আইএইএ সম্মেলন
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেছেন, সরকারের স্বচ্ছ পরমাণু নীতি, অংশীজনদের অক্লান্ত শ্রম, দ্বিপক্ষীয় অংশীজনের সহায়তা এবং সর্বোপরি আইএইএ’র অকুণ্ঠ সমর্থনে বাংলাদেশ সফলভাবে পরমাণু কর্মসূচি বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যা এই খাতে নবাগত যে কোনো দেশের জন্য অনন্য উদাহরণ হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারবে। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) চলমান আইএইএ (আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা) জেনারেল কনফারেন্সে এসব কথা বলেন তিনি।
পাঁচ দিনব্যাপী এবারের সম্মেলনে স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে আছেন- বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের (বিএইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সানোয়ার হোসেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর এবং অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান অলোক চক্রবর্তী। সম্মেলনে সংস্থাটির দুইশ’ সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সম্মেলনের মূল আয়োজনে বাংলাদেশের পক্ষে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য তুলে ধরেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আইএইএ’র সদস্যদেশগুলোতে কোভিড-১৯ নিহতদের স্মরণে শোক প্রকাশ করেন। করোনার মধ্যেও এই সংস্থা জটিলতা সামলে সব কাজ অব্যাহত রাখায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। বক্তব্যে মহামারি প্রতিরোধে সদস্য দেশগুলোর জন্য আইএইএ কর্তৃক পরিচালিত জোডিয়াক (প্রাণিবাহিত রোগ প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ) প্রকল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন বিজ্ঞানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সর্বান্তকরণে বিশ্বাস করে এর ফলে মহামারি রোধ সহজ হয়েছে। বাংলাদেশকে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, এ জন্য পরমাণু শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তিকে নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব ও অর্থনৈতিকভাবে সফল প্রযুক্তি হিসেবেই বিবেচনা করে। জানান, তার দেশ দৃঢ়ভাবে পরমাণুর শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ করেই এগিয়ে যেতে চায়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণকাজের অগ্রগতি নিয়েও সম্মেলনে আইএইএকে অবহিত করেন মন্ত্রী। তিনি জানান, ২০১৭ সালে এই কেন্দ্রের ইউনিট-১ এর ফার্স্ট কংক্রিট ঢালাই এবং ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই দ্বিতীয় ইউনিটের ফার্স্ট কংক্রিট ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। এই দিনগুলোকে বাংলাদেশের পরমাণুর জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। করোনার মধ্যেও সাবধানতা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রকল্পটির কাজ চলমান এগিয়ে চলেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল ইনস্টলেশন শুরু করেছে প্রকৌশলীরা। আশা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালে এখানকার দ্বিতীয় ইউনিট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করা সম্ভব হবে।
স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, বাংলাদেশ আইএইএ’র প্রযুক্তিগত সব মাইলফলক অনুসরণ করেই কাজ করছে। তিনি জানান, নিরাপত্তার দিকে দৃঢ়ভাবে দৃষ্টি রেখেই বাংলাদেশ পরমাণু অবকাঠামো থেকে শুরু করে এই সংক্রান্ত সার্বিক কর্মসম্পাদন করে যাচ্ছে। এছাড়া, ২০২৩ সাল নাগাদ নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বজায় রেখে প্রথম ইউনিটের ফুয়েল লোডের (জ্বালানি ভরা সংক্রান্ত) আগেই বাংলাদেশ আইএইএ’র গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি মিশনের সম্মুখীন হতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান বিজ্ঞান মন্ত্রী। রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তুলতে বাংলাদেশ ওতপ্রোতভাবে আইএইএ’র সঙ্গে কাজ করছে বলেও জানান মন্ত্রী।
পরমাণু খাতে বাংলাদেশ আইএইএ’র তত্ত্বাবধান ও কর্মপরিকল্পনায় নতুন দেশ হিসেবে সফলতার সঙ্গে জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ইয়াফেস ওসমান। পরমাণু বিদ্যুৎ ছাড়াও এর আওতায় স্বাস্থ্য-কৃষি-পরিবেশসহ বিভিন্ন খাতে আইএইএ’র প্রযুক্তিগত সহায়তা আর্থ-সামাজিকভাবেও বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে ব্যাপক সহায়তা করছে। আগামী দিনেও সংস্থাটি এমন সহায়তার ধারা অব্যাহত রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন বিজ্ঞান মন্ত্রী। পাশাপাশি পরমাণু প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সংস্থাটিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিরবচ্ছিন্ন সহায়তা করে যাওয়ার কথাও ব্যক্ত করা হয় সম্মেলনে।
আইএইএ সম্মেলন
মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেছেন, সরকারের স্বচ্ছ পরমাণু নীতি, অংশীজনদের অক্লান্ত শ্রম, দ্বিপক্ষীয় অংশীজনের সহায়তা এবং সর্বোপরি আইএইএ’র অকুণ্ঠ সমর্থনে বাংলাদেশ সফলভাবে পরমাণু কর্মসূচি বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যা এই খাতে নবাগত যে কোনো দেশের জন্য অনন্য উদাহরণ হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারবে। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) চলমান আইএইএ (আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা) জেনারেল কনফারেন্সে এসব কথা বলেন তিনি।
পাঁচ দিনব্যাপী এবারের সম্মেলনে স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে আছেন- বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের (বিএইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সানোয়ার হোসেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর এবং অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান অলোক চক্রবর্তী। সম্মেলনে সংস্থাটির দুইশ’ সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সম্মেলনের মূল আয়োজনে বাংলাদেশের পক্ষে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য তুলে ধরেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আইএইএ’র সদস্যদেশগুলোতে কোভিড-১৯ নিহতদের স্মরণে শোক প্রকাশ করেন। করোনার মধ্যেও এই সংস্থা জটিলতা সামলে সব কাজ অব্যাহত রাখায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। বক্তব্যে মহামারি প্রতিরোধে সদস্য দেশগুলোর জন্য আইএইএ কর্তৃক পরিচালিত জোডিয়াক (প্রাণিবাহিত রোগ প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ) প্রকল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন বিজ্ঞানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সর্বান্তকরণে বিশ্বাস করে এর ফলে মহামারি রোধ সহজ হয়েছে। বাংলাদেশকে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, এ জন্য পরমাণু শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তিকে নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব ও অর্থনৈতিকভাবে সফল প্রযুক্তি হিসেবেই বিবেচনা করে। জানান, তার দেশ দৃঢ়ভাবে পরমাণুর শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ করেই এগিয়ে যেতে চায়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণকাজের অগ্রগতি নিয়েও সম্মেলনে আইএইএকে অবহিত করেন মন্ত্রী। তিনি জানান, ২০১৭ সালে এই কেন্দ্রের ইউনিট-১ এর ফার্স্ট কংক্রিট ঢালাই এবং ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই দ্বিতীয় ইউনিটের ফার্স্ট কংক্রিট ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। এই দিনগুলোকে বাংলাদেশের পরমাণুর জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। করোনার মধ্যেও সাবধানতা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রকল্পটির কাজ চলমান এগিয়ে চলেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল ইনস্টলেশন শুরু করেছে প্রকৌশলীরা। আশা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালে এখানকার দ্বিতীয় ইউনিট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করা সম্ভব হবে।
স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, বাংলাদেশ আইএইএ’র প্রযুক্তিগত সব মাইলফলক অনুসরণ করেই কাজ করছে। তিনি জানান, নিরাপত্তার দিকে দৃঢ়ভাবে দৃষ্টি রেখেই বাংলাদেশ পরমাণু অবকাঠামো থেকে শুরু করে এই সংক্রান্ত সার্বিক কর্মসম্পাদন করে যাচ্ছে। এছাড়া, ২০২৩ সাল নাগাদ নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বজায় রেখে প্রথম ইউনিটের ফুয়েল লোডের (জ্বালানি ভরা সংক্রান্ত) আগেই বাংলাদেশ আইএইএ’র গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি মিশনের সম্মুখীন হতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান বিজ্ঞান মন্ত্রী। রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তুলতে বাংলাদেশ ওতপ্রোতভাবে আইএইএ’র সঙ্গে কাজ করছে বলেও জানান মন্ত্রী।
পরমাণু খাতে বাংলাদেশ আইএইএ’র তত্ত্বাবধান ও কর্মপরিকল্পনায় নতুন দেশ হিসেবে সফলতার সঙ্গে জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ইয়াফেস ওসমান। পরমাণু বিদ্যুৎ ছাড়াও এর আওতায় স্বাস্থ্য-কৃষি-পরিবেশসহ বিভিন্ন খাতে আইএইএ’র প্রযুক্তিগত সহায়তা আর্থ-সামাজিকভাবেও বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে ব্যাপক সহায়তা করছে। আগামী দিনেও সংস্থাটি এমন সহায়তার ধারা অব্যাহত রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন বিজ্ঞান মন্ত্রী। পাশাপাশি পরমাণু প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সংস্থাটিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিরবচ্ছিন্ন সহায়তা করে যাওয়ার কথাও ব্যক্ত করা হয় সম্মেলনে।