শেরপুর (বগুড়া) : কাঁচা রাস্তায় চলাচলে ভোগান্তি এলাকাবাসীর -সংবাদ
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়ন। সর্বশেষ জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী, ৫.৬৮ বর্গমাইল আয়তনের এই ইউনিয়নের ২৩ টি গ্রামে প্রায় অর্ধ লাখ মানুষের বসবাস। এই ইউনিয়নের ঘোলাগাড়ী থেকে রাজবাড়ী, কানাইকান্দর স্কুল থেকে বাঘমারা, এবং রাজবাড়ী থেকে দড়িমুকুন্দ এলাকার ৪টি সড়কে ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছেন কয়েক হাজার মানুষ। গ্রামগুলোর ৪টি কাঁচা সড়কে বর্ষাকালে হাঁটুকাদা ও বছরের অন্যান্য সময় ধুলো-বালির কারণে স্থবির হয়ে পড়ে এখানকার জনজীবন।
জানাযায় বহু বছর ধরেই কাঁচা সড়ক ৪টি পাকাকরণের দাবি জানিয়ে আসছেন ৭ গ্রামের প্রায় মানুষ। এই গ্রামগুলোতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদেরও বসবাস রয়েছে। আশ্বাসে সীমাবদ্ধ থাকা সড়কে সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়েই চলতে হচ্ছে তাদের। জনপ্রতিনিধিদের কাছে পাকা সড়ক নির্মাণের জন্য বারবার ধর্না দিয়েও সাড়া পাননি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এই ৪ সড়ক দিয়ে ৭ গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। এছাড়াও, এই ৪টি সড়ক লাগোয়া বাঘমারা শান্তিনিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কানাইকান্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কানাইকান্দর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কানাইকান্দর ঘোলাগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। বর্ষা মৌসুমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কমে যায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার। কয়েক গ্রামের শত শত শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ৪টি বেহাল সড়কের বিরূপ প্রভাব পড়ছে প্রতিনিয়ত। কাদা মাড়িয়ে পাড়ি দিয়ে স্কুলে আসতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানান কানাইকান্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাইদ।
জানা যায়, এই সড়ক সংলগ্ন হাতিগাড়া, রাজবাড়ী, খোট্টাপাড়া, প্যাংরাপাড়া, কদিমুকুন্দ, বাগমারা, কলোনীপাড়া এলাকায় ছোট বড় প্রায় ৩০০টি গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগীর খামার রয়েছে। পুকুর রয়েছে ৩০টির অধিক। গরু-ছাগল অসুস্থ হলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় খামারিদের। সড়কের বেহাল দশার কারণে জরুরি প্রাণিসেবা দিতে আসা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও আসতে হয় কাদা সড়ক মাড়িয়ে। এই ইউনিয়নের অনেক সড়ক পাকাকরণ হলেও বরাবরই বাদ থেকে যায় এই ৪টি সড়ক। এ কারণে, অভিভাবক, শিক্ষক, খামারী ও স্থানীয়রা এই ৪ সড়ককে ‘শাহবন্দেগী ইউনিয়নের দুঃখ’ বলে অভিহিত করেছেন।
ঘোলাগাড়ি গ্রামের খামারী রুহুল আমিন বলেন, ‘গরুর চিকিৎসা ঔষধ বা খড় কেনার প্রয়োজনে প্রায়ই শেরপুর উপজেলা সদর ও পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর বাজারে যেতে হয়। আর সড়কগুলোর অবস্থা এমন যে ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলতেও কষ্ট হয়। সবচেয়ে বিপত্তি বাধে গরু-ছাগল অসুস্থ হলে। কানাইকান্দর কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা আসমা বেগম বলেন, ছোট খাটো সমস্যায় আমরা কষ্ট করে এসে এখান থেকেই সেবা নেই। সমস্যার সৃষ্টি হয় যখন কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে বা কোন গর্ভবতী মায়ের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। শাহ বন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাও. আবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সড়কগুলো পাকাকরণের জন্য ২০২২ সালেই আবেদন দিয়েছি এবং যোগাযোগ রাখছি। আশা করা যায়, দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তার কাজ করা সম্ভব হবে। শেরপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) লিয়াকত হোসেন বলেন, সড়কগুলো এলজিইডির আইডিভুক্ত আছে কিনা বলতে পারছিনা। সড়কগুলো আইডিভুক্ত হয়ে থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।
শেরপুর (বগুড়া) : কাঁচা রাস্তায় চলাচলে ভোগান্তি এলাকাবাসীর -সংবাদ
বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়ন। সর্বশেষ জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী, ৫.৬৮ বর্গমাইল আয়তনের এই ইউনিয়নের ২৩ টি গ্রামে প্রায় অর্ধ লাখ মানুষের বসবাস। এই ইউনিয়নের ঘোলাগাড়ী থেকে রাজবাড়ী, কানাইকান্দর স্কুল থেকে বাঘমারা, এবং রাজবাড়ী থেকে দড়িমুকুন্দ এলাকার ৪টি সড়কে ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছেন কয়েক হাজার মানুষ। গ্রামগুলোর ৪টি কাঁচা সড়কে বর্ষাকালে হাঁটুকাদা ও বছরের অন্যান্য সময় ধুলো-বালির কারণে স্থবির হয়ে পড়ে এখানকার জনজীবন।
জানাযায় বহু বছর ধরেই কাঁচা সড়ক ৪টি পাকাকরণের দাবি জানিয়ে আসছেন ৭ গ্রামের প্রায় মানুষ। এই গ্রামগুলোতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদেরও বসবাস রয়েছে। আশ্বাসে সীমাবদ্ধ থাকা সড়কে সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়েই চলতে হচ্ছে তাদের। জনপ্রতিনিধিদের কাছে পাকা সড়ক নির্মাণের জন্য বারবার ধর্না দিয়েও সাড়া পাননি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এই ৪ সড়ক দিয়ে ৭ গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। এছাড়াও, এই ৪টি সড়ক লাগোয়া বাঘমারা শান্তিনিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কানাইকান্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কানাইকান্দর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কানাইকান্দর ঘোলাগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। বর্ষা মৌসুমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কমে যায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার। কয়েক গ্রামের শত শত শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ৪টি বেহাল সড়কের বিরূপ প্রভাব পড়ছে প্রতিনিয়ত। কাদা মাড়িয়ে পাড়ি দিয়ে স্কুলে আসতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানান কানাইকান্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাইদ।
জানা যায়, এই সড়ক সংলগ্ন হাতিগাড়া, রাজবাড়ী, খোট্টাপাড়া, প্যাংরাপাড়া, কদিমুকুন্দ, বাগমারা, কলোনীপাড়া এলাকায় ছোট বড় প্রায় ৩০০টি গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগীর খামার রয়েছে। পুকুর রয়েছে ৩০টির অধিক। গরু-ছাগল অসুস্থ হলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় খামারিদের। সড়কের বেহাল দশার কারণে জরুরি প্রাণিসেবা দিতে আসা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও আসতে হয় কাদা সড়ক মাড়িয়ে। এই ইউনিয়নের অনেক সড়ক পাকাকরণ হলেও বরাবরই বাদ থেকে যায় এই ৪টি সড়ক। এ কারণে, অভিভাবক, শিক্ষক, খামারী ও স্থানীয়রা এই ৪ সড়ককে ‘শাহবন্দেগী ইউনিয়নের দুঃখ’ বলে অভিহিত করেছেন।
ঘোলাগাড়ি গ্রামের খামারী রুহুল আমিন বলেন, ‘গরুর চিকিৎসা ঔষধ বা খড় কেনার প্রয়োজনে প্রায়ই শেরপুর উপজেলা সদর ও পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর বাজারে যেতে হয়। আর সড়কগুলোর অবস্থা এমন যে ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলতেও কষ্ট হয়। সবচেয়ে বিপত্তি বাধে গরু-ছাগল অসুস্থ হলে। কানাইকান্দর কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা আসমা বেগম বলেন, ছোট খাটো সমস্যায় আমরা কষ্ট করে এসে এখান থেকেই সেবা নেই। সমস্যার সৃষ্টি হয় যখন কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে বা কোন গর্ভবতী মায়ের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। শাহ বন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাও. আবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সড়কগুলো পাকাকরণের জন্য ২০২২ সালেই আবেদন দিয়েছি এবং যোগাযোগ রাখছি। আশা করা যায়, দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তার কাজ করা সম্ভব হবে। শেরপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) লিয়াকত হোসেন বলেন, সড়কগুলো এলজিইডির আইডিভুক্ত আছে কিনা বলতে পারছিনা। সড়কগুলো আইডিভুক্ত হয়ে থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।