চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবল
রিয়াল মাদ্রিদ দুরন্ত খেলে মঙ্গলবার রাতে ৩-১ গোলে লিভারপুলকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে। নিজেদের মাঠে সম্ভবত রিয়াল মাদ্রিদ চলতি মৌসুমে নিজেদের সেরা নৈপুন্য দেখিয়েই ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের নাস্তানাবুদ করেছে। রিয়ালের হয়ে দুটি গোল করেছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র এবং একটি করেছেন মার্কো অ্যাসেনসিও। লিভারপুলের হয়ে একটি গোল পরিশোধ করেন মোহামেদ সালাহ।
ভিনিসিয়ুস সম্ভবত রিয়ালের জার্সিতে নিজের সেরা ম্যাচ খেলেছেন এদিন। তিনি দলের প্রথম এবং তৃতীয় গোলটি করেন। মাঝখানে একটি গোল করেন অ্যাসেনসিও। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রিয়ালের গা ছাড়া ভাব কাজে লাগিয়ে সালাহ একটি গোল পরিশোধ করতে সমর্থ হন। এছাড়া বলতে গেলে বাকি সময়ে ম্যাচে একক নিয়ন্ত্রন রাখতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা। সালাহর করা গোলটি লিভারপুলের জন্য মূল্যবান হয়ে উঠতে পারে। কারণ এটা অ্যাওয়ে গোল এবং আগামী সপ্তায় নিজেদের মাঠে যদি তারা ২-০ গোলে জিততে পারে তাহলে দুই লেগ মিলিয়ে ম্যাচের ফল দাড়াবে ৩-৩ এবং তখন অ্যাওয়ে গোলের নিয়মে সেমিফাইনালে খেলবে লিভারপুল। কিন্তু বাস্তবতা হলো রিয়াল মাদ্রিদ যদি খুব খারাপ না খেলে তাহলে সম্ভবত এবারের লিভারপুলের পক্ষে তাদেরকে হারানো খুব একটা সহজ হবে না।
সার্জিও র্যামোস ইনজুরির কারণে এবং রাফায়েল ভারানে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার কারণে এ ম্যাচে খেলতে পারেননি। ফলে জিদানকে সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসেবে খেলাতে হয়েছে নাচো ফার্নান্ডেজ এবং এডার মিলিটাওকে। রাইট ব্যাক হিসেবে লুকাস ভাজকেজ এবং লেফটব্যাক হিসেবে খেলেন ফারল্যান্ড মেন্ডি। এ চারজন কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন দারুনভাবে। মিডফিল্ডে ছিলেন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ তিনজন ক্যাসেমিরো, লুকা মড্রিচ এবং টনি ক্রুস। আক্রমণভাগে মার্কো অ্যাসেনসিও, করিম বেনজামা এবং ভিনিসিয়ুস। লিভারপুলের গোলটি বাদ দিলে বলা চলে রিয়াল মাদ্রিদ একটি পারফেক্ট ম্যাচ খেলেছে। যখন গতি বাড়ানোর দরকার তখন বাড়িয়েছে এবং যখন খেলার গতি কমানো দরকার তখন কমিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে বল দখলের হিসেবে লিভারপুল এগিয়ে থাকলেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রন ছিল স্বাগতিকদের কাছেই।
ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিট ছিল বলতে গেলে টর্নেডো গতির। উভয় দলই এ সময় গতিময় ফুটবল খেলার চেষ্টা করেছে। রিয়ালের রক্ষণভাগের কারণে লিভারপুলের আক্রমণগুলো ভয়ানক হতে পারেনি। কিন্তু ভিনিসিয়ুসের দুরন্ত গতি আতঙ্ক ছড়িয়েছে লিভারপুল শিবিরে। সেই গতি কাজে লাগিয়েই ভিনিসিয়ুস করেন প্রথম গোলটি। ২৭ মিনিটে টনি ক্রুস নিজেদের অর্ধ থেকে উচু করে লম্বা লব করেন। ভিনিসিয়ুস সেটি বুক দিয়ে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে দুইজন ডিফেন্ডারকে গতিতে পেছনে ফেলে আগুয়ান গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারের নাগালের বাইরে দিয়ে বল জালে পাঠান।৩৬ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে রিয়াল। এটা পাসও দেন ক্রুস। তার আরেকটি লম্বা লব হেড করে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ড। কিন্তু তার হেড থেকে বল পেয়ে যায় অ্যাসেনসিও এবং তিনি সেটি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে প্লেস করে সামনে এগিয়ে ভলির সাহায্যে করেন দলের দ্বিতীয় গোল। বিরতির আগে আরেকটি গোল প্রায় করে ফেলেছিল রিয়াল। ওজান কাবাক ব্যাক পাস দিলে সেটি নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেন অ্যাসেনসিও। তখন তার সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষক। কোন উপায় না দেখে তিনি সামনে এগিয়ে গিয়ে অ্যাসেনসিও জায়গা ব্লক করে দেন। যে কারণে রিয়ালের এ খেলোয়াড় চাপের মুখে বল পোস্টে রাখতে ব্যর্থ হন। বল চলে যায় পোস্ট ঘেসে মাঠের বাইরে। দলের এমন অবস্থা থেকে বিরতির আগেই নেবি কিটাকে তুলে মাঠে নামান থিয়াগো আলকান্টারাকে। এতে মিডফিল্ডে রিয়ালের একক আধিপত্য খর্ব হয়। খেলার ৫১ মিনিটে দিয়েগো জোটার পাস থেকে গোলমুখে বল পেয়ে সালাহ একটি গোল পরিশোধ করেন। রিয়াল অফসাইডের দাবী করলেও রেফারি ভিএআর দেখে গোলের বাশি বাজান। প্রতিপক্ষের মাঠে হওয়ায় সালাহর গোলটি এখন পর্যন্ত লিভারপুলের জন্য খুবই মূল্যবান। ফিরতি লেগে এ গোল থেকেই তারা উদ্দীপনা খুজে পেতে পারে। দুই দলের ব্যবধান মাত্র এক গোলের হওয়ায় রিয়াল আবার চাপ সৃষ্টি করে এবং ৬৫ মিনিটে তৃতীয় গোল করে ব্যবধান ৩-১ করতে সমর্থ হয়। ছোট ছোট পাস খেলে রিয়াল এ গোলটি আদায় করে। লুকা মড্রিচের আড়াআড়ি পাসে ফ্লিক করে ভিনিসিয়ুস করেন গোলটি। দুই গোলের পার্থক্য সৃষ্টি করার পর জিদান তার মিডফিল্ডে শক্তি বাড়ান। অ্যাসেনসিওকে তুলে নামানো হয় ফেডে ভালভার্দেকে। অ্যাসেনসিওকে অবশ্য বেশ ক্লান্ত লাগছিল। তিনি বেশ কয়েকবার ঠিকমতো বলের নিয়ন্ত্রন নিতে ব্যর্থ হন। তা নাহলে রিয়াল আরও বড় ব্যবধানে জিততে পারতো। শেষ ছয় মিনিট বিশ্রাম পান ভিনিসিয়ুস। তাকে তুলে সুযোগ দেয়া হয় রড্রিগো গোয়েসকে। শেষ কয়েক মিনিট অবশ্য রিয়াল চেষ্টা করেছে ব্যবধান ধরে রাখতে। তাদের সবাই মিলে তখন রক্ষণ কাজে লিপ্ত হন। স্বাভাবিকভাবেই লিভারপুল এ সময় চেপে ধরে রিয়ালকে। কিন্তু গোলের প্রকৃত কোন সুযোগ তারা সৃষ্টি করতে না পারায় হার মানতে হয় ৩-১ গোলে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবল
বুধবার, ০৭ এপ্রিল ২০২১
রিয়াল মাদ্রিদ দুরন্ত খেলে মঙ্গলবার রাতে ৩-১ গোলে লিভারপুলকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে। নিজেদের মাঠে সম্ভবত রিয়াল মাদ্রিদ চলতি মৌসুমে নিজেদের সেরা নৈপুন্য দেখিয়েই ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের নাস্তানাবুদ করেছে। রিয়ালের হয়ে দুটি গোল করেছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র এবং একটি করেছেন মার্কো অ্যাসেনসিও। লিভারপুলের হয়ে একটি গোল পরিশোধ করেন মোহামেদ সালাহ।
ভিনিসিয়ুস সম্ভবত রিয়ালের জার্সিতে নিজের সেরা ম্যাচ খেলেছেন এদিন। তিনি দলের প্রথম এবং তৃতীয় গোলটি করেন। মাঝখানে একটি গোল করেন অ্যাসেনসিও। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রিয়ালের গা ছাড়া ভাব কাজে লাগিয়ে সালাহ একটি গোল পরিশোধ করতে সমর্থ হন। এছাড়া বলতে গেলে বাকি সময়ে ম্যাচে একক নিয়ন্ত্রন রাখতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা। সালাহর করা গোলটি লিভারপুলের জন্য মূল্যবান হয়ে উঠতে পারে। কারণ এটা অ্যাওয়ে গোল এবং আগামী সপ্তায় নিজেদের মাঠে যদি তারা ২-০ গোলে জিততে পারে তাহলে দুই লেগ মিলিয়ে ম্যাচের ফল দাড়াবে ৩-৩ এবং তখন অ্যাওয়ে গোলের নিয়মে সেমিফাইনালে খেলবে লিভারপুল। কিন্তু বাস্তবতা হলো রিয়াল মাদ্রিদ যদি খুব খারাপ না খেলে তাহলে সম্ভবত এবারের লিভারপুলের পক্ষে তাদেরকে হারানো খুব একটা সহজ হবে না।
সার্জিও র্যামোস ইনজুরির কারণে এবং রাফায়েল ভারানে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার কারণে এ ম্যাচে খেলতে পারেননি। ফলে জিদানকে সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসেবে খেলাতে হয়েছে নাচো ফার্নান্ডেজ এবং এডার মিলিটাওকে। রাইট ব্যাক হিসেবে লুকাস ভাজকেজ এবং লেফটব্যাক হিসেবে খেলেন ফারল্যান্ড মেন্ডি। এ চারজন কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন দারুনভাবে। মিডফিল্ডে ছিলেন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ তিনজন ক্যাসেমিরো, লুকা মড্রিচ এবং টনি ক্রুস। আক্রমণভাগে মার্কো অ্যাসেনসিও, করিম বেনজামা এবং ভিনিসিয়ুস। লিভারপুলের গোলটি বাদ দিলে বলা চলে রিয়াল মাদ্রিদ একটি পারফেক্ট ম্যাচ খেলেছে। যখন গতি বাড়ানোর দরকার তখন বাড়িয়েছে এবং যখন খেলার গতি কমানো দরকার তখন কমিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে বল দখলের হিসেবে লিভারপুল এগিয়ে থাকলেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রন ছিল স্বাগতিকদের কাছেই।
ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিট ছিল বলতে গেলে টর্নেডো গতির। উভয় দলই এ সময় গতিময় ফুটবল খেলার চেষ্টা করেছে। রিয়ালের রক্ষণভাগের কারণে লিভারপুলের আক্রমণগুলো ভয়ানক হতে পারেনি। কিন্তু ভিনিসিয়ুসের দুরন্ত গতি আতঙ্ক ছড়িয়েছে লিভারপুল শিবিরে। সেই গতি কাজে লাগিয়েই ভিনিসিয়ুস করেন প্রথম গোলটি। ২৭ মিনিটে টনি ক্রুস নিজেদের অর্ধ থেকে উচু করে লম্বা লব করেন। ভিনিসিয়ুস সেটি বুক দিয়ে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে দুইজন ডিফেন্ডারকে গতিতে পেছনে ফেলে আগুয়ান গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারের নাগালের বাইরে দিয়ে বল জালে পাঠান।৩৬ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে রিয়াল। এটা পাসও দেন ক্রুস। তার আরেকটি লম্বা লব হেড করে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ড। কিন্তু তার হেড থেকে বল পেয়ে যায় অ্যাসেনসিও এবং তিনি সেটি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে প্লেস করে সামনে এগিয়ে ভলির সাহায্যে করেন দলের দ্বিতীয় গোল। বিরতির আগে আরেকটি গোল প্রায় করে ফেলেছিল রিয়াল। ওজান কাবাক ব্যাক পাস দিলে সেটি নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেন অ্যাসেনসিও। তখন তার সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষক। কোন উপায় না দেখে তিনি সামনে এগিয়ে গিয়ে অ্যাসেনসিও জায়গা ব্লক করে দেন। যে কারণে রিয়ালের এ খেলোয়াড় চাপের মুখে বল পোস্টে রাখতে ব্যর্থ হন। বল চলে যায় পোস্ট ঘেসে মাঠের বাইরে। দলের এমন অবস্থা থেকে বিরতির আগেই নেবি কিটাকে তুলে মাঠে নামান থিয়াগো আলকান্টারাকে। এতে মিডফিল্ডে রিয়ালের একক আধিপত্য খর্ব হয়। খেলার ৫১ মিনিটে দিয়েগো জোটার পাস থেকে গোলমুখে বল পেয়ে সালাহ একটি গোল পরিশোধ করেন। রিয়াল অফসাইডের দাবী করলেও রেফারি ভিএআর দেখে গোলের বাশি বাজান। প্রতিপক্ষের মাঠে হওয়ায় সালাহর গোলটি এখন পর্যন্ত লিভারপুলের জন্য খুবই মূল্যবান। ফিরতি লেগে এ গোল থেকেই তারা উদ্দীপনা খুজে পেতে পারে। দুই দলের ব্যবধান মাত্র এক গোলের হওয়ায় রিয়াল আবার চাপ সৃষ্টি করে এবং ৬৫ মিনিটে তৃতীয় গোল করে ব্যবধান ৩-১ করতে সমর্থ হয়। ছোট ছোট পাস খেলে রিয়াল এ গোলটি আদায় করে। লুকা মড্রিচের আড়াআড়ি পাসে ফ্লিক করে ভিনিসিয়ুস করেন গোলটি। দুই গোলের পার্থক্য সৃষ্টি করার পর জিদান তার মিডফিল্ডে শক্তি বাড়ান। অ্যাসেনসিওকে তুলে নামানো হয় ফেডে ভালভার্দেকে। অ্যাসেনসিওকে অবশ্য বেশ ক্লান্ত লাগছিল। তিনি বেশ কয়েকবার ঠিকমতো বলের নিয়ন্ত্রন নিতে ব্যর্থ হন। তা নাহলে রিয়াল আরও বড় ব্যবধানে জিততে পারতো। শেষ ছয় মিনিট বিশ্রাম পান ভিনিসিয়ুস। তাকে তুলে সুযোগ দেয়া হয় রড্রিগো গোয়েসকে। শেষ কয়েক মিনিট অবশ্য রিয়াল চেষ্টা করেছে ব্যবধান ধরে রাখতে। তাদের সবাই মিলে তখন রক্ষণ কাজে লিপ্ত হন। স্বাভাবিকভাবেই লিভারপুল এ সময় চেপে ধরে রিয়ালকে। কিন্তু গোলের প্রকৃত কোন সুযোগ তারা সৃষ্টি করতে না পারায় হার মানতে হয় ৩-১ গোলে।