ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাসের চরম সংকট চলছে। এর প্রভাব পড়েছে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার ফিলিং স্টেশনগুলোতে। সেখানে দীর্ঘ লাইন দিয়েও গ্যাস পাওয়া প্রচন্ড কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এক থেকে ২টি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস পেতেই দেড় থেকে ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
আবার অটোরিকশায় গ্যাস পেতে দিনভর লাইন ধরতে হচ্ছে। এই সুযোগে চলছে অনিয়ম, পেট্রল পাম্পে ড্রাইভারদের সঙ্গে বাজে আচরণ। গ্যাসের চাপ নেই। গ্যাস দেয়া যাবে না। চলে যান। এরপরও প্রভাব খাটিয়ে, হুমকি দিয়ে কার আগে কে গ্যাস নিবে। তখন একজন আরেকজনকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। গত শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনগুলোতে এই বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে।
এই সম্পর্কে শনিবার পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা নাজমুল হক মুঠোফোনে সংবাদকে জানান, তাদের নিয়ন্ত্রণে প্রায় আড়াইশ’র বেশি পেট্রল পাম্প রয়েছে। গত ৪ থেকে ৫ দিন ধরে পেট্রল পাম্পগুলোতে প্রচ- গ্যাস সংকট চলছে।
এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, গ্যাসের সরবরাহ কম, পেট্রল পাম্পে গ্যাসের চাপ নেই। তারা গ্যাস দিতে পারছে না। তিনি বলেন, গ্যাস অনুসন্ধানের চেয়ে গ্যাস আমদানির দিকে নজর দেয়ায় এখন পেট্রল পাম্প ছাড়াও বাসা-বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ কমে গেছে।
আরও বলেন, গ্যাসের উৎপাদন ও আমদানি বাড়াতে না পারার কারণে এই গ্যাস সংকট চলছে। এইটা এখন চরম আকার ধারণ করছে। অনেকেই এই সব বিষয় জেনেও রহস্যজনক কারণে তা প্রকাশ করছে না। ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়ে এ সমস্যার কথা তুলে ধরছেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিজয় নগর এলাকার প্রাইভেটকারচালক মোহাম্মদ দুলাল জানান, বিজয় নগর থেকে চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত যেতে ১০ থেকে ১৫টি পেট্রল ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস নেয়ার চেষ্টা করেও পাইনি। শুধু একটি স্টেশনে ২ ঘন্টারও বেশী সময় ধরে লাইন দিয়ে সিরিয়াল পাইলেও গ্যাসের চাপ ছিল কম।
কয়েকটি স্টেশনে গ্যাস সংকটের কারন জানতে চাইলে ড্রাইভারের সঙ্গে বাজে আচরণ করে লাইন থেকে তাড়িয়ে দেয়ার কথা জানান। লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী ও কুমিল্লার স্টেশনগুলোতে লাইন ধরতে সিরিয়ালে গেলেও বকাবকি করছে। সড়ক ও মহাসড়কে গ্যাস সংকটের প্রভাবে হাজার হাজার যানবাহন চলাচল ছিল শম্বুক গতির। ফলে ৪ ঘণ্টার স্থলে ৯টায় গন্তব্যে পৌঁছা কষ্টকর হয়েছে।
ড্রাইভার দুলাল জানান, গ্যাস সংকটের কারণে মহাসড়কে প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে বের হওয়া কষ্টকর। এজন্য অনেকেই এখন মহাসড়কে যেতেও চায় না। যারা যান ২ একটি স্টেশন থেকে গ্যাসের পরিবর্তে জ্বালানি তেল (অকটেন, পেট্রল) সংগ্রহ করে চলাচল করছেন।
গত শুক্রবার সরজমিনে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে লক্ষ্মীপুরের দিকে যেতে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে শত শত অটোরিকশা গ্যাসের জন্য দীর্ঘ লাইন ধরে আছে। এক বেলার গ্যাস নিতে তাদের দিন কেটে যায়। ওইদিন তাদের গাড়ি চালানো কষ্টকর। এভাবে অনেক অটোরিকশাচালক দিনের পর দিন গ্যাস সংকটের কারণে অটোরিকশা চালাতে পারছে না। এর ফলে তাদের দিনের ভাড়া উঠানো কষ্টকর। এভাবে চলছে তাদের জীবন।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে যাদেরকে রাস্তার কাছে দীর্ঘ লাইনে দেখা গেছে। বিকেল ৪টার দিকে ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করেও তাদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। গ্যাস পাওয়া যেন তাদের জন্য সোনার হরিণ।
অভিযোগ রয়েছে, কষ্টকরে গ্যাস পাওয়ার জন্য বাড়তি টাকা উঠাতে অটোরিকশার (সিএনজি) ভাড়াও বেশি নিচ্ছে। আবার একই অটোরিকশায় ৩ থেকে ৪ জন করে বসিয়ে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে। এমনকি তারা আইন অমান্য করে মহাসড়কে উঠে অটোরিকশা চালাচ্ছে। এতেও প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কে এই ধরনে চিত্র প্রায়ই দেখা যাচ্ছে।
যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার ঝড়বৃষ্টির সময় মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের টহল নজরে পড়েনি। তবে দুপুরের দিকে লাকসাম পার হওয়ার পর নোয়াখালী এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের একটি টহল গাড়ি নজরে পড়ে। আগে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ টহল জোরদার ছিল।
হাইওয়ে পুলিশের হেডকোয়ার্টার্সের একজন অতিরিক্ত ডিআইজি সংবাদকে জানান, সড়ক মহাসড়কে দিনে প্রায় এক লাখ ১০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। এ সংখ্যা কখনো বাড়ে। আবার কখনো কমে। মহাসড়কে অনেক সময় জেলা পুলিশ ডিউটি করেন। হাইওয়ে পুলিশও থাকে। জেলা পুলিশ বিষয়টি দেখেন।
রোববার, ১৪ জুলাই ২০২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাসের চরম সংকট চলছে। এর প্রভাব পড়েছে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার ফিলিং স্টেশনগুলোতে। সেখানে দীর্ঘ লাইন দিয়েও গ্যাস পাওয়া প্রচন্ড কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এক থেকে ২টি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস পেতেই দেড় থেকে ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
আবার অটোরিকশায় গ্যাস পেতে দিনভর লাইন ধরতে হচ্ছে। এই সুযোগে চলছে অনিয়ম, পেট্রল পাম্পে ড্রাইভারদের সঙ্গে বাজে আচরণ। গ্যাসের চাপ নেই। গ্যাস দেয়া যাবে না। চলে যান। এরপরও প্রভাব খাটিয়ে, হুমকি দিয়ে কার আগে কে গ্যাস নিবে। তখন একজন আরেকজনকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। গত শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনগুলোতে এই বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে।
এই সম্পর্কে শনিবার পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা নাজমুল হক মুঠোফোনে সংবাদকে জানান, তাদের নিয়ন্ত্রণে প্রায় আড়াইশ’র বেশি পেট্রল পাম্প রয়েছে। গত ৪ থেকে ৫ দিন ধরে পেট্রল পাম্পগুলোতে প্রচ- গ্যাস সংকট চলছে।
এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, গ্যাসের সরবরাহ কম, পেট্রল পাম্পে গ্যাসের চাপ নেই। তারা গ্যাস দিতে পারছে না। তিনি বলেন, গ্যাস অনুসন্ধানের চেয়ে গ্যাস আমদানির দিকে নজর দেয়ায় এখন পেট্রল পাম্প ছাড়াও বাসা-বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ কমে গেছে।
আরও বলেন, গ্যাসের উৎপাদন ও আমদানি বাড়াতে না পারার কারণে এই গ্যাস সংকট চলছে। এইটা এখন চরম আকার ধারণ করছে। অনেকেই এই সব বিষয় জেনেও রহস্যজনক কারণে তা প্রকাশ করছে না। ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়ে এ সমস্যার কথা তুলে ধরছেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিজয় নগর এলাকার প্রাইভেটকারচালক মোহাম্মদ দুলাল জানান, বিজয় নগর থেকে চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত যেতে ১০ থেকে ১৫টি পেট্রল ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস নেয়ার চেষ্টা করেও পাইনি। শুধু একটি স্টেশনে ২ ঘন্টারও বেশী সময় ধরে লাইন দিয়ে সিরিয়াল পাইলেও গ্যাসের চাপ ছিল কম।
কয়েকটি স্টেশনে গ্যাস সংকটের কারন জানতে চাইলে ড্রাইভারের সঙ্গে বাজে আচরণ করে লাইন থেকে তাড়িয়ে দেয়ার কথা জানান। লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী ও কুমিল্লার স্টেশনগুলোতে লাইন ধরতে সিরিয়ালে গেলেও বকাবকি করছে। সড়ক ও মহাসড়কে গ্যাস সংকটের প্রভাবে হাজার হাজার যানবাহন চলাচল ছিল শম্বুক গতির। ফলে ৪ ঘণ্টার স্থলে ৯টায় গন্তব্যে পৌঁছা কষ্টকর হয়েছে।
ড্রাইভার দুলাল জানান, গ্যাস সংকটের কারণে মহাসড়কে প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে বের হওয়া কষ্টকর। এজন্য অনেকেই এখন মহাসড়কে যেতেও চায় না। যারা যান ২ একটি স্টেশন থেকে গ্যাসের পরিবর্তে জ্বালানি তেল (অকটেন, পেট্রল) সংগ্রহ করে চলাচল করছেন।
গত শুক্রবার সরজমিনে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে লক্ষ্মীপুরের দিকে যেতে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে শত শত অটোরিকশা গ্যাসের জন্য দীর্ঘ লাইন ধরে আছে। এক বেলার গ্যাস নিতে তাদের দিন কেটে যায়। ওইদিন তাদের গাড়ি চালানো কষ্টকর। এভাবে অনেক অটোরিকশাচালক দিনের পর দিন গ্যাস সংকটের কারণে অটোরিকশা চালাতে পারছে না। এর ফলে তাদের দিনের ভাড়া উঠানো কষ্টকর। এভাবে চলছে তাদের জীবন।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে যাদেরকে রাস্তার কাছে দীর্ঘ লাইনে দেখা গেছে। বিকেল ৪টার দিকে ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করেও তাদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। গ্যাস পাওয়া যেন তাদের জন্য সোনার হরিণ।
অভিযোগ রয়েছে, কষ্টকরে গ্যাস পাওয়ার জন্য বাড়তি টাকা উঠাতে অটোরিকশার (সিএনজি) ভাড়াও বেশি নিচ্ছে। আবার একই অটোরিকশায় ৩ থেকে ৪ জন করে বসিয়ে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে। এমনকি তারা আইন অমান্য করে মহাসড়কে উঠে অটোরিকশা চালাচ্ছে। এতেও প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কে এই ধরনে চিত্র প্রায়ই দেখা যাচ্ছে।
যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার ঝড়বৃষ্টির সময় মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের টহল নজরে পড়েনি। তবে দুপুরের দিকে লাকসাম পার হওয়ার পর নোয়াখালী এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের একটি টহল গাড়ি নজরে পড়ে। আগে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ টহল জোরদার ছিল।
হাইওয়ে পুলিশের হেডকোয়ার্টার্সের একজন অতিরিক্ত ডিআইজি সংবাদকে জানান, সড়ক মহাসড়কে দিনে প্রায় এক লাখ ১০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। এ সংখ্যা কখনো বাড়ে। আবার কখনো কমে। মহাসড়কে অনেক সময় জেলা পুলিশ ডিউটি করেন। হাইওয়ে পুলিশও থাকে। জেলা পুলিশ বিষয়টি দেখেন।