লিভার প্রতিস্থাপনসহ উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্য ক্লিনিকে ভর্তি, যুক্তরাষ্ট্রে জনস হপকিনস হাসপাতালেও চিকিৎসার পরিকল্পনা
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল লন্ডনে পৌঁছেছেন। স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে তাঁর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি অবতরণ করে। বাংলাদেশ সময় তখন বেলা ৩টা ১৫ মিনিট। বিমানবন্দরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান মা-কে বরণ করেন। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান এবং আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
হিথরো বিমানবন্দর থেকে সরাসরি খালেদা জিয়াকে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে ‘দ্য ক্লিনিক’ নামক একটি বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়েছে। ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
বাংলাদেশ থেকে আসা চিকিৎসক দল যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকদের কাছে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ চিকিৎসার তথ্য ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বুঝিয়ে দিয়েছেন। এর আগে খালেদা জিয়া কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে পৌঁছান।
দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা, হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস এবং আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। এই চিকিৎসার অংশ হিসেবে কিছুদিন লন্ডনে থাকার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যাবেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় আসা এই হাসপাতালের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খালেদা জিয়ার শরীরের রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার করেছিলেন। চিকিৎসকদের মতে, তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা কার্যক্রমে দুই মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে বরণ করার সময় সেখানে যুক্তরাজ্য বিএনপির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারও তাঁকে স্বাগত জানান। বিএনপির চেয়ারপারসনকে দেখার জন্য বিমানবন্দরের বাইরে দলের শতাধিক নেতা-কর্মী সমবেত হন।
বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারেক রহমান নিজেই গাড়ি চালিয়ে মাকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছান। দীর্ঘ সাত বছর পর মায়ের সাথে সরাসরি দেখা হলো তাঁর। শেষবার ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডনে খালেদা জিয়ার সাথে তারেক রহমানের দেখা হয়েছিল।
২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অবনতি হতে থাকে। সে সময় পরিবার ও দল বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করলেও সাড়া মেলেনি।
তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পর খালেদা জিয়া মুক্তি পান। রাষ্ট্রপতির এক আদেশে তাঁর কারাদণ্ড বাতিল করা হয়। আদালতও তাঁর বিরুদ্ধে থাকা দুর্নীতির মামলার রায় বাতিল করেন।
লন্ডনে চিকিৎসার পর খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা নিতে যাবেন। সেখানে চিকিৎসা শেষে আবার লন্ডনে ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর তিনি সৌদি আরবে ওমরাহ পালনের পরিকল্পনা করেছেন। দলীয় সূত্র জানায়, চিকিৎসা সম্পন্ন হলে তিনি দেশে ফিরে আসবেন।
খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার ও দল অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছিল। এবার তাঁর লিভার প্রতিস্থাপনের মতো গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হলে তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতি প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
লিভার প্রতিস্থাপনসহ উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্য ক্লিনিকে ভর্তি, যুক্তরাষ্ট্রে জনস হপকিনস হাসপাতালেও চিকিৎসার পরিকল্পনা
বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল লন্ডনে পৌঁছেছেন। স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে তাঁর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি অবতরণ করে। বাংলাদেশ সময় তখন বেলা ৩টা ১৫ মিনিট। বিমানবন্দরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান মা-কে বরণ করেন। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান এবং আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
হিথরো বিমানবন্দর থেকে সরাসরি খালেদা জিয়াকে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে ‘দ্য ক্লিনিক’ নামক একটি বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়েছে। ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
বাংলাদেশ থেকে আসা চিকিৎসক দল যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকদের কাছে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ চিকিৎসার তথ্য ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বুঝিয়ে দিয়েছেন। এর আগে খালেদা জিয়া কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে পৌঁছান।
দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা, হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস এবং আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। এই চিকিৎসার অংশ হিসেবে কিছুদিন লন্ডনে থাকার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যাবেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় আসা এই হাসপাতালের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খালেদা জিয়ার শরীরের রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার করেছিলেন। চিকিৎসকদের মতে, তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা কার্যক্রমে দুই মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে বরণ করার সময় সেখানে যুক্তরাজ্য বিএনপির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারও তাঁকে স্বাগত জানান। বিএনপির চেয়ারপারসনকে দেখার জন্য বিমানবন্দরের বাইরে দলের শতাধিক নেতা-কর্মী সমবেত হন।
বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারেক রহমান নিজেই গাড়ি চালিয়ে মাকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছান। দীর্ঘ সাত বছর পর মায়ের সাথে সরাসরি দেখা হলো তাঁর। শেষবার ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডনে খালেদা জিয়ার সাথে তারেক রহমানের দেখা হয়েছিল।
২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অবনতি হতে থাকে। সে সময় পরিবার ও দল বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করলেও সাড়া মেলেনি।
তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পর খালেদা জিয়া মুক্তি পান। রাষ্ট্রপতির এক আদেশে তাঁর কারাদণ্ড বাতিল করা হয়। আদালতও তাঁর বিরুদ্ধে থাকা দুর্নীতির মামলার রায় বাতিল করেন।
লন্ডনে চিকিৎসার পর খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা নিতে যাবেন। সেখানে চিকিৎসা শেষে আবার লন্ডনে ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর তিনি সৌদি আরবে ওমরাহ পালনের পরিকল্পনা করেছেন। দলীয় সূত্র জানায়, চিকিৎসা সম্পন্ন হলে তিনি দেশে ফিরে আসবেন।
খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার ও দল অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছিল। এবার তাঁর লিভার প্রতিস্থাপনের মতো গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হলে তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতি প্রত্যাশা করা হচ্ছে।