alt

উপ-সম্পাদকীয়

জাতি গঠনের কারিগর

আনোয়ার হোসেন রাজু

: সোমবার, ০৪ অক্টোবর ২০২১

বলা হয়ে থাকে শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। আর সেই মেরুদণ্ড গঠনের কারিগরের নামই হচ্ছে শিক্ষক। জন্মের পর পরিবার থেকে আামাদের শিক্ষা জীবনের উন্মেষ ঘটে। পরিবারেই আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি। আমাদের জীবনাচরণের প্রাথমিক দিকগুলো পরিবার থেকেই অর্জন করে থাকি। কিন্তু আমাদের শিক্ষার পরিপূর্ণতা অর্জনের নিমিত্তে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হতে হয়। সেখানেই আমরা আলোকিত জাতি গঠনের কারিগর শিক্ষক সমাজের সংস্পর্শ পেয়ে থাকি। যেখানে আমাদের চলার পথের প্রতিটা প্রদক্ষেপে শিক্ষক নামক শব্দটি জড়িয়ে যায়। প্রতিটা শিক্ষিত জনশক্তি সৃষ্টির পেছনে অজস্র শিক্ষকের মেধা, শ্রম, শাসন, দিকনির্দেশনার গল্প মিশে থাকে। যারা আমাদের শিক্ষা দেন সততা, নীতি-নৈতিকতা ও উত্তম চরিত্র গঠনসহ জীবন সাজানোর সব নিয়মকানুন। সমাজ সভ্যতার নিমিত্তে নিজেদের হাতে অগ্নিশিখা ধারণ করে জাতিকে পথ দেখিয়ে সম্মুখে যাওয়ার শক্তি জোগান দেন। নিজেদের জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেন দিগ-দিগন্তে। তারা নিজেরা মোমের মতো পুড়ে গলে উন্নত জাতি গঠন করেন। আর সেই গঠিত প্রতিটি মনুষ্য হৃদয়েই তারা বেঁচে থাকেন। অনেক সময় তাদের শাসন বারণে আমরা অনেক বেশি রাগান্বিত হয়ে উঠি। কিন্তু পরবর্তী ব্যক্তিজীবনে অনুধাবন করতে পারি, জীবনের উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে তাদের শাসন বারণের অপরিহার্যতা। আমাদের জীবনের পদচারণার প্রতিটি বক্ররেখাকে সরল করার পথ তৈরি করে দেন একজন শিক্ষক।

১৯৯৪ সাল থেকে জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কোর উদ্যেগে প্রতিবছর ৫ অক্টোবর সারা বিশ্বে শিক্ষক দিবস উদ্্যাপিত হয়ে আসছে। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও অনেকটা নীরবতার সঙ্গে হলেও দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। শিক্ষক সম্পর্কে উইলিয়াম আর্থার বলেন, একজন সাধারণ শিক্ষক বক্তৃতা করেন, একজন ভালো শিক্ষক বিশ্লেষণ করেন, একজন উত্তম শিক্ষক প্রদর্শন করেন, একজন শ্রেষ্ঠ শিক্ষক অনুপ্রাণিত করেন। আমেরিকার ইতিহাসবিদ হেনরি এডামস শিক্ষকের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন, একজন শিক্ষক সামগ্রিকভাবে প্রভাব ফেলেন, কেউ বলতে পারে না তার প্রভাব কোথায় গিয়ে শেষ হয়। দার্শনিক বাট্রার্ন্ড রাসেল এ বিষয়ে বলেছেন, শিক্ষক সমাজ হচ্ছেন প্রকৃত সমাজ ও সভ্যতার বিবেক।

তবে আমাদের সমাজে দিন দিন শিক্ষকরা তাদের সম্মানের জায়গা হারিয়ে ফেলছেন। এর পেছনে কিছু কারণ নিহীত আছে। আমরা সবাই জানি, যে জাতি যত বেশি সু-শিক্ষিত, সে জাতি তত বেশি উন্নত। তবে আরও একটা কথাও জানি, দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যজ্য। শিক্ষকদের হতে হয় ন্যায়পরায়ন, চরিত্রবান ও দায়িত্ববোধ সম্পন্ন। বর্তমানে খুবই অনুতাপ এবং হতাশার একটা বিষয় হচ্ছে অনেক শিক্ষক দুর্নীতি, জালিয়াতি, ঘুষ এমনকি ধর্ষণের মতো অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। যার কারণে অনেক অভিভাবক তাদের আস্থার জায়গা হারাচ্ছে। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে সারা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সম্মানজনক পেশা হিসেবে বিবেচিত শিক্ষকতা পেশা তার সম্মানের জায়গা অচিরেই হারিয়ে ফেলবে।

[লেখক : শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

জনসংখ্যা : সম্পদ না সংকট?

ব্রিকসে নতুন ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান

রম্যগদ্য : ‘ল্যাংড়া-লুলা, আতুড়-পাতুড়’

আষাঢ়ী পূর্ণিমা : আত্মশুদ্ধির সাধনায় বুদ্ধের অনন্ত আলো

বদলে যাওয়া মাটিতে সাহসী বীজ : জলবায়ুর বিপরীতে বাংলাদেশের কৃষির অভিযোজনগাথা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : ‘শিকলে নাহি দিব ধরা’

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

দেশের অর্থ পাচারের বাস্তবতা

খাদ্য নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত

আবারও কি রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবে বিশ্ব?

প্লান্ট ক্লিনিক বদলে দিচ্ছে কৃষির ভবিষ্যৎ

ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী করতে করণীয়

রম্যগদ্য : ‘ডন ডনা ডন ডন...’

ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব : কে সন্ত্রাসী, কে শিকার?

সুস্থ ও শক্তিশালী জাতি গঠনে শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব

প্রতিরোধই উত্তম : মাদকমুক্ত প্রজন্ম গড়ার ডাক

tab

উপ-সম্পাদকীয়

জাতি গঠনের কারিগর

আনোয়ার হোসেন রাজু

সোমবার, ০৪ অক্টোবর ২০২১

বলা হয়ে থাকে শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। আর সেই মেরুদণ্ড গঠনের কারিগরের নামই হচ্ছে শিক্ষক। জন্মের পর পরিবার থেকে আামাদের শিক্ষা জীবনের উন্মেষ ঘটে। পরিবারেই আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি। আমাদের জীবনাচরণের প্রাথমিক দিকগুলো পরিবার থেকেই অর্জন করে থাকি। কিন্তু আমাদের শিক্ষার পরিপূর্ণতা অর্জনের নিমিত্তে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হতে হয়। সেখানেই আমরা আলোকিত জাতি গঠনের কারিগর শিক্ষক সমাজের সংস্পর্শ পেয়ে থাকি। যেখানে আমাদের চলার পথের প্রতিটা প্রদক্ষেপে শিক্ষক নামক শব্দটি জড়িয়ে যায়। প্রতিটা শিক্ষিত জনশক্তি সৃষ্টির পেছনে অজস্র শিক্ষকের মেধা, শ্রম, শাসন, দিকনির্দেশনার গল্প মিশে থাকে। যারা আমাদের শিক্ষা দেন সততা, নীতি-নৈতিকতা ও উত্তম চরিত্র গঠনসহ জীবন সাজানোর সব নিয়মকানুন। সমাজ সভ্যতার নিমিত্তে নিজেদের হাতে অগ্নিশিখা ধারণ করে জাতিকে পথ দেখিয়ে সম্মুখে যাওয়ার শক্তি জোগান দেন। নিজেদের জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেন দিগ-দিগন্তে। তারা নিজেরা মোমের মতো পুড়ে গলে উন্নত জাতি গঠন করেন। আর সেই গঠিত প্রতিটি মনুষ্য হৃদয়েই তারা বেঁচে থাকেন। অনেক সময় তাদের শাসন বারণে আমরা অনেক বেশি রাগান্বিত হয়ে উঠি। কিন্তু পরবর্তী ব্যক্তিজীবনে অনুধাবন করতে পারি, জীবনের উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে তাদের শাসন বারণের অপরিহার্যতা। আমাদের জীবনের পদচারণার প্রতিটি বক্ররেখাকে সরল করার পথ তৈরি করে দেন একজন শিক্ষক।

১৯৯৪ সাল থেকে জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কোর উদ্যেগে প্রতিবছর ৫ অক্টোবর সারা বিশ্বে শিক্ষক দিবস উদ্্যাপিত হয়ে আসছে। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও অনেকটা নীরবতার সঙ্গে হলেও দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। শিক্ষক সম্পর্কে উইলিয়াম আর্থার বলেন, একজন সাধারণ শিক্ষক বক্তৃতা করেন, একজন ভালো শিক্ষক বিশ্লেষণ করেন, একজন উত্তম শিক্ষক প্রদর্শন করেন, একজন শ্রেষ্ঠ শিক্ষক অনুপ্রাণিত করেন। আমেরিকার ইতিহাসবিদ হেনরি এডামস শিক্ষকের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন, একজন শিক্ষক সামগ্রিকভাবে প্রভাব ফেলেন, কেউ বলতে পারে না তার প্রভাব কোথায় গিয়ে শেষ হয়। দার্শনিক বাট্রার্ন্ড রাসেল এ বিষয়ে বলেছেন, শিক্ষক সমাজ হচ্ছেন প্রকৃত সমাজ ও সভ্যতার বিবেক।

তবে আমাদের সমাজে দিন দিন শিক্ষকরা তাদের সম্মানের জায়গা হারিয়ে ফেলছেন। এর পেছনে কিছু কারণ নিহীত আছে। আমরা সবাই জানি, যে জাতি যত বেশি সু-শিক্ষিত, সে জাতি তত বেশি উন্নত। তবে আরও একটা কথাও জানি, দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যজ্য। শিক্ষকদের হতে হয় ন্যায়পরায়ন, চরিত্রবান ও দায়িত্ববোধ সম্পন্ন। বর্তমানে খুবই অনুতাপ এবং হতাশার একটা বিষয় হচ্ছে অনেক শিক্ষক দুর্নীতি, জালিয়াতি, ঘুষ এমনকি ধর্ষণের মতো অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। যার কারণে অনেক অভিভাবক তাদের আস্থার জায়গা হারাচ্ছে। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে সারা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সম্মানজনক পেশা হিসেবে বিবেচিত শিক্ষকতা পেশা তার সম্মানের জায়গা অচিরেই হারিয়ে ফেলবে।

[লেখক : শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

back to top