বাউফল (পটুয়াখালী) : খেয়ায় পারাপার হচ্ছে যাত্রীরা -সংবাদ
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়ার বিধান না থাকলেও জনপ্রতি টোল নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা করে। অপরদিকে জনপ্রতি আট টাকা টোল নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা করে। যাত্রী পারাপারের জন্য দুই পাশেই ঘাট নির্মাণের কথা থাকলেও কোনো ঘাট নির্মাণ করা হয়নি। টোল রেট লিপিবদ্ধ করে খেয়াঘাটের উভয় পাশে সাইনবোর্ড টাঙানোর কথা থাকলেও সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এমন দৃশ্য দেখা যায়, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের নিমদী লঞ্চঘাট-সংলগ্ন নিমদী ও চর নিমদী খেয়াঘাটে।
সকাল নয়টা। ইঞ্জিনচালিত একটি ট্রলার থামল ঘাটে, যাত্রী ৩৫-৪০ জন। নৌকার মাঝিকে ২০ টাকা করে দিয়ে নেমে গেলেন সবাই। তবে সাতজন শিক্ষার্থী দিল ১০ টাকা করে। তাঁদের সবাইকে কাদার মধ্যে নামিয়ে দেওয়া হল। জুতা হাতে নিয়ে তাঁদের উঠতে হয়েছে।
ওই খেয়াঘাটের ইজারাদার হলেন, চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ও চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. লিটন বেপারী। তিনি ১৪ বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র ৭ লাখ ১০ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন। এই খেয়াঘাটটি একটি তৃতীয় শ্রেণির খেয়াঘাট। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খেয়া ইজারার কোনো শর্তই মানা হচ্ছে না নিমদী ও চর নিমদী খেয়াঘাটে। খেয়া পরিচালনা করছেন চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চররায়সাহেব গ্রামের বাসিন্দা মো. নিজাম মাতুব্বরের ছেলে মো. কাইয়ুম মাতুব্বর (২৩)। তিনি (কাইয়ুম) অকোপটে স্বীকার করেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আসা-যাওয়া বাবদ প্রতিদিন ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। অন্যদের কাছ থেকে জনপ্রতি আসা-যাওয়া বাবদ ৪০ টাকা করে নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ইজারাদার লিটন বেপারীর নির্দেশেই তিনি ওই টাকা আদায় করছেন।
ধানদী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে, আসতে ১০ টাকা, আবার যাওয়ার সময় ১০ টাকা দিতে হয়। এ রকম কমপক্ষে ৫০ শিক্ষার্থীর খেয়া পারাপারের মাধ্যমে একই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। দুই পাশে ঘাট নির্মাণ না করায় কাদা-পানির মধ্যে খেয়ায় উঠতে ও নামতে হয়।
সপ্তাহে পাঁচদিন খেয়ায় আসা-যাওয়া করেন চর রায় সাহেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়য়ের সহকারী শিক্ষক মো. মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, তিনি শিক্ষক। এ কারণে তাঁর কাছ থেকে যাওয়া-আসা বাবদ ৩০ টাকা করে নেন ইজারাদারের লোকজন। তিনিও শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে খেয়া পারাপারের ব্যবস্থা করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ইজারাদার লিটন বেপারী সত্যতা স্বীকার বলেন, আসা কিংবা যাওয়া বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক (১০ টাকা) এবং অন্যদের কাছ থেকে ২০ টাকা করে নিচ্ছেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে খেয়া পারাপার ও সাইনবোর্ড টাঙানোর বিষয় তাঁর জানা নাই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী বলেন,শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে খেয়া পারাপারের ব্যবস্থা করা হবে। আর খেয়া ইজারার শর্ত ভঙ্গ করলে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাউফল (পটুয়াখালী) : খেয়ায় পারাপার হচ্ছে যাত্রীরা -সংবাদ
বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়ার বিধান না থাকলেও জনপ্রতি টোল নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা করে। অপরদিকে জনপ্রতি আট টাকা টোল নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা করে। যাত্রী পারাপারের জন্য দুই পাশেই ঘাট নির্মাণের কথা থাকলেও কোনো ঘাট নির্মাণ করা হয়নি। টোল রেট লিপিবদ্ধ করে খেয়াঘাটের উভয় পাশে সাইনবোর্ড টাঙানোর কথা থাকলেও সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এমন দৃশ্য দেখা যায়, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের নিমদী লঞ্চঘাট-সংলগ্ন নিমদী ও চর নিমদী খেয়াঘাটে।
সকাল নয়টা। ইঞ্জিনচালিত একটি ট্রলার থামল ঘাটে, যাত্রী ৩৫-৪০ জন। নৌকার মাঝিকে ২০ টাকা করে দিয়ে নেমে গেলেন সবাই। তবে সাতজন শিক্ষার্থী দিল ১০ টাকা করে। তাঁদের সবাইকে কাদার মধ্যে নামিয়ে দেওয়া হল। জুতা হাতে নিয়ে তাঁদের উঠতে হয়েছে।
ওই খেয়াঘাটের ইজারাদার হলেন, চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ও চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. লিটন বেপারী। তিনি ১৪ বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র ৭ লাখ ১০ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন। এই খেয়াঘাটটি একটি তৃতীয় শ্রেণির খেয়াঘাট। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খেয়া ইজারার কোনো শর্তই মানা হচ্ছে না নিমদী ও চর নিমদী খেয়াঘাটে। খেয়া পরিচালনা করছেন চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চররায়সাহেব গ্রামের বাসিন্দা মো. নিজাম মাতুব্বরের ছেলে মো. কাইয়ুম মাতুব্বর (২৩)। তিনি (কাইয়ুম) অকোপটে স্বীকার করেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আসা-যাওয়া বাবদ প্রতিদিন ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। অন্যদের কাছ থেকে জনপ্রতি আসা-যাওয়া বাবদ ৪০ টাকা করে নিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ইজারাদার লিটন বেপারীর নির্দেশেই তিনি ওই টাকা আদায় করছেন।
ধানদী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে, আসতে ১০ টাকা, আবার যাওয়ার সময় ১০ টাকা দিতে হয়। এ রকম কমপক্ষে ৫০ শিক্ষার্থীর খেয়া পারাপারের মাধ্যমে একই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। দুই পাশে ঘাট নির্মাণ না করায় কাদা-পানির মধ্যে খেয়ায় উঠতে ও নামতে হয়।
সপ্তাহে পাঁচদিন খেয়ায় আসা-যাওয়া করেন চর রায় সাহেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়য়ের সহকারী শিক্ষক মো. মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, তিনি শিক্ষক। এ কারণে তাঁর কাছ থেকে যাওয়া-আসা বাবদ ৩০ টাকা করে নেন ইজারাদারের লোকজন। তিনিও শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে খেয়া পারাপারের ব্যবস্থা করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ইজারাদার লিটন বেপারী সত্যতা স্বীকার বলেন, আসা কিংবা যাওয়া বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক (১০ টাকা) এবং অন্যদের কাছ থেকে ২০ টাকা করে নিচ্ছেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে খেয়া পারাপার ও সাইনবোর্ড টাঙানোর বিষয় তাঁর জানা নাই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী বলেন,শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে খেয়া পারাপারের ব্যবস্থা করা হবে। আর খেয়া ইজারার শর্ত ভঙ্গ করলে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।