alt

উপ-সম্পাদকীয়

সংশপ্তকের জন্য জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

বেনজীর আহমেদ

: মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

‘হাসিনা : অ্যা ডটারস টেল’। মধ্যবিত্ত গার্হস্থ্য আবহে হাসি আনন্দে ভরা পরিবারে বেড়ে ওঠা এক নারীর অকস্মাৎ সব স্বজন হারিয়ে সর্বহারা হয়ে যাওয়া, সেই অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানো এবং অবশেষে দিগন্তবিস্তারী মহিমায় ১৭ কোটি মানুষের ত্রাতা হিসেবে নিজের অস্তিত্ব ঘোষণার গল্প নিয়ে এই ছবি।

পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার পর আপন দেহভস্ম থেকে গ্রিক পুরাণের ফিনিক্স পাখির পুনরুত্থান, এই গল্প যেন সেই পৌরাণিক আখ্যানের বাস্তব প্রকাশ। যেন এক জাদুবাস্তবতা নির্ভর পরাবাস্তব গল্প। এই ছবির সবচেয়ে বড় আকর্ষণীয় দিক হলো, এখানে একেবারে হারিয়ে যাওয়ার মতো পর্যায় থেকে স্বমহিমায় যার ফিরে আসার গল্প বলা হয়েছে, তিনি নিজেই সেই গল্পের মূল কথক। তিনি হলেন, বাংলার ‘ফিনিক্স পাখি’, বিশ্বনন্দিত রাজনীতিক আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল’ ছবিতে আত্মকথনের একপর্যায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা বলেন, ১৯৮১ সালের ৯ এপ্রিল তারা দুই বোন দিল্লির নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার দরগায় গিয়েছিলেন। সেখানে একজন খাদেম অনেক পুরোনো একটা খাতা এনে তাদের সামনে মেলে ধরলেন। সেই খাতায় বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর। তারিখ ৯ এপ্রিল, ১৯৪৬।

ওই প্রামাণ্যচিত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেখলাম তারিখটা ৯ এপ্রিল। ১৯৪৬ সালে আব্বা ওখানে গিয়েছিলেন। আর আমি গেলাম ৮১ সালের ৯ এপ্রিল। ৪৬ সাল, আমার জন্মের আগে উনি গিয়েছেন। আর আমি পাচ্ছি ৮১ সালের একই তারিখ। তখন আমার মনে একটা সাহস এল। মনে হলো আমাকে যেতে হবে। মানুষের জন্য কিছু করতে হবে। বোধ হয় এই বার্তাটাই আমি পাচ্ছি।’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ছিলেন। নিয়তি নির্ধারিত সেই অনুপস্থিতি সেদিন তাদের বাঁচিয়ে দিয়েছিল। বিদেশে বসে জানলেন, তিনি আক্ষরিক অর্থে এতিম হয়ে গেছেন।

ব্রাসেলস থেকে প্রথমে জার্মানিতে ও পরে ভারতে এসেছিলেন। দিল্লিতে থাকার সময় খুনিরা তাকে হত্যার চেষ্টা করছিল। আত্মরক্ষার্থে তখন দিল্লিতে দুই বোনকে নাম-পরিচয় পর্যন্ত গোপন করতে হয়েছিল। কিন্তু দেশে ফেরার ইচ্ছা তাকে তাড়া করে ফিরছিল। তিনি জানতেন, দেশে ফেরার পর তার পায়ে পায়ে বিপদ থাকবে, কিন্তু সেই বিপদকে সরিয়ে দেশবাসীকে স্বৈরাচারমুক্ত করতেই হবে। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশের মাটিতে পা রাখেন তিনি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশে ফেরা যেন বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘটনারই এক পুন:মঞ্চায়ন। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি লন্ডনের ক্ল্যারিজেস হোটেলে বঙ্গবন্ধুকে যখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, যুদ্ধে সব শেষ হয়ে যাওয়া দেশে ফিরে তিনি কী করবেন? জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার দেশের মাটি আছে, আমার জনগণ আছে। আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াব’। মানুষ এবং মাটিই যে তার শক্তির উৎস ছিল দেশবাসী সেটি জানতেন, সেদিন তিনি তা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছিলেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বঙ্গবন্ধুকেই ধারণ ও বহন করে চলেছেন, যত দিন যাচ্ছে তা স্পষ্ট হচ্ছে।

১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা যখন দেশের মাটিতে পা রেখেছেন, সে মুহূর্তে ঘাতকেরা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসন দখল করে আছে। ‘জয় বাংলা’, ‘বঙ্গবন্ধু’-এ শব্দগুলো তখন নিষিদ্ধ পংক্তিমালা। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে জাতিকে কলঙ্ক থেকে মুক্ত করেছেন। দীর্ঘ যাত্রায় নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে, কারাভোগ করে, একাধিকবার গৃহবন্দী হয়ে, হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গিয়ে তিনি চারবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন।

প্রায় চার দশক ধরে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে যাওয়া এই মহিয়সী ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মেছিলেন। মধুমতি নদী, বাঘিয়ার বিল আর বর্নির বাঁওড়ের জলকল্লোলস্নাত পরিবেশে শৈশব কেটেছে তার। মাটি আর মৃত্তিকাসংলগ্ন মানুষের মধ্যে বেড়ে ওঠা। সেই কোমল মাটির মতো মানুষটিকে জাতির বৃহত্তর প্রয়োজনে কখনো কখনো কঠোর হতে হয়েছে। কোমলে-কঠোরে মিলে এক অনন্য চরিত্রে আজ তিনি জাতির স্বপ্ন ও আশার ধ্রুব নক্ষত্র।

বঙ্গবন্ধুর স্মরণশক্তি ছিল অত্যন্ত প্রখর। প্রচলিত আছে তিনি কারও নাম শুনলে সচরাচর সেই নাম ভুলতেন না। দেশের কোথায় কী হচ্ছে তা বঙ্গবন্ধুর নখদর্পণে ছিল। সব খোঁজখবর তিনি রাখতেন। এই গুণগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে স্পষ্ট।

আমার মনে পড়ছে, ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অল্প কয়েক দিন আগে আমি তখন র‌্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে একটা কাজে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে কথা প্রসঙ্গে ঢাকায় ক্যাসিনো থাকার কথা বললেন। অতঃপর জিজ্ঞেস করেন, ‘তাহলে তুমি কী করছ? তুমি এগুলো দেখছ না কেন?’ আমি বেশ অবাক হলাম। তার নলেজের বাইরে যে কিছুই নেই, সেটা আরও একবার উপলব্ধি করলাম।

আমি বললাম, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ব্রিটিশ আমলে প্রণীত জুয়া আইনটি খুব দুর্বল। তাছাড়া, প্রয়োগের বিষয়টা জেলার অধিক্ষেত্রে দেখেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আর মেট্রোপলিটন এলাকায় এ বিষয়টি দেখেন পুলিশ কমিশনার। মানে জুয়া আইন বাস্তবায়নে সরাসরি র্যাবের তেমন কিছু করার নেই।’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘আমি যদি তোমাকে নির্দেশ দিই?’ আমি বললাম, ‘আপনি নির্দেশ দিলেতো আমি অবশ্যই করতে পারি- ইন নো টাইম’। পরে আমি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে র‌্যাবকে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিই। এর ফলে যা হলো, সেটি এই অঞ্চলে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনন্য উদাহরণ এবং বাকিটা ইতিহাস।

এর কিছু দিন পরে র‌্যাবের ‘রেইজিং ডে’ ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেখানে গিয়েছিলেন। ওই সময় সুন্দরবনে জলদস্যু দমন অভিযানের কারণে আমরা জানতে পারি বঙ্গোপসাগরে ছোট ছোট অনেকগুলো দ্বীপ জাগতে শুরু করেছে। তখন আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বললাম, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গোপসাগরে নতুন কিছু দ্বীপ ভেসে উঠছে। আমরা আমদের কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য কি এ রকম একটা দ্বীপ নিতে পারি, যেখানে বিদেশি পর্যটক ও দেশের মানুষের জন্য কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করা যেতে পারে’। তিনি তার মোবাইল ফোন খুললেন। মুহূর্তের মধ্যেই তিনি মোবাইলের স্ক্রিন আমার সামনে ধরে জেগে ওঠা দ্বীপগুলোর নাম ধরে বলতে লাগলেন, ‘এই দেখ, এটা এই আইল্যান্ড, ওটা হলো ওই আইল্যান্ড।’ দ্বীপগুলোর কোনটাতে কোন ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন, সেটাও তিনি বলে দিচ্ছিলেন। দেখলাম, তিনি ওই দ্বীপগুলো সম্পর্কে আগাগোড়া পরিচ্ছন্ন ধারণা নিয়ে বসে আছেন। আমি হতভম্ব ও হতবাক! দেশকে এগিয়ে নিতে হলে, আগে দেশকে ভালোভাবে জানতে হবে-এই সত্যটা তার কাছ থেকে আমি সবচেয়ে বেশি জেনেছি।

আমি পুলিশের মহাপরিদর্শক হওয়ার পর যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলাম, তখন তিনি আমাকে বললেন, ‘দেখ, পুলিশকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে হলে প্রশিক্ষণকে প্রাধান্য দিতেই হবে। তোমাদের মধ্যে র্যাংকের পরিবর্তন হলেই মাঝে মাঝে প্রশিক্ষণ হয়। এটা কিন্তু ঠিক না। বছরব্যাপীই কিন্তু তোমাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলমান থাকতে হবে। সকল অফিসারসহ প্রতিটি সদস্যকে প্রতি বছরই প্রশিক্ষণে থাকতে হবে, সে যে র‌্যাংকেরই হোক না কেন।’

আমার আবারও চমকানোর পালা। প্রশিক্ষণ ছাড়া যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহিনী এগোতে পারে না, সেটি তিনি কতোটা উপলব্ধি করেন!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই পরামর্শের ধারাবাহিকতায় আমরা এ বছর ৫ সেপ্টেম্বর সব র‌্যাংকের অফিসারসহ সব সদস্যের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছি। পুলিশ বাহিনী গঠন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এটি একটি বিরল ঘটনা যে, সকল র‌্যাংকের সবার জন্য প্রতি বছর নিয়মিত প্রশিক্ষণ নেওয়ার যাত্রা শুরু হলো। এইভাবে রাজনীতি, অর্থনীতি, কূটনীতি প্রতিটি ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঈর্ষণীয় প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়ে আসছেন।

৮০র দশকে তৎকালীন বিশ্বরাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশ্বসভায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল খুবই দুর্বল। বৈশ্বিক পরিম-লে অনেকটা নতজানু হয়ে থাকতে হতো আমাদের। মাত্র ৭০ মিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে আমাদের তদানিন্তন অর্থমন্ত্রীদের প্যারিস কনসোটিয়ামের বৈঠকে দুর্বল চিত্তে হাজির হতে হতো। আজ আমাদের দেশ অন্যদের ২০০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে।

২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে তাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল। নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা প্রসারে স্বীকৃতি স্মারক ‘শান্তি বৃক্ষ’ দেয়ার সময় তার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ইউনেসকোর প্রধান। তাকে ‘সাহসী নারী’ অভিহিত করে জাতিসংঘের এ সংস্থাটির প্রধান বলেছেন, ‘নারী ও কন্যাশিশুদের ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বমঞ্চের জোরালো এক কণ্ঠ।’ গত সপ্তাহে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’-এ ভূষিত করেছে। পুরস্কার প্রদানকালে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক এসডিএসএনের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন কৌশলবিদ প্রফেসর জেফরি স্যাকস শেখ হাসিনাকে উন্নয়নশীল দেশের অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে ‘জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন অব দি ডে’ হিসেবে তুলে ধরেন, যা প্রতিটি বাংলাদেশি বাঙালির জন্য অত্যন্ত গর্বের।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাকাব্যিক অর্জন ও সাফল্যগাঁথা কোন ছোট একটি প্রবন্ধে কিংবা পুস্তকে তুলে আনা অসম্ভব আস্পর্ধা।

তিনি সাধারণ মানুষের অন্তরের কতটা গভীরে যেতে পেরেছেন তার প্রমাণ গফরগাঁওয়ের রিকশাচালক হাসমত আলী। হতদরিদ্র হাসমত আলী নিজের সব সঞ্চয় দিয়ে জমি কিনে তা শেখ হাসিনার নামে লিখে দিয়েছিলেন। অথচ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কোনো দিন দেখাই হয়নি।

এই রকম দেশের অগণিত হাসমত আলীর দোয়ার বরকতেই কমপক্ষে ১৯ বার হত্যাচেষ্টার হাত থেকে বেঁচে প্রধানমন্ত্রী মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন। ৭৫তম জন্মদিনের এই শুভ মুহূর্তে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন। তার জন্য শুভাশীষ- শতায়ু হোন সংশপ্তক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

[লেখক : ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ]

চিকিৎসা যেন বাণিজ্যের হাতিয়ারে পরিণত না হয়

পথশিশু ও বাংলাদেশে সামাজিক চুক্তির ব্যর্থতা

মেগা প্রকল্প : প্রশ্ন হওয়া উচিত স্বচ্ছতা নিয়ে

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি

স্মার্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা : উপগ্রহ চিত্র ও ওয়েবসাইটের অপরিহার্যতা

ক্ষমতা ও জনপ্রশাসন : আমলাতন্ত্রের ছায়াতলে আমজনতা

জনসংখ্যা : সম্পদ না সংকট?

ব্রিকসে নতুন ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান

রম্যগদ্য : ‘ল্যাংড়া-লুলা, আতুড়-পাতুড়’

আষাঢ়ী পূর্ণিমা : আত্মশুদ্ধির সাধনায় বুদ্ধের অনন্ত আলো

বদলে যাওয়া মাটিতে সাহসী বীজ : জলবায়ুর বিপরীতে বাংলাদেশের কৃষির অভিযোজনগাথা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : ‘শিকলে নাহি দিব ধরা’

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

দেশের অর্থ পাচারের বাস্তবতা

খাদ্য নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত

আবারও কি রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবে বিশ্ব?

tab

উপ-সম্পাদকীয়

সংশপ্তকের জন্য জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

বেনজীর আহমেদ

মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

‘হাসিনা : অ্যা ডটারস টেল’। মধ্যবিত্ত গার্হস্থ্য আবহে হাসি আনন্দে ভরা পরিবারে বেড়ে ওঠা এক নারীর অকস্মাৎ সব স্বজন হারিয়ে সর্বহারা হয়ে যাওয়া, সেই অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানো এবং অবশেষে দিগন্তবিস্তারী মহিমায় ১৭ কোটি মানুষের ত্রাতা হিসেবে নিজের অস্তিত্ব ঘোষণার গল্প নিয়ে এই ছবি।

পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার পর আপন দেহভস্ম থেকে গ্রিক পুরাণের ফিনিক্স পাখির পুনরুত্থান, এই গল্প যেন সেই পৌরাণিক আখ্যানের বাস্তব প্রকাশ। যেন এক জাদুবাস্তবতা নির্ভর পরাবাস্তব গল্প। এই ছবির সবচেয়ে বড় আকর্ষণীয় দিক হলো, এখানে একেবারে হারিয়ে যাওয়ার মতো পর্যায় থেকে স্বমহিমায় যার ফিরে আসার গল্প বলা হয়েছে, তিনি নিজেই সেই গল্পের মূল কথক। তিনি হলেন, বাংলার ‘ফিনিক্স পাখি’, বিশ্বনন্দিত রাজনীতিক আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল’ ছবিতে আত্মকথনের একপর্যায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা বলেন, ১৯৮১ সালের ৯ এপ্রিল তারা দুই বোন দিল্লির নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার দরগায় গিয়েছিলেন। সেখানে একজন খাদেম অনেক পুরোনো একটা খাতা এনে তাদের সামনে মেলে ধরলেন। সেই খাতায় বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর। তারিখ ৯ এপ্রিল, ১৯৪৬।

ওই প্রামাণ্যচিত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেখলাম তারিখটা ৯ এপ্রিল। ১৯৪৬ সালে আব্বা ওখানে গিয়েছিলেন। আর আমি গেলাম ৮১ সালের ৯ এপ্রিল। ৪৬ সাল, আমার জন্মের আগে উনি গিয়েছেন। আর আমি পাচ্ছি ৮১ সালের একই তারিখ। তখন আমার মনে একটা সাহস এল। মনে হলো আমাকে যেতে হবে। মানুষের জন্য কিছু করতে হবে। বোধ হয় এই বার্তাটাই আমি পাচ্ছি।’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ছিলেন। নিয়তি নির্ধারিত সেই অনুপস্থিতি সেদিন তাদের বাঁচিয়ে দিয়েছিল। বিদেশে বসে জানলেন, তিনি আক্ষরিক অর্থে এতিম হয়ে গেছেন।

ব্রাসেলস থেকে প্রথমে জার্মানিতে ও পরে ভারতে এসেছিলেন। দিল্লিতে থাকার সময় খুনিরা তাকে হত্যার চেষ্টা করছিল। আত্মরক্ষার্থে তখন দিল্লিতে দুই বোনকে নাম-পরিচয় পর্যন্ত গোপন করতে হয়েছিল। কিন্তু দেশে ফেরার ইচ্ছা তাকে তাড়া করে ফিরছিল। তিনি জানতেন, দেশে ফেরার পর তার পায়ে পায়ে বিপদ থাকবে, কিন্তু সেই বিপদকে সরিয়ে দেশবাসীকে স্বৈরাচারমুক্ত করতেই হবে। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশের মাটিতে পা রাখেন তিনি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশে ফেরা যেন বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘটনারই এক পুন:মঞ্চায়ন। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি লন্ডনের ক্ল্যারিজেস হোটেলে বঙ্গবন্ধুকে যখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, যুদ্ধে সব শেষ হয়ে যাওয়া দেশে ফিরে তিনি কী করবেন? জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার দেশের মাটি আছে, আমার জনগণ আছে। আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াব’। মানুষ এবং মাটিই যে তার শক্তির উৎস ছিল দেশবাসী সেটি জানতেন, সেদিন তিনি তা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছিলেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বঙ্গবন্ধুকেই ধারণ ও বহন করে চলেছেন, যত দিন যাচ্ছে তা স্পষ্ট হচ্ছে।

১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা যখন দেশের মাটিতে পা রেখেছেন, সে মুহূর্তে ঘাতকেরা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আসন দখল করে আছে। ‘জয় বাংলা’, ‘বঙ্গবন্ধু’-এ শব্দগুলো তখন নিষিদ্ধ পংক্তিমালা। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে জাতিকে কলঙ্ক থেকে মুক্ত করেছেন। দীর্ঘ যাত্রায় নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে, কারাভোগ করে, একাধিকবার গৃহবন্দী হয়ে, হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গিয়ে তিনি চারবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন।

প্রায় চার দশক ধরে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে যাওয়া এই মহিয়সী ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মেছিলেন। মধুমতি নদী, বাঘিয়ার বিল আর বর্নির বাঁওড়ের জলকল্লোলস্নাত পরিবেশে শৈশব কেটেছে তার। মাটি আর মৃত্তিকাসংলগ্ন মানুষের মধ্যে বেড়ে ওঠা। সেই কোমল মাটির মতো মানুষটিকে জাতির বৃহত্তর প্রয়োজনে কখনো কখনো কঠোর হতে হয়েছে। কোমলে-কঠোরে মিলে এক অনন্য চরিত্রে আজ তিনি জাতির স্বপ্ন ও আশার ধ্রুব নক্ষত্র।

বঙ্গবন্ধুর স্মরণশক্তি ছিল অত্যন্ত প্রখর। প্রচলিত আছে তিনি কারও নাম শুনলে সচরাচর সেই নাম ভুলতেন না। দেশের কোথায় কী হচ্ছে তা বঙ্গবন্ধুর নখদর্পণে ছিল। সব খোঁজখবর তিনি রাখতেন। এই গুণগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে স্পষ্ট।

আমার মনে পড়ছে, ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অল্প কয়েক দিন আগে আমি তখন র‌্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে একটা কাজে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে কথা প্রসঙ্গে ঢাকায় ক্যাসিনো থাকার কথা বললেন। অতঃপর জিজ্ঞেস করেন, ‘তাহলে তুমি কী করছ? তুমি এগুলো দেখছ না কেন?’ আমি বেশ অবাক হলাম। তার নলেজের বাইরে যে কিছুই নেই, সেটা আরও একবার উপলব্ধি করলাম।

আমি বললাম, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ব্রিটিশ আমলে প্রণীত জুয়া আইনটি খুব দুর্বল। তাছাড়া, প্রয়োগের বিষয়টা জেলার অধিক্ষেত্রে দেখেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আর মেট্রোপলিটন এলাকায় এ বিষয়টি দেখেন পুলিশ কমিশনার। মানে জুয়া আইন বাস্তবায়নে সরাসরি র্যাবের তেমন কিছু করার নেই।’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘আমি যদি তোমাকে নির্দেশ দিই?’ আমি বললাম, ‘আপনি নির্দেশ দিলেতো আমি অবশ্যই করতে পারি- ইন নো টাইম’। পরে আমি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে র‌্যাবকে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিই। এর ফলে যা হলো, সেটি এই অঞ্চলে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনন্য উদাহরণ এবং বাকিটা ইতিহাস।

এর কিছু দিন পরে র‌্যাবের ‘রেইজিং ডে’ ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেখানে গিয়েছিলেন। ওই সময় সুন্দরবনে জলদস্যু দমন অভিযানের কারণে আমরা জানতে পারি বঙ্গোপসাগরে ছোট ছোট অনেকগুলো দ্বীপ জাগতে শুরু করেছে। তখন আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বললাম, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গোপসাগরে নতুন কিছু দ্বীপ ভেসে উঠছে। আমরা আমদের কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য কি এ রকম একটা দ্বীপ নিতে পারি, যেখানে বিদেশি পর্যটক ও দেশের মানুষের জন্য কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করা যেতে পারে’। তিনি তার মোবাইল ফোন খুললেন। মুহূর্তের মধ্যেই তিনি মোবাইলের স্ক্রিন আমার সামনে ধরে জেগে ওঠা দ্বীপগুলোর নাম ধরে বলতে লাগলেন, ‘এই দেখ, এটা এই আইল্যান্ড, ওটা হলো ওই আইল্যান্ড।’ দ্বীপগুলোর কোনটাতে কোন ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন, সেটাও তিনি বলে দিচ্ছিলেন। দেখলাম, তিনি ওই দ্বীপগুলো সম্পর্কে আগাগোড়া পরিচ্ছন্ন ধারণা নিয়ে বসে আছেন। আমি হতভম্ব ও হতবাক! দেশকে এগিয়ে নিতে হলে, আগে দেশকে ভালোভাবে জানতে হবে-এই সত্যটা তার কাছ থেকে আমি সবচেয়ে বেশি জেনেছি।

আমি পুলিশের মহাপরিদর্শক হওয়ার পর যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলাম, তখন তিনি আমাকে বললেন, ‘দেখ, পুলিশকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে হলে প্রশিক্ষণকে প্রাধান্য দিতেই হবে। তোমাদের মধ্যে র্যাংকের পরিবর্তন হলেই মাঝে মাঝে প্রশিক্ষণ হয়। এটা কিন্তু ঠিক না। বছরব্যাপীই কিন্তু তোমাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলমান থাকতে হবে। সকল অফিসারসহ প্রতিটি সদস্যকে প্রতি বছরই প্রশিক্ষণে থাকতে হবে, সে যে র‌্যাংকেরই হোক না কেন।’

আমার আবারও চমকানোর পালা। প্রশিক্ষণ ছাড়া যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহিনী এগোতে পারে না, সেটি তিনি কতোটা উপলব্ধি করেন!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই পরামর্শের ধারাবাহিকতায় আমরা এ বছর ৫ সেপ্টেম্বর সব র‌্যাংকের অফিসারসহ সব সদস্যের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছি। পুলিশ বাহিনী গঠন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এটি একটি বিরল ঘটনা যে, সকল র‌্যাংকের সবার জন্য প্রতি বছর নিয়মিত প্রশিক্ষণ নেওয়ার যাত্রা শুরু হলো। এইভাবে রাজনীতি, অর্থনীতি, কূটনীতি প্রতিটি ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঈর্ষণীয় প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়ে আসছেন।

৮০র দশকে তৎকালীন বিশ্বরাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশ্বসভায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল খুবই দুর্বল। বৈশ্বিক পরিম-লে অনেকটা নতজানু হয়ে থাকতে হতো আমাদের। মাত্র ৭০ মিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে আমাদের তদানিন্তন অর্থমন্ত্রীদের প্যারিস কনসোটিয়ামের বৈঠকে দুর্বল চিত্তে হাজির হতে হতো। আজ আমাদের দেশ অন্যদের ২০০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে।

২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে তাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল। নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা প্রসারে স্বীকৃতি স্মারক ‘শান্তি বৃক্ষ’ দেয়ার সময় তার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ইউনেসকোর প্রধান। তাকে ‘সাহসী নারী’ অভিহিত করে জাতিসংঘের এ সংস্থাটির প্রধান বলেছেন, ‘নারী ও কন্যাশিশুদের ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বমঞ্চের জোরালো এক কণ্ঠ।’ গত সপ্তাহে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’-এ ভূষিত করেছে। পুরস্কার প্রদানকালে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক এসডিএসএনের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন কৌশলবিদ প্রফেসর জেফরি স্যাকস শেখ হাসিনাকে উন্নয়নশীল দেশের অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে ‘জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন অব দি ডে’ হিসেবে তুলে ধরেন, যা প্রতিটি বাংলাদেশি বাঙালির জন্য অত্যন্ত গর্বের।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাকাব্যিক অর্জন ও সাফল্যগাঁথা কোন ছোট একটি প্রবন্ধে কিংবা পুস্তকে তুলে আনা অসম্ভব আস্পর্ধা।

তিনি সাধারণ মানুষের অন্তরের কতটা গভীরে যেতে পেরেছেন তার প্রমাণ গফরগাঁওয়ের রিকশাচালক হাসমত আলী। হতদরিদ্র হাসমত আলী নিজের সব সঞ্চয় দিয়ে জমি কিনে তা শেখ হাসিনার নামে লিখে দিয়েছিলেন। অথচ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কোনো দিন দেখাই হয়নি।

এই রকম দেশের অগণিত হাসমত আলীর দোয়ার বরকতেই কমপক্ষে ১৯ বার হত্যাচেষ্টার হাত থেকে বেঁচে প্রধানমন্ত্রী মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন। ৭৫তম জন্মদিনের এই শুভ মুহূর্তে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন। তার জন্য শুভাশীষ- শতায়ু হোন সংশপ্তক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

[লেখক : ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ]

back to top