alt

রাজনীতি

খালেদা জিয়াকে ‘স্লো পয়জনিং’ করা হয়েছিল কি না, প্রশ্ন ফখরুলের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পুরোনো ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখার সময় স্লো পয়জনিং করা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্ন তুলেছেন দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা এটা পরিষ্কার করে জানতে চাই।

বৃহস্পতিবার (২৫নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীর বয়স এখন ৭৫ এর ওপরে। সেই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এক/এগারোতে যে চক্রান্ত শুরু হয়েছিল, সেই চক্রান্তের অংশ হিসেবে সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছিল। আপনারা জানেন পুরোনো ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে একেবারে পরিত্যাক্ত ভবনে যেখানে ইঁদুর আর চিকা দৌড়াদৌড়ি করতো সেই স্যাঁতস্যাঁতে একটা ঘরে দুই বছর আটক রাখা হয়েছিল। এরপরে তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল কিন্তু কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, একটা কথা এখানে সালাম সাহেব বলেছেন, আজকে অনেকের মধ্যে এই প্রশ্ন এসেছে, সেদিন কি বেগম খালেদা জিয়াকে কোনো স্লো পয়জনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল? আমরা একটা পরিষ্কার করে জানতে চাই। এদের পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়। যারা জোর করে আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় বসে থাকতে পারে। যারা অবলীলায় ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে পারে। যারা অবলীলায় গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করতে পারে। যারা অবলীলায় আমাদের নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ ৫০০ নেতাকর্মীকে গুম করে দিতে পারে। তাদের পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই দেশটাকে আপনারা বিক্রি করে দিয়েছেন। এই দেশের যে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ হয়েছিল, লড়াই করে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, সেই গণতন্ত্রকে পুরোপুরি নির্বাসনে পাঠিয়েছেন। তার প্রমাণ এখন পত্রিকায় দেখছি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন গণতান্ত্রিক দেশগুলোর একটা ভার্চ্যুয়াল সম্মেলন করতে যাচ্ছেন। সেখানে বাংলাদেশের নাম নাই। নেপাল, পাকিস্তান, ভারতের নাম আছে কিন্তু বাংলাদেশের নাম নাই। ওই জায়গায় নিয়ে এসেছেন।

পত্রিকার সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকদিন আগে খবরের কাগজে খবর বেড়িয়েছে যে বাংলাদেশের সড়ক, খাত, স্বাস্থ্য খাত, যোগাযোগ খাত, প্রতিরক্ষা, প্রশাসন খাত, সবগুলোতে দুর্নীতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বলা হচ্ছে এটা এখন এক ঝুঁকির মুখে আছে। আজকে দেশে এমন কোনো জায়গা নাই, যেখানে দুর্নীতি নাই।

তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য লাখ লাখ পুলিশ নিয়োগ করা হচ্ছে। তাদের নিয়োগ করা হয় দলীয় ভিত্তিতে। একজন কনস্টবলকে ২০লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। সেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চরমভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মী, কাউন্সিলর, তারা পরস্পরকে গুলি করে হত্যা করছে। কুমিল্লায় পরশুদিন একজন কাউন্সিলরকে ব্রাশ ফায়ার করে মেরে দিয়েছে। এটা অত্যন্ত অশনী সংকেত। কারণ আমরা ৭২ থেকে ৭৫ সালে এই আওয়ামী লীগ আমলে ঈদের জামাতে প্রকাশ্যে ব্রাশ করে লোক মারতে দেখেছি। আমরা দেখেছি রাস্তার ধারে গুলি করে লোকে মেরে ফেলে রাখা হতো। এখন একই কায়দায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু একটা জায়গায় তারা ব্যর্থ হয়নি। বিরোধী দলের যে ভোট দেওয়ার আন্দোলন, গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন সেটা দমন করতে তারা খুব সিদ্ধহস্ত। এটাকে আমাদের পার করতে হবে, উত্তরণ ঘটাতে হবে, ওদের এই পারদর্শীতাকে পরাজিত করতে হবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দরকার। একথা চিকিৎসকেরা বার বার বলছেন। তারা বলছেন আমাদের এখানে আর চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কিন্তু হাসিনা শুনতে চায় না। তার মন্ত্রীরাও বলে দেওয়া উচিত, আওয়ামী লীগের এমপিরাও বলে এটা মানবিক কারণে দেওয়া উচিত। সারাদেশের সব মানুষ, ডাক্তার, উকিল, বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপকেরা বলছেন, কিন্তু তিনি এটা শুনতে চান না। কেন চান না, তার প্রতিহিংসা। তার প্রতিশোধ। এই যে স্প্রীহা। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে শুধু নয়, এখন জীবন থেকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য এই চক্রান্ত।

তিনি বলেন, আমরা জানি আন্তর্জাতিকভাবেও তার ওপরে চাপ আসছে চিকিৎসা করতে দেওয়ার জন্য। তিনি কথাই শুনছেন না। আমাদের বেঁচে থাকার লক্ষ্য হচ্ছে বেগম জিয়া। আমাদের রাজনীতির বাতিঘর হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া। এই নেত্রী হচ্ছেন সেই নেত্রী যিনি আমাদের সঙ্গে নিয়ে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া ছুটে বেড়িয়েছেন। সেখানেই তাদের ভয়, ভয়টা ওখানেই যে দেশনেত্রী যদি বাইরে থাকে তাহলে বাংলাদেশের মানুষকে আর ঘরে রাখা যাবে না।

তিনি বলেন, আজকে দেশনেত্রী হাসপাতালে তার জীবন নিয়ে লড়াই করছেন। আমরা কি ঘরে বসে থাকবো। আমরা ঘরে বসে থাকবো না। আমরা প্রাণপণ আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে তাকে মুক্ত করার জন্য অবশ্যই কাজ করবো।

বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার জন্য যুবদলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সামনের দিনগুলিতে আরও বেশি শক্তি নিয়ে বেড়িয়ে আসতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে। আর এক মুহূর্ত বিলম্ব না করে দেশনেত্রীকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এই জনগণ আপনার বিচার করবে। জবাবদিহি করতে হবে। তখন আর কাউকে খুঁজে পাবেন না। পেছনের দরজাটাও খুঁজে পাবেন না।

যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকুর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আবদুস সালাম, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, সহসভাপতি আব্দুল খালেক, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, সদস্য সচিব মোস্তফা জগলুল পাশা পাপেল, দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহিন, সদস্য সচিব এনামুল হক এনাম, উত্তরের সাবেক সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান প্রমুখ।

ছবি

‘স্বার্থহীন’ রাজনীতির উদাহরণ পঙ্কজ ভট্টাচার্য

ছবি

মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা নির্দেশ না মানলে ব্যবস্থা: কাদের

দুই ধাপের ভোটেই এমপির স্বজনরা

দুই ধাপের ভোটেই এমপির স্বজনরা

প্রথম ধাপে চার উপজেলায় ভোটের প্রয়োজন নেই

ছবি

মাদারীপুরে দুইটি উপজেলায় ২১ প্রার্থীর প্রতিক বরাদ্দ

ছবি

দেশি-বিদেশি চক্র নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত করছে : কাদের

ছবি

উপজেলা নির্বাচন: পরশুরামে এবারও ভোটের প্রয়োজন হবে না

চেয়ারম্যান পদে জামায়াত নেতার মনোনযন প্রত্যাহার, দুই ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী নেই

ছবি

হাতিয়াতে ভোট ছাড়াই জয়ী হচ্ছেন চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস-চেয়ারম্যান

ছবি

তাপপ্রবাহের কারণে বিএনপির ২৬ এপ্রিলের সমাবেশ স্থগিত

লালমনিরহাটে দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করেই সাবেক মন্ত্রীর ভাই-ছেলের লড়াই

ছবি

শেষ দিনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন যারা

ছবি

সেনবাগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিন পদে ১৭ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল

কসবায় নির্বাচন থেকে সরছেন না মন্ত্রীর আত্মীয় ছাইদুর

ছবি

স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন করে প্রাইভেট হাসপাতালের রোগ নির্ণয় পরীক্ষার ফি নির্ধারণ: স্বাস্থ্য মন্ত্রী

ছবি

রাজনৈতিকভাবে টালমাটাল অবস্থায় বিএনপি : ওবায়দুল কাদের

ছবি

১০ দিনে ৫ লাখ বৃক্ষ রোপণ করবে ছাত্রলীগ

ছবি

সন্ত্রাসী অপরাধে গ্রেপ্তারদেরও নিজেদের কর্মী দাবী করছে বিএনপি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

আমরা সবাই মিলে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের রাজনীতি করতে চাই-- অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি

ছবি

স্থানীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন নেই: ইসি আলমগীর

ছবি

সরকার চোরাবালিতে দাঁড়িয়ে, যেকোনো সময় ডুবে যাবে: রিজভী

ছবি

ইরাকে ইরানপন্থি বাহিনীর ঘাঁটিতে বিমান হামলায় হতাহত ৭

ছবি

আবদুল আউয়াল মিন্টু হাসপাতালে ভর্তি

ছবি

আ.লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ থাকবে : কাদের

ছবি

আমি লজ্জিত-দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী, দোষীদের কপালে দুঃখ আছে : পলক

ছবি

যারা নুন-ভাতের কথাও ভাবতে পারত না, এখন তারা মাছ-মাংসের চিন্তা করে : শেখ হাসিনা

মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আ’লীগের

ছবি

মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা বেতনের কর্মচারী ছিলেন জিয়া : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি

খালেদা জিয়া ডাল-ভাত খাওয়াতেও ব্যর্থ হয়েছিলেন : শেখ হাসিনা

ছবি

বিএনপিসহ স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে : ওবায়দুল কাদের

ছবি

মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

ছবি

মনোনয়নে বিএনপি-জামায়াতের নেতারা, তবে দল দু’টির বর্জনের ঘোষণা

ছবি

আনুষ্ঠানিকভাবে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা বিএনপির

ছবি

হিটলারের চেয়েও ভয়ঙ্কর নেতানিয়াহু : ওবায়দুল কাদের

ছবি

এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

tab

রাজনীতি

খালেদা জিয়াকে ‘স্লো পয়জনিং’ করা হয়েছিল কি না, প্রশ্ন ফখরুলের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পুরোনো ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখার সময় স্লো পয়জনিং করা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্ন তুলেছেন দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা এটা পরিষ্কার করে জানতে চাই।

বৃহস্পতিবার (২৫নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীর বয়স এখন ৭৫ এর ওপরে। সেই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এক/এগারোতে যে চক্রান্ত শুরু হয়েছিল, সেই চক্রান্তের অংশ হিসেবে সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছিল। আপনারা জানেন পুরোনো ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে একেবারে পরিত্যাক্ত ভবনে যেখানে ইঁদুর আর চিকা দৌড়াদৌড়ি করতো সেই স্যাঁতস্যাঁতে একটা ঘরে দুই বছর আটক রাখা হয়েছিল। এরপরে তাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল কিন্তু কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, একটা কথা এখানে সালাম সাহেব বলেছেন, আজকে অনেকের মধ্যে এই প্রশ্ন এসেছে, সেদিন কি বেগম খালেদা জিয়াকে কোনো স্লো পয়জনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল? আমরা একটা পরিষ্কার করে জানতে চাই। এদের পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়। যারা জোর করে আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় বসে থাকতে পারে। যারা অবলীলায় ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে পারে। যারা অবলীলায় গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করতে পারে। যারা অবলীলায় আমাদের নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ ৫০০ নেতাকর্মীকে গুম করে দিতে পারে। তাদের পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই দেশটাকে আপনারা বিক্রি করে দিয়েছেন। এই দেশের যে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ হয়েছিল, লড়াই করে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, সেই গণতন্ত্রকে পুরোপুরি নির্বাসনে পাঠিয়েছেন। তার প্রমাণ এখন পত্রিকায় দেখছি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন গণতান্ত্রিক দেশগুলোর একটা ভার্চ্যুয়াল সম্মেলন করতে যাচ্ছেন। সেখানে বাংলাদেশের নাম নাই। নেপাল, পাকিস্তান, ভারতের নাম আছে কিন্তু বাংলাদেশের নাম নাই। ওই জায়গায় নিয়ে এসেছেন।

পত্রিকার সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকদিন আগে খবরের কাগজে খবর বেড়িয়েছে যে বাংলাদেশের সড়ক, খাত, স্বাস্থ্য খাত, যোগাযোগ খাত, প্রতিরক্ষা, প্রশাসন খাত, সবগুলোতে দুর্নীতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বলা হচ্ছে এটা এখন এক ঝুঁকির মুখে আছে। আজকে দেশে এমন কোনো জায়গা নাই, যেখানে দুর্নীতি নাই।

তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য লাখ লাখ পুলিশ নিয়োগ করা হচ্ছে। তাদের নিয়োগ করা হয় দলীয় ভিত্তিতে। একজন কনস্টবলকে ২০লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। সেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চরমভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মী, কাউন্সিলর, তারা পরস্পরকে গুলি করে হত্যা করছে। কুমিল্লায় পরশুদিন একজন কাউন্সিলরকে ব্রাশ ফায়ার করে মেরে দিয়েছে। এটা অত্যন্ত অশনী সংকেত। কারণ আমরা ৭২ থেকে ৭৫ সালে এই আওয়ামী লীগ আমলে ঈদের জামাতে প্রকাশ্যে ব্রাশ করে লোক মারতে দেখেছি। আমরা দেখেছি রাস্তার ধারে গুলি করে লোকে মেরে ফেলে রাখা হতো। এখন একই কায়দায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু একটা জায়গায় তারা ব্যর্থ হয়নি। বিরোধী দলের যে ভোট দেওয়ার আন্দোলন, গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন সেটা দমন করতে তারা খুব সিদ্ধহস্ত। এটাকে আমাদের পার করতে হবে, উত্তরণ ঘটাতে হবে, ওদের এই পারদর্শীতাকে পরাজিত করতে হবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দরকার। একথা চিকিৎসকেরা বার বার বলছেন। তারা বলছেন আমাদের এখানে আর চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কিন্তু হাসিনা শুনতে চায় না। তার মন্ত্রীরাও বলে দেওয়া উচিত, আওয়ামী লীগের এমপিরাও বলে এটা মানবিক কারণে দেওয়া উচিত। সারাদেশের সব মানুষ, ডাক্তার, উকিল, বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপকেরা বলছেন, কিন্তু তিনি এটা শুনতে চান না। কেন চান না, তার প্রতিহিংসা। তার প্রতিশোধ। এই যে স্প্রীহা। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে শুধু নয়, এখন জীবন থেকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য এই চক্রান্ত।

তিনি বলেন, আমরা জানি আন্তর্জাতিকভাবেও তার ওপরে চাপ আসছে চিকিৎসা করতে দেওয়ার জন্য। তিনি কথাই শুনছেন না। আমাদের বেঁচে থাকার লক্ষ্য হচ্ছে বেগম জিয়া। আমাদের রাজনীতির বাতিঘর হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া। এই নেত্রী হচ্ছেন সেই নেত্রী যিনি আমাদের সঙ্গে নিয়ে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া ছুটে বেড়িয়েছেন। সেখানেই তাদের ভয়, ভয়টা ওখানেই যে দেশনেত্রী যদি বাইরে থাকে তাহলে বাংলাদেশের মানুষকে আর ঘরে রাখা যাবে না।

তিনি বলেন, আজকে দেশনেত্রী হাসপাতালে তার জীবন নিয়ে লড়াই করছেন। আমরা কি ঘরে বসে থাকবো। আমরা ঘরে বসে থাকবো না। আমরা প্রাণপণ আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে তাকে মুক্ত করার জন্য অবশ্যই কাজ করবো।

বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার জন্য যুবদলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সামনের দিনগুলিতে আরও বেশি শক্তি নিয়ে বেড়িয়ে আসতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে। আর এক মুহূর্ত বিলম্ব না করে দেশনেত্রীকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এই জনগণ আপনার বিচার করবে। জবাবদিহি করতে হবে। তখন আর কাউকে খুঁজে পাবেন না। পেছনের দরজাটাও খুঁজে পাবেন না।

যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকুর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আবদুস সালাম, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, সহসভাপতি আব্দুল খালেক, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, সদস্য সচিব মোস্তফা জগলুল পাশা পাপেল, দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহিন, সদস্য সচিব এনামুল হক এনাম, উত্তরের সাবেক সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান প্রমুখ।

back to top