চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাগর উপকূলের ৩৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অরক্ষিত থাকায় মৃত্যু ঝুঁকি মাথায় নিয়ে বসবাস করছেন লোকজন। ইতোমধ্যেই নবনির্মিত বেড়িবাঁধের ২৬ স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। সাগর উপকূলের প্যারাবন, বাইন বাগান নির্বিচারে কেটে সাবাড় করায় জলবায়ু পরিবর্তনের এ-যুগে পুরো উপকূল হুমকির মুখে পড়েছে। দীর্ঘদিনেও বেড়িবাঁধটি স্থায়ী বাঁধে পরিণত না হওয়ায় ঝুঁকি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
বাঁশখালীর উত্তর সীমান্ত পুকুরিয়া থেকে ছনুয়া পর্যন্ত সাগর পাড়ের প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধের অধিকাংশ এলাকা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। অরক্ষিত বেড়িবাঁধ নিয়ে উপকূলবাসীদের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। আসন্ন বর্ষায় সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস হলে উপকূলের অধিকাংশ গ্রাম তলিয়ে যাবার সম্ভবনা রয়েছে। বর্ষায় অরক্ষিত বাঁধ বেয়ে বন্যার পানি ঢুকে মাছের ঘের, লবণ মাঠ, ফসলি জমিসহ ডুবে কোটি টাকার ক্ষতির আশংকা করছে উপকূলবাসী। সাগর পাড়ে বসবাসকারী লোকজন অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সঠিক তদারকির অভাবে গেল দুই বছরের মাথায় ২০২৪’এ নির্মিত বেড়িবাঁধের প্রায় ২৬ স্থানে ফাটল ও ধস দেখা দিয়েছে। জলোচ্ছ্বাস ছাড়াই সমুদ্রের স্বাভাবিক ঢেউয়ে ভেঙে গেছে সিসি ব্লক। কোথাও কোথাও বেড়ীবাঁধের প্রায় অংশ সমতলে বিলীনের পথে। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বড় বিপর্যয়ের আশংকা করছে বাঁশখালী উপকূলের অধীবাসীরা। এ বিষয় জানতে চাইলে পাউবো কর্তৃপক্ষ বলেছেন, আগামী বর্ষার আগে বরাদ্দ পাবার সুযোগ নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঁশখালী উপকূলবাসীর জীবন রক্ষায় ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকায় নব নির্মিত স্থায়ী বেড়িবাঁধ জলোচ্ছ্বাস ছাড়াই ভাঙছে আর ভাঙছে। খানখানাবাদ উপকূলের কদম রসুল গ্রামে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ার-ভাটার পানি ঢুকে ভাঙ্গন বিশালকার রূপ নিচ্ছে। কোথাও আবার বাঁধ ধসে গেছে ভয়ানকভাবে। একই দৃশ্য খানখানাবাদের প্রেমাশিয়া, খানখানাবাদ গ্রাম, পুকুরিয়ার তেইচ্ছিপাড়া, সাধনপুরের রাতা খোর্দ, গন্ডামারার বড়ঘোনায়, শেখেরখীলের ফাঁড়ি মূখের অদূরে, ছনুয়ার ছোট ছনুয়া। ওইসব স্থানগুলোর অন্তত ২৬ স্থানে নব নির্মিত বেড়িবাঁধে সিসি ব্লকে ধ্বস দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রীতে নির্মিত সিসি ব্লকের সিমেন্ট উঠে গিয়ে সিসি ব্লক ভেঙে গেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের নামে লুটপাটের কারণে অল্প সময়ে স্থায়ী বেড়িবাঁধে ফাটল ধরেছে এবং ভাঙছে। যার ফলে কোটি টাকার বেড়ীবাঁধ এখনো অধরা, স্বপ্নের মতোই।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে আরও বলেন, ২০১৫ সালে বাঁশখালীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হলে কাজ শেষ হয় ২০২২ সালে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নানা রকম কৌশল অবলম্বন করে দুর্নীতি করেছেন এ বাঁধ নির্মাণে। বেড়িবাঁধ রক্ষায় ঢালু বেড়িবাঁধে পর্যাপ্ত ঘাস ও গাছ লাগানোর কথা থাকলেও তা লাগানো হয়নি। ব্লক নির্মাণে নিম্নমানের পাথর, ইট, সিমেন্ট ও বালু ব্যবহার করায় কাজ বুঝিয়ে দেয়ার আগেই অধিকাংশ সিসি ব্লক ভেঙে গেছে। বিস্তীর্ণ বেড়িবাঁধ জুড়ে ভাঙা সিসি ব্লক দৃশ্যমান হলেও পাউবো’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কোনো নজর নেই। অতিবৃষ্টি কিংবা বর্ষার ঢলে, সমুদ্রের জোয়ারের ঢেউয়ে বিলীন হয়ে যেতে বসেছে বাঁধের অধিকাংশ পয়েন্ট। এখনও বাঁশখালী উপকুলের নি¤œাঞ্চলেরর মানুষ দূর্যোগকালীন সময়ে আতংকে থাকেন। এ উপজেলার মানুষ এখনও প্রতি বর্ষায় নির্ঘুম রাত কাটান। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে জীবন এবং সম্পদ বাঁচাতে সমন্বিত উপকূল সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের আওতায় বেড়িবাঁধে বনায়ন গড়ে তুলার কার্যক্রমও হাতে নেয়া হয়নি।
পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অনুপম পাল বলেন, বাঁশখালী উপকূলের বেড়িবাঁধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। বেড়িবাঁধের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। তবে তা আগামী বর্ষার আগে পাবার সম্ভাবনা নেই। তবে দুর্যোগ ঠেকাতে তারা সার্বক্ষণিক বাঁশখালীকে নজরে রেখেছেন।
বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাগর উপকূলের ৩৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অরক্ষিত থাকায় মৃত্যু ঝুঁকি মাথায় নিয়ে বসবাস করছেন লোকজন। ইতোমধ্যেই নবনির্মিত বেড়িবাঁধের ২৬ স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। সাগর উপকূলের প্যারাবন, বাইন বাগান নির্বিচারে কেটে সাবাড় করায় জলবায়ু পরিবর্তনের এ-যুগে পুরো উপকূল হুমকির মুখে পড়েছে। দীর্ঘদিনেও বেড়িবাঁধটি স্থায়ী বাঁধে পরিণত না হওয়ায় ঝুঁকি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
বাঁশখালীর উত্তর সীমান্ত পুকুরিয়া থেকে ছনুয়া পর্যন্ত সাগর পাড়ের প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধের অধিকাংশ এলাকা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। অরক্ষিত বেড়িবাঁধ নিয়ে উপকূলবাসীদের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। আসন্ন বর্ষায় সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস হলে উপকূলের অধিকাংশ গ্রাম তলিয়ে যাবার সম্ভবনা রয়েছে। বর্ষায় অরক্ষিত বাঁধ বেয়ে বন্যার পানি ঢুকে মাছের ঘের, লবণ মাঠ, ফসলি জমিসহ ডুবে কোটি টাকার ক্ষতির আশংকা করছে উপকূলবাসী। সাগর পাড়ে বসবাসকারী লোকজন অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সঠিক তদারকির অভাবে গেল দুই বছরের মাথায় ২০২৪’এ নির্মিত বেড়িবাঁধের প্রায় ২৬ স্থানে ফাটল ও ধস দেখা দিয়েছে। জলোচ্ছ্বাস ছাড়াই সমুদ্রের স্বাভাবিক ঢেউয়ে ভেঙে গেছে সিসি ব্লক। কোথাও কোথাও বেড়ীবাঁধের প্রায় অংশ সমতলে বিলীনের পথে। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বড় বিপর্যয়ের আশংকা করছে বাঁশখালী উপকূলের অধীবাসীরা। এ বিষয় জানতে চাইলে পাউবো কর্তৃপক্ষ বলেছেন, আগামী বর্ষার আগে বরাদ্দ পাবার সুযোগ নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঁশখালী উপকূলবাসীর জীবন রক্ষায় ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকায় নব নির্মিত স্থায়ী বেড়িবাঁধ জলোচ্ছ্বাস ছাড়াই ভাঙছে আর ভাঙছে। খানখানাবাদ উপকূলের কদম রসুল গ্রামে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ার-ভাটার পানি ঢুকে ভাঙ্গন বিশালকার রূপ নিচ্ছে। কোথাও আবার বাঁধ ধসে গেছে ভয়ানকভাবে। একই দৃশ্য খানখানাবাদের প্রেমাশিয়া, খানখানাবাদ গ্রাম, পুকুরিয়ার তেইচ্ছিপাড়া, সাধনপুরের রাতা খোর্দ, গন্ডামারার বড়ঘোনায়, শেখেরখীলের ফাঁড়ি মূখের অদূরে, ছনুয়ার ছোট ছনুয়া। ওইসব স্থানগুলোর অন্তত ২৬ স্থানে নব নির্মিত বেড়িবাঁধে সিসি ব্লকে ধ্বস দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রীতে নির্মিত সিসি ব্লকের সিমেন্ট উঠে গিয়ে সিসি ব্লক ভেঙে গেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের নামে লুটপাটের কারণে অল্প সময়ে স্থায়ী বেড়িবাঁধে ফাটল ধরেছে এবং ভাঙছে। যার ফলে কোটি টাকার বেড়ীবাঁধ এখনো অধরা, স্বপ্নের মতোই।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে আরও বলেন, ২০১৫ সালে বাঁশখালীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হলে কাজ শেষ হয় ২০২২ সালে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নানা রকম কৌশল অবলম্বন করে দুর্নীতি করেছেন এ বাঁধ নির্মাণে। বেড়িবাঁধ রক্ষায় ঢালু বেড়িবাঁধে পর্যাপ্ত ঘাস ও গাছ লাগানোর কথা থাকলেও তা লাগানো হয়নি। ব্লক নির্মাণে নিম্নমানের পাথর, ইট, সিমেন্ট ও বালু ব্যবহার করায় কাজ বুঝিয়ে দেয়ার আগেই অধিকাংশ সিসি ব্লক ভেঙে গেছে। বিস্তীর্ণ বেড়িবাঁধ জুড়ে ভাঙা সিসি ব্লক দৃশ্যমান হলেও পাউবো’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কোনো নজর নেই। অতিবৃষ্টি কিংবা বর্ষার ঢলে, সমুদ্রের জোয়ারের ঢেউয়ে বিলীন হয়ে যেতে বসেছে বাঁধের অধিকাংশ পয়েন্ট। এখনও বাঁশখালী উপকুলের নি¤œাঞ্চলেরর মানুষ দূর্যোগকালীন সময়ে আতংকে থাকেন। এ উপজেলার মানুষ এখনও প্রতি বর্ষায় নির্ঘুম রাত কাটান। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে জীবন এবং সম্পদ বাঁচাতে সমন্বিত উপকূল সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের আওতায় বেড়িবাঁধে বনায়ন গড়ে তুলার কার্যক্রমও হাতে নেয়া হয়নি।
পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অনুপম পাল বলেন, বাঁশখালী উপকূলের বেড়িবাঁধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। বেড়িবাঁধের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। তবে তা আগামী বর্ষার আগে পাবার সম্ভাবনা নেই। তবে দুর্যোগ ঠেকাতে তারা সার্বক্ষণিক বাঁশখালীকে নজরে রেখেছেন।