।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার পরীক্ষাসহ এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭৭ লাখ ৪০ হাজার ৮৯৪টি। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং মোট শনাক্ত অনুপাতে মৃত্যুর হার এক দশমিক ৬৬ শতাংশ।

একদিনে মারা যাওয়া ২১৮ জনের মধ্যে পুরুষ ১৩৪ জন এবং নারী ৮৪ জন। এ পর্যন্ত মারা যাওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার তিনজন এবং নারী ছিলেন ছয় হাজার ৬৮২ জন।

বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় গেছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে দুইজনের বয়স ১০০ বছরের বেশি ছিল। এছাড়া ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে চারজন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৩৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৬৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৩৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৭ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছয়জন এবং শূন্য থেকে দশ বছরের মধ্যে এক জন মারা গেছেন।

বিভাগভিত্তিক তথ্যে দেখা যায়, একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন ৬৭ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ৫৫ জন, রাজশাহীতে ২২ জন, খুলনায় ২৭ জন, বরিশালে ১০ জন, সিলেটে নয়জন, রংপুরে ১৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সরকারি হাসপাতালে ১৫৬ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৪৯ জন এবং বাসায় মারা গেছেন ১৩ জন।

শনাক্ত বেশি ২৯ জেলায় :

জেলা হিসেবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকায়। এদিন মহানগরসহ ঢাকা জেলায় দুই হাজার ৫৮৩ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

২৪ ঘণ্টায় আরও ২১টি জেলায় একশ জনের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের অন্য জেলার মধ্যে ফরিদপুরে ১৩২ জন, গাজীপুরে ২৫৭ জন, গোপালগঞ্জে ১৩০ জন, কিশোরগঞ্জে ১৪১ জন, মুন্সিগঞ্জে ২৬৭ জন, নারায়ণগঞ্জে ২২১ জন, নরসিংদীতে ১০২ জন, রাজবাড়ীতে ১৫১ জন, টাঙ্গাইলে ১১৬ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এছাড়াও মাদারীপুরে ৫০ জন, মানিকগঞ্জে ৮৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

চট্রগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৭৪২ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই বিভাগের অন্য জেলার মধ্যে কক্সবাজারে ২০১ জন, ফেনীতে ১২০ জন, নোয়াখালীতে ২২১ জন, লক্ষীপুরে ২২২ জন, চাঁদপুরে ২৯২ জন, কুমিল্লায় ৭১৬ জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৬০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে।

রাজশাহী বিভাগের মধ্যে রাজশাহী জেলায় একদিনে ১১১ জন, সিরাজগঞ্জে ১৭০ জন, বগুড়ায় ১০১ জন ও পাবনায় ৬৮ জন ‘কোভিড-১৯’ রোগী পাওয়া গেছে।

খুলনা বিভাগের মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় যশোরে ১০৯ জন, খুলনায় ১৪৫ জন, ঝিনাইদহে ৮১ জন, মেহেরপুরে ৭৯ জন ও মাগুরায় ৫৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।

বরিশাল বিভাগের মধ্যে একদিনে ভোলায় ১৫৯ জন ও বরিশাল জেলায় ১১৯ জনের করোনা পাওয়া গেছে।

সিলেট বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলায় ২০৯ জন ও মৌলভীবাজারে ৫৫ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এছাড়া ময়মনসিংহে ২০৭ জন ও রংপুরে ৭৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে।

back to top